রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগ্যতা পরিমাপের সিফীয় স্কেল

আমরা সবাই নেতা হিসেবে সৎ ও যোগ্য একজন মানুষ চাই। কিন্তু সমস্যা হল সততা ও যোগ্যতার মিথ্যাচারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতারা সাধারণতঃ সিদ্ধহস্ত হন। ফলে আমরা সচরাচর যুগ যুগ ধরে হই প্রতারিত। নির্বাচনে জয়লাভ করলে তাদের কথা ও কাজে কতটুকু মিল থাকবে সে চিন্তা বাদ দিয়ে আমরা অমিল কত কম হয় সে প্রার্থনাই করতে থাকি।আমজনতার এই বেদনার ভার সইতে না পেরে মহামনিষী “সিফ”স টানা তিনমাস তিনদিন তিনরাত খেটে রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগ্যতা পরিমাপের একটি আপাতঃ স্কেল উদ্ভাবন করেছেন। তিনি উক্ত স্কেলটি জনসমক্ষে প্রকাশের প্রস্তাবে যারপরনাই কুণ্ঠিত বোধ করলেও আপামর জনসাধারণের বৃহত্তর কল্যাণের নিমিত্তে শেষ পর্যন্ত নিমরাজি হয়েছেন। আমরা তার ক্ষণিকের দুর্বলতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছি। তবে এই স্কেলের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

স্কেল বিন্যাসঃ

এই স্কেল অনুযায়ী প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে-
৬০-৮০ নাম্বার – যোগ্য ও বিলুপ্তপ্রায় নেতা।
৪০-৬০ নাম্বার – প্রাথমিক নাম্বার হিসেবে গ্রহণযোগ্য কিন্তু দ্রুত উন্নতি প্রয়োজন।
১০-৩০ নাম্বার(কমপক্ষে ১০ বছর রাজনীতিতে থাকার পর) – পাতিনেতা হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
০ নাম্বার(কমপক্ষে ১০ বছর রাজনীতিতে থাকার পর) – অন্য যে কোন পেশায় আত্মনিয়োগ করা উচিৎ।(যদিও চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী, নেতায় না শোনে জনগণের কাহিনী)

মূল বিষয়সমূহঃ

এই বিষয়গুলির প্রত্যেকটির চাক্ষুষ উপস্থিতি থাকলে ৮ নাম্বার, প্রত্যক্ষ উদ্যোগ থাকলে ৬ নাম্বার এবং উদ্যোগ গ্রহণের যে কোন চেষ্টা দেখা গেলে ৪ নাম্বার। আর অনুপস্থিতি ০ নাম্বার নির্দেশ করবে। এক্ষেত্রে কোন সান্ত্বনা নাম্বারের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কারণ এর প্রত্যেকটি বিষয় সরাসরি নেতার ব্যক্তিগত জীবনযাপন ও সততার সাথে সম্পর্কযুক্ত –

১।নিজ খরচে ভাড়া করা বাসায় থাকেন।
২।বিদেশী কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানে নামে বা বেনামে অর্থ লগ্নি করেননি।
৩।পাবলিক বাসে যাতায়াত করেন।
৪।অসুস্থ হলে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
৫।সপ্তাহে অন্ততঃ দুইদিন কাঁচাবাজারে গিয়ে নিজহাতে বাজার করেন।
৬।যে বিষয়ে বক্তব্য দেন সে বিষয় সম্বন্ধে ন্যূনতম ধারণা রাখেন।
৭।নিয়মিত বিদ্যুৎ,গ্যাস ও পানির বিল পরিশোধ করেন।
৮। যোগ্যতা যাচাই না করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সুপারিশ করেন না।
৯।যে কোন ধরনের চাঁদাবাজি,টেন্ডারবাজি,দলবাজির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নন।
১০।কোন বিদেশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দালালী করেন না।

বোনাস বিষয়সমুহঃ

এই বিষয়গুলোর প্রত্যেকটির জন্য ৫ নাম্বার। যদিও এই পয়েন্টগুলো সরাসরি ওনার যোগ্যতা বা সততার সাথে সম্পর্কিত নয়। তথাপি এগুলো হল কানের মত। কান টানলে যেমন মাথা আসে,তেমন এগুলোর উপস্থিতি নিঃসন্দেহে নেতার সততা বা তার সম্বন্ধে ধারনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে-
১।ছেলেমেয়েরা বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
২।স্ত্রী কেনাকাটার পর্ব বাংলাদেশেই সারেন।
৩।আত্মীয়স্বজনকে চাকরী গ্রহণের ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জনে বাধ্য করেন।
৪।রাজনীতিতে সক্রিয় হবার পর ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ স্থির আছে বা কমে গেছে।
৫।রাজনৈতিক বক্তব্য বা কর্মসূচী প্রদানের সময় ধর্ম,বর্ণ,গোত্র,লিঙ্গ,অর্থনৈতিক শ্রেণী,সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি টেনে এনে বিষাদগার করেননি বা কারো চরিত্র হননে প্রবৃত্ত হননি।

৫৫১ বার দেখা হয়েছে

৯ টি মন্তব্য : “রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগ্যতা পরিমাপের সিফীয় স্কেল”

মওন্তব্য করুন : আসিফ খান (১৯৯৪-২০০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।