ভাবছো তোমায় ভুলে যাচ্ছি,ভুলতে পারা
সহজ নাকি?যদিও তোমার ইচ্ছাটা কি তাও তো জানিঃ
নিষ্কৃতি চাও,অন্য কারো কাছে যাতে পারমানেন্টলি
থাকতে পারো-বারে বারে “ভুলে যেও’’-এই কথাটা
ব’লে দেয়া!তোমার কি মত,তুমিই বলোঃ
ভোলা কি যায়?নাকি কেহ ভুলতে পারে-
ভুলে যাওয়ার কথা আজকে এতো করে ভাবছো কেন,
তোমায় কেন ভাবতে হচ্ছে এই এতোদিন গভীর খেলায়
মগ্ন থেকে-আজকে কেন নতুন করে ভাবতে হচ্ছে-
‘ভুলতে হবে’?এই এতোদিন পরে আমি এতোটা পথ
হেটে এসে আবার যে কোন চুলোয় যাবো,নতুন সে কোন
খানকি মাগীর দিকে আমি হাত বাড়াবো বলতে পারো?
খেলতে তোমার ভালো লাগে,বুঝতে পারি,
কিন্তু কারো জীবন নিয়ে হৃদয়হীনার মতো তমার
এ-কোন খেলা!কিংবা ধরোঃভুলতে আমি
নিজেই যে চাই,সত্যি কথা,কিন্তু আমি পারবো কেন?
টিকটকে নও,আমি তোমার স্পর্শকাতর পুচ্ছটি নই
সামান্যতেই পড়বো ঝ’রে-
ঝ’রে পড়ে ভুলের মাশুল হয়ে রইব,মর্মাহত?
আমিও জানি কী ক’রে বশ করতে হবে স্বৈরিণীকে,
জেনে শুনেই তোমার থেকে একফোঁটা বিষ পান করেছি,
অনেক গ্রাম ও নগর তুমি ধ্বংস করে
এবার ফাঁদে পা দিয়েছো!অনেক জীবন
নষ্ট করে এবার তুমি নামকরা এক
গুন্ডা যুবার হাতে পড়লে!যতই ভোলাও
যতই লোভাও তোমায় আমি ছাড়ছি না আর!
আজকে তোমায় স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি-
ভদ্র ঘরের ছেলে-ছোকরা ভুলতে পারে;
কিন্তু আমি ভদ্রতারও ধার ধারি না-উরু দেখে
ভুলে থাকার বয়স আমার পার হয়েছে!
তোমার ভীরু ভক্ত যারা,তাদের সামনে তোমায় আমি
ন্যাংটো করে ছেড়ে দিয়ে ভীষণ অপদস্ত করবো!
তোমার স্তবে,চাটুবাক্যে অর্ধজীবন ব্যয় করেছি
আজকে দ্যাখো,মঙ্গোলয়েড রক্তে আমার
খুন-খারাবির বান ডেকেছে-পাথর প্রতিম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
বিষন্ন এই চোখ দেখেছো?-খেলতে আমার
ভালোই লাগে,এই কথাটা আজকে তোমার
জেনে রাখা খুব প্রয়োজন-তোমার খেলা
দেখছি কেবলঃদেখেই যাবো সারাজীবন?
স্টপ প্লেয়িং-আর খেলা নয়-এবার শোন আলটিমেটামঃ
ভালোয়-ভালোয় এখন তুমি আমার ঘরে উঠবে এসে;
তা-না-হ’লে কাল সকালে তোমার খুনে হাত রাঙাবো।।
প্রেমিক পুরুষের হতাশাটুকু একেবারে পাল্পেবল। কিন্তু তাকে ছেড়ে চলে গেলো বলেই অভিশম্পাত আর গালাগালির আয়োজন রুচিবহির্ভূত মনে হয়।
এবং উরু দেখে আর ধার না ধারা এই প্রেমিকের প্রতি অনুকম্পা তৈরী হয়।
প্রেমহীনতাজনিত হিংসা খুবই বাস্তব, জানি।কিন্তু তাকে জাস্টিফাই করা যায়না বিরহের সর্বোচ্চ মাত্রা দিয়েও।
এবং শেষ দুটো বাক্যে যে সন্ত্রাস -- তাকে কিছুতেই কবিতার অনুষঙ্গ ভাবা আমার পক্ষে অন্তত সম্ভব নয়।
কিন্তু ভাইয়া দ্যাখেন,বাংলা কবিতায় এইটা তো নতুন না...টাইটেলটা দেখেন...রবীন্দ্রনাথও তো সেইম নামে লিখসে...ওইটাও তো এক ধরণের থ্রেট...এইখানে আমার কাছে অভিনব মনে হলো,বাকিদের মতো সে একটা স্মৃতি বুকে কইর্যা বেঁচে থাকবে...মাথায় করে রাখবে,লুতুপুতু করবে,দীর্ঘশ্বাস ছাড়বে... তা করেনি কিন্তু..মেনে নেয় নি...সে সরাসরি ...এই সন্ত্রাসটাও তো পৌরুষ..."এই এতোদিন গভীর খেলায় মগ্ন থাকার" ব্যাপারটা দেখুন...একটা চিটিংয়ের গল্প আছে...যাই হোক আমার কাছে ভালো লেগেছে প্রকাশভঙ্গিটা...কী সহজ করে চেয়ে ফেললো...একজন রফিক আজাদের সাথে মনে হয় মানিয়ে যায় কবিতাটা...ভাত দে হারামাজাদা বলে ফেললো না...এই রকম অধৈর্য...উনাদের জেনারেশনটাই তো অস্থির ছিল,তাইনা?
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
না, না স্মৃতি জড়িয়ে রেখে আহা উহু কান্না বা সেরকম পুতুপুতু ভাব কাব্যের কোন শর্ত নয় - যেমন নয় তার বিপরীতে খুনে হুমকি বা সেরকম কিছু। আমি কোন কিছু নির্দিষ্ট করে চাপিয়ে দেবারো বিপক্ষে।
একজন প্রত্যাখ্যাত (বা প্রতারিত) তরুণ ক্ষেপে গিয়ে রক্তপিপাসু হয়ে উঠতে পারে, প্রেম-ট্রেমে তেতো হয়ে গিয়ে ধর্ষক হয়ে উঠতে পারে এবং সেটাকেই তার সঠিক বলে মনে হতে পারে।কিন্তু অন্য অবস্থানে থাকা একজন মানুষ (পাঠক/দর্শক)-এর কাছে এটা অসুন্দর ঠেকতে পারে - এই যাকে 'প্রতারক' বলা হচ্ছে, যে কি না এই পুরুষটির সমস্ত 'দুর্ভাগ্যের' জন্যে দায়ী, তার চেয়েও বেশী অসুন্দর হয়ে গেছে পুরুষটি নিজে। মনে হচ্ছে এসব বোধ তার ভেতরে আগে থেকেই ছিলো, প্রেমের পলেস্তারাটি খসে গিয়ে তা প্রকটিত হলো মাত্র।প্রেমে/প্রেমহীনতায় ক্রোধ, হতাশা, গলা টিপে ধরার ইচ্ছে -- সব থাকে তো, পাশাপাশি, গলা জড়িয়ে।কিন্তু এসবের প্রকাশ ঘটে গেলে আমরা আর প্রেমকে খুঁজে পাইনা - সেখানে রক্ত, নখ, চুল এসব পড়ে থাকে। একবার অন্তত প্রেম যাকে ছুঁয়ে গেছে সে কি করে অমন সহিংস হতে পারে এ ভাবনা আমাদের বিহবল করে তোলে।
এবং সন্ত্রাস মাত্রই পৌরুষ নয়।আর 'ভাত দে হারামজাদা' নেহাত সন্ত্রাসনির্ভর নয়, ওটি ক্ষুধা-প্ররোচিত কবিতা।কাজেই সেই অস্থিরতার সংগে এটাকে এক করে দেখছিনা।
এসব একেবারেই আমার নিজস্ব মতামত - রবীন্দ্রনাথ রফিক আজাদ বা কেউ এমন লিখলেও পাল্টাবেনা। মতের মিল থাকতেই হবে এমন তো কথা নেই - তোমার কাজ লিখে যাওয়া, মতের তোয়াক্কা না করে। পাঠক পড়বে এবং ছাঁচাছোলা মন্তব্য দেবে - সেটা তার কাজ।শুভ লেখালেখি।
হক কথা!...তাও এই সব ফিলিংসকে কবিতা আশ্রয় দিবে না এটাও কেমন লাগে..আবেগটার চেয়ে কবিতাটাকে আমার জরুরী মনে হয়...মনে হলো এইরকম একটা ব্যাপার নিয়ে কী সুন্দর কবিতা লিখে ফেলল...btw একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন "কোলাভেরি ডি" কিংবা "চলে গেছো তাতে কি..." এই ধরণের গানকে কি আপনি স্বীকৃতি দেন?মাতোয়ালা রাইত কে কবিতা বলবেন?কিংবা শিল্প হতে হলে কে কেবল শুদ্ধবাদী হতে হবে এটা মনে করেন?আমি ভাবতাম জীবনের উপস্থাপনই শিল্প...সেই অর্থে এটাও তো কবিতা।
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
'মাতোয়ালা রাইত' আমার অন্যতম পছন্দের কবিতার একটি। গালিগালাজ থাকলেই কবিতা ব্রাত্য হবে কেন।
জীবনের উপস্থাপনই শিল্প -অকাট্য যুক্তি।তবু সব উপস্থাপন সবাইকে একইরকমভাবে উদ্দীপ্ত করেনা, অনেকসময় একটু নিভিয়েও দ্যায়। সেটা কি আরোপিত (একধরণের প্রত্যাশাজনিত) কোন ব্যাপার কি না তাও বুঝিনা।
'শুদ্ধবাদিতা'র দর্শনের কোন বিশ্বাস নেই আমার।খুব পেলব, মাখনলাগানো শব্দগুচ্ছও বরং চরম অশৈল্পিক (কিংবা গালি) হতে পারে কিন্তু।তেমন কিছুও বলছিনা। যে উচ্চকিত ঘৃণা বা সন্ত্রাসকে আমার কবিতা বলে মেনে নিতে কষ্ট হয়, তাকে অনায়াসে অনেকেই আত্মস্থ করে নিতে পারবে, অভিজ্ঞতা বা বোধের ঐক্য খুঁজে পাবে। কাজেই স্রেফ ব্যক্তিগত অনুভূতির বশবর্তী হয়ে শিল্পের সীমা/সংজ্ঞার বিচার করে ফেলতে পারিনা আমি। আমি পারি কেবল আমার পাঠপ্রতিক্রিয়া জানাতে।
'কোলাভেরি ডি' গানটাকে 'স্বীকৃতি' দেই কি না? নিশ্চয়ই, যতটুকু সে দাবী করে। এতে উচ্ছ্বাস আছে, ভানহীন একটা প্রকাশ আছে অনুভূতির। এমন কোন বিরাট স্থায়িত্ব দাবী করতে পারেনা এই গান, বুদ্বুদের মতোই মিলিয়ে গেছে ইতোমধ্যে। তবু, বুদ্বুদে শিল্প নেই, সৌন্দর্য নেই- একথা বলবে কোন্ হালায়। 😉
কবিতা সংক্ষিপ্ত রুপ নিশ্চয়ই আরও উপভোগ্য হতো।
কবিতার শিরোনামটা আমার কাছে একটু দুর্বোধ্য লেগেছে। একান্ত আমার অপারগতা সম্ভবত।
লেখালেখি চলতে থাকুক। :clap:
রফিক আজাদের এই কবিতাটা আমার খুব প্রিয়...এজন্য প্রিয় কবিতা!আর কয়েকটি সন্ধ্যার দখল...প্রতিদিন ইফতারের পর রুমে এসেই দেখতাম রফিক আজাদের শ্রেষ্ঠ কবিতা বইটা...এই কবিতাটা ভাল্লাগতো...পড়তাম খুব! এজন্য...আর কবিতাটার নাম 'রাহুর প্রেম' কেন আমি যতদূর বুঝেছি রাহু বা রাহুগ্রস্থ এটা দেখতে পারেন!
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
রবীন্দ্রনাথেরও এই নামে কবিতা আছে ...এজন্য মনে হয় 'রাহুর প্রেম' এ উদ্ধৃতি দেওয়া হইসে দুইপাশে!
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.