৬ বছর বা ২২০৩ দিন – ১০ম পর্ব

সালাম সকল বড় ও ছোট ভাইদের। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আছি মোটামুটি(কথার কথা, আসলে জটিল)।আমাদের এই ব্লগটিতে আমি মোটেই নিয়মিত নই। তার প্রধান কারণ আমার প্রবাসে বসবাস। প্রবাসে চাইলেই যখন-তখন যা ইচ্ছা করা যায় না। যাইহোক মূলকথা হচ্ছে আমি দেশের ছেলে দেশে ফিরে এসেছি। আমার খুব ইচ্ছা এবার ব্লগটিতে নিয়মিত লেখা চালিয়ে যাওয়া। এ ব্যাপারে আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমার একান্ত কাম্য(পুরানো কাসুন্দি)।

আমি আমার ক্যাডেট স্মৃতি ছাড়া অন্য স্মৃতি রোমান্থন করতে চাই না(আপাতত)। আজকে ব্লগটা খুলেই জীন বিষয়ক কোন লেখার জীন কথাটা মাথায় ঢুকে গেল(আমার জীন দেখা,ইফতেখার ভাই)। আর এর মানেই হচ্ছে ভুতের কাহিনী(বা ভয় দেখানোর কাহিনী)।

তখন আমরা ৮ম শ্রেণীর ক্যাডেট।নয়া নয়া ৭ম শ্রেণীর ক্যাডেটদের কলেজে আমদানি করা হইছে। অতএব সবার নজরও তাদের দিকে। তো জুনিয়র ব্লকে তাদেরকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। এরমধ্যে ছোট ছোট ছেলেগুলোকে যদি ভয় দেখানো হয় তাহলে তাদের যে করুণ অবস্থা হবে তা আমরা সবাই বুঝতে পারি।

তখন ৩১১নং রুমের বাসিন্দা ফরহাদ(৯ম),আশিক(৯ম),ফেরদৌস(৮ম) আর আমি। ঠিক করা হল সেভেনের একটারে ভয় দেখানো হবে।আমরা ৪ জনে মিলে পরিকল্পনা করলাম যে মরা লাশের ভয় দেখানো হবে পোলাটারে। তো পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাকে সাদা বেডশীট দিয়ে পেচিয়ে লাশের মত বানানো হল। আর আমার গলার কাছে বেডশীটের ভেতরে একটি বাতিওয়ালা অ্যালার্ম ঘড়ির বাতি জালিয়ে দেয়া হল। ব্যাস জিন্দা লাশ প্রস্তুত।

এবার ভয় দেখানোর পালা। ঠিক করা হয়েছিল সেভেনটারে বলা হবে আমাদের রুম থেকে পানির বোতল আনার জন্য। রুমের বাতি নেভানো থাকবে। কথামত পোলাটা দরজার বাইরে হাজির। রুমে ঢোকার অনুমতি চাওয়ায় ব্যর্থ হয়ে রুমে সরাসরি ঢুকে গেল। যেহেতু অন্ধকারে সে পানির বোতলটা খুজে পাবে না তাই তার রুমের বাতিটা জালানো উচিত ছিল। কিন্তু সে তা না করে অন্ধকারেই খুজতে লাগলো। খুজতে খুজতে চেয়ারের উপর বোতলটা পেয়ে গেল। চেয়ারটা ছিল একদম জিন্দা লাশের(আমার) সামনে। আর লাশটি ছিল রুমের শেষ জানালার সামনে। তো সেভেনটা চেয়ার থেকে বোতল নিয়ে ওঠার সময় জালানা দিয়ে আসা আবছা আলোয় জিন্দা লাশের অবয়ব দেখতে পেল(তার উপর যে লাশের মুখে আলো জলে)। দেখে পোলাটা বোতল-টোতল ফেলে আব্বা-আম্মারে ডাকতে ডাকতে রুম থেকে দিল ছুট।রুমের বাইরে গিয়ে তার কান্নার খবরটা পরে পেয়েছিলাম। আমি তো এদিকে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরায়ে ফেললাম।

যাইহোক আপনাদের সবার এখন একটাই জানার ইচ্ছা কে ছিল এই বান্দা (সেভেনটা বা পোলাটা)। এই পোলাটা ছিল আমারই ক্যান্ডিডেট ২৭তম ইনটেকের মশিউর। এখন ও অবশ্য অনেক বড় হয়ে গেছে এবং বোধহয় আগের মত আর ভয় পায় না।………….(চলতে থাকবে)

১,১০২ বার দেখা হয়েছে

১১ টি মন্তব্য : “৬ বছর বা ২২০৩ দিন – ১০ম পর্ব”

  1. মশিউর (২০০২-২০০৮)

    আমাদের ক্লাস এইটের ভাইয়ারা একবার ভয় দেখানোর ট্রাই করছিলো । কিন্তু অভিনয় যা ছিলো তাতে ভয় না পাইয়া পোলাপান হাস্তে হাস্তে পইড়া গেসিলো । :))

    জবাব দিন
  2. তৌফিক (২০০২-২০০৮)

    আমাদের কলেজের(সি সি আর) এর জাহাঙ্গীর হাউসের পাশে একটা কাঠাল গাছ আছে। সেটা নিয়ে নতুন ক্যাডেটদের ভয় দেখানো একটা Tradition...
    কিছুদিন আগে গিয়েও জুনিয়রদের ভয় দেখিয়েছি............
    :awesome: :awesome:
    😛 😛 =)) =)) =)) =))

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মশিউর (২০০২-২০০৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।