৭ জানুয়ারি,২০০৫

১.
বুধবার দিনটা আমাদের রুটিন খুবই পেইনফুল। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস। ক্লাস থেকে বের হবার পর আর কিছু করার এনার্জি থাকে না। এমনি ঘুমাই,বা মুভি দেখি,বা গেম খেলি। আজকে কিছুই করতে ইচ্ছা হচ্ছিল না। বসে বসে কার্ড গেম খেলসিলাম। এমন সময় হঠাৎ করে স্ক্রিনের ডানের কোনায় টাইম & ডেটে চোখ গেল। ৬ জানুয়ারি,ডেটটা কেন জানি অনেক পরিচিত লাগসিল। তারপর মনে পড়ল, পাঁচ বছর আগে, ৭ জানুয়ারির একটা ঘটনা। এই দিনটিতে আমাদের ব্যাচের উপর দিয়ে এক ভয়ংকর ঝড় গেসিল। সেটা বলার আগে একটু ভুমিকা দেয়া দরকার।
২.
২০০৪ সালে আমাদের কলেজে নতুন ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে জয়েন করলেন আবু সাঈদ বিশ্বাস। এর আগে প্রসন্ন কুমার পাল ছিলেন আমাদের ভিপি।প্রিন্সিপাল ছিলেন ফায়জুল হাসান স্যার। তাদের আমলে আরসিসির পোলাপান অনেক আরামে ছিল। অথরিটি মোটামুটি ম্যানাজেবল ছিল। খুব মারাত্বক ফল্ট না করলে এক্সট্রা ড্রিলের উপর দিয়েই পার পেয়ে যেতাম।
সাঈদ বিশ্বাস আসার পর সব কিসু চেঞ্জ হয়ে গেল। সব ফল্ট এর জন্য একই শাস্তি, জরিমানা। আমার মনে আছে, এসএসসির পর কলেজে আসার পর প্রথম দিনেই সুধু পিটিতে আর ডাইনিং এ লেট হবার জন্য আমাদের ব্যাচ প্রায় ৭-৮০০০ টাকা জরিমানা দিসিল। আর কাউকে যদি টাইট দিতে হত,তাহলে তার প্যারেন্টস কে ডেকে জঘন্য ব্যবহার করে উলটা পালটা কথা বলে একাকার করে দেয়া হত। খালিদ হাউসের ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জনের প্যারেন্টস কল হইসিল।
সাঈদ বিশ্বাস স্যাডিস্ট টাইপ ছিল। স্টুডেন্টদের মারাটা উনি খুব এনজয় করতেন। তার একবার হাতে ফ্রাকচারটাইপ হইসিল। হাত দিয়ে মারতে পারেন নাই বলে আমাদের শামস কে তিনি হ্যান্ডস ডাউন করে ক্রমাগত লাথি মারসিলেন। আমরা টয়লেটে গিয়া টাইম নস্ট করি, এই জন্য তিনি প্রেপ টাইমে টয়লেট পারমানেন্টলি বন্ধ করে দিসিলেন। তাকে আমরা জিজ্ঞাসা করসিলাম,তাহলে প্রেপ টাইমে ক্যাডেটরা কই টয়লেট করবে? তিনি তার মাথার টুপি খুলে আমাদের বল্লেন,এতই যদি হাগা চাপে,তাইলে আমার টুপির মধ্যে হাগো!!!

সাঈদ বিশ্বাস এর লিংক ভাল ছিল। খুবি কম সময়ের মধ্যে তিনি হাউস মাস্টার থেকে ভিপি এবং প্রিন্সিপাল হইসিলেন। উনি কলেজে আসার পর যে সব স্যার একটু রেসিস্টিভ ছিলেন,যারা ক্যাডেটদের হয়ে কথা বলতেন, তাদের খুব তাড়াতাড়ি বদলি হয়ে গেল। তার বদলে এমন সব স্যার ম্যাডাম আনা হল,যারা সারা দিন সাঈদ বিশ্বাসকে তেলাতে ব্যস্ত। আমরা মোটামুটি ভাল চাপের মধ্যে পড়ে গেলাম। তারপরও আমাদের ব্যাচ মোটামুটি ড্যামকেয়ার ছিলাম। আমরা আমাদের মত এনজয় করসিলাম। এর মধ্যে আমাদের ক্লাস ১১ এর লং এক্সকারশন চলে আসল।
৩.
লং এক্সকারশনে সাধারনত প্রিন্সিপাল আর এ্ডজুটেন্ট যান। কিন্তু আমাদের সময় কোন একটা ঝামেলার কারনে ভিপি আর মেডিকেল অফিসার( এবং তাদের পরিবার) গেলেন আমাদের সাথে।
ঝামেলার শুরু হল প্রথম দিন থেকেই। টি ব্রেকে আমাদের বাস থামান হত পেট্রল পাম্পের পাশে, যাতে আমরা বাইরের কিছু কিনতে না পারি।খাবারের মান ও বেশ খারাপ ছিল। আমাদের বাসের কন্ডিশন খারাপ ছিল, পথের মধ্যে বেশ কয়েকবার বাস থেমে যায়। ড্রাইভার স্যারদের বলসিলেন, কিসু টাকা খরচ করে বাস ঠিক করালে ভাল হয়। কিন্তু স্যাররা বললেন,একেবারে কলেজে গিয়ে ঠিক কর। স্যাররা নিজেরা ঘুরতেন মাইক্রো তে।কক্সবাজার থেকে ঢাকা আসার সময় আমাদের ফয়’স লেক আর সোনারগাঁতে আউটিং দেবার কথা ছিল।কিন্তু বাস চট্টগ্রামে আসার আগেই নস্ট হয়ে যায়। আমরা বাসে বসে থাকি।ইতোমধ্যে স্যাররা মাইক্রো নিয়ে ওইসব জায়গা ঘুরে ফেলেছেন। তো এইসব মিলিয়ে সবাই মোটামুটি ক্ষিপ্ত।
আমরা যেহেতু অন্যান্য জায়গায় আউটিং বেশি পাই নি তাই ভাবসিলাম ঢাকাতে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করব। আর আমাদের কলেজের এক ট্রেডিশন ছিল, সব ব্যাচ লং এক্সকারশন থেকে মিস্টি কিনে এনে হাউসের সবাইকে খাওয়ায়। তো, সবকিছু করার প্লান ছিল ঢাকায় এসে।
৪.
৭ জানুয়ারি
ঢাকায় আমাদের বাস পউছে দুপুর ২টায় পিলখানায়। এবং স্যাররা আমাদের আউটিং দিলেন ১ ঘন্টার। এমনিতেই সব কিছু মিলিয়ে আমাদের মেজাজ চরম খারাপ,তার উপর মাত্র ১ ঘন্টা আউটিং পেয়ে মাথা পুরা গরম হয়ে গেল। আমরা ডিসিশন নিলাম, রাত ১০টার আগে ফিরব না।
যারা আবু সাঈদ বিশ্বাসকে পেয়েছেন তারা জানেন, তার বিরুধ্যে এই সিদ্ধান্ত পুরা আত্মহত্যার সমান। কিন্তু আমরা ভাবলাম, সাঈদ বিশ্বাস রে সিটিএন। কি আর করবে। সবাই মিলে গেলে কিছু করতে পারবে না।
যেই ভাবা সেই কাজ। আমরা কয়েক বন্ধু মিলে গেলাম আতিকের বাসায় মোহাম্মদপুরে। সবাই যার যার বাসা বা আত্মিয়ের বাসায় গেল। আমার বন্ধু পাভেল তার বোনের বিয়ে খাবার জন্য টাঙ্গাইল চলে গেল। আমরা মোটামুটি ভালই মজা করলাম। সবাই অনেক কেনাকাটা করল,নিজের জন্য,আত্মীয়দের জন্য।মিস্টি কিনলাম সব মিলিয়ে প্রায় ৭-৮০০০ টাকার। এরপর রাত ৯টার দিকে ফিরে চল্লাম পিলখানার দিকে।

৫.
পিলখানায় ঢোকার পথে বিডিআর গার্ডরা আমাদের বললেন,মামা,আল্লার নাম নিয়া ঢুকেন।আমরা জিগাইলাম,ক্যান কি হইসে? উনারা বললেন,গেলেই বুঝবেন।
গেলাম। গিয়ে সবাইকে ফলইন করানো হল।যার পকেটে যত টাকা ছিল,সব জমা নেয়া হল। ঢাকা থেকে যত কাপড়চোপড় কেনা হইসে,তাও জমা দেয়া হল।আমাদের কেনা মিস্টি বিডিআরের পুকুরে ফেলে দেয়া হল।।এরপর যখন বাসে উঠতে যাব, দেখি আমাদের ভিপি স্যার আর মেডিকেল অফিসার ডাকতেছেন। গেলাম।হ্যান্ডস ডাউন হলাম। এরপর যে মার খেলাম,কলেজ লাইফএ কোন সিনিয়রের কাছেও এত মার খাই নাই।হ্যান্ডস ডাউন হয়ে মনে হয় ৩০ সেকেন্ড ছিলাম, তার মধ্যে মিনিমাম ৫০ টা বাড়ি খাইসি। পা থেকে মাথা পর্যন্ত কোন জায়গা বাদ যায় নাই। মার খেয়ে যখন বাসে উঠলাম,মাথা টলতেসে। মনে হচ্ছিল ধপাস করে পড়ে যাব। উঠে দেখলাম, আমার আগে যারা আসছে তাদের অবস্থাও খারাপ।সবাইকে অমানুষিক মার দেয়া হল। ওইদিন আমার মার খেয়ে জ্বর চলে আসছিল। আমি,বাশার,কাইউম, রকিব, আবিব, আরিফ ছিলাম জেপি।আমাদের পরে আবার তলব পড়ল। ভাবলাম,আরেক দফা মার বোধহয় খেয়ে গেলাম। মার খেলাম না। বাট আমাদের ডেকে উনি আমাদের এপুলেট পুরা ছিড়ে ফেললেন। তারপর এপুলেট মাটিতে ফেলে সেগুলার উপর লাফাতে থাকলেন(!?!)।
আমাদের সবাইকে নিয়ে বাস রওনা দিল ১০টায় । পাভেল তখন আসে নাই। ওকে রেখেই বাস ছেড়ে দিল। কলেজে পৌছালাম রাত ৪টার সময়।আমাদের যেতে দেয়া হল না। শীতের মধ্যে ফলইন করান হল।সবার লাগেজ খুলে চেক করা হল। আরেক দফা সিজ হল। তারপর সব কাপড়চোপড় নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হল।প্রায় ৪০,০০০ টাকার কাপড় পুড়ানো হল।
ফাড়া তখন কাটে নাই। এমনি ৬-৭ দিন অনেক লাফালাফি করসি। ঘুম হয় নাই মোটেই। তার উপর প্রচন্ড মার খাইসি। দাড়ায়ে থাকতে পারতেসি না। কিন্ত আমাদের ছাড়া হল না। ফলইন করে রাত ৪ টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত একভাবে দাড়ায়ে থাকলাম।তারপর আমাদের যেতে দেয়া হল।
পাভেল আসল পরদিন সকালে।আমরা ভাবসিলাম,বেটা তো শিওর কলেজ আউট। কিন্তু ওকেও মার দিয়েই ঢুকান হল।
এরপর ও আরো অনেক কাহিনি হইসিল। কিন্তু আমরা একসাথে ৫৩ জন মিলে কাজটা করসিলাম বলে আর খুব বেশি কিছু হয় নাই। যদি এক গ্রুপ বিট্রে করত,তাহলে প্রব্লেম ছিল। বাকিদের ঘাড়ে পুরা দোষ চাপিয়ে ওদের অবস্থা খারাপ করে দেয়া হত।বাট ওইদিন আমরা ইউনাটেড ছিলাম বলেই বেচে গেসলাম। এই ঘটনার জন্যই ৭ জানুয়ারি আমার ওয়ান অফ দ্য মোস্ট মেমরেবল ডে’স।
(সিসিবি তে এইটা আমার প্রথম পোস্ট।ফানি কিছু লিখতে চাইসিলাম। কিন্তু লিখতে বসে ফানি কিছু বের হল না।বুঝলাম, সাঈদ বিশ্বাস লোকটাকে আমি এখনো অতটাই অপছন্দ করি। প্রথম লেখাটাই নেগেটিভ হবার জন্য দুঃখিত।আশা করি ভবিষ্যতে আপনাদের কোন হাসির ঘটনা উপহার দিব। )

৯,৫১৯ বার দেখা হয়েছে

৯৯ টি মন্তব্য : “৭ জানুয়ারি,২০০৫”

  1. সামি হক (৯০-৯৬)

    তোমাদের এস্কারসনের ঘটনা শুনে খুব খারাপ লাগলো। কলেজে কড়াকড়ি থাকবে কিন্তু তা নিয়ে বাড়াবাড়ি থাকলে বড়ই বিপদজনক। আমাদের কলেজ লাইফ ও ফালাফালা করে দিয়েছিল এক এ্যডজুটেন্ট। এস্কারসনে ঢাকায় আউটিং ছিল, দেরী করে আসার জন্য পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে আমাদের হ্যান্ডস ডাউন করে রাখছিল মানুষজন জড়ো হয়ে তা দেখেছিল। তবে তোমরা যেই বাসটাকে পুরানো পেয়েছিল, সেই বাস কিনার পর আমরা প্রথম ব্যাচ যারা এস্কারসনে গিয়েছিলাম নতুন বাসে চড়ে। আলমগীর ভাই ঢাকা চিটাগাং রোডে সোহাগ, এস আলমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাস চালায়েছিল। 😀 😀

    জবাব দিন
  2. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    বিকৃত রুচির এইসব মানুষগুলোর কারণে ক্যাডেট কলেজের বদনাম হয়-ভাল ছাত্রও ক্যাডেট কলেজে গিয়ে বখে যায় মাঝে মাঝে।ভাই তোমাদের তুলনায় আমরা তো স্বর্গে ছিলাম!! খুব,খুব,খুব বেশি খারাপ লাগছে ঘটনাটা পড়ে।৭ দিনের এক্সকারশন ক্যাডেট তথা সারা জীবনের স্মরনীয় ঘটনাগুলোর একটি-সেটা এত বিচ্ছিরিভাবে হয়েছে দেখে খুব খারাপ লাগছে।আমার মনে হয় এ ধরণের ঘটনাগুলোর প্রতিবাদ করার সময় এসেছে ক্যাডেট কলেজ সিস্টেমে।আমরা এক্স ক্যাডেটরা কি কিছু করতে পারি?কারো কোন পরামর্শ?

    জবাব দিন
  3. আদনান (১৯৯৪-২০০০)

    তোমাদের প্রিন্সিপালকে আমরা পেয়েছিলাম হাউস মাস্টার হিসেবে । উনাকে আমার কখনো ভাল লাগেনাই । আমাদের ইলেভেনে পাইছিলেন বলে হয়তো এতো স্যাডিস্ট কিছু করতে পারেন নাই । কলেজের স্যার দের সবার চাইল্ড সাইকোলোজি পড়া উচিত । অনেক সময়ই উনারা বাড়াবাড়ি করেন । তোমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা পড়ে খারাপই লাগছে । আমাদের এ্যাডজুটেন্ট ও জ্বালাইছিল তবে এতটা না ।

    জবাব দিন
  4. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    সিসিবিতে স্বাগতম আজহার। আমার ধারনা ছিল যে আমি আমার জুনিয়রদের প্রচুর যন্ত্রনা দিয়েছি। কিন্তু ওইদিন বিশু পাভেলকে যে মার দিয়েছিল তারপর আমার নিজেকে ফেরেশতা প্রকৃতির মনে হয়েছিল।

    বিশুকে নিয়ে সবারই মনে হয় কিছু না কিছু খারাপ স্মৃতি আছে। আমি একবার ডে প্রেপে লেট করায় প্রায় ২০০ মিটারের এক সার্কেল(একাডেমির সামনের সার্কেলটা) ৪২ বার চক্কর দেয়াইছিল। পরেরদিন আবারও লেট করি(কিসের যেন লেজ?) এবং এবার চক্করের সংখ্যা ৪৫।

    জবাব দিন
  5. আহমদ (৮৮-৯৪)

    বলার কিছুই নেই। আমি নিজেও একজন শিক্ষক। আমার লজ্জা লাগছে। আমি আমার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায়ই ক্যাডেট কলেজের গল্প বলে থাকি। কিন্তু এধরেনের ঘটনাগুলো আমি এড়িয়ে যাই। কারন বলতে লজ্জা লাগে, পাছে নিজের ক্যাডেট হবার দর্প-চূর্ণ হয়ে যায়। এধনের স্যাডিস্ট টাইপের শিক্ষক আমার জীবনেও আমি পেয়েছি। আসলে সেটা ক্যাডেট কলেজ হোক আর অন্য যেখানেই হোক স্যাডিস্ট টাইপ মানুষদের শিক্ষক হওয়া ঠিক না। এতে করে শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। আর, সবচেয়ে বড় কথা হল ক্যাডেট কলেজের মত যায়গায় বাবা-মায়ের দায়িত্ব যে মানুষগুলোর হাতে, তারাই যদি এমন হন, তাহলে ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে আগামী ক্যাডেট প্রজন্ম একটা নেগেটিভ ধারনা বহন করবে।


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  6. আন্দালিব (৯৬-০২)

    আমরা ঝিনাইদহে সাঈদ বিশ্বাস স্যারকে অল্পের জন্যে মিস করেছি। উনি সম্ভবত আমাদের কলেজে ঢোকার কিছুদিন আগেই বদলি হয়ে যান। তখন সিনিয়রদের মুখে শুনেছি, অন্য কোনো রাগী বা কঠোর স্যারের সাথে তুলনায় সবসময় সাঈদ বিশ্বাসের কথা চলে আসতো যে তার মতো হইতে পারে নাই আলোচ্য স্যার।

    কিছু কিছু স্যার আমরাও পেয়েছি যাদের মন-মানসিকতা ছাত্র পড়ানো দূরে থাক মনুষ্য সমাজে চলাচলের জন্যেই ফিট না। সেখানে দিনরাত আমাদের ক্লোজ-কনট্যাক্টে থেকে তারা নানারকম কাহিনীই করতেন। নাম উহ্য রেখে আরেকজন স্যারের কথা বলতে পারি যার স্পেশালিটি ছিলো ক্যাডেট টার্ন-আউট করানো। উনি যে কলেজেই যেতেন, সেখানে প্রতিব্যাচেই তার রোষানলে পড়ে কেউ না কেউ টার্ন-আউট হয়ে যেত। বেনিফিট অফ ডাউট দেয়া, ফিউচারের কথা চিন্তা করে ছাড় দেয়া তো দূরে থাক, টার্ন-আউটের আগে প্যারেন্টস কল করা হলে তিনি সেখানে যাচ্ছেতাই কথা বলতেন।

    সৌভাগ্যক্রমে, তিনি আমাদের ব্যাচের কাউকে টার্ন আউট করতে পারেন নাই। মজার ব্যাপার, তিনিও অনেক ইনফ্লুয়েনশিয়াল ছিলেন। পরে শুনেছি খুব তাড়াতাড়িই ভিপি, প্রিন্সিপ্যাল হয়ে গেছেন (অন্য কলেজের)।

    এই একটা বিষয়ে সংশোধন আনা খুবই জরুরি।

    তোমার প্রথম পোস্ট হিসেবে লেখাটা খুব ভালো হয়েছে। এরকমভাবে লিখতে থাকো। আর চেষ্টা করো এই ধরনের নেগেটিভিটি মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে। স্মৃতি কেবল স্মৃতি হয়েই থাকুক, আর কষ্টের উৎস না হক। নাহলে শেষমেশ সাঈদ বিশ্বাসের মতো মানুষগুলোই জিতে যায়।

    জবাব দিন
  7. তানভীর (৯৪-০০)

    ক্লাস ইলেভেনের এক্সকারশনের দিনগুলা হচ্ছে কলেজ জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতি। এটা তোমাদের জন্য এতটা বীভৎস হয়ে উঠবে চিন্তা করাটাও অসম্ভব।
    খুব খারাপ লাগল লেখাটা পড়ে।

    ও হ্যাঁ, ব্লগে স্বাগতম আজহার। 🙂

    জবাব দিন
  8. সাব্বির (৯৫-০১)

    এই স্যারকে বেশ কিছু দিন পেয়েছি। তবে আমাদের সাথে এত টা খারাপ ব্যবহার করেনি 😮
    অ ট স্যারের বড় ছেলে আমাদের ইমেডিয়েট জুনিয়ার ব্যাচের ছিল :grr:

    জবাব দিন
  9. সামিয়া (৯৯-০৫)

    এই টাইপ পেইনগুলাকে কলেজ থেকে স্ট্রেইট বের করে দেয়া উচিৎ। ক্যাডেটদের বদলে ইনাদের কলেজ আউট করা উচিৎ। আল্লাহ বাঁচাইসে এই ধরণের কোন পিস আমরা পাইনি। আমার টিচারদের নিয়ে আমার যেরকম স্মৃতি...এখনও সুযোগ পেলে আমি জান দিয়ে দিব।

    ব্লগে স্বাগতম ভাইয়া। নিয়মিত লিখে যেও। 🙂

    জবাব দিন
  10. জাহিদ (১৯৯৯-২০০৫)
    এরপর যে মার খেলাম,কলেজ লাইফএ কোন সিনিয়রের কাছেও এত মার খাই নাই।

    পরের দিনের কথা লিখিস নাই কেন?? সারা দিন যে হকি গ্রাউন্ডে বসে থাকলি।

    বাট ওইদিন আমরা ইউনাটেড ছিলাম বলেই বেচে গেসলাম।

    :thumbup: :thumbup:

    জবাব দিন
  11. মাহমুদ (১৯৯৮-২০০৪)

    ক্লাস ৮ থেকে ১২'এর প্রথম দিক পর্যন্ত পাইছি,so বুঝতেই পারছ? 🙂 🙂
    অবিশ্বাস্য হলেও সত্য!তার মধ্যে এখন কিছু পরিবর্তন আসছে।He's JGCC Principle now.
    JGCC ক্লাস ১১ শিক্ষাসফরে BMA,BNA'র পাশাপাশি BAF Base Zahur এ আসছিল,আমি ছিলাম Liason Officer. Medical Officer+Adjutant Capt Sharmin আমারে বলল যে,সে এখন খুবই ভাল but মাঝে মাঝে আফসোস করে বলে : আগে Boy's Cadet College গুলিতে থাকতে যা পারতাম,এখন তা পারি না!

    জবাব দিন
  12. আজহার (২০০০-২০০৬)

    সবাইকে থাঙ্কু। :shy:
    জাহিদ ভাই,ফোকাসটা মেইনলি ৭ জানুয়ারির উপর ছিল,তাই অনেক ডিটেইলস বাদ পরসে।
    তবে এই ঘটনা আমাদের ব্যাচের উপর অনেক ইফেক্ট ফেলসিল। আমাদের মেন্টালিটিতে বড় চেঞ্জ আসছিল। অন্য ১০টা ক্লাস ১২ এর চেয়ে আমরা পুরা আলাদা ছিলাম। হাউস ফিলিংস,কলেজ ফিলিংস এইসব জিনিস সেসময় আমাদের মধ্যে ছিল না বললেই চলে। ইভেন কলেজ থেকে বের হবার দিন সবাই অনেক কান্নাকাটি করে। আমার কাছে মনে হইসিল, ঝামেলা থেকে বাচলাম। সুধু ফ্রেন্ডদের জন্য খারাপ লাগসিল।

    জবাব দিন
  13. আরাফাত (২০০০-০৬)

    আজহার কিছু ডেটা দিতে ভুলে গেছে সেগুলা দিয়ে দিচ্ছি।
    ১।আমাদের পেটানোর জন্য নিউ মার্কেট থেকে বেত কিনেছিলো এইলোক।কতগুলো কিনছিলো মনে নাই।তবে মোর দেন এনাফ ছিল।এ বাদে বিডিআর এর গাছ এর ডাল তো ছিলো ই।
    ২।আমাদের শুধু ডাল দিয়ে পেটানো হয়নি।আবু সাইয়ীদ ও তার চামচারা লাথি দিতে দিতে আমাদের কয়েকজন কে বাস এর নিচে ঢুকিয়ে ফেলেছিল।যে যা পারছে তাই দিয়ে মারছে।শুধু ৩য় আর ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা কাঁদছে আমাদের অবস্থা দেখে।
    ৩।কলেজের সবার জন্য আমাদের কেনা সকল মিস্টি আচার পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছিল।শুনেছি কিছু ষ্টাফ লাউঞ্জ এ গিয়েছিল (স্যারদের জন্য কতটুকু সত্যি জানি না)। আমাদের কেনা পারসোনাল জিনিসপত্র যেমন কাপড় আর অন্য কিছু যা কলেজে ব্যবহৃত হয় না তা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল।
    ৪।মার এর চোটে বাস এ আসার সময় জ্বর আসছিলো। সারারাত জ্বর অবস্থায় জার্নি করছি।সেই জ্বর অবস্থায় ৭ দিন ঘুম ছাড়া আমাদের স্টেটমেন্ট নেবার জন্য আমাদের মাঠে সকাল ৮-১২ পর্যন্ত দাঁড়ায় রাখছিলো।আমরা সেদিন দাঁড়ায় ঘুমাইছি।মার খেয়ে সবার শরীরে ক্ষত হইছিলো।আমার পিঠে একটা 4 নাম্বার এর মত হইছিলো।আমরা সেগুলার ছবিও তুলছিলাম।ছবিগুলা বাসায় আছে তাই দিতে পারলাম না।

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      আবু সাইয়ীদ ও তার চামচারা লাথি দিতে দিতে আমাদের কয়েকজন কে বাস এর নিচে ঢুকিয়ে ফেলেছিল আমার মনে হয় এই ঘটনাগুলো রিপোর্ট করা দরকার।ক্যাডেটের গায়ে লাথি দেবে মানে? এরা কি ক্যাডেটদের শিয়াল কুকুর টাইপ কিছু ভাবে নাকি??? এরা কি জানেনা যে ক্যাডেট আছে বলে এদের অস্তিত্ব আছে? শুধু আনন্দময় স্মৃতি নিয়ে নয়,এক্স ক্যাডেট হিসেবে আমাদের সবারই মনে হয় এই অন্ধকার দিকগুলোর দিকে আলোকপাত করা দরকার।

      জবাব দিন
      • ভাই, আমি লাত্থি খাইছিলাম আমার আরেক স্যারের বানোয়াট একটা কম্পলেইন এর জন্য...
        আমি একটা ঘন্টা ভিপির রুমে শুয়ে ছিলাম আর একটু পর পর লাঠি, বেত তিন চারটা একসাথে করে মারতে মারতে বেশি এক্সাইটেড হয়ে লাত্থি দেয়া হইছিলো কয়টা জানিনা...
        আমি আমার ওই ঘটনাটা লিখতে চাইছিলাম অনেক আগে। কিন্তু এত্তো ঘৃণা হয় যখন ভাবি, আর ইচ্ছে করেনা!

        একদম কিচ্ছু না করা সত্ত্বেও ওইদিন আমার আব্বা-আম্মা পর্যন্ত গালি খাওয়া থেকে বাদ যায়নি। সাথে ছিলো আরেকটা animal টাইপের লোক যে সদ্য শিক্ষক হিসেবে জয়েন করছিলো--মফিজ। আমার ৫ বছরের লাইফ এক মূহুর্তেই মিথ্যে করে দিছিলো।

        ঘিন্না ঘিন্না ঘিন্না............ আর কিচ্ছু বলতে ইচ্ছা করতেছে না। কোনদিন যদি সম্ভব হয় লিখবো......
        🙁 ( ইমো দেয়ার উর্ধে ঘিন্নায় মন খারাপ হয়ে আছে এই মূহুর্তে)

        জবাব দিন
      • আরাফাত (২০০০-০৬)

        বিশুর একটা ডায়ালগ মনে পড়লো...

        ক্যাডেটরা যা করে তা ক্রাইম, ফল্ট না, কারন তারা যেনেশুনে করে।তাই তাদের ক্ষমা করা উচিত না...

        ওর কথা মনে পড়লে ইমো দিয়ে নিজের ভাব বুঝাতে পারি না কারণ এই ইমো তৈরী করাও সম্ভব না...
        মনে যা আসতেছে তা লেখা সম্ভব না...এটা পাবলিক প্লেস

        জবাব দিন
  14. আজহার (২০০০-২০০৬)

    @জাহিদ ভাই,ফোকাসটা মেইনলি ৭ জানুয়ারির উপর ছিল তাই সব ডিটেইলস দিতে পারি নাই।
    @মাহমুদ ভাই,আমরাও সুনছি যে উনার "বেয়াপক" পরিবর্তন আসছে। বুঝলাম না কেমনে আইলো।

    জবাব দিন
  15. সাব্বির (৯৮-০৪)

    এই লোক মা্নসিক ভাবে অসুস্থ্য। উনার পারিবারিক ইতিহাস আমি জানি না কিন্তু নিশ্চিত করতে পারি যে তা মধ্যযূগীয় বর্বব্র সমাজের মূর্ত প্রতিচ্ছবি।
    একে যারা শিক্ষক হিসেবে পেয়েছে "শিক্ষক" শ্রেনীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা থাকার কোনো কারন আমি দেখি না।
    এরকম কিছু শিক্ষকের অবসর পূর্ববর্তী মানসিকতা পরিবর্তন মৃত্যুপূর্ব হজ্বের মতোই ভন্ডামী।

    জবাব দিন
  16. আজহার,
    ভাই, আমার কিচ্ছু বলার নাই রে! আমি তোকে, মাহবুবকে, আরাফাতকে, সুফিয়ান, আসিফুরদের মাইর খাওয়ার চিহ্ন রুমে বসে দেখছিলাম-- বীভৎস...
    যেদিন তোদের সারাদিন রোদে দাঁড়া করায়া রাখা হইছিলো, আমি দরজার সামনে ডেস্ক থাকায় সারাক্ষণ মন খারাপ করে তাকায়া ছিলাম। শাহজাহান স্যার সেইদিন ক্লাসে অনেক দুঃখ প্রকাশ করছিলেন অথরিটির ওই আচরণ দেখে...

    সব মনে পড়তেছে... নিজের ভয়াবহ শেষ দিনগুলো মনে পড়তেছে-- মিরাকিউলাসলি কলেজে থেকে যাওয়া এবং দুইবার লাস্ট ওয়ার্নিং খাওয়ার পর জীবনটা কী আতংক নিয়ে কাটাইছিলাম টুয়েল্ভে সেইকথা মনে পইড়া গেলো...
    ভাইরে, বেপারজ না ... ভালো আছিস তো এখন?

    জবাব দিন
  17. আজহার (২০০০-২০০৬)

    মাহমুদ ভাই, যা গেসে তা ভুলে যান।
    আসলে সব যায়গাতেই কিছু আলতু ফালতু মানুষ থাকে যাদের কাজই হল অন্যদের পেইন দেয়া। আমরা কলেজকে মনে রাখসি আমাদের জীবনের চমৎকার ৬টা বছর,ফ্রেন্ডস,সিনিয়র জুনিওর,সবার সাথে ঘটে যাওয়া অনেক হাসি,কান্নার মুহূর্তের জন্যই। এই ঘটনাটা অনেক আগেই কারো সাথে শেয়ার করতে চাইতেসিলাম,তাই করলাম।
    আমি ভাল আছি। আপনার খবর কি?

    জবাব দিন
  18. মাহমুদ (১৯৯৮-২০০৪)

    মাসরুফ ভাই,আপনে খালি বয়স বয়স করেন ক্যান?বয়সটাই কি সব?দেহ থুক্কু মনের কি কোনো মূল্য আপনের কাছে নাইক্যা?
    তুহিইন্যা হারা*** অফ যা কইলাম!এইখানে মাস্ফ্যু ভাই'র JUST FRND নিয়া জরুরী কথা হইতাছে।

    জবাব দিন
  19. জুলহাস (৮৮-৯৪)

    আমি তোমাকে দুইটা খারাপ কথা বলবো... :grr: :grr:
    *কিয়ামত পর্যন্ত (প্রথম লেখা দেয়ার পরে...এখনও নিজে থেকে শুরু না করায়) :frontroll: :frontroll: দিতে থাকো...
    ** সম্ভব হলে...এরকম লেখার ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষের নামটা বাদ দিয়ে লিখ...। তোমার সামান্য ইশারা-ই ভূক্তভোগী/অভিজ্ঞদের জন্য যথেষ্ট...কাজেই, নাম-টা না হয় না-ই নিলে!!!!!!!!!

    অঃটঃ কোন :just: ফ্রেন্ড সংক্রান্ত লেখা দিলেই কেবল :frontroll: মাফ্‌... হবে এবং উঠার সুযোগ পাবে!!!!!
    ওয়েলকাম টু আওয়ার ওয়ার্ল্ড...।


    Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet

    জবাব দিন
    • শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

      জুলা ভাই কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি। বিশু টাইপের লোকেদের মান সম্মান নিয়ে ভেবে তাদের নাম না দেয়ার পক্ষপাতি আমি না। আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের নাম দেয়া হোক সেটা আমিও চাই না। কিন্তু বিশুর নাম দেয়াকে সঠিক বলেই মনে করি।

      জবাব দিন
  20. ফারহানা (২০০১-২০০৭)

    thank god এ ধরনের পেইন দের আমরা কখনো পাইনি।
    excursion ক্যাডেট life এর অনেক memorable moment.
    আর আপনাদের সাথে সেখানেই যা হইসে ................................
    tolerate কিভাবে করলেন????
    আসলেই ক্যাডেটরা সব পারে............
    :clap:

    জবাব দিন
  21. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    আজহার,
    তোমার লেখাটা আমার বিশ্বাস করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তবে বিশ্বাস করতে হচ্ছে এই কারণে যে উল্লিখিত ব্যাক্তি আমাদের কলেজের শরীয়ত উল্লাহ হাউসের হাউস মাস্টার ছিলেন। ঝাপসাভাবে যতটুকু মনে পড়ে আমাদের ব্যাচের ঐ হাউসের ছেলে পেলেরা খুব কষ্টে থাকতো আর সমান হারে ওনার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করতো। তবে উনি যে এতটা মানষিক বিকারগ্রস্থ, তা তোমার লেখা না পড়লে কখনো জানতামনা। মনটা ভীষন তিক্ততায় ভরে গেল।
    আমার মনে হয় এই লেখাটি আর্মি হেড কোয়ার্টারস এর এজি'স ব্রাঞ্চে ফরোয়ার্ড করা উচিত যাতে ভবিষ্যতে আর কোন ক্যাডেটকে এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে জীবন পার করতে না হয়।
    ধিক বিশু ধিক...

    জবাব দিন
        • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

          আহসান ও আজহার, মনে হচ্ছে অভিযোগ করার জন্য সময়টা দেরি হয়ে গেল। সম্ভবত এই শিক্ষকের অবসর নেওয়ার সময় আর বেশি দূরে নাই।

          একটা ঘটনা আমার মনে আছে। আমার ভাগ্নে তখন সিলেটে। অ্যাডজুটেন্ট ওর পিছনে লেগেছিল। ওই অবস্থায় ভাগ্নে কলেজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলো। এইরকম একটা পর্যায়ে ওর বাবার সঙ্গে সিলেটে আমি গেলাম। অ্যাডজুটেন্টকে খবর দেওয়া হলো। ও আমাদের অপমানজনকভাবে বেশ কিছুক্ষণ বাইরে অপেক্ষায় রাখলো। আমার এক্স-ক্যাডেট পরিচয় জানা সত্ত্বেও। তারপর তার কক্ষে ঢুকে বেশ খানিকটা তর্কও হলো। ও ভাব নিতে চাইলো। আমি বললাম, এই ছেলেকে ক্লাস সেভেনে আপনাদের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। আর যেসব অভিযোগের কথা বলছেন সেগুলো কোনোটাই গুরুতর নয়। ওর ভালো-মন্দ সবটার দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। ঢাকায় ফিরে আমি অ্যাডজুটেন্ট জেনারেলকে অভিযোগ জানালাম। এজি আমাদের কলেজের বড়ভাই ছিলেন। উনি একমাসের মধ্যে অ্যাডজুটেন্টকে সরিয়ে দিলেন।

          আজহারের লেখা পড়ে মনে হলো, ওরা না পারলেও অভিভাবকদের মাধ্যমে এজি'র অফিসে অভিযোগ জানানো প্রয়োজন ছিল। বেতের মার আমাদের সময়ও কিছু ছিল, খেয়েছি, দিয়েছি। কিন্তু এখনকার কথা শুনে তো ক্যাডেট কলেজকে কল্পনাও করতে পারছি না! শিক্ষক বা অ্যাডজুটেন্টের লাথির ঘটনাও অকল্পনীয়।


          "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

          জবাব দিন
          • আরাফাত (২০০০-০৬)

            দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ক্যাডেট কলেজ এখন আর ক্যাডেটদের নাই।ক্যাডেট কলেজ এখন টিচারদের আর এডজুট্যান্টদের।এই এডজুট্যান্ট ও কোন কোন প্রিন্সিপাল ও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে একজন এক্স ক্যাডেট।এডজুট্যান্ট বা প্রিন্সিপাল যা ডিসিশান নিবে তাই রুল।ক্যাডেটদের কোনটা প্রয়োজন সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এডজুট্যান্ট বা প্রিন্সিপাল এর পারসনাল ইচ্ছা। কোয়ালিটি এর চেয়ে কে আমাকে বেশি তেল মারে সেটাই ইম্পরট্যান্ট। ক্যাডেট কলেজে এখন আর বোর্ড স্ট্যান্ড করা টিচাররা আসে না যারা আসে তারা ক্যাডেটদের ভালোবাসে না।তারা ক্যাডেটদের বখে যাওয়া ছেলেপেলে হিসেবেই দেখে।এক্স ক্যাডেট হিসেবে কলেজে যাওয়া আর এক পেইন।স্যান্ডাল পড়ে গেলে এডজুট্যান্ট তিরস্কার করে, খারাপ ব্যবহার করে।এরকম লাখ লাখ উদাহরণ আছে।

            জবাব দিন
  22. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    কলেজের প্রায় পুরো সময়টাই তাকে পেয়েছি, তবে বিশেষ কারনে সে সময়টাতে তার এই রুপ খুব একটা দেখাতেন না।

    ইচ্ছা করছে তাকে সামনে বসিয়ে এই লেখাটা কমেন্টগুলো সহ পড়াতে... দেখি তার কি বলার আছে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  23. আমি আমার মরার আগেরমুহূর্ত পর্যন্তও এই লোককে তীব্রভাবে ঘৃণা করে যাবো। আমি মাঝে মাঝে নিজের উপরেই অবাক হই যে মানুষ কীভাবে আরেকজনকে এত ঘৃণা করতে পারে!! এই তীব্র ঘেন্না(ঘৃণা বললে অনেক পালিশ করা শোনায়, যেইটা আমি চাই না।) করার জন্য আমি এতটুকু লজ্জিতও নই আবার গর্বিতও নই। শুধু এইটুকুই জানি যে আজীবন তা বয়ে বেড়াতে হবে একইভাবে। আজ ৪ বছর পরেও দেখলাম তার এতটুকুও কমেনি।

    আরাফাতের কমেন্টের সাথে আরো একটা মহাগুরুত্বপূর্ণ ডেটা যোগ করি-
    আমাদের ৫০,০০০/৭০,০০০ টাকার মিষ্টি, নতুন কাপড় (৫৪ জনের মোট) স্রেফ আক্রোশের বশে সে পানিতে ফেলে, আগুনে জ্বালিয়ে নষ্ট করেছে।

    বিশ্বাস করেন আর না করেন, এখন ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডের হিটলারকে দেখার পুরোটা সময় আমি শুধু আমি সাইদ বিশ্বাসকে দেখছিলাম। নাহ, আজহারকে পিডাইতে ইচ্ছা করতেসে, আজকের রাতটা খুব খারাপ যাবে।

    জবাব দিন
    • আমার সেইদিনটা খুব খারাপ গেছে। আমার জীবনে স্মৃতিরা খুব দাগ কাটে। খারাপ স্মৃতিদের আমি ধামাচাপা দিয়ে রাখি।
      পুরনো কথা মনে পড়ে গেলে অসহ্য যন্ত্রণা বোধ হয়... ঠিক এই লেখাটা পড়ার মতন .........

      জবাব দিন
  24. রাজীউর রহমান (১৯৯৯ - ২০০৫)

    ৭ দিনের এক্সকার্শন ক্যাডেটদের জীবনের খুবই স্মরনীয় একটি ঘটনা। ক্যাডেট কলেজে মজার কি করেছি হিসাব করতে বসলে সবার আগে এই দিনগুলোর কথা মনে হয়। কলেজ অথরিটি সব সময় একরকম হয় ন। তাই বলে এই পোস্ট পড়ে পুরা হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম। এরা শিক্ষক নামের কলংক । ছাত্রদের খারাপ স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই দিতে জানে না।

    খুব দুঃখজনক।

    জবাব দিন
  25. শাওন (৯৫-০১)

    ঐ অসভ্য লোকটা এখন কোথায় আছে?? একটু দেখার ইচ্ছে ছিলো....


    ধন্যবাদান্তে,
    মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
    প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১

    ["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]

    জবাব দিন
  26. খালেদ আল নাহিয়ান (২০০৫-২০১১)

    আজহার ভাইয়া, আমাদের এক্সকারশানের আগে বাংলা ডীপারটমেন্ট এর মাসুদ স্যার আপনাদের এই ঘটনাটা বলেছিলেন... আমাদের ব্যাচের সবাই খুব আফসোস করসে ... 🙁


    Nahian

    জবাব দিন
  27. এরকম আরেকটা কাহিনি আছে বিসিসি তে। মেজর আলম, মার্চ এর তীব্র রোদে ড্রিল গ্রাউন্ডে জামা কাপড় খুলায়ে।।তারপর একি কাহিনী......বেতের এবং লাথির উন্মুক্ত ব্যবহার কলেজ এ উনি ওই দিন আবার শুরু করেছিলেন।। সে এক বিশাল কাহিনী। ভুলে যেতে চেয়েছিলাম তুমি আবার মনে করিয়ে দিলে।

    জবাব দিন
  28. খেয়া (০৬ - ১১)

    🙁 🙁 🙁 🙁
    এতোটা স্যাডিস্ট হওয়া কিভাবে সম্ভব!!!!!! আমার বাবা-মা দুজনই শিক্ষক। সারাজীবন আমি তাদের নিয়ে গর্ব বোধ করে এসেছি। কিন্তু উনার কথা জানবার পরে......... 🙁 🙁


    খেয়া (২০০৬-২০১১)

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।