জাতি অভিমান কি ক্ষয়িষ্ণূ হচ্ছে

এটা ছোট একটি লেখা। তবুও লিখতে হল। কাল রাতে ভারতীয় হাই কমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের সামনে যে কথা গুলো বললেন তা আমার মত একজন সাধারণ রাজনীতির ছাত্রের কাছেই কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মনে হয়েছে। একজন সাধারণ বাঙ্গালী হিসাবেও জাতি অভিমান থাকলে এর প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। আমাদের সংবাদ মাধ্যম গুলো যে সব রিপোর্টারদের কুটনৈতিকদের কাভারেজ করার জন্য পাঠান তাদের কেন কূটনৈতিক আইন সম্পর্কে জ্ঞান থাকবে না। আর তারা যে বিষয়ে কাভার করতে যাচ্ছেন সেই বিষয় সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞান থাকবে না কেন। আমার মনে হচ্ছিল তৎক্ষণাৎ আমাদের সাংবাদিকদের ভারতীয় হাই কমিশনারকে বয়কট বা সকল প্রকার কাভার করা হতে বিরত থাকা উচিত ছিল। তাহলে ভারতীয় হাই কমিশনার বুঝতে পারত আমাদের সরকার দুর্বলতা দেখাতে পারে। কিন্তু আমরা বাঙ্গালী কখনই দুর্বল না।

আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ এখন নিশ্চুপ এবং তারা নিশ্চুপই থাকবে। তারা শুধু সভা সেমিনার করে টাকা কামাই করার ধান্দায় থাকে। আর সরকার তার মাথা ব্যথা যে কোথায় সেটা আমি এখনও বুজতে পারছিনা। দেখি সামনের দিনে সরকারের পক্ষ হতে পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীকে সতর্ক করা হয় কিনা। তবে আমার মনে হয় সরকার এটা হজম করে ফেলবে। বিরোধী দলের ভূমিকা দেখার জন্যও আমি অপেক্ষা করছি। বি এন পি অনেক সময় ভারত বিদ্বেষী কথা বলে যার বেশীর ভাগ মিথ্যা। এবার দেখি বি এন পি সত্য নিয়ে সরকারকে ভারতীয় হাই কমিশনার কে সতর্ক করতে বাধ্য করে কিনা।

অনেক কথা বললাম কিন্তু পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী কী বলেছেন তাই বলা হয়নি। তিনি বলেন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা কোনো কিছু না বুঝেই শুধু মাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রচারণা চালাচ্ছেন।

কি করে একজন কূটনৈতিক ব্যক্তি এমন কথা বলতে পারেন। আর তার পাশে দাঁড়ানো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের কর্তা ব্যক্তির চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন। আর সাংবাদিকরাও মুচকি হেসে একটি কর্তব্য সফল ভাবে শেষ করলাম ভেবে আনন্দে আটখানা হন ভেবে পাইনা।অনেক লিখলাম থাক……………………………পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীকে নিয়ে লিখতে লিখতে মনে হল টিপাইমুখ নিয়ে কিছু লিখি। পরবর্তী লেখা টিপাইমুখ নিয়েই লিখব।
~x(
http://www.ittefaq.com/content/2009/06/04/news0929.htm

১,৪৩৫ বার দেখা হয়েছে

১৪ টি মন্তব্য : “জাতি অভিমান কি ক্ষয়িষ্ণূ হচ্ছে”

  1. ভাইয়া,

    অনেকদিন পর আমি মুখ খুলতে পারি--এইজাতীয় একটা পোস্ট পড়লাম। আমার এইরকম অনেক কিছু চোখে পড়ে। বন্ধুমহলে যদি এইরকম কিছু বলি, সাথে সাথে অধিকাংশ (৯০%) জন আমাকে দেখায় ওই যে ওই আমলে (বিএনপি - আওয়ামী লীগ যেটা সে পছন্দ করে তার বিপরীত) ওইটা হইছিলো... ওইটা হইছিলো...

    কিন্তু সত্য জিনিসটার প্রতিবাদ আর হয়না...

    শুধু এই জিনিসটা সত্য-- আমরা হয়ত কিছু না বলতেই পছন্দ করি। অন্য দেশের কূটনীতিকরা আমাদের জাতীয় ইস্যূতে অত্যন্ত ধৃষ্টতা দেখিয়ে কথা বলে যাবে...
    আর আমরা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে দেখবো...

    জাতি হিসেবে এর চাইতে লজ্জার আর কী হতে পারে? এর চাইতে অসহায়ত্ব-ই বা আর কী হতে পারে??
    ...... ... ... আমার জানা নাই

    জবাব দিন
  2. আমাদের আফসোসের আরও বড় কারণ আছে। আমাদের যে দুই ম্যাডাম আছেন তাদের একজন রাজাকারদের সাপোর্ট দেন আর আরেকজন সাপোর্ট দেন ইন্ডিয়াকে। সবগুলাই আসলে এক।

    জবাব দিন
  3. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    Article 55

    Respect for the laws and regulations of the receiving State

    1.Without prejudice to their privileges and immunities, it is the duty of all persons enjoying such
    privileges and immunities to respect the laws and regulations of the receiving State. They also have a
    duty not to interfere in the internal affairs of the State.

    ভিয়েনা কনভেনশন বলে যে একটা জিনিস আছে এটা মনে হয় অধিকাংশ সাংবাদিক এবং আমাদের দেশের কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানেন না বা জেনেও না জানার ভান করেন।আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি,আমআদের ভেতরে বিদেশীদের পা চাটা মনোভাব এবং সব কিছুতে নিজের দেশকে হেলাফেলা করার অভ্যাসটা প্রবল ভাবেই দেখা যায়।প্রোফাইল অফ বাংলাদেশ ইকোনমি পড়াতে গিয়ে সেকেন্ড ইয়ারে প্রফেসর আলী রশিদ যখন আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কোনটি-তখন অন্তত ৬০ ভাগ উত্তর ছিল বিদেশী ঋণ ও সাহায্য,অথচ সত্যি হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর অবদান নগন্য (৫% এর কম)বলা চলে।বিশ্বের যে কোন সভ্য দেশে এর চেয়ে অনেক হালকা মাপের কথা বলেও অনেক কূটনীতিক "পারসোনা নন গ্রেটা" বা অবাঞ্ছিত হিসেবে বিতাড়িত হয়েছেন এমন নজির কম নয়।ভারতীয় কূটনীতিক (আমেরিকায় নিযুক্ত এম্বাসাডর)রনেন সেন ভারত-আমেরিকা নিউক্লিয়ার চুক্তি সম্পর্কিত তাঁর নিজের দেশের এক সাংবাদিকের মন্তব্যকে "হেডলেস চিকেন" এর মত বিক্ষিপ্ত বলে মন্তব্য করায় তাঁকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়েছিল আর ভিনদেশী কূটনীতিক হয়েও পিনাকবাবু এ জাতীয় মন্তব্য করেও পার পেয়ে গেলেন।

    হে মোর দুর্ভাগা দেশ!

    জবাব দিন
    • বিশ্বের যে কোন সভ্য দেশে এর চেয়ে অনেক হালকা মাপের কথা বলেও অনেক কূটনীতিক “পারসোনা নন গ্রেটা” বা অবাঞ্ছিত হিসেবে বিতাড়িত হয়েছেন এমন নজির কম নয়
      আর ভিনদেশী কূটনীতিক হয়েও পিনাকবাবু এ জাতীয় মন্তব্য করেও পার পেয়ে গেলেন।

      হে মোর দুর্ভাগা দেশ!

      🙁 🙁

      আমার মুখে কোন ভাষা নেই 😮 😮

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : স্বপ্নচারী (১৯৯২-১৯৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।