৬ বছর বা ২২০৩ দিন – ১২তম পর্ব

আকাশে মেঘের ঘনঘটা, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য বৃষ্টির অদম্য ইচ্ছা। মেঘের গর্জন শুনেই কিনা সেদিন মনে মনে ঠিক করেছিলাম আজকে বৃষ্টি হলে বেশ করে ভিজে গোসল করব। আমার এই ইচ্ছা নাকি প্রকৃতির কারণেই সেদিন ঝুম করে বৃষ্টি হয়েছিল সেদিন বোধহয়।

আমি তখন একাদশ শ্রেণীর ক্যাডেট। সদ্য ৭ দিনের শিক্ষাসফর শেষ করে ফিরেছি কলেজের গন্ডিময় যান্ত্রিক জীবনযাত্রায়। মনের মধ্যে তখনও উড়ুউড়ু ভাব। এর মধ্যে সেদিনের ঝুমঝুম বৃষ্টি যেন আমার মনের চাঞ্চল্যতা আরও বাড়িয়ে দিল। বৃষ্টিতে ভেজার এই সূবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার মত কারণ সেদিন ছিল না। এইসব ভাবতে ভাবতে পুরনো হাফপ্যান্ট পরে অর্ধনগ্ন হয়ে সিনিয়র ব্লকের টয়লেটের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। আমার মত আনোয়ারেরও বুঝি সেদিন বৃষ্টিতে ভেজার সখ জেগেছিল। দুজনে একসাথে চললাম বর্ষাকালের আনন্দ উপভোগ করতে।

আমরা যেহেতু ওমর ফারুকে বা তিনতলার বাসিন্দা ছিলাম সেহেতু টয়লেটের পাশ দিয়ে সানসিট আর তিতুমীর হাউস( ২য় তলা ) ও জাহাঙ্গীর হাউসের( ১ম তলা) গ্রিল বেয়ে নিচে নেমে নামাটাকেই সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী পথ হিসেবে বিবেচনা করলাম আমরা(কারণ তখন শুধু আমাদের হাউসেই কোন গ্রিল ছিল না আর হাউসের প্রবেশপথে ছিল লোহার কলাপসিবল গেট)।

সেভাবেই আমাদের নিচে নামা হল। তারপর বেশ করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বর্ষাকালটাকে উপভোগ করলাম। কিন্তু সবার ভাগ্য তো আর সবসময় পক্ষে থাকে না। আমাদের দুজনের কেউই লক্ষ্য করিনি কলেজ হাসপাতাল থেকে বুলবুল ম্যাডাম আমাদেরকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। হঠাৎ করেই কলেজ মাইক্রোবাসের আওয়াজ এল কানে। ম্যাডাম গাড়ির সামনের যাত্রীসিট থেকে আমাদের ডাকতে লাগলেন। এতে করে আমাদের বৃষ্টিতে ভেজা বাধা পেল এবং আমরা সেখান থেকে পালানোর জন্য পথ খুজতে লাগলাম।

আমাদের সেদিন সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছিল ম্যাডামকে দেখে পালিয়ে যাওয়া। কারণ ম্যাডাম তো আমাদেরকে আগেই দেখে ফেলেছিলেন। এখন বলি কেন ভুল হয়েছিল, কারণ আমরা দুজনেই পালিয়ে গিয়েছিলাম যে পথে এসেছিলাম মানে সেই গ্রিল আর সানসিট বেয়ে। পরে আমরা এই ভুলের মাশুলও দিয়েছিলাম। আমাদের দুজনের বাবা-মাকে ডাকা হয়েছিল এবং তারা আমাদের বৃষ্টিতে ভেজা উপলক্ষ্যে ১০০০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিয়েছিল। জরিমানা কারণ ছিল গ্রিল বেয়ে ওঠা-নামা করে বৃষ্টিতে ভেজা……………………( চলতে থাকবে )

১,০০৬ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “৬ বছর বা ২২০৩ দিন – ১২তম পর্ব”

  1. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    চলুক। তবে লেখার শব্দ আর বাক্যগুলো প্রাসংগিক রাখার চেষ্টা করো। নইলে ভাব অন্যরকম মানে প্রকাশ করে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জুলফিকার (২০০০-২০০৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।