ড্রাফট সংরক্ষণ

(লেখাটার এই নামকরণ কেন করলাম কে জানে… নামের মতই পুরো লিখাটাই আবোল তাবোল লিখা, কীবোর্ডে অযথা খুটখাট শব্দ তোলা)

গতকাল রাত্রিতে বারবার ঘুম ভেঙ্গে গেলো, যতোবার ঘুমাই ততোবার একই স্বপ্ন হানা দেয়, আর ঘুমটা যায় ভেঙ্গে। স্বপ্নটা আজব কিসিমের, না ভয়ের, না সুখের, না হাসির। যদিও স্বপ্নে আমি বহুত কাদছিলাম কিন্তু… হু বরং ভরং বাদ দিয়ে বলি কি দেখলাম। দেখি যে আমার মা আমার ছোট বেলার সব খেলনা গাড়ীগুলো ফেলে দিয়েছে, আমি হন্য হয়ে খুজছি সেই গাড়ীগুলো কিন্তু কোথাও নেই, আমি চিৎকার করে কাদছি। প্রতিবার এখানে এসে ভেঙ্গে যায় স্বপ্ন। বারবার একই জিনিস দেখার মানেটা কি? হুমম…

আজকাল ছোটবেলার গাড়ীগুলো তো খুজি না বরং আজকাল আমার সব স্মৃতিগুলো খুজে বেড়াই। কে যেন সব কোথাও ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে প্রতিদিন একটা একটা করে…

“আমার ছোট ভাইটা কে প্রথম কোলে নেওয়া। কিম্বা তারও আগে আমাদের বাসার সামনে বিশাল ফাকা জায়গাটায় লুকোচুরি অথবা গোল্লাছুট খেলা। আমার প্রথম স্কুলের দিনটা। জীবনের প্রথম পরীক্ষায় সবার আগে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে আমার মা কে বলা ‘আমি প্রথম হয়েছি আমাকে এইবার প্রাইজ দাও'”।

এইগুলো নাহয় অনেক পুরান দিনের কথা ঝাপসা হয়ে নাহয় হারাতেই পারে কিন্তু নতুনগুলো?

ক্যাডেট কলেজে যাবার প্রথম দিন? একজন গাইড তো ছিল জাকির ভাই অন্যজন কে ছিল? আমাদের জুনিয়ররা যেদিন আসল আমি কার গাইড ছিলাম? কলেজ থেকে বের হলাম যেদিন, আমি কি কানসিলাম?

আচ্ছা ঢাকা ইউনির কথা কি কি মনে আছে?

প্রথম দিনের ক্লাসটার কথা তো মনে পড়ছে কিন্তু সেদিন কি ক্লাসটা হয়েছিল নাকি ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছিল? আমার প্রচন্ডভাবে একজনের প্রেমে পড়া, আজব কিভাবে আমাদের পরিচয় হলো তা মনে আসে না কেন? ঠিক যেমন কোথাও খুজে পাচ্ছিনা কি বলেছিল ও আমাকে যেদিন জানালো ‘ আমি ওর অসাধারণ একজন বন্ধু তার বেশী কিছু হবো না’। সেই বৈশাখে আমাদের বৃষ্টিতে ভিজা মনে পড়ে, যতোদিন না ঝাপসা হয়ে যায় বৃষ্টির জলে।

লিখাটা প্রচন্ড অগোছালো হয়ে যাচ্ছে। যতো বাড়াবো ততোই বাড়বে মনে হচ্ছে, হু…

আসলে এত্তো এত্তো স্মৃতি সব হারাচ্ছে আমি হিসাব করে উঠতে পারছি না আর। প্রতিদিন একটু একটু করে বয়স বাড়ছে। সেইদিন বউ কে বলছিলাম যে আমি চাকুরী করার সময় এখন থেকে প্রতিদিন ৩ ডলার করে জমাব একটা বাক্সে। আমি মারা যাবার পরে সে যেন ওই টাকা দিয়ে আমার দেহ দেশে নিয়ে যেতে পারে… সে বেশ রাগ করেছে কথাগুলো শুনে। দেখি লুকায়ে লুকায়ে জমাতে হবে। সময় এত্তো দ্রুত যায় কেন? তা নাহয় যাক কিন্তু স্মৃতিগুলো কে সাথে করেই বা নিয়ে যাচ্ছে কেন?

১,৯২২ বার দেখা হয়েছে

২০ টি মন্তব্য : “ড্রাফট সংরক্ষণ”

  1. রকিব (০১-০৭)

    দিলেন তো আউলাইয়া মাথাটা......

    সময় এত্তো দ্রুত যায় কেন? তা নাহয় যাক কিন্তু স্মৃতিগুলো কে সাথে করেই বা নিয়ে যাচ্ছে কেন?

    শেষ লাইনটা মাথায় ঢুকে গেছে।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. আদনান (১৯৯৭-২০০৩)

    "আমার মন কেমন করে,
    আমার মন কেমন করে..." - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    খেলনা ফালায় দেবার একটা ছুডুবেলার কাহিনী মনে পড়ল। আমি ছিলাম গাধা টাইপ কিড, আর আমার এক ফ্রেন্ড ছিল রাকিব (এখনো ফ্রেন্ড, সিসিআর) মহা চাল্লু। সে একদিন আমাকে বললঃ চল একটা মজার খেলা খেলি, খেলনাগুলি জানালা দিয়ে ফেলি পড়ার পর হেব্বি একটা আওয়াজ হবে। আমি এতই ছাগল ছিলাম যে রাজি হয়ে গেলাম। আমার খেলনা, আমি নিজেই (সাথে ও তো আছেই) ফেলতে লাগলাম জানালা দিয়ে। পতনের আওয়াজ শুনলাম আর একটি উদ্ভট আনন্দের হাসি হাসতে লাগলাম। তখন তো আমি বুঝিনাই কি করলাম!

    পরে যখন সেগুলা উপরে আনা হল, তাদের ছাতু অবস্থা দেখে আমার কেমন দুঃখ লেগেছিল সেটা তো আর বলে দেওয়া লাগবে না।

    জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    শুন এইটা একটা টিপস, শুটকি ভর্তা খাও, খুব ঝাল কইরা মাখা মাখা......। সব ঠিক হইয়া যাইব।

    এনিওয়ে, তোমার রাখাল কই, পোষ্টাইবো কইছিলা কবে যেন, খবরই নাই দেখি সেটার।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  4. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    সামি ভাইয়ের লেখাটা পড়তে দেরি হিয়ে গেলো।
    এই অগোছালো লেখাটাই ভালো লাগলো খুব। :thumbup:


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  5. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    সামি ভাই লেখা এইরকম মন খারাপ করে দেওয়া কেন। এতদিন পরে একটা লেখা দিলেন। কোন ভাবেই মেলানো যাচ্ছে না আপনিই সেই বান্ধা গরু। ভাবীর নতুন কোন মেসেজ নাই ?

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : টিটো রহমান (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।