ভ্যাকেশন শেষ!!!!!

দেখতে দেখতে ভ্যাকেশন শেষ হয়ে গেল,আগামীকাল কলেজে জয়েন করছি!ভাবলেই মন খারাপ হচ্ছে,আর সেটা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
প্রতিবার এমনটা হয়,ভ্যাকেশনটা কেমন করে কেটে যায়,আর হঠাৎ করে শেষ দিনটা এসে উপস্থিত হয়।আর সাথে সাথে বুকের ভেতরটা কেমন ফাঁকা হয়ে যায়,কেমন একটা অদ্ভুত আবেগ জমে উঠে বাসার জন্যে, আব্বু আম্মুর জন্যে, অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমোবার জন্যে!কষ্ট হয়!এতদিন ধরে ক্যাডেট কলেজে পড়ছি,অথচ এখনো বাসা ছেড়ে যাবার আগ মুহুর্তে খারাপ লাগে,আম্মুকে দোয়া করতে বলতে গিয়ে গলা ভারী হয়ে উঠে অজান্তে।জানি,এই আবেগটা সাময়িক,কলেজ়ে যাবার পর একটুও খারাপ লাগবে না!তাছাড়া বাসার চেয়ে কলেজটাই বেশী মজার মনে হবে ,সব বন্ধুরা যারা আমার অস্তিত্বের অর্ধেক,তাদের সাথে আড্ডা,দুষ্টামি সব কিছুতে আরও উচ্ছল হয়ে উঠব।তখন মনে হতে থাকবে কলেজে থাকলেই বেশী ভাল!
কিন্তু এখন কলেজে যেতে ভাল লাগছে না!!!!!!!!!!
গত দু’দিন ধরেই ফেসবুকে যেন বিষাদের রোল উঠেছে,সবার এক কথা ভ্যাকেশন শেষ,সব ছেড়ে কলেজে যেতে হচ্ছে!আমার প্রায় সব ফ্রেন্ডই প্রেজেন্ট ক্যাডেট,তাতে আরো মন খারাপটা আরো বেড়েছে,সান্তনা দেবার কী নেই।
ভ্যাকেশন শুরুর আগের আনন্দ আর ভ্যাকেশনের শেষের আগের মন খারাপটা বোধহয় শ্বাশ্বত!সব কলেজের সিনিয়র জুনিয়র সবার সাথে আজকে কথা বলে দেখলাম মন খারাপ,অনেকের খুব বেশি না হলেও খারাপ!যখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম একদিন একদিন করে হিসেব করতাম ভ্যাকেশন শেষ হতে ক’দিন বাকি।সঙ্খ্যাটা নেমে যখন সাত এ এসে ঠেকত তখন অন্যরকম একটা আনন্দ হত,মাত্র এক সপ্তাহ!বাসায় এসে আম্মুকে জড়িয়ে ধরতাম।কিন্তু ভ্যাকেশন শেষে আম্মুর কাছে কেঁদেই ফেলতাম।এখন অনেক বছর পরেও সেটা বিবর্তিত হয়ে তীব্রতাটা কমেছে,কিন্তু নির্মুল হয়ে যায় নি!

থাক এসব! যেতে যখন হবেই কথা বাড়িয়ে লাভ কি???????

১৬ টি মন্তব্য : “ভ্যাকেশন শেষ!!!!!”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    শাহরিয়ার,কথা দাও কলেজে গিয়ে সিসিবির কথা ভুলবে না।ওখানে বাংলায় লিখতে সমস্যা হলে বাংলিশে লিখে সেন্ড করবে যা আমরা কেউ বাংলায় লিখে তোমার নামে পোস্ট করব।কলেজের টাটকা খবর,নতুন নতুন ফানগুলো অবশ্যি অবশ্যই এক ফাঁকে(পড়াশোনার ক্ষতি না করে) জানাবে।

    জবাব দিন
  2. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    ছুটি শেষ হওয়ার দিন ট্রেনে উঠার আগ পর্যন্ত আম্মুকে জড়িয়ে ধরে থাকা, ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে আমার হাতে আম্মুর চুমু খাওয়া কান্না, চোখের আড়ালে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে আম্মুর দিকে তাকিয়ে থাকা, তারপর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া এখনো চোখের উপর ভাসছে।
    আমাদের কলেজ বাস সিলেট স্টেষনে আসত আমাদের নিতে। আমাদের কলেজের বাউন্ডারি শুরু হত একটা পুকুর দিয়ে আর ওখানে লেখা ছিল সিলেট ক্যাডেট কলেজ। সেটা দেখার সাথে সাথে বুকের ভিতরে যে একটা মোচড় দিত এখনো সেটা দেয় যখন এয়ারপোর্ট ( ঢাকা ) টা চোখের সামনে আসে।

    জবাব দিন
  3. তৌহিদ (৯৫-০১)

    এই খারাপ লাগা দূর করার জন্য আমার একটা ছোট টেকনিক ছিল । জিনিস পত্র সব শেস মুহুর্তে গুছানোর জন্য রেখে দিতাম , এমন তারাহুরা বাজতো মন খারাপ হওয়ার সুযোগ নাই...... :)) :)) :))

    জবাব দিন
    • আর চলে আসার দিন আমার ঈদের মত আনন্দ লাগছিল। সত্যি কথা বললাম, মাইন্ড করলে কিছু করার নাই, কারণ স্পাই আর কলেজ অথরিটি এর জ্বালায় টুয়েলভ এর শেষ কটা দিন বিষের মত হয়ে গেছিল।
      কয়েকটা স্যারের চেহারা আর দেখতে হবে না এর চেয়ে বড় খুশি আর কি হতে পারে।

      কিন্তু ৪-৫ দিন পরে সেই যে খারাপ লাগা শুরু হল, তখন থেকে বুঝতে পারলাম, কলেজে থাকার সময় বুঝি নি যে কলেজে এত মজা হত।

      জবাব দিন
  4. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    এই বার তো মনে হয় থার্ড টার্ম, তাই না?
    এই টার্মে যত মজা হয়, পুরা বছর জুড়েও এত হয় কিনা সন্দেহ আছে...তার উপর ক্লাস ইলেভেন... 😀
    শাহরিয়ার, আমার তো রীতিমত হিংসা হচ্ছে... :((


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রবিন (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।