সাহাবী আবদুল্লাহ বিন হুজাফাহ আস সাহমীঃ “প্রতিপালক, শুধু তোমার কাছেই আমি মাথা নুইয়েছি”


রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন ইসলামের প্রচার শুরু করেছেন, তখন পৃথিবীর পূর্বাঞ্চলে দুটি সুপার পাওয়ার কর্তৃত্বরত ছিলো। এর একটি ছিলো বাইজেন্টাইন রোমান সাম্রাজ্য আরেকটি হলো পারস্য সাম্রাজ্য। সে সময় বাইজেন্টাইন সম্রাট হলেন হিরাক্লিয়াস আর পারস্য সম্রাট খসরু পারভেজ (আরবীতে বাইজেন্টাইন সম্রাটকে বলা হতো কাইসার আর পারস্য সম্রাটকে কিসরা)। দীর্ঘ সময় ধরে এই দুটি প্রতিবেশী সাম্রাজ্য যুগপত বিস্তার করে চলছিলো তাদের রাজ্যের সীমানা। একই সাথে পরস্পরের সাথে অব্যাহত বিরোধে প্রতিনিয়ত মারা পড়ত তাদের হাজার হাজার সেনাদল। বিশাল সেনাবাহিনী আর সম্রাটের রাজকীয় খরচ যোগান দিতে বিরাট অংকের করের বোঝা চাপানো হতো সাধারণ জনগনের উপর। কর না পেলে অত্যাচার আর হত্যার নির্মম শিকার হতো অসহায় সে সব মানুষ।

মক্কার কুরাইশদের সাথে হুদাইবিয়ার সন্ধির পরের সময়টা রাসুলুল্লাহ সাঃ প্রতিবেশী সকল জনপদ আর সাম্রাজ্যে দূত পাঠিয়ে ইসলামের দাওয়াত পৌছানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। সকল জনপদের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে পারস্য সম্রাট খসরু আর রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে পত্রবহন ছিলো সবচেয়ে দুঃসাধ্য কাজ। এর কারণ ছিলো আরবের লোকদের এমনিতেই এই দুই সাম্রাজ্যের শাসক গোষ্ঠী ও সাধারণ মানুষ অবজ্ঞা করতো এবং এমন কোন রাষ্ট্রীয় চিঠি আরবের কয়েকটি অনুগত শাসক ছাড়া কারো কাছ থেকে কখনও এ দুটি রাজ্যের সম্রাটের কাছে পৌছেনি।

নবী হিসাবে আল্লাহর প্রত্যক্ষ সাহায্য ছাড়াও রাসুলুল্লাহ সাঃকে আল্লাহ অনন্য যে গুনগুলো দিয়েছিলেন তার একটি হলো সঠিক কাজের জন্য সঠিক লোক নির্বাচন। প্রচন্ড রাগচটা আর পরাক্রমশালী পারস্য সম্রাটের কাছে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াতের চিঠি নিয়ে যাবার জন্য যে লোকটিকে তিনি নির্বাচন করেছিলেন, দুঃসাহসী সেই লোকটি হলেন আব্দুল্লাহ বিন হুজাফাহ আস সাহমী। আবদুল্লাহ মক্কার কুরাইশ গোত্রের বনু সাহম শাখার সন্তান ছিলেন। দাওয়াতে ইসলামের প্রথমভাগেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সহ্য করেন অবর্ণনীয় অত্যাচার। অত্যাচারে টিকতে না পেরে এক সময় তিনি আবিসিনিয়ায় হিজরতকারী মুসলিমদের দ্বিতীয় দলটির সাথে আবিসিনিয়ায় পাড়ি জমান। বদর যুদ্ধের পর তিনি ফিরে আসেন এবং মদীনায় রাসুলুল্লাহর সান্নিধ্যে বসত গড়েন।


হিজরী সপ্তম সাল।

মাদায়েন নগরীতে পারস্যের সম্রাট পরাক্রমশালী খসরু পারভেজের রাজদরবার। রোমানদের সাথে তখন পারস্যের যুদ্ধ চলছে। সম্রাটের জাঁকানো দরবারে চলছে নীতি নির্ধারণী সভা। বাইরে অতিরিক্ত ফোর্স পাহারায় বিদ্যমান। এমন সময় রাজ দরবারের প্রধান ফটকে ধুলি ধুসরিত চেহারা আর বাবলা গাছের কাঁটা দিয়ে আটকানো ছালা সদৃশ পোষাকের এক অচ্ছুত আরব লোক ফটক রক্ষীদের কাছে এলো।
“কি চাই?।“
“আমি সম্রাট খসরু পারভেজের সাথে দেখা করতে চাই”।

ফটক রক্ষীদের হাসি শুরু হলো। সম্রাটের সাথে যেখানে নামী-দামী লোকেরই দেখা করার সুযোগ নেই, সেখানে এই আরব, যার আবার পোষাকের এ অবস্থা? দূর দূর করে তারা লোকটিকে তাড়িয়ে দিলো। কিন্তু সে নাছোড়বান্দা। ঘুরে ফিরে এসেই সম্রাটের সাথে দেখা করার কথা বলতে লাগলো।
“আমাকে সম্রাটের কাছে নিয়ে চলো, একটি চিঠি আমি তার কাছে পৌঁছে দিয়ে চলে যাব”।
“কার চিঠি তুমি নিয়ে এসেছো?”
“আল্লাহর রাসুলের চিঠি”।

দ্বার-রক্ষীদের হাসি দ্বিগুন হলো। যাদের সাথে মিশতেও তারা সংকোচ বোধ করে এহেন আরবদের একজন লোক, যাকে সে রাসুল বলে পরিচয় দিচ্ছে- তার এক মূল্যহীন চিঠি পরাক্রমশালী পারস্য সম্রাটের কাছে পৌঁছানোর দুঃসাহস দেখাচ্ছে? এবার তাকে অপমান করেই তাড়িয়ে দেয়া হলো।

এভাবে তিনদিন চলে গেলো। বেয়াড়া সে আরব লোকটিকে দেখা গেলো এখনো প্রাসাদের দ্বারের সামনে ঘুর ঘুর করছে আর রক্ষীদের বলে চলেছে-
“তোমরা আমার কথা শোন, আমি কিছু চাইতে এখানে আসিনি, কেবল এই চিঠিটি পৌছে দিয়েই আমি চলে যাব।“

সেদিন সম্রাটের সভাকক্ষে চলছিলো জরুরী সভা। আলোচনার এক পর্যায়ে আরবদের প্রসঙ্গ এলো। আরবদের ব্যাপারে একেকজন একেক রকম মত দিলেন। সম্রাট বললেন,
“এ ব্যাপারে একজন প্রকৃত আরবের মত জানলে ভালো হত, শহরে কেউ আছে নাকি আরবের?”
সবাই মাথা নাড়লো, কেউ নেই। ঘটনাক্রমে সেদিন রাজ সভাকক্ষে রক্ষীদের এমন একজনের দায়িত্ব ছিলো, যে আগের দিন প্রাসাদের দ্বারে ডিউটি দিয়েছে। সে বলল-
“মহামান্য সম্রাট, গত তিনদিন ধরে এক আরব আপনার কাছে একটি চিঠি দেবার জন্য বাইরে ঘুর ঘুর করছে। সে বলছে কোন কিছু চাইতে সে আসেনি, কেবল আল্লাহর রাসুল বলে দাবীদার এক আরবের একটি চিঠি নিয়ে এসেছে”।
সম্রাট বললেন, “এক্ষুনি যাও আর সে থাকলে তাকে নিয়ে এসো”।

রক্ষী বাইরে এলো। যথারীতি সেই আরব দ্বার-রক্ষীদের সাথে বাদানুবাদ করছিলো। দ্বার রক্ষীদের ছোখ ছানাবড়া করে দিয়ে তাকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো সভাকক্ষের প্রহরী। জীর্ণ মলিন পোষাকের সে লোকটা দৃঢ় পদক্ষেপে দরবারে প্রবেশ করলো। ঘোষকদের একজন চিৎকার করে উঠলো, “মহামান্য সম্রাটকে মাথা ঝুঁকিয়ে কুর্নিশ করো”।
লোকটি ঘোষণা করল-
“আমি মুসলিম এবং মুসলিমরা আল্লাহ ছাড়া কারো সামনেই মাথা নত করে না”।
সকল সভাসদের বিস্ময় চূড়া স্পর্শ করল। সবাই সে প্রসঙ্গ ভুলে গিয়েছিল যা জানার জন্য এ আরব লোকটিকে ডাকা হয়েছিল। সম্রাটের পক্ষ থেকে ভয়ংকরতম আদেশের অপেক্ষা সবাই করছিল। সম্রাট শক্ত মুখে বললেন,
“তুমি এখানে কেন এসেছো?”
“আমি আল্লাহর রাসুলের পক্ষ থেকে একটি চিঠি নিয়ে আপনার কাছে এসেছি”।
সম্রাটের ইশারায় চিঠি নেবার জন্য একজন পারিষদ এগিয়ে এলেন। লোকটি তার হাতে চিঠি দিতে অস্বীকার করে বলল,
“রাসুলুল্লাহ সাঃ পত্রটি সরাসরি আপনার হাতে দেয়ার নির্দেশ আমাকে দিয়েছেন। আমি তাঁর আদেশের বিরুদ্ধে যেতে পারিনা”।
সম্রাট বললেন, “তাকে আমার কাছে আসতে দাও”।
চিঠিটি হাতে নিয়ে সম্রাট হীরা অধিবাসী তাঁর সেক্রাটারীর হাতে দিয়ে পড়তে দিলেন। চিঠি খোলা হলো। শুরু হলো পড়া।
“পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে পারস্য সম্রাট খসরু পারভেজের প্রতি……।“
সম্রাট ক্রোধের সাথে পড়া থামিয়ে দিলেন।
“এত বড় স্পর্ধা? আমার নামের আগে তার নাম লিখেছে?”
সত্যিই এ ছিলো অচিন্তিনিয় ব্যাপার। বিশাল পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসে কখনও এমন হয়নি বা কেউ এমন দুঃসাহসও করেনি। ক্রুদ্ধ সম্রাট চিঠি পড়তে ইশারা করলেন। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ছিঠিটা ছিল এমন-

পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি-
আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে পারস্য সম্রাট খসরু পারভেজের প্রতি।
সে ব্যক্তির প্রতি সালাম, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনে। তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসুল। আমি তোমাকে আল্লাহর প্রতি আহবান জানাচ্ছি, কারণ আমি সকল মানুষের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত। যারা বেঁচে আছে, তাদেরকে পরিণাম সম্পর্কে ভয় দেখানো এবং কাফিরদের উপর সত্য কথা প্রমাণিত করাই আমার কাজ। কাজেই তুমি ইসলাম গ্রহণ করো, তাহলে শান্তিতে থাকবে। যদি এতে অস্বীকৃতি জানাও, তাহলে সকল অগ্নি উপাসকের পাপও তোমার উপরই বর্তাবে।

স্তব্ধ হয়ে সম্রাট চিঠি শেষ করলেন। মুহূর্তকাল পর তিনি চিঠিটি কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেললেন। সেই আরব লোকটির দিকে তাকিয়ে বললেন,
“অন্য কোন রাজার দূত হলে এরকম চিঠির জন্য আমি দূতকে হত্যা করতাম। কিন্তু তুমি এসেছো এমন এক লোক আর এমন এলাকা থেকে যে তোমাকে হত্যা করাও আমি সমীচিন মনে করছি না। আগামীকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তোমাকে সময় দেয়া হলো। এর ভেতরে তুমি আমার সাম্রাজ্য ত্যাগ করবে, অন্যথায় যেখানেই তোমাকে পাওয়া যাবে, সেখানেই তোমার জীবন সাঙ্গ হবে”।

অবিচলিত লোকটিকে বের করে দেয়া হলো। ফটকের বাইরে এসে সামান বেঁধে সে ঘোড়া ছুটিয়ে দিলো।

সম্রাট খসরু দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁর রাজধানী মাদায়েন থেকে হাজারো মাইল পেরিয়ে ইয়েমেন পর্যন্ত তাঁর সীমানা বিস্তৃত। তিনি তাঁর অনুগত ইয়ামেনের শাসক ‘বাযান’ কে চিঠি লিখলেন- “তোমার ওখান থেকে তাগড়া সৈন্য পাঠিয়ে আরবের নবী দাবীদার সেই ব্যক্তিকে ধরে দ্রুত আমার কাছে পাঠিয়ে দাও”। রাজকীয় দূত চিঠি নিয়ে রওয়ানা হয়ে গেলো ইয়ামেনের পথে।

এদিকে আব্দুল্লাহ বিন হুজাফাহ ছুটে চলেছেন হাজার হাজার মাইল দূরের মদীনার পথে। গহীন মরুর বুকের তপ্ত দিন আর ঘুটঘুটে রাতে তিনি আর তাঁর প্রতিপালক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। আল্লাহু আকবার। এ কোন গল্প কাহিনী নয়, এ হলো আজকের আমাদের অস্তিত্বের মতোই বাস্তব।

আব্দুল্লাহ বিন হুজাফাহ মদীনায় পৌঁছুলেন আর খসরুর রাজকীয় দূত পৌঁছালো ইয়েমেন। আব্দুল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে সবিস্তারে চিঠির সবকিছু বর্ণনা করলেন। সব শুনে তিনি একটি কথাই বললেন, “আল্লাহ তাঁর রাজ্যকে ছিন্ন করে ফেলবেন যেভাবে সে আমার চিঠিকে ছিঁড়েছে”। (এর মাত্র বছর কয়েক পরের কথা। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মৃত্যু হয়েছে এবং উমার ইবন খাত্তাব রাঃ এর শাসনকাল চলছে। বিখ্যাত সাহাবা সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস রাঃ এর নেতৃত্বে যখন মুসলিম সেনাবাহিনী মাদায়েনে খসরুর সুবিশাল রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করছিলো, সকলের চোখ দিয়ে তখন ক্রমাগত ঝরছিলো অশ্রু। যে প্রাসাদে একদিন রাসুল সাঃ এর চিঠি আর তাঁর দূত আব্দুল্লাহ বিন হুজাফাহকে নিকৃষ্ট বলে অপমান করা হয়েছিলো, আজ সে প্রাসাদওয়ালারা তাদেরই ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলো। চিরদিনের অপরাজিত পারস্য সাম্রাজ্য আল্লাহ মুসলিমদের হাত দিয়েই ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছিলেন)।

এদিকে ইয়েমেনের শাসক বাযান খসরুর রাজকীয় ফরমান পেয়ে কাল বিলম্ব না করে তাঁর সেনাবাহিনীর ছোট একটি সুপ্রশিক্ষিত দলকে মদীনার পথে পাঠিয়ে দিলেন। তখন হুদাইবিয়ার সন্ধি চলছে, আর চলছে যুদ্ধবিরতি। প্রায় সমগ্র আরব তখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইসলামের ছায়াতলে এসে আশ্রয় নিয়েছে। হাজারো বছরের আরব ইতিহাস আমূল বদলে গেছে। হিংসা আর হানাহানির বদলে বইছে শান্তির সুবাতাস। রাসুলুল্লাহ সাঃ কে গ্রেফতারের জন্য পাঠানো ইয়েমেনী ছোট্ট বাহিনী পরিবর্তিত আরবের এই চেহারা দেখে বিস্মিত হচ্ছিল। পথিমধ্যে রাসুল সাঃ সম্বন্ধে খোঁজ নিয়ে তাঁর প্রভাব দেখে তারা চিন্তিত হয়ে পড়ছিল। দীর্ঘ সফর করে দলটি একসময় তায়েফ এসে পৌঁছুল। ঘটনাক্রমে সেখানে তাদের সাথে মক্কার কুরাইশদের একটি ব্যবসায়ী দলের সাথে দেখা হলো। ওদের আগমনের উদ্দেশ্য জানতে পেরে তারা ভীষণ খুশি হল। মক্কায় ফিরে গিয়ে তারা মক্কাবাসীদের সুসংবাদ দিল-“এবার তোমরা উল্লাস করতে পারো। পারস্য সম্রাট খসরু এবার মুহাম্মাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তার অনিষ্ট থেকে এবার তোমাদের মুক্তি মিলবে”।

ইয়ামানের দলটি মদীনায় পৌছালো। মদীনায় তারা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাথে দেখা করল। এতদিন তারা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কথা আর তাঁর অদ্বিতীয় আদল ও ইনসাফের কথা শুনে এসেছে, এবার সামনা সামনি তাঁর সুবিশাল ব্যক্তিত্বের মুখোমুখি হয়ে তারা হতভম্ব হয়ে পড়ল। শুরুতে তাদের ইচ্ছা ছিল এই নবী দাবীদার লোকটিকে সবার সামনে বেঁধে, টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাবে। আজ রাসুলের সামনে এসে তাঁরা কেবল এটুকুই বলতে পারল-
“শাহানশাহ খসরু আমাদের বাদশাহ ‘বাযান’কে লিখেছেন, তিনি যেন আপনাকে নেওয়ার জন্য লোক পাঠান। আমরা তাঁরই নির্দেশে আপনাকে নিতে এসেছি। আমাদের আহবানে সাড়া দিলে আপনার যেন মঙ্গল হয় এবং তিনি যেন আপনাকে কোন ধরণের শাস্তি না দেন সে ব্যাপারে আমরা খসরুর সাথে কথা বলবো। আর আমাদের আহবানে সাড়া না দিলে দয়া করে একটু বুঝে শুনে দেবেন, কারণ আপনাকে আর আপনার জাতিকে ধ্বংস করার ব্যাপারে তাঁর শক্তি ও ক্ষমতাতো আপনার জানাই আছে”।
রাসুলুল্লাহ সাঃ মৃদু হেসে বললেন, “আজ তোমরা বিশ্রাম করো, আগামীকাল আমি এ ব্যাপারে তোমাদের জানাবো”।
তারা সেদিনের মত চলে গেলো বিশ্রাম নিতে, পরদিন আবার এলো রাসুল সাঃ এর কাছে। তিনি তাদের বললেন,
“তোমরা আর কখনো খসরুর দেখা পাবেনা, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করেছেন। অমুক মাসের অমুক তারিখ তার পুত্র শিরওঁয়া তাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছে”।
বিস্ময়ে তাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিলো। তারা বলল,
“আপন কি বলছেন তা-কি ভেবে দেখেছেন? আমরা কি ‘বাযান’কে একথা লিখে জানাবো?”
তিনি বললেন, “হ্যাঁ। আর তোমরা একথাও লিখবে যে, আমার এ দ্বীন খসরুর সম্রাজ্যের প্রান্তসীমা পর্যন্ত পৌছবে। তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ কর, তোমার অধীনে যা কিছে আছে তা সহ তোমার জাতির কর্তৃত্ব তোমাকে দেয়া হবে”।

গ্রেফতারী পরোয়ানা পাওয়া কোন লোকের কাছ থেকে এরকম অদ্ভুতুড়ে কথা শুনে কখনও কোন রাজকীয় সেনাবাহিনীর বিশ্বাস করার কথা নয়, বরং এ হতে পারে গ্রেফতার এড়ানোর কৌশল। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ব্যক্তিত্ব ও কথাগুলো ছিলো এমন যে, দলটি দ্রুত তা লিখে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো ফেরার পথে।

দীর্ঘ সফরের পর তারা এসে পৌঁছালো বাযানের দরবারে। ভরা সভায় তারা সকল ঘটনা বাযানকে খুলে বলল। সব শুনে বাযান বললো-
“মুহাম্মাদ যা বলেছে তা সত্য হলে তিনি অবশ্যই নবী। আর সত্য না হলে আমরা তাকে উচিৎ শিক্ষা দেব”।
আলোচনা চলছে এমন সময় বাযানের কাছে শিরওঁয়ার বার্তাবাহক এসে পৌঁছালো। ঘোষক উচ্চস্বরে পাঠ করতে লাগলো-
“অতঃপর আমি খসরুকে হত্যা করেছি। আমার জাতির পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই তাকে হত্যা করা হয়েছে। ………… আমার এ পত্র তোমাদের কাছে পৌঁছানোর পর তোমার আশে পাশের লোকদের নিকট থেকে আমার আনুগত্যের অঙ্গীকার নেবে”।

আবেগে আপ্লুত বাযান শিরওঁয়ার চিঠি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেয়, তার সাথে সাথে তার আশ পাশে সকলেই ইসলাম গ্রহণ করে। শীঘ্রই সমস্ত ইয়েমেন ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয়।

সংক্ষেপে এই হলো আবদুল্লাহ বিন হুজাফাহ’র পারস্য সম্রাটের কাছে বার্তা পৌছানোর ঘটনা। কালের পরিক্রমায় রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াসের সাথেও এই অকুতোভয় লোকটির সাক্ষাত হয়েছিলো এবং সে ঘটনা আরো চমকপ্রদ।


তখন রাসুলুল্লাহ সাঃএর মৃত্যু হয়েছে এবং উমার ইবন খাত্তাব রাঃএর শাসনকাল চলছে। এক সময়কার অজেয় দুই সাম্রাজ্য যুগপতভাবে মুসলিমদের দখলে চলে আসছে। রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াস সিরিয়ার বিশাল এলাকা ছেড়ে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছেন। কয়েকটি যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ হচ্ছে মুসলিম ও রোমানদের মধ্যে। হিজরী ১৯ সালে খলিফা উমার রাঃ এমনই এক বাহিনী পাঠালেন রোমানদের বিরুদ্ধে, যে বাহিনীতে আব্দুল্লাহ বিন হুজাফাহ আস সাহমীও ছিলেন। হিরাক্লিয়াস মুসলিমদের দৃঢ় ঈমান, বীরত্ব আর আল্লহর জন্য অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেয়ার অনেক ঘটনা শুনতেন। তাই তিনি তাঁর সেনাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোন মুসলিম সেনা বন্দী করা হলে তাকে যেন জীবন্ত অবস্থায় তাঁর কাছে আনা হয়। ঘটনাক্রমে রোমানদের হাতে আব্দুল্লাহ বিন হুজাফাহ আর আরো ক’জন মুসলিম সেনা বন্দী হলেন। এঁদের সবাইকে শক্ত করে বেঁধে নিয়ে আসা হলো সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে। উল্লসিত রোমান সেনারা সম্রাটকে বললো,
“এই লোক মুহাম্মাদের একজন সহচর আর প্রথমভাগেই সে এ দীন গ্রহন করেছে। আমরা তাকে জীবন্ত আপনার কাছে হাজির করেছি”।

রোমান সম্রাট দীর্ঘক্ষণ আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে রইলেন, এরপর বন্দী আবদুল্লাহর দিকে তাকিয়ে কথা বললেন তিনি,
হিরাক্লিয়াসঃ আমি তোমার কাছে একটি বিষয় উপস্থাপন করতে চাই।
আবদুল্লাহঃ বিষয়টি কি?
হিরাক্লিয়াসঃ তুমি খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করো। যদি তা করো তাহলে তোমাকে মুক্তি দেব আর সম্মানিতও করবো
আবদুল্লাহঃ আফসোস, যেদিকে আপনি আমাকে ডাকছেন, তার চেয়ে হাজারবার মৃত্যুও আমার কাছে বেশী প্রিয়।
হিরাক্লিয়াসঃ আমি মনে করি তুমি একজন বুদ্ধিমান লোক। আমার প্রস্তাব মেনে নিলে আমি তোমাকে ক্ষমতার অংশীদার বানাবো, তোমার কাছে আমার মেয়েকেও বিয়ে দেবো।
আবদুল্লাহ মৃদু হাসলেনঃ আল্লাহর শপথ, আপনার গোটা সাম্রাজ্য আর সাথে আরবদের অধিকারে যা কিছু আছে তার সবই যদি আমাকে দেয়া হয় আর বিনিময়ে বলা হয় রাসুল্লাল্লাহ সাঃ আনীত দীনকে এক মুহূর্তের জন্যও ত্যাগ করতে, আমি তা করবোনা।
হিরাক্লিয়াসঃ তাহলে আমি তোমাকে হত্যা করবো এখনই।
আবদুল্লাহঃ আপনার যা খুশী আপনি করতে পারেন।

সম্রাটের নির্দেশে শুলিকাষ্ঠ প্রস্তুত করা হলো। ফাঁসিতে না ঝুলিয়ে বন্দীকে দুহাত বেঁধে শূন্যে দেহে ঝুলিয়ে দেয়া হলো। এবার তার কাছে খৃষ্টধর্ম পেশ করা হলো। তিনি অস্বীকার করলেন। এরপর নামিয়ে এনে দুপায়ে ঝুলানো হলো এবং এবার শুধু ইসলাম ত্যাগের ঘোষণা দেয়ার আহবান জানানো হলো। এবারও বন্দী দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করলেন। সম্রাটের রাগ বেড়ে চলেছে। তিনি বন্দীকে নামিয়ে আনতে ইশারা করলেন। বন্দীকে নামিয়ে আনা হলো। এবার সম্রাট সেনাবাহিনীর বিশাল সেনাদলের রান্নার জন্য ব্যবহার করা বিশাল কড়াই আনতে বললেন। কড়াই এনে সম্রাটের নির্দেশে তাতে তেল ঢালা হলো আর বন্দীকে সামনে বেঁধে রেখে কড়াইয়ের তেল ফুটিয়ে উত্তপ্ত করা হলো। এবার বন্দীদের থেকে দুজনকে সামনে আনা হলো। এদের ভেতর একজনকে পাঁজাকোলা করে উত্তপ্ত তেলে ফেলে দেয়া হলো। কিছুক্ষণের ভেতর তার হাড় থেকে মাংস খসে পড়তে লাগলো আর মৃত্যু হতে সময় লাগলো খুবই কম।

সম্রাট এবার আবার আবদুল্লাহকে ডেকে খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করার আহবান করলেন। আবদুল্লাহ এবার আগের চেয়েও কঠোরভাবে তা প্রত্যাখ্যান করলেন। সম্রাটের নির্দেশে তাঁকে সেই কড়াইয়ের সামনে আনা হলো। আবদুল্লাহর চোখে এবার অশ্রু দেখা গেলো। লোকেরা সম্রাটকে বললো, “বন্দী এবার কাঁদছে”। সম্রাট বন্দীকে নামিয়ে আনতে বললেন। আবদুল্লাহকে নামিয়ে আনা হলো এবং সম্রাট আবার তাঁকে ইসলাম ত্যাগ করার প্রস্তাব দিলেন। আবদুল্লাহ আবারো কঠোরভাবে তা প্রত্যাখ্যান করলেন। সম্রাট বললেন,
“ধ্বংস হও তুমি। তাহলে তুমি কাঁদছিলে কেন?”
“আমি এজন্য কাঁদছিলাম যে, আমাকে এখন কড়াইয়ে ফেলা হবে আর আমার প্রাণ যাবে আল্লাহর জন্য যা আমি চেয়েছি। অথচ এখন আমার মনে হচ্ছে আমার যদি দেহের পশমের মতো অসংখ্য জীবন থাকতো, তাহলে তার সবই যদি আমি আল্লাহর জন্য বিলিয়ে দিতে পারতাম”।

সম্রাট খুব অসহায় বোধ করলেন। এক বন্দীর হাতে রোমান সম্রাটের এমন নাস্তানাবুদ অবস্থা পারিষদরা আর মেনে নিতে চাইছিলেন না। একজন সমাটের কানে পরামর্শ দিলেন। সম্রাট এবার বললেন,
“অন্ততপক্ষে তুমি আমার মাথায় একটা চুম্বন করো, তাহলেও আমি তোমাকে ছেড়ে দেবো”।
প্রথমে অস্বীকার করলেও আবদুল্লাহ বিন হুজাফাহ আস সাহমী এবার এর বিনিময়ে সকল বন্দীর মুক্তির শর্তে তা করতে রাজী বলে জানালেন। তিনি বললেন,
“যদি আমার সাথে অন্য মুসলিম বন্দীদেরও মুক্তি দেয়া হয়, আমি রাজী আছি”।
সম্রাট বললেন, “হ্যাঁ, অন্যদেরও ছেড়ে দেয়া হবে”।

আবদুল্লাহর বাঁধন ও বেড়ি খুলে দেয়া হলো। তিনি ধীর পায়ে হেঁটে গিয়ে সম্রাট হিরাক্লিয়াসের মাথায় চুম্বন করলেন। সম্রাট সকল মুসলিম বন্দীদের আবদুল্লাহর হাতে তুলে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। সর্বোমোট ৮০ জন বন্দী মুক্তি পেলো।

আবদু;ল্লাহ বিন হুজাফাহ মদীনায় ফিরে পুরো ঘটনা সবিস্তারে খলিফা উমারের (রাঃ) কাছে বর্ণনা করলেন। আনন্দে উমারের চোখ উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। তিনি উপস্থিত বন্দীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “প্রতিটি মুসলিমের উচিৎ আবদুল্লাহর মাথায় চুম্বন করা। আমিই তার সূচনা করছি”। এই বলে তিনি উঠে গিয়ে আবদুল্লাহর মাথায় চুম্বন করলেন।
(আবদুল্লাহ ও হিরাক্লিয়াসের এ ঘটনার বর্ণনাটি এসেছে যথাক্রমে হায়াতুস সাহাবা ১/৩০২, আল ইসাবা ২/২৯৬-৯৭, আল ইসতিয়ার, সুয়ারু মিন হায়াতিস সাহাবা ১/৫১-৫৬, উসুদুল গাবাহ ৩/১৪৩ ইত্যাদি নির্ভরযোগ্য ইতিহাস গ্রন্থে)

এমনিভাবে মক্কার এক সামান্য অচেনা লোক আবদুল্লাহ বিন হুজাফাহ আস সাহমী অসাধারণ হয়ে উঠেছিলেন ইসলাম গ্রহণের পর। তিনি দেখিয়েছিলেন আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পেতে নেই, আর আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে এ মাথাও নোয়াবার নয়।

রেফারেন্সঃ
• আসহাবে রাসুলের জীবনকথাঃ ডঃ আবদুল মা’বুদ
• সাহাবীদের জীবনীঃ তালেবুল হাশেমী
• কায়সার ও কিসরাঃ নসীম হিজাজী

২,৩৫৭ বার দেখা হয়েছে

১০ টি মন্তব্য : “সাহাবী আবদুল্লাহ বিন হুজাফাহ আস সাহমীঃ “প্রতিপালক, শুধু তোমার কাছেই আমি মাথা নুইয়েছি””

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    প্রথমে আপনার লেখা পড়লাম। তারপর আসহাবে রাসূল ২য় খন্ডের তালিকায় ১১ তমে উক্ত সাহাবীর নাম পেয়ে ৭৬ নাম্বার পৃষ্ঠায় গিয়ে উনার কাহিনী পড়ে আসলাম।
    পুরাপুরি মিল পেলাম না ঐ বইয়ের সাথে যদি ও আপনি আরো দুটি সূত্র উল্লেখ করেছেন।
    আগুন নিয়া কাহিনী (এই লেখায় নেই) হাস্যকর।
    বইটিতে খসরুর কাহিনী ভিন্নভাবে এসেছে।
    আপনার বর্ণিত হুজাফার পোষাক আর আসহাবে রাসুলের মিল নেই।
    কোনদিন সম্ভব হবে কিনা জানি না; গরম তেলে জীবন্ত ভেড়া বা শুয়োর ছেড়ে দিয়ে দেখতে হবে মাংশ খুলে আসে কিনা?
    কেনো বললাম মুরগী রোষ্ট করলে বা মাছ তেলে ছেড়ে দিলে তো খুলে আসে না।
    অবশ্য জীবন্ত মুরগী ছাড়লে কি হবে বলতে পারছি না। কোনদিন ছাড়ি নাই।
    চিঠি হাতেই দিতে হবে এইটা কি ধরণের কথা; যেখানে দেখাই হয় না, সেখানে হাতে চিঠি দেবার ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি মাত্র।
    যতদূর জানতাম নবী নাকি কোমল হৃদয়ের ছিলেন। তার পথে কাঁটা ফেলার কাহিনী আছে, তার মেহমানের বিছানায় পায়খানা করার কাহিনী আছে, তার মাথায় উটের নাড়িভুড়ি ফেলার ঘটনা আছে। কিন্তু কাউকে অভিসম্পাত করেছেন বলে তো মনে পড়ে না।
    সেখানে চিঠি ছিড়ে ফেলায় খসরুর সাম্রাজ্য ঠিক সেরকম ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবার ভবিষ্যত বা অভিসম্পাত কেমন জানি লাগলো। আর রাজ্য ছিন্ন ভিন্ন হলে হাজার হাজার প্রাণ ও যাবার কথা। আল্লার কাছে লাখ প্রাণের চাইতে নবীর লেখা একটা চিঠির ইজ্জত অনেক বড়!


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • ফাইয়াদ (৮৯-৯৫)

      তিনটি সূত্র মিলিয়ে লিখেছি। তিনটা মিলালে পাবা।

      ইতিহাস বর্ণনার ক্ষেত্রে সূত্রের ভাষা, আবেগ, পূর্বতন সূত্রের ধারা এসবের জন্য একটা বড় ঘটনার একেক ঐতিহাসিক একেক রকম পারিপার্শিক অবস্থা বর্ণনা করেছেন। । তবে মূল ঘটনা নিয়ে দ্বিমত নেই কারোই।

      ফুটন্ত তেলে মানুষ ছেড়ে দেয়ার মতো বীভৎস দৃশ্যের বর্ণনা আবেগ অনুযায়ী বিভিন্ন হতে পারে।

      রাসুল সাঃ এর চিঠি যখন খসরুর কাছে যায়, তখন রোম আর পারস্যের মধ্যে যুদ্ধ চলছিলো। এ বর্ণনাটা সবচেয়ে ভালো এসেছে নসীম হিজাজীর বইটাতে।

      জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        ফাইয়াদ ভাই আপনি কি লগ ইন না করেই কমেন্ট করেন নাকি?
        মেম্বারদের কমেন্ট তো মডারেটের জন্য আটকে থাকার কথা না!
        আমি সিউর না তবে সোনা ব্লগে আপনার এই লেখা মনে হয় দেখেছিলাম। অন্য ব্লগে বা পূর্বে প্রকাশিত লেখা সিসিবিতে দিলে ডিস্ক্লেইমার দেবার কথা ভাববেন কি?


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
        • ফাইয়াদ (৮৯-৯৫)

          হ্যাঁ, সাধারণত লগইন না করেই কমেন্ট করি। কিছুটা আলসেমির জন্য বলতে পারো।

          লেখাটি একসাথে সিসিবি, সামু, সোনাব্লগে দিয়েছি। এখানে আসতে দেরী হলো মডারেশনের জন্য জমা হবার কারণে।

          পরবর্তিতে ডিসক্লেইমার দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

          জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : শিশির (১৯৯৬-২০০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।