এশিয়ান হাইওয়ে ও বাংলাদেশ

এটি একটি তথ্যনির্ভর খুব সাধারন রচনা। যথাসম্ভব তথ্য নির্ভুল রাখার চেষ্টা করেছি। ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হলে আমাকে অবহিত করলে খুশি হব।

ভুমিকা = ১৯৫৯ সালে The Asian Land Transport and Infrastructure (ALTID) এবং Asian Highway পরিকল্পনার স্রস্টা Economic Commission for Asian and the Far East (ECAFE) নির্বাহী সম্পাদক উ ন্যুন। এশিয়ার দেশ সমুহের মাঝে বাধা ও বিরতিহিন যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য এশিয়ান হাইওয়ের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। ১৯৬০ সালে ECAFE যা বর্তমানে ESCAP নামে পরিচিত এশিয়ান হাইওয়ের সাথে trans Asian railway স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করে। ESCAP ১৯৯২ সালে পরিকল্পনা কে আর সম্প্রসারিত করে তারা এশিয়ান হাইওয়ের সাথে এশিয়ান রেলওয়েকে সম্পৃক্ত করে এউরোপ ও এশিয়ার মাঝে বাধা, বিরতিহীন যোগাযোগ বযবস্থা স্থাপন করবে।

পটভুমি = বর্তমান এশিয়ান হাইওয়ে ধারনাটি অনেক প্রাচীন। এশিয়ান হাইওয়ে কে মুলত silk route এর পুনর্জাগরন বা জন্ম বলা যেতে পারে। silk route এর মাঝে southern silk route আমাদের জন্য অধিক গুরুত্বপুর্ন। খৃষ্ঠপুর্ব ২০০০ ইউনান প্রদেশের মাঝ দিয়ে ভারত ও চীনের সাথে সড়ক যোগাযোগের জন্য পথ ছিলো। একেই বলা হয় southern silk route।

কিছু ঐতিহাসিক নথিপত্র অনুসারে সম্রাট অশোকা ইউনান প্রদেশে ভ্রমণ করেন। এখানে তিনি চৈনিক রাজকন্যা চেংমেং কুইকে বিবাহ করেন। চীন সম্রাট ইউনান প্রদেশ উপঢৌকন হিসাবে অশোকাকে প্রদান করেন। অশোকার উত্তসুরীরা ৯০২ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ইউনান প্রদেশ শাসন করেন। মূলতঃ অশোকার সময়ই ভারত ও ইউনানের মাঝে সংযোগ ছিল।

আবার চৈনিক নথিপত্র অনুযায়ী খৃষ্টপূর্ব ২০০০ এ ভারত ও চীনের সিচুয়ান প্রদেশের মাঝে বস্ত্র পরিবহন করা হত। পরবর্তীতে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মার্ক পোলো southern west silk route আবিষ্কার করেন। সপ্তম শতাব্দীতে চীন সম্রাটের পৃষ্ঠপোষকতায় পর্যটক হিউয়েন সাং পশ্চিমা যাত্রাপথে উত্তর পূর্ব ভারত ও চীনের মাঝে নতুন পথ আবিষ্কার করেন।

পরবর্তীতে silk route বার্মা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। যাকে Stilwell road, Stilwell folly , বা Ledo road বলে। ১৯৪৫ সালে ২য় বিশ্বযুসশে মার্কিন ও চৈনিক যৌথ বাহিনী কমান্ডার Stilwell জাপানকে বার্মায় প্রতিহত করার জন্য তাদের সেনাবাহিনী এবং অস্ত্র ও রসদ পরিবহনের জন্য এই রাস্তা ব্যবহার ও পুনর্নিমান করেন বলে এই পথের নামকরণ করা হয় Stilwell road।

স্টিলওয়েল বা লেডো সড়ক

স্টিলোয়েল বা লেডো দড়ক


বাংলাদেশের এশিয়ান হাইওয়ে = বাংলাদেশের উপর দিয়ে ছলে যাবে এ এইচ ১ এবং এ এইচ ২ এছাড়াও সাব রিজয়োনাল এ এইচ ৪১। তবে বাংলাদেশ প্রস্তাব করে এ এইচ কে সম্প্রসারিত করে কুমিল্লা হতে টেকনাফ হয়ে মায়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত। তবে এই সংশোধনী শুধুমাত্র আলোচিত হবে স্বাক্ষর করার পর। তাই যখন এশিয়ান হাইওয়ে নিয়ে আলোচনা হবে তখন মায়ানমারের মত স্বাক্ষরকারী দেশকে একে সংশোধিত প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য রাজি করাতে হবে।
এসকাপ প্রস্তাবিত বাংলাদেশের এশিয়ান হাইওয়ে রোড

এসকাপ প্রস্তাবিত বাংলাদেশের এশিয়ান হাইওয়ে রোড

ভারত কর্তৃক সংশোধিত প্রস্তাব এবং বাংলাদেশে তার প্রভাব = ভারত তার এ এইচ ৪৮ এবং এ এইচ ২ সংশোধন করার প্রস্তাব দেয়। এবং ভারতীয় পার্লামেন্টে তা গৃহিত হয়। AHN কমিটি এই সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করে। এ এইচ ৪৮ রোড ভুটানের উপর দিয়ে প্রধান হাইওয়েতে যুক্ত হবে। এ এইচ ২ যা বাংলাদেশ ও নেপাল হয়ে প্রধান হাইওয়েতে যুক্ত হবে তা ভারত ফুলবাড়ি পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার প্রস্তাব দেয়। ভুটান ভারতের পক্ষ হতে এ এইচ ৪৮ পরিবর্তনে প্রস্তাব করে। আপাত দৃষ্টিতে ভারতের সংশোধনে বাংলাদেশের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই।

বাংলাদেশের সংশোধনী প্রস্তাব = ESCAP কর্তৃক প্রস্তাবিত রুট ভারত হতে বাংলাদেশে এসে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করে।এতে ভারত স্বয়ংক্রীয়ভাবেই ট্রানজিট সুবিধা পাবে। তাই খালেদা জিয়া সরকার সংশোধনী প্রস্তাব করে রুটকে মায়ানমার চীন হয়ে ভিয়েতনাম পর্যন্ত। বাংলাদেশ সরকার মনে করে এতে বাংলাদেশ অধিক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। ESCAP বাংলাদেশের জন্য ২টি রুট এ,এইচ১ এবং এ,এইচ২ প্রস্তাব করেছে। এ,এইচ ১ বেনাপোল (ভারতীয় সীমান্ত)- যশোহর- নড়াইল- ভাটিয়া পাড়া- মাওয়া- ঢাকা- কাচপুর- সরাইল- সিলেট- তামাবিল(ভারতীয় সীমান্ত)। এ রুটের দুরত্ব ৪৯৫ কিলোমিটার। এ,এইচ ২ বাংলাবান্ধা(ভারতীয় সীমান্ত)- পঞ্চগড়- রংপুর- বগুরা- জমুনা সেতু- টাঙ্গাইল- ঢাকা- কাচপুর- সরাইল- সিলেট- তামাবিল(ভারতীয় সীমান্ত)। এ রুটের দৈর্ঘ্য ৮০৫ কিলোমিটার। আওয়ামীলীগ সরকারের সময় প্রস্তাবিত ৭৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এইচ ৪১ যা যশোহর- বোনাপাড়া- হাটি কুমরুল- কাচপুর- কুমিল্লা- চট্টগ্রাম- কক্সবাজার- টেকনাফ প্রস্তাব করা হয়েছিল। জোট সরকার এই সাব রিজিয়োনাল রুটকে অগ্রাধিকার দিয়ে তাকে এ,এইচ ১ হিসাবে প্রস্তাব করা হয়। বর্তয়াম্ন সরকার এই রুটকেই অধিক বাস্তবসম্মত মনে করে। কিন্তু জোট সরকারের মতোই বর্তমান সরকারও অনুস্বাক্ষর না করায় সংশোধনীর এ প্রস্তাবও সরাসরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।

বাংলাদেশকে এখন সংশোধনী প্রস্তাব দিতে হলে ৩য় দেশের মাধ্যমে দিতে হবে। সরকার এ বিষয়ে মিয়ানমারকে অনুরোধ জানাবে। সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য স্বাক্ষরকৃত ২/৩ দেশের ভোট প্রয়োজন হবে।

হাইওয়ে সংশোধনে ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া = ভারত বলে বাংলাদেশের তথাকথিত হাইওয়ে সংশোধনের প্রস্তাব অযৌক্তিক। তারা বলে বাংলাদেশ ভারতকে এশিয়ান হাইওয়ে থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত করার জন্য এই অযৌক্তিক পরিবর্তন করতে চায়। তারা ইউ,এন প্রতিনিধি রহমতুল্লাহের বরাত দিয়ে বলে, “বাংলাদেশের প্রস্তাবিত পরিবর্তন এশিয়ান হাইওয়ের মূল নক্সাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং এশিয়ান হাইওয়ের লক্ষ্যকে ব্যাহত করবে”।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা = বাংলাদেশ এককভাবে সর্বাধিক রপ্তানি আয় করে যুক্তরাষ্ট্র হতে। বাংলাদেশ তার মোট রপ্তানি আয়ের ২২ শতাংশ আঞ্চলিক বাণিজ্য হতে পায়। ২০০৪ সালের তথ্য অনুযায়ী ৪১৩৯।৫৩ মিলিয়ন ডলার আয় করে। বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য হল ভাত। বাংলাদেশ চাল উৎপাদন স্বয়ংসম্পুর্ন নয় তাই চাল বাংলাদেশকে ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ড হতে আমদানী করতে হয়। হাইওয়ে ব্যবহার করলে চালের আমদানী খরচ অনেক কম হবে। মানুষ অনেক কম মূল্য চাল ক্রয় করতে পারবে। অর্থাৎ হাইওয়ে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। আর হাইওয়েতে যুক্ত না হওয়া বাংলাদেশের জন্য হতে পারে অর্থনৈতিক অবনময়নের কারণ।

বাংলাদেশের এশিয়ান হাইওয়ে ও বর্তমান বাস্তবতা = বাংলাদেশের সড়ক সমূহ এশিয়ান হাইওয়েতে সংযুক্ত হওয়ার উপযোগী নয়। বাংলাদেশের সড়ক সমুহের এক্সেল লোড ৯ টন। কিন্তু অবৈধভাবে ১৫ হতে ২০ টন মালামাল বহন করায় সড়কগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতীয় চিত্র পুরো ভিন্ন। ইউ,এন এসকাপ মিশন এপ্রিলে প্রস্তাবিত এ,এইচ ১ ও এ,এইচ ২ সড়ক গুলো পরিদর্শন করে ৪ লেন বিশিষ্ট ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নত করার সুপারিশ করেছিল। সেই লক্ষে সিলেট- তামাবিল- জাফলং অংশে ৫৮ কিমি উন্নয়ন করা হয়েছে ১৮ মিলয়ন ডলার ব্যয় করে। কাচপুর ব্রীজ- ভৈরব- নরসিংদি- সিলেট অংশে ২৩০ কিমি রাস্তার উন্নয়ন কাজ আংশিক হয়েছে। টাঙ্গাইল জয়দেবপুর অংশে ৬৪ কিমি কাযে ব্যয় হয়ছে ৩৫ মিলিয়ন ডলার।৫৬ কিমি দীর্ঘ বাংলাবান্ধা ও পঞ্চগড় সড়কে ব্যয় হবে ২১ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ চুক্তিতে স্বাক্ষর না করায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সমূহ এতে অর্থায়নে এগিয়ে আসছেনা।

বাংলাদেশের করণীয় = বর্তমানে চুক্তিটি যে অবস্থায় আছে সে অবস্থাতেই স্বাক্ষর করতে হবে। এবং স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনীর জন্য প্রস্তাব দিতে হবে। চুক্তিতে স্বাক্ষর নাকরলে বাংলাদেশ এ অঞ্চলে একমাত্র নেতিবাচক মনভাবাপন্ন দেশ হিসাবে বিবেচিত হবে। যা শুধু দেশের ভাবমুর্তিকে ক্ষুণ্ণ করবেনা সেই সাথে চী্‌ন, থাইল্যান্ড, মায়ানমার সহ প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমুহের সাথে সম্পর্কের অবনময়ন ঘটাতে পারে। ব্যাংককে এ,এইচ,এন এর বৈঠকে রুটগুলো চূড়ান্ত করা হলেও ঢাকা রাজি নাহলে ভারত বা অন্ন কোনো দেশের যান বাহন বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। আবার চুক্তিটির বাইরে থাকায় চুক্তির কোনো অংশ পরিবর্তন বা সংশোধনের পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এশিয়ান হাইওয়ে সম্পর্কিত যে কোনো ধরনের সাহায্য হতেও বাংলাদেশ বঞ্চিত থাকছে।

এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক

এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক

পরিশেষ = ২০০৫ সালে এশিয়ার আভ্যন্তরীন বানিজ্যের পরিমাণ মাত্র ১২ শতাংশ। কাযাকিস্থান তার মোট রপ্তানি আয়ের ৭৭ শতাংশ আর চীন তার মোট রপ্তানি আয়ের ৭।৭ শতাংশ। এ হতে বোঝা যায় আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃহৎ রাষ্ট্র হতে ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গুলো অধিক আয় করে। অর্থাৎ এশিয়ান হাইওয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষুদ্র দেশ গুলোর জনয অধিক লাভজনক হবে। তবে এশিয়ান হাইওয়ে প্রতিষ্ঠার পর বিশ্বায়নের যে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হবে তাতে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের মত ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর নিজেদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে বিশ্বায়নে টিকে থাকার মত শক্তিশালী করতে হবে।

তথ্যসুত্র=

Rediscovering the southern silk route by Rehman Sobhan
Bangladesh enter the Asian highway by Asraf Khan
The Effect of Road Upgrading the Overland Trade in Asia by Ziyodullo PARPIEV and Jamshid SODIKOV
ASIAN HIGHWAY text Agreement

৩,৬৮৫ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “এশিয়ান হাইওয়ে ও বাংলাদেশ”

  1. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগে থেকে তেমন কিছু জানা ছিল না। পড়ে তো মনে হচ্ছে, আসলেই সংশোধন ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেলা উচিত। কিন্তু স্বাক্ষর করার পর সংশোধন করতে আলাদা কোন অসুবিধা হবে না?
    একটা বিষয়ে তো তাহলে দেখা যাচ্ছে জোট সরকার ও আওয়ামী সরকারের মিল আছে। জোট সরকার বেনাপোল থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যেই রুটের প্রস্তাব করেছিল লীগ সরকার সেটাকেই মায়ানমার হয়ে ভিয়েতনাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাচ্ছে। তাহলে কি বেনাপোল থেকে কাঁচপুর হয়ে ভারতের তামাবিল পর্যন্ত সড়কটা বাতিল হয়ে যাবে?

    বেশ কয়েকটা টাইপিং মিস্টেক চোখে পড়লো। একবার রিভিশন দিলেই ঠিক হয়ে যাবে আশাকরি।

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    আরো একটা সময়োপযোগী পোস্ট :hatsoff: :hatsoff:

    ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশের যত শীঘ্র সম্ভব চুক্তিতে সই করে তারপর প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ নেয়া, আর আমি যতটুকু বুঝেছি তাতে এর ফলে বাংলাদেশ লাভবানই হবে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে আমারও ভীষণ পছন্দ ও আগ্রহের বিষয়। এটা নিয়ে আমি নিজে নব্বইয়ের দশকে কাজ করেছি। বেশ কিছু প্রতিবেদন লিখেছি। এসকাপে এই প্রকল্পের প্রধান জনাব রহমতউল্লাহ'র সঙ্গে এ নিয়ে সে সময় একাধিকবার কথা হয়েছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছি। আমি তখন থেকেই এই প্রকল্পের পক্ষে।

    তখনই আমরা এই প্রকল্পে সই করতে পারতাম। কিন্তু বাংলাদেশের একশ্রেনীর রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ভারতবিরোধী রাজনীতির বলি হয়েছে প্রকল্পটি। আর সেটা করতে গিয়ে আমরা নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের নীতি নিয়েছি। আমরা নিজেদের সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেই যাচ্ছি! যেমন প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল থেকে আমরা নিজেদের সরিয়ে রেখেছিলাম!!

    বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের চারপাশে ভারত। আমরা চাইলে প্রতিবেশী বদলাতে পারবো না। ভারতের সঙ্গেই আমাদের বসবাস করতে হবে। একদিকে মিয়ানমার আছে। কাছে নেপাল, ভুটান, চীন, থাইল্যান্ড আছে। এদের সবাইকে নিয়ে আমাদের চলতে হবে। নিজেদের উন্মুক্ত করতে হবে। আর এর মাধ্যমে আমাদের সর্বোচ্চ সুবিধা-লাভ আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনীতির সঙ্গে অর্থনৈতিক লাভালাভকে যুক্ত না করলে আমরাই ডুববো। ভারতের ক্ষতি হবে সামান্যই।

    ধন্যবাদ মাসুদ বিষয়টা তুলে ধরার জন্য। আশা করি সময় সময় এ বিষয়ে অগ্রগতির খবর দিয়ে যাবে।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  4. শাওন (৯৫-০১)

    ব্যাক্তিগতভাবে আমি এই হাইওয়ের পক্ষে। কারণ ছোট্ট একটা দেশের এত্তোগুলো মানুষের জন্য অর্থনৈতিক চিন্তাটা ই আগে করা উচিত। সানা ভাইয়ের সঙ্গে একমত কারণ আমাদের কিছু অল্প বিদ্যাধর সরকার প্রধান আর রাজনীতিবিদদের কারণে আমরা যেভাবে সাইবার অপটিক থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম।এবারো তাই হলো। আমাদের আসলে সোজা জিনিস হাত ঘুরিয়ে না খেলে চলেনা।

    খন একটা বড় জিনিস হলো দেরী করে মুল্য বোঝার কারণে আমদের না আবার অনেক ছাড় দিতে হয়।??!!


    ধন্যবাদান্তে,
    মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
    প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১

    ["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]

    জবাব দিন
  5. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    আরে দূর, এই রকম একটা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে এত সময় কেন নেয় বুঝি না। আমরা প্লেনে আর জাহাজে যোগাযোগ করছি, এবার সুবিধার জন্য সড়কে আর রেলে যাচ্ছি, এইতো।

    আজাইরা সব।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জাহিদ (১৯৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।