৬ বছর বা ২২০৩ দিন – ৭ম পর্ব

আর সবার আমার এই ব্লগ পড়ে কেমন লাগছে তা জানিনা তবে আমার লিখতে খুবই ভাল লাগছে। প্রতিটি ব্লগ লিখতে বসে যখন পুরনো স্মৃ্তিগুলো লিয়ে চিন্তা করি সেই অনুভূতিটাই অন্যরকম। মনে হই এই সেদিনই কলেজে ঢুকলাম আর আজ প্রায় ১০ বছর হতে চলল। তো স্বভাবতই ক্লাস সেভেনের ক্যাডেট হিসেবে আমরা দৌড়ের উপরে থাকতাম। মোটামুটি সবাই আমাদেরকে পাঙানি দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকত। আর আমাদের শুরু হল এই পাঙানি কিভাবে বাঁচা যায় তা নিয়ে লুকোচুরি খেলা। যেমন রাতে ঘুমানোর সময় পিটির পোষাক পরেই রাতে ঘুমানো, নভিসেস ড্রিলের প্র্যাকটিসে মসজিদের টয়লেটে বসে ডজ মারা, ক্লাসে স্যার-ম্যাডামদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন আসনে ঘুমানো, ডাইনিং হলে খাবারের সময় যে খাবার খেতে পারতাম না সেটা সুযোগে টেবিলের নিচে ফেলে দেওয়া, লাঞ্চের পর পাঙানির থেকে বাঁচার জন্য টয়লেটে গিয়ে ঘন্টাখানেক কাটানো কিংবা যোহরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে গিয়ে অনেক বেশি সময় নিয়ে সুন্নত নামাজ আদায় করা, গেমসের সময় পিটি সু যেন নোংরা না হয় সেজন্য না খেলে এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকা, মাগরিবের নামাজ শেষে এক দৌড়ে হাউসে এসে রুমলিডার ভাইয়া রুমে ঢোকার আগেই প্রেপের পোষাক পরে সবার আগে ফল-ইনে পৌছানো, প্রেপ চলাকালীন সময় প্রেপ লিডারকে ফাঁকি দিয়ে ঘুমানো, নাইট প্রেপের পর হাউসে এসে লাইটস আউটের আগ পর্যন্ত বাথরুমে কাপড় ধোয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। আর কিছু মারাত্মক ডজ ছিল যেমন বিনা কানণে সিক রিপোর্ট করা (আর সিক রিপোর্ট করে যদি দু-চারদিন অব্যহতি মিলত তাহলে তাকে আর পায় কে), মাগরিবের নামাজের পর প্রেপে যাওয়ার ফল-ইনে না গিয়ে ক্রস মেরে একাডেমিক ব্লকে গিয়ে চুপ করে ঘাপটি মেরে বসে থাকা, অতিরিক্ত পানি দিয়ে গোসল করে জ্বর বাঁধিয়ে হাসপাতালে বেডসিক হতে পারলে তো পোয়াবারো।

কিন্তু এই যে নানা রকমভাবে আমরা ডজ মারার প্রচেষ্টা করতাম, যদি কোনভাবে ধরা খেতাম তাহলে ঐদিনের জন্য আমাদের অবস্থা হালুয়া-কেরোসিন হয়ে যেত। তারপরও পরের দিন থেকে আবারও সেই ডজ মারার সুযোগের অপেক্ষায় থাকতাম। এখন মনে হয় তখন পাঙানির হাত থেকে বাঁচার কত দুর্ভোগই না আমাদের পোহাতে হয়েছে। তবে একথা সত্যি যে ডজ মারা উপলক্ষে আমরা অন্তত আমাদের বিশাল ব্রেইনের কিছুটা অংশ ব্যাবহার করতে সফল হয়েছিলাম।…………………….(চলতে থাকবে)

৯৯৩ বার দেখা হয়েছে

১১ টি মন্তব্য : “৬ বছর বা ২২০৩ দিন – ৭ম পর্ব”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    হেড কাউন্ট হইতো না?কেলাস সেভেনে তো এইগুলা অকল্পনীয় ছিলো আমাগো কাছে অকল্পনীয় কিছু ছাড়া)।এই লেখার প্রতিটা লাইন নিয়া আলাদা করে ১০/১২ টা ব্লগ লেখা যায়...

    জবাব দিন
  2. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    ভালোই লাগছে, চলুক। তবে পুরো লেখাটা প্যারা-আকারে ফর্মেট করে দিলে পড়তে সুবিধা হয়।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  3. আছিব (২০০০-২০০৬)

    :(( জুলু রে,তুই এত স্মৃতিমাখা জিনিস গুলা এক লাইনে শেষ কইরা দিতেছস দেইখ্যা আমার মাথায় এগুলা ইলাবোরেট করার পোকা কিলবিল করতাছে 😡 ।কিন্তুক বুয়েটের ধারালো বাঁশের ভয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছি 🙁 আর তোর এই হাল্কার উপর ঝাপসা ডজিং পর্ব গুলা পড়তেছি ~x( ,গরম হইয়া যাইতেছি,শ-শব্দ। x-( একটু টাইম নিয়ে ২-৩ দিন রেস্ট নিয়া লেখ বাপ,তাও একটু ডিটেইলস কর, :chup: ।আনোয়ার :-B আমার দোস্ত।হেতে কইছে তুই চরম ডজার ছিলি,এরি প্রমাণ দিতাছস,চ-শব্দ x-( 😡

    জবাব দিন
  4. আহমদ (৮৮-৯৪)

    :boss: :boss:

    আর সবার আমার এই ব্লগ পড়ে কেমন লাগছে তা জানিনা তবে আমার লিখতে খুবই ভাল লাগছে। প্রতিটি ব্লগ লিখতে বসে যখন পুরনো স্মৃ্তিগুলো লিয়ে চিন্তা করি সেই অনুভূতিটাই অন্যরকম।


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  5. আনোয়ার (০০-০৬)

    শালা তোরে দিয়াও কোনো লিখা হবে না x-( x-(
    আর আমার নিজের কথা তো বাদই দিলাম :bash: :bash: :bash: সবাই ঠিকই বলছে প্রতিটা লাইন দিয়ে একেকটা পোস্ট হয়ে যাবে। আমার হাতে টাইম কম, তুই আমাদের বিখ্যাত গ্রিল বেয়ে উঠা নামা নিয়ে কোনো পোস্ট দে। ভাল হবে...
    শর্ট হইলেও এটা ভালো হইছে। :thumbup:

    চালায় যা........... :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মুহিব্বুল (১৯৯৬-২০০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।