যুক্তিগত ফ্যালাইসি কি, এবং কি কারণে এটা ক্ষতিকর

ফয়েজ ভাইয়ের “আজাইরা প্যাচাল” শীর্ষক পোস্টে মাহমুদ ভাইকে কথা দিয়েছিলাম এই উইকএন্ডে লজিক্যাল ফ্যালাইসি নিয়ে একটা পোস্ট লিখবো। শুরু করছি। প্রথমে আমি বলে নিতে চাই লজিকাল ফ্যালাইসি কি? তার আগে জেনে নেওয়া দরকার লজিক বা যুক্তি কি? যুক্তি হচ্ছে প্রমানের একটি ফর্ম, প্রমান হচ্ছে একটি দাবী বা ক্লেইম সমর্থন করার জন্য ক্লেইমেন্টকে যা উপস্থাপন করতে হয়। প্রমান আসতে পারে দুটি ফর্মে প্রথমত ফিজিক্যাল এভিডেন্স, দ্বিতীয়িত রিজনড লজিক। এখানে বলাই বাহুল্য যে একটা সুযুক্তি সবসময়ই রিজনড বা একটা সুযুক্তি কিছু ফর্মাল লজিক্যাল প্যাথওয়েই ফলো করে। লজিক্যাল ফ্যালাইসি হচ্ছে এক ধরণের কুযুক্তি যা লজিকের ফর্মাল প্যাথওয়েই ফলো করে না। এটা কাজ করে এভাবে যে, এটা একটি যুক্তির ইল্যুশন বা ভ্রম তৈরী করে, ফলে যে লজিক্যাল ফ্যালাইসি সম্পর্কে জানে না তার কাছে মনে হয় যে না যুক্তিই তো দেখানো হচ্ছে- কিন্তু আসলে সেটা যুক্তি নয় বরং যুক্তির মুখোষে বলা অর্থহীন, মুল্যহীন, অপ্রাসঙ্গীক, অবান্তর কথা। চলুন দেখা যাক লজিক্যাল ফ্যালাইসি কি কি ধরণের হতে পারে। আমি ফ্যালাইসির নামগুলো ইংরেজী রাখছি যাতে আগ্রহীরা গুগোল বা উইকিপিডিয়া করে এর সম্পর্কে আরও জানতে পারেন। আরও একটি ব্যাপার লজিক্যাল ফ্যালাইসির উদাহারণগুলো এক্সক্লুসিভ নয়, একটি উদাহারণ আকাধিক ফ্যালাইসি হিসেবে বিবেচ্য হতে পারে।

অ্যাড হোমিনেম- ব্যক্তি আক্রমন। সম্ভবত সবচেয়ে বহুল ব্যাবহৃত লজিক্যাল ফ্যালাইসি। এটা সবচেয়ে বেশী ব্যাবহৃত হয়ে থাকে ডিবেইটে যেখানে দুটি পক্ষ থাকে যারা একটি ইস্যুতে ভিন্ন ধারণা পোষণ করে এবং পসিবলি একপক্ষের যুক্তির বিরুদ্ধে রিফিউটাল হিসেবে অন্য পক্ষ অ্যাড হোমিনেম ব্যাবহার করে থাকে। এটার উদাহারণ হতে পারে, “কি আর বলবো তোমারে, তুমিতো দেখা যাচ্ছে কিছুই জাননা।”, “আরে এটা এরউইন রোমেলের যুক্তি না, ও তো ছিল একটা নাতসী।” ইত্যাদি । খেয়াল করুন এদের সবকটাই কিভাবে মুল যুক্তিকে অ্যাড্রেস না করে অ্যাড্রেস করছে যুক্তি উথ্যাপনকারীকে এবং অবান্তর কথা বলে যাচ্ছে।

আর্গুমেন্ট ফ্রম ইগনোরেন্স- অজ্ঞানতা প্রসুত যুক্তি। এর উদাহারণ হতে পারে “কি মহাবিশ্ব ১৩.৭ মিলিয়ন বছর আগে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে? তুমি জানলা কিভাবে? তুমি কি দেখছ নাকি?” খেয়াল করুন বক্তা নিজের নির্বুদ্ধিতাকে কিভাবে একটি যুক্তির সাবস্টিটিউশন হিসেবে ব্যাবহার করছে।

অ্যাপিল টু রিডিকিউল- এটাকে আমি বলি আই,কিউ মাপার যন্ত্র। এটা যা করে তা হোল একটি যুক্তির কন্টেন্ট কে গ্রহন না করে বা রিফিউট না করে ঐ যুক্তিকে হাস্যকর প্রমানের চেষ্টা করে। এর উদাহারণ হতে পারে, “এটা কোন যুক্তি হোল নাকি হো হো হো।”

অ্যাপিল টু ইগনোরেন্স- আমার মতে এটা জঘন্যতম এবং অসৎতম ফ্যালাইসি। এটা মুলত শ্রোতার একটি বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞানতাকে পুঁজি করে ঐ বিষয় সম্পর্কে শ্রোতাকে ভুল তথ্য প্রদান করে এবং নিজের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত শ্রোতার উপর চাপিয়ে দেয়। এর ক্লাসিক উদাহারণ হতে পারে জাকির নায়িক। শ্রোতার জীববিজ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞানতাকে পুঁজি করে নিজের স্বেচ্চাচারী ভুল তথ্য যেমন “at first there was four hominids (হোমিনিড বলা হয় হোমিনিনাই সাবফ্যামিলির সদস্যদের, মানুষ হোমিনিড, শিম্পাঞ্জী হোমিনিড, গোরিলা হোমিনিড, প্যারান্ট্রপাস, অস্ট্রালোপিথেকাস, স্যালেন্ট্রোপাস, ওরোরিন জেনাসের প্রত্যেকটি স্পিসিসই হোমিনিড)”, “hundreds of scientists speaks against the theory of evolution” (এ পর্যন্ত একটি পিয়ার রিভিউড পেইপার নেই যা বিবর্তনের বিরোধীতা করে, কোন বিজ্ঞানী কি বলছে সেটা বিজ্ঞান না, বিজ্ঞান হচ্ছে পিয়ার রিভিউড পেইপারে যা প্রকাশিত হচ্ছে), “it maybe possible in lower life forms. koran doesnt say amiba can not change into paramecium” (lower life form বলতে সে কি বোঝাচ্ছে জানা যায় না, প্রজাতিভেদে অ্যামিওবোজোয়াদের জেনোম যেখানে মানুষের ৩.২ গিগাবেইসপেয়ার জেনোমের ১০০ থেকে ২০০ গুন বড় হয়ে থাকে, কে লোয়ার তাহলে আর কে হায়ার? বায়োলজিতে হায়ার অর্গানিজম বলা হয় তাদের লাস্ট কমন অ্যানসেস্টর থেকে যাদের লাইন অফ ডিসেন্ট সবচেয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিভক্ত হয়েছে) প্রদান করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।

আর্গুমেন্ট ফ্রম পার্সনাল ইনক্রেজ্যুয়লিটি- এটা আর্গুমেন্ট ফ্রম ইগনোরেন্সের কাছাকাছি হলেও আসমার্থক না। আর্গুমেন্ট ফ্রম ইগনোরেন্সে যেখানে বক্তা জানেই না কোন একটি তথ্য- আর্গুমেন্ট ফ্রম পার্সোনাল ইনক্রেজ্যুয়লিটিতে বক্তা জানে ঐ তথ্য কিন্তু বুঝেনা যে কিভাবে এটা সম্ভব, তাই সে সেটা অস্বীকার করে। এটার উদাহারণ হতে পারে ” বললেই হলো নাকি তিমি একটা ম্যামাল, আমরাতো চোখেই দেখতে পাচ্ছি এটা একটা মাছ।”

অ্যাপিল টু অথারিটি- এটা কাজ করে যখন বক্তা দাবীকে যুক্তি দ্বারা সমর্থিত না করে সমর্থিত করে একটি মহান ব্যক্তিদের লিস্ট দ্বারা যে ঐ ঐ মহান ব্যক্তি এই একই দাবী করেছিলেন তাই এই দাবী সত্য। এই মহান ব্যক্তিখানা অনেকসময় বক্তা নিজেই হয়ে থাকেন, তখন তিনি দেখান যে তার অন্যান্য কি কি অর্জন যেমন ডিগ্রী, ক্রীড়া পদক ইত্যাদি ইত্যাদি আছে, ফলে যুক্তিটি হয় এরকম যে, ” জর্জ বেনসন মনে করতেন গরুর ডানা আছে, তাই তোমারও একই জিনিষ মনে করা উচিত।” বা ” তুমি জান তুমি কার সাথে কথা বলতেছ? আইন্সটাইন আমার চাচা লাগতো।” বা ” আমি অক্সফোর্ডের প্রফেসর, কেইম্ব্রিড্জের গ্র্যাজুয়েইট আমি বলতেছি তাই আমার কথা তোমাকে মানতে হবে।” এই লজিক্যাল ফ্যালাইসিটি সম্পর্কে আমি সবাইকে বিশেষভাবে সচেতন করতে চাই এ কারণে যে, আমারা অনেকেই এটাকে অসততা বলে জানিনা। আপনি জার্নালে প্রকাশিত কোন পেইপারে এ কারণেই দেখবেন না যে অথারের নাম ছাড়া অন্য কোন ডিগ্রী বা পরিচয়। এটা করা হয় এটা নিশ্চিত করতে যে “an agrument must stand on its own merit”. অ্যাপিল টু অথারিটি আর্গুমেন্টকে নিজ মেরিট ছাড়া অন্য একটি অপ্রাসঙ্গিক কিছুর পায়ে দাড়া করায়।

স্ট্রম্যান- স্ট্রম্যান সংগঠিত হয় যখন কেউ একপক্ষের যুক্তি a কে অসততাপুর্ণ উপায়ে মডিফাই করে একটি নতুন যুক্তি a’ বানায় যা কিনা তার পক্ষে রিফিউট করা সহজ। তারপর সে তা রিফিউট করে এবং দাবী করে যে সে রিফিউট করেছে মুল যুক্তি a কে। যেমন ” বিবর্তনসুত্র বলে বানর থেকে মানুষ হয়েছে।” যেটা কিনা ডেমনস্ট্রেবলি ভুল। বিবর্তনের সংজ্ঞা হচ্ছে, “সময়ের সাথে একটি জিনপুলে অ্যালিল ফ্রিকোয়েন্সির পরিবর্তন।”

হেইস্টি জেনেরেলাইজেইশন- নির্বিচার সাধারণীকরন। বক্তব্যের টেকনিকাল জটিলতা এক পক্ষের অবোধগম্য হলেও এটা ব্যাবহার করে ওই পক্ষ এই ভ্রম তৈরী করে যে সে ঐ জটিল বক্তব্য বুঝতে পেরেছে। এটার উদাহারণ হতে পারে, ” পৃথিবী সুর্যের চারদিকে ঘোরে, অর্থাৎ পৃথিবীর চারটি বা দুটি পা অথবা চাকা আছে।” খেয়াল করুন বক্তার মধ্যাকর্ষণ বিষয়ক অজ্ঞতা স্বীকার না করার প্রবনতা।

ফাউন্ডেইশনাল বায়াস- ভিত্তিগত অনিরপেক্ষতা। প্রিজুডিস শব্দটির সাথে বোধহয় আমরা সবাই পরিচিত। এটার ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে জুরী, জুডিসিয়ারি, জাস্টিস শব্দগুলোর সাথে। অর্থাত, প্রিজুডিসের বাংলা আমরা করতে পারি বিচারপুর্ববর্তী যেখানে বিচার মানে যুক্তি ও প্রমানের ভিত্তিতে একটি ডিসপ্যুটেইবল ইস্যু থেকে সিদ্ধান্তে পৌছান। ফাউন্ডেইশনাল বায়াস মুলত যুক্তি ও প্রমান পর্যবেক্ষণ না করেই একটি বিশেষ অবস্থানের প্রতি নির্বিচার পক্ষপাত। এর উদাহারণ হতে পারে, পিলখানা হত্যাযজ্ঞের পর কোন আওয়ামিলীগ নেতার বক্তব্য যে জামাত এর সাথে জড়িত, কি প্রমান তার ছিল? বা সন্দেহ করার কারণ? কিছুই না।

রেড হ্যেরিং- অপ্রাসঙ্গিক কথা। এটা ব্যাবহৃত হয়ে থেকে মুল আলোচলা থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে। এটার ক্ল্যাসিক উদাহারণও জাকির নায়েক। দেখুন, বিবর্তনের আলোচনায় কিভাবে সে “কেন ইউরোপে বিবর্তন পড়ানো হয়” শীর্ষক আলোচনা শুরু করে যা বিবর্তন ঠিক কি বেঠিক এর সাথে পুরোপুরিই অপ্রাসঙ্গিক।

ফলস্‌ ডাইকোটমি- এটা হয়ে থেকে যখন যুক্তি হিসেবে একটি ঘটনার ব্যাখ্যা ধরে নেওয়া হয় মাত্র দুটি। এটা ফাউন্ডেশনাল বায়াসের সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িত। ধরে নেওয়া যাক দুজন ব্যক্তি আর্গু করছে শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা নিয়ে। এদের একজন ক্যাপিটালিস্ট, অপরজন কম্যুনিস্ট। এখন ক্যাপিটালিস্টটি যদি এটা প্রমান করে যে কম্যুনিজম ভুল এবং দাবী করে বসে যে, যেহেতু কম্যুনিজম ভুল তাই ক্যাপিটালিজমই শ্রেষ্ঠ যেটা হবে ফলস্‌ ডাইকোটমি কেননা ক্যাপিটালিজম আর কম্যুনিজমই মাত্র দুটি অপশন নয় আরও বহু কিছু আছে। এমনকি ক্যাপিটালিজম ও কম্যুনিজমই অপশন মাত্র এই দুটি হয়ে থাকলেও কম্যুনিজমকে ভুল প্রমান করার মাধ্যমে ক্যাপিটালিস্ট এই দাবী করতে পারতো না যে ক্যাপিটালিজম শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা। ক্যাপিটালিজম শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা এই দাবী করতে হলে তাকে দেখাতে হবে কেনো ক্যাপিটালিজম শ্রেষ্ঠ অর্থনোইতিক ব্যাবস্থা, কেন কম্যুনিজম শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা হতে পারে না সেটা নয়। an argument must stand on its own merit.

নন সেক্যুইটর- যুক্তির কিছু মুলনীতি আছে, যেমন- একটি যুক্তি তার প্রেমিজে ঘটা যেকোন ঘটনার পেছনেই ব্যাবহার করা যাবে। নন সেক্যুইটর হয় তখনই যখন কিনা একজন বক্তা তার যুক্তিকে সেই যুক্তির প্রেমিজে ঘটা সব ঘটনার পেছেনে ব্যাবহার করতে অস্বীকার করেন। যেমন- কালামস কসমোলজিকাল আর্গুমেন্ট। এটা বলে, ১। সবকিছুরই উৎস আছে। ২। বিশ্বজগতের উতস আছে। ৩। সেই উৎস ঈশ্বর। মজার ব্যাপার হলো এই যুক্তিকে মহাবিশ্বের প্রেক্ষাপটে না খাটিয়ে ঈশ্বরের প্রেক্ষাপটে খাটালে কি দেখা যায়? সবকিছুরই উতস আছে, ঈশ্বরেরও উৎস আছে, সেই উৎস কি? আরেকজন বড় ঈশ্বর? অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে একটি নন সেক্যুইটর নিজের প্রিমিস ব্যাখ্যা করতে পারে না।

এক্যুইভোকেইশন- যুক্তির আরেকটি মুলনীতি হলো, যুক্তিতে কোন টার্ম ব্যাবহৃত হলে সেই টার্মের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা থাকতে হবে। এক্যুইভোকেইশন সংগঠিত হয় তখন যখন বক্তা তার যুক্তিতে ব্যাবহৃত টার্মের সংজ্ঞা না দিয়ে সেটাকে অসংজ্ঞায়িত রেখে দেন এবং সময় সুযোগ মত এর স্বেচ্ছাচারী ইন্টারপ্রিটেইশন করেন। এর একটা হাস্যকর উদাহারণ আমি দেখেছি যেখানে বক্তা কারো মন্তব্যের বিরুদ্ধে বলছেন “এটা বলে তুমি ঠিক কি বোঝাতে চাইছো? তুমি যদি ……এটা বোঝাতে চাও তাহলে কিন্তু আমার ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগবে। ” এটার অ্যানালজি হতে পারে “এই এইটা তুমি কি মারলে? ঘুষি যদি মেরে থাক তাহলে কিন্তু আমার ব্যাথা লাগবে।” এখানে ঘুষি একটি এক্যুইভোকেইশন কেননা এটা মারার পর যে মারলো তাকে জিজ্ঞেস করা দরকার হচ্ছে যে আসলে ঠিক ঘুষিই সে মারেছিল কিনা। সুসংজ্ঞার একটি উদাহারণ দেখুন। দেখুন নীচের ছবিটি।

jakir

এটি জাকির নায়েক। কিন্তু, এই ছবিটা সুসংজ্ঞায়িত নয়। চলুন একে সুসংজ্ঞায়িত করা যাক।

jakirmod

ছবিটিকে সুসংজ্ঞায়িত করলে আমরা পাই যে, Zakir Naik is devil himself.

বেগিং দ্য কোয়েশ্চেন- প্রশ্ন ভিক্ষা চাওয়া (দুর্বল বাংলা হয়ে গেল বোধহয়)। সাধারণত একটি দাবীর পক্ষে দেখানো যুক্তি হবে একটি স্টেইটমেন্ট বা ব্যাকরণগতভাবে affirmative sentence. সেখানে দাবী উথ্যাপনকারী যদি প্রশ্নবোধক বাক্য ব্যাবহার করে তাহলে বেগিং দ্য কোয়েশ্চেন সম্পন্ন হয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সেই প্রশ্নটি এমন হয় যার উত্তর অপরপক্ষ জানে না। তখন ঐ দাবী উথ্যাপঙ্কারী বলে বসে এইযে, অপরপক্ষ জানে না এর উত্তর এটাই প্রমান করে যে তার দাবী সঠিক। যেমন- “মাতাহারীর মৃতদেহ কে চুরি করে? আমি জানি না। এই যে, বলেছিলাম না মাতাহারীর মৃতদেহ অ্যানড্রোমিডা থেকে আগত এইলিয়েনরা চুরি করে, দেখলে এবার।” বেগিং দ্য কোয়েশ্চেন হচ্ছে কনস্পাইরেইসি থিওরি প্রমান করার একটি অন্যতম উপায়।

কনস্পাইরেইসি থিওরি- চক্রান্ত সুত্র। এটা সম্পন্ন হয় যখন নিরপেক্ষ সুত্র হতে গৃহীত সার্বজনীন কোন তথ্যকে কিউ অস্বীকার করে একটি মনগড়া গল্প ফেঁদে বসে যার স্বপক্ষে খুবই সামান্য এভিডেন্স আছে, যার অল্পই এম্পেরিক্যাল এবং কোনটি কনক্লুসিভ নয়। লজিকের একটী মুলনীতি হলো extraordinary claim requires extraordinary evidence. কনস্পাইরেইসি থিওরি মুলত যা না এভিডেন্স দেখায় দাবী করে তার চেয়ে অনেক অনেক গুন বড়। এও উদাহারণ- নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার কনস্পাইরেইসি, hitler was a jew, america planned 2nd world war, america has captured aliens ইত্যাদি ইত্যাদি। বলাই বাহুল্য এর কোনটাই কোন শক্ত এভিডেন্স দ্বারা সমর্থিত নয়।

কোট মাইনিং- কোট মাইনিং হল কোন ব্যক্তির একটি বক্তব্যের আংশিক কোট করে তার অবস্থানকে মিসরিপ্রেজেন্ট করা। এর উদাহারণ ঈশ্বর বিষয়ে আইন্সটাইনের কোট যেখানে সবাই জানে যে আইন্সটাইন ছিলেন একজন প্যান্থেয়িস্ট অ্যাথেইস্ট, চোখের উতপত্তি সম্পর্কে ডারউইনের কোট যেখানে সবাই জানে যে চোখ কিভাবে এসেছে এটার মুল ফ্রেইমওয়ার্ক ডারউইনেরই, পাঙ্কচ্যুয়েইটেড ইক্যুইলিব্রিয়াম সম্পর্কে স্টিভেন জেই গুল্ডের কোট যেখানে সবাই জানে যে পাঙ্কচ্যুয়েইটেড ইক্যুইলিব্রিয়াম থিওরির প্রবক্তা স্টিভেন জেই গুল্ড স্বয়ং ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।

অ্যাপিল টু মেইজরিটি- এটা সংগঠিত হয় যখন দাবীর সমর্থনে জনসমর্থনকে ব্যাবহার করয়া হয়। যেমন- “বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ ভুতে বিশ্বাস করে, অর্থাৎ ভুতের অস্তিত্ব সত্যি। বস্তুত যা ঠিক নয়। সারা পৃথিবীর সকল মানুষও যদি ভুতে বিশ্বাস করে থাকে তাহলেও ভুত বলে কিছু নেই- কেননা এর স্বপক্ষে কোন এভিডেন্স নেই। একইরকমভবে দৈত্য, দানব, রাশিফল, এলিয়েন, ফ্লাইঙ সসার, গবলিন, সান্টা ক্লজ, ফেরেস্তা, হুর, যাদু, অলৌকিক ক্ষমতা, ধ্যান, মেডিটেইশন, ইএসপি, আঙটির অলৌকিক শক্তি, তাবিজ-কবচ, জ্যোতীষী এদের কোনটির স্বপক্ষেই কোন এভিডেন্স নেই।

মুভিং দ্য গোলপোস্ট- এটার সংজ্ঞা দেয়ার বোধহয় প্রয়োজন নেই, এটা সেল্ফ-এক্সপ্ল্যানেইটরি। ব্যাপারটা হচ্ছে গোলপোস্ট যদি মুভিং হয় তাহলে আপনি কখনই গোল দিতে পারবেন না। এটা ফাউন্ডেইশনাল বায়াসের সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িত একটি প্রিজুডিসপ্রসুত লজিক্যাল ফ্যালাইসি। একটি অবস্থানের প্রতি কোন যুক্তি ও প্রমান ব্যতীরেকেই পক্ষপাত প্রকাশ করে এখানে একজন যুক্তি উথ্যাপন করতে থাকে, তার একটি যুক্তি ভুল প্রমান হলে আরেকটি যুক্তি নিয়ে আসে এবং বলে আচ্ছা তাহলে এটা ভুল প্রমান কর। বস্তুত, সে আগেই ঠিক করে নেয় যে সে বিপক্ষকে গোল করতে দিতে যাচ্ছে না। এটার উদাহারণ আমি বলবো ক্রিমিনাল কনভিক্ট ট্যাক্স ডজার ক্রিয়েইশনিস্ট কেন্ট হোভিন্ড যে বর্তমানে দশ বছর জেল খাটছে তার থেকে। সে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল বিগব্যাং এর এভিডেন্স যে দেখাতে পারবে তাকে দেয়া হবে একটি মোটা অঙ্কের টাকা। তারপর সে যেই টার্মগুলো দিল সেগুলো দেখুন- ১। প্রমান হতে হবে শুধু ফিজিক্যাল বা এম্পেরিক্যালই নয় রিপ্রজিউসেবলও। অর্থাৎ, আপনাকে ল্যাবে বিগব্যাং ঘটিয়ে দেখাতে হবে, শুধু তাই না আপনাকে এটাও প্রমান করতে হবে যে এটা ঈশ্বরের কোন প্রকার সাহায্য ছাড়াই ঘটছে। হারুন ইয়াহিয়ার ঘোষিত ট্রাঞ্জিশনাল ফসিলের পুরস্কারটাও একই রকমের। এটা বলাই বাহুল্য যে ঐ পুরস্কারের টাকাটা ছিল টার্কির জ়িডিপির ৩৪ গুন এবং ইউরোপের এগারটি দেশের জিডিপির সমষ্টিরও বেশী। এবং ট্রান্সিশনাল ফসিলের যেই সংজ্ঞাটা সে দিয়েছিল সেটা দেখে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহের জো নেই যে ও সারা জীবনে আধা ঘন্টাও বায়োলজি পড়েনি। সে দেখতে চেয়েছে মানুষ ও গরুর ট্রান্সিশনাল ফসিল, এখানে বলাই বাহুল্য যে গরু মানুষের কোন অ্যান্সেস্টরই নয়। একটু অপ্রাসঙ্গীক কথা বলি এবার। হারুন ইয়াহিয়ার একটি ছবি আমি দেখলাম এখন, এই ছবিটি আমি আপনাদের সাথে সেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না, এবং যাতে কোন ভুল বোঝাবোঝির সৃষ্টি না হয় তাই আমি আবারু বলছি এটা জেইমস বন্ড ছবির কোন ভিলেইন নয়, এটা হারুন ইয়াহিয়া।

harun

এটা বিচারের ভার আমি আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম যে, এরকম একটা ছবি তোলা কি একজন ব্যক্তির পক্ষে তার প্রকাশ্য ঔধ্যতপুর্ণ সমাজচ্যুতির নগ্ন ঘোষণা নয়? জেনিটাল ডিসপ্লেইকে ইংরেজী বলা দেশগুলোতে বলা হয় ফ্ল্যাশিং যা শুধু একটি ফৌজদারী অপরাধই নয় যা আপনাকে লায়েবল করতে পারে অর্থদন্ড এমনকি কারাদন্ডের জন্যও- এটি একটি স্পষ্ট প্রমান বিকৃত যৌনাচার এবং স্যাডোম্যাসেচিস্টিসিজম বা বিকৃত-যৌননির্যাতনবাদের পক্ষে। কিন্তু, আমরা কিন্তু বলতে পারছি না যে, হারুন ইয়াহিয়া ফ্ল্যাশিং করছে, যদি আমরা এটা বলি সে বলবে ” কই, আমিতো প্যান্ট পড়ে আছি” যা কিনা সত্যি। তাহলে? তবে এটা বোধহয় এসেন্সিয়্যলি বলা যায় যে সে একটা বার্তা কনভেয়ে করছে দর্শকদের কাছে যে, আমি তোমাদের সভ্যতার কিচ্ছু মানি না। আর তার মুখভঙ্গীটিও দেখুন। যেন নব্বুইয়ের হিন্দী ছবির ভিলেইন সদ্য কোন নিরীহ গোবেচারা টাইপের একটা মেয়েকে ধর্ষণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু একটা জিনিষ আমি বুঝতে পারছি না আমি তার বসে থাকার ভঙ্গীটাকে কোন জ্যামিতিতে ফেলতে পারছি না। আমার মনে হয় এরকম একটা ছবি যেই লোক তুলতে পারে তার পক্ষে পৃথিবীর সব মানুষ খুন করে ফেলা সম্ভব। মানে , মানে আমি বলতে চাচ্ছি ছবিটা কি অশ্লীল না? না হলে বলুন এই ছবিটা কি অশ্লীল?

untitlscsdcsed

আমার মনে হচ্ছে তার প্যান্ট বেচারা বলছে “দেখ ভাই, আমার কাজ তোমার লজ্জা নিবারণ করা, তবে আমার সামর্থ্যের একটা সীমা আছে। একটা নিদৃষ্ট সীমার পর আমাকে তুমি পরে থকলেও আমি তোমার লজ্জা নিবারণ করতে পারবো না।” আমরা বোধহয় এই কনসেনসাসে পৌছতে পারি যে, তার বসে থাকার ভঙ্গী, প্যান্ট নির্বাচন, মুখভঙ্গী এবং দৃষ্টি বেশ কিছু অপ্রকাশিত না বলা ইশারা এবং ইঙ্গীতে পরিপুর্ণ যার সবকটাই অগ্রহনযোগ্যভাবে অশ্লীল এবং প্রোভোকেইটিভ।

স্টেরিওটাইপিং- স্টেরিওটাইপিং সংগঠিত হয় যখন কেউ একটি অতি সাধারণ ও ছোট এভিডেন্স দিয়ে একটি সামগ্রিক বিচারে বসে যায়। যেমন- কালরা সব ক্রিমিনাল হয়, এশিয়ানরা সব বাটপার হয়, সাদারা সব কুচক্রী হয়, নোয়াখালীর লোক খারাপ, বরিশালের লোক খারাপ, চিটাগং এর ছেলেরা খুব পেশল এবং শক্তিশালী, ঢাকার মেয়েরা চালাক, হাবাগোবা ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। এই দাবীগুলোর স্বপক্ষে এভিডেন্স কি? কিছুই না। এগুলা সবই বক্তার মনগড়া কথা বা বড়জোর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা যা কিনা পুরোপুরিই সাবজেক্টিভ এবং মোটেও অবজেক্টিভ নয় যতক্ষণ না পর্যন্ত সে পরিসংখ্যানের চালিয়ে এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করছে।

coexistence doesnt imply causation- সহাবস্থান কোন কারণের নিদর্শক নয়। যেমন দুটি ঘটনা ২০০৯ সালে ঢাকায় সবচেয়ে বেশী কার্বন-ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হয়, ২০০৯ সালে ঢাকায় সবচেয়ে বেশী সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়। দুটিই সত্য। কিন্তু, এখন যদি কেউ দাবী করে বসে ” অধিক কার্বন-ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার একটি অন্যতম কারণ” তাহলে এই ফ্যালাইসি সংগঠিত হবে।

একটা জিনিষ আমাকে খুব বেদনা দেয় যে, আমাদের বাংলাদেশে একটী দাবী কোন এভিডেন্স দ্বারা সমর্থিত হওয়া লাগে না, যার যা মনে আসে বলছে, কনস্পাইরেইসি থিওরিতে দেশ ছয়লাব করে ফেলছে, অ্যাপিল টু ইগনোরেন্স, অ্যাপিল টু রিডিকিউল, স্ট্রম্যান ব্যাবহার করছে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছেলেরাও, মিডিয়াতে-সংবাদপত্রে-কোর্টে এমনকি পার্লামেন্টেও লজিক্যাল ফ্যালাইসি ব্যাবহার করছে কোন ধরণের অনুশোচনা ছাড়াই। আমি যখন কোন লজিক্যাল ফ্যালাইসির ব্যাবহার দেখি এটা আমার মধ্যে একটী রেসপন্সই সৃষ্টি করে সেটা হলো স্কেপটিসিজম। আমি তাকে সন্দেহ করি, তার সবগুলো কথাই খুটিয়ে খুটিয়ে বিশ্লেষণ করি কেননা আমি জানি এই লোক মিথ্যাবাদী হবেই এবং এখন পর্যন্ত আমার এই ধারণা মিথ্যা প্রমান হয়নি। একজন মিথ্যাচারীকে আমি কখনও সত্যবাদী হতে দেখিনি। আমরা জানলাম লজিক্যাল ফ্যালাইসি কি এবং এটা কিভাবে সংগঠিত হতে পারে। আমি বাংলাদেশে থাকতে এটা সম্পর্কে জানতাম না, আমি ধরে নিচ্ছি এখনও আমাদের অনেকেই এটা সম্পর্কে জানি না, যেহেতু আমি নিজেই বেশ কয়েকজনকে ফ্যালাইসি ব্যাবহার করতে দেখেছি। এখন আমরা এটা সম্পর্কে জানি। তাই চলুন, এটাই হোক আমাদের নববর্ষের রেজলিউশন যে, আমরা কোথাও লজিক্যাল ফ্যালাইসি ব্যাবহার করবো না।

৯,৫২২ বার দেখা হয়েছে

৪১ টি মন্তব্য : “যুক্তিগত ফ্যালাইসি কি, এবং কি কারণে এটা ক্ষতিকর”

  1. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    পড়লাম। এককালে প্রচুর বিতর্ক করেছি, প্রথমদিকের বেশ কিছু উদাহরণের সাথে মারাত্মক ভাবে পরিচিত।

    অ্যাপিল টু অথারিটি

    এটাও আমাদের খুব পরিচিত ব্যাপার। আমি ডক্তরেট করছি, এই বিখ্যাত লোক আমার বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যয়ন করেছেন। যদিও আমি নিজেকে তার সাথে তুলনা করছি না (যদিও তিনি অলরেডি প্রসঙ্গটা এনছেন তুলনা কিংবা তার গরীমা প্রমান করার জন্য)... ইত্যাদি লাব লাব বলে তারপর তার মতামত দেওয়া। ভাবখানা এমন যেহেতু আমি বস সেহেতু আমার যুক্তিও তাই হবে। জঘন্য ব্যাপার।

    নন সেক্যুইটর-

    ঈশ্বর সম্পর্কিত এই উদাহরণের পাশাপাশি আরেকটা উদাহরণ বেশ শুনা যায়।

    আচ্ছা মহাবিশ্ব কে সৃষ্টি করলো, তোকে কে সৃষ্টি করলো? ইত্যাদি ইত্যাদি বলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমানের চেষ্টা করা।

    উপরোক্ত প্রশ্নটা ভুল। কারণ মূলত এই প্রশ্নের মধ্যেই একটি উত্তর আছে। কে তোমাকে সৃষ্টি করছে এইটা বলা মানেই ধরে নিতে হবে "তারমানে আমাকে কেউ সৃষ্টি করেছেন"। আমি তো এইটাই মানিনা। প্রশ্নকর্তা নিশ্চয়ই আমার কাছে আল্লাহ কিংবা ঈশ্বরের পরিবর্তে ভগবানের নাম শুনতে চাচ্ছেন না।

    অ্যাপিল টু মেইজরিটি

    সেইটাই সবাই কি বিশ্বাস করছে সেটা বড় ব্যাপার নয়। এভিডেন্স দরকার। এভিডেন্স ছাড়া আমি যেমন ভুত বিশ্বাস করবো না, সুতরাং আর কোন কিছুই বিশ্বাস করবো না।

    মূলত "বিশ্বাস" শব্দটাই ক্যামন জানি। হুমায়ুন আজাদ স্যারের একটা কথা আছে। ভাবকথা অনেকটা এমন- পুকুরে ঢিল মারলে পানির আন্দোলন দেখা যায়। এইটা বিশ্বাস করার দরকার নেই। কারণ আমরা দেখতে পারছি। অপরদিকে বিশ্বাস করতে হচ্ছে সেই জিনিসকে যা দেখা যায় না, অর্থাৎ যা নেই, যা মিথ্যা।

    পোস্ট ভাল্লাগছে ...

    জবাব দিন
    • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)
      আমি ডক্তরেট করছি, এই বিখ্যাত লোক আমার বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যয়ন করেছেন।

      এটা আমি মেনে নিতে পারিনা যে, আমাদের দেশে একজনের ডিগ্রী তার যুক্তিকে মর্যাদা দেয়, দেখবা এই কারণেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখছেন ফিজিক্সে ডক্টরেট, এটা কিন্তু এ কারণে না যে তিনি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একজন বিশেষজ্ঞ, বরং এই কারণে যে তিনি একজন ডক্টরেট। আমি বলবো তোমার যে কোন যুক্তিই আমি মেনে নেব পরীক্ষা করে দেখার পর যে তোমার দাবী এভিডেন্স দ্বারা সমর্থিত কিনা, সমর্থিত হলে আমি মেনে নেব তুমি যদি জীবনে কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দা দিয়ে হেঁটে নাও থাক তারপরেও। তবে, তুমি যদি আমাকে আগেই বলে নাও যে কেন তোমার যুক্তি আমাকে মানতে হবে, আমি কিন্তু তোমাকে সন্দেহ করবো। তুমি দেখে থাকবা কোন একাডেমিক প্রকাশনায় এবং বক্তৃতায় এদেশে প্রফেসরের ডিগ্রী উল্লেখ করা হয়না। এমনকি পিয়ার রিভিউ সম্পর্কে যদি জেনে থাক দেখবা, লেখক আর রিভিউয়ার একজন আরেকজনের ডিগ্রীতো দুরে থাক নাম এমনকি কে কোন দেশে থেকেন সেটাই জানেনা। এটা করা হয় অ্যাকাডেমিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে।

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
        লেখক আর রিভিউয়ার একজন আরেকজনের ডিগ্রীতো দুরে থাক নাম এমনকি কে কোন দেশে থেকেন সেটাই জানেনা। এটা করা হয় অ্যাকাডেমিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে।

        আইডিয়েলী ঠিক আছে, কিন্তু প্র্যাক্টিক্যালী 'একখ্যান কথা' আছে। ;;; (শুধু সামাজিকবিজ্ঞানে, সাধারণ বিজ্ঞানের কথা জানিনা)।

        ইশারাঃ শিকারী বিড়াল গোঁফে চেনা যায়। অথবা, জমিদারের পোলা মেধাবী না হয়েই পারে না 😛 ।

        ডিস্ক্লেইমারঃ আমার এই মন্তব্য শুধু জনগণকে জানায়া দেওয়া যে, বাস্তবে এই নিয়মের বেশ ব্যতিক্রম ঘটে থাকে। কাজেই, কারো মামা-চাচা বিখ্যাত প্রফেসর থাকলে 'ট্রাই' করতে ভুলোনা যেন 😕


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
        • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)

          প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং মানবিক বিজ্ঞানে একটি মুল পার্থক্যই হচ্ছে প্রাকৃ্তিক বিজ্ঞনের জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধসমুহের ৯০% emperical এবং conclusive, যেমন v=ds/dt, হাইড্রোজেনের পিরিয়ড ১, মানুষ কর্ডেট এ্ররা কিন্তু conclusive অর্থাৎ এটা কখনই কোন অবস্থাতেই পরিবর্তিত হবে না। অপরপক্ষে মানবিক বিজ্ঞানের জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধসমুহ এম্পেরিকাল কিন্তু হয়তো ২০% কনক্লুসিভ, বাকী ৮০% অ্যানালিটিকাল। যেমন- কিছু সুসংজ্ঞায়িত ব্যতিক্রম ছাড়া দাম বাড়লে চাহিদা কমবে, এটা কনক্লুসিভ কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সফল/বিফল এটা কিন্তু কনক্লুসিভ নয়, এটা অ্যানালিটিকাল, এটা নিয়ে আরও গবেষণা হতে থাকবে, আরও অ্যানালিসিস হতে থাকবে। যেমন- প্রানীর লিপিড মেমব্রেইন stable হওয়ার জন্য কোলেস্টেরল লাগবে এটা লিয়ে আপনি কিন্তু কোন জার্নালে দ্বিমত পাবেন না, দ্বিমত পাবেন ডাইনোসর কেন বিলুপ্ত হয়েছিল এই ইস্যুতে। একইভাবে, মানুষ সামাজিক জীব এটা নিয়ে কোন দ্বিমত পাবেন না, কিন্তু কি সামাজিক ব্যাবস্থা আমাদের জন্য ভালো কি খারাপ এটা নিয়ে পাবেন। মানবিক বিজ্ঞানে দেখা হয় দাবীর সমর্থনে কতটা এভিডেন্স আছে, কিন্তু একটা দাবীকে কনক্লুসিভ হতে হলে যতটা এভিডেন্স দরকার তা কিন্তু আমদের পক্ষে যোগাড় করা কঠিন, অপরপক্ষে মায়গ্লোবিনের কাজ অক্সিজেন সংবহন এটা কনক্লুসিভ প্রমান করতে আপনাকে কি করতে হবে? একটা নকআউট ইঁদুর বানান মায়োগ্লোবিন জিন নকাউট করে, তারপর দেখেন তার ফিজিওলজি যে কি কাজ সে করতে পারছে না, ব্যাস আপনি কনক্লুসিভ করে ফেললেন আপনার ক্লেইম। এই conclusivenessটাই বোধহয় এদের পার্থক্য। তবে, পিয়ার রিভিউয়ের ব্যাপারটা জানি না, তবে এটা নিশ্চিত সামাজিক বিজ্ঞানে লেখকের আত্নীয়-স্বজন অবশ্যই আর্টিকেল রিভিউ করে না, এটা হয়ে থাকলে এটাকে জার্নালই বলা যাবে না আর, রিভিউ নিরপেক্ষই হতে হবে।

          জবাব দিন
          • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

            আমার কমেণ্টের টোনটা ধরতে পারো নাই। আমারই দোষ, জুক্সটা ঠিকমত করতে পারি নাই। ~x(

            বাকী ৮০% অ্যানালিটিকাল।

            ঠিকই বলেছো। কিন্তু আনালিসিস এর ধরন দেখে অনেক সময়ই অনুমান করা যায় 'কোন গোয়ালের গরু'। নির্দিষ্ট এরিয়াতে যথেষ্ট পড়াশোনা থাকলে (রিভিউয়ারদের সেটা থাকতেই হয়) সেই অনুমান মিলেও যায় প্রায়ই। তাই কইছিলাম, শিকারী বিড়ালের কথা।

            আর পরিচিত ইনফ্লুয়েনশিয়াল প্রফেসরের কথা কইছিলাম এই কারণে যে, তারা ভালো জানে কোন এরিয়াতে কোন জার্নালের অবস্থা কি রকম। আর তাদের সাথে এডিটরদের জানাশোনাও থাকে ভালোই (আর তারা নিজেরাও এডিটর)। (একটা আর্টিকেল পড়েছিলাম, রেফার্ড জার্নালে, রেফারেন্সিং এর বিষয়ে, আঁতকে ওঠার মত)। রেফারির কাছে রিভিউ এর জন্য তারাই কিন্তু পেপারগুলো পাঠান। তারপরেও কথা আছে, - সব রিভিউ পজিটিভ হলেও এডিটর তা বাদ দিতে পারেন, আবার দুইজন রিভিউয়ার রিজেক্ট করলেও এডিটর তা ছাপাতে পারেন।

            দুনিয়া জুইরা খালি ভেজাল :grr: । নিরপেক্ষতার বেইল নাই রে পাগল...... (এতটা আইডিয়ালিষ্টিক হলে ফাঁকিতে পড়া+অহেতুক কষ্ট পাবার সম্ভাবনা ষোলআনা)

            তবে, এই বিষয়টা পোষ্টের সাথে অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। তাই এটা আর না। এই বিষয়ে সাক্ষাতে কথা হতে পারে।


            There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

            জবাব দিন
  2. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    :thumbup: :thumbup:

    গ্রেট জব। (সিসিআর আপ, আপ...... B-) )

    সরাসরি প্রিয়তে।

    তবে একটা আরেকটু বিস্তারিত হলে ভালো হতো। মানে একেক প্রকার নিয়ে ডিটেইলড একেকটা পোষ্ট আর কি...। তা না হলে থেকে অপব্যবহারের সম্ভাবনা থেকে যায়।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  3. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    চমৎকার পোস্ট। লজিক্যাল ফ্যালাসি দিয়ে আমার যুক্তিবিদ্যার হাতেখড়ি হল বোধহয়।
    আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, আমরা নিজেদের মনগড়া কথা দিয়ে তর্ক চালিয়ে যেতে থাকি। অথচ কখনও ভেবে দেখি না, এই তর্কগুলো হয়ত হাজার বছর আগেই আরও সূক্ষ্ণভাবে করা হয়ে গেছে এবং সেগুলোর অনেক পরিশীলিত রূপ হয়ত বর্তমানে যুক্তিবিদ্যায় ব্যবহৃত হচ্ছে। সেগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ থেকে বিতর্কে জড়ানো ঠিক না। কিন্তু আমরা সেটাই সবচেয়ে বেশী করি।
    আমার মনে হয় আমাদের সমাজ বর্তমানে argument from ignorance, appeal to ignorance এবং appeal to authority-এই ত্রিবিধ ফ্যালাসি দিয়ে ছেয়ে আছে। এগুলো দূর না হলে বাকিগুলো দূর করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। তবে সত্যি হচ্ছে, পুরো সমাজ থেকে কেউই এখন পর্যন্ত এগুলো দূর করে দেখাতে পারেনি। ভবিষ্যতে হয়ত পারবে।

    ভবিষ্যতে যদি ফ্যালাসিগুলো নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বিস্তারিত লিখেন তাহলেও আমি আছি। পড়বো। অনেক সময় কোন না কোন ফ্যালাসি দিয়ে আমিও আক্রান্ত হয়ে যাই। মাঝেমধ্যে নিজেই ব্যবহার করে ফেলি ফ্যালাসি। কিন্তু সেটা অজ্ঞানে। এগুলো জানার ফলে এখন থেকে ফ্যালাসি এড়িয়ে যেতে পারব, আরও সূক্ষ্ণভাবে। একটা নতুন চোখের জন্ম হল যে সবসময় যুক্তিতে ফ্যালাসি ধরার চেষ্টা করে যাবে। জুবায়ের ভাইকে ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
    • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)
      একটা নতুন চোখের জন্ম হল যে সবসময় যুক্তিতে ফ্যালাসি ধরার চেষ্টা করে যাবে।

      তোমাকে ধন্যবাদ, নিজেকে সফল মনে হচ্ছে। ঠিক এই উদ্দেশ্যেই আমি পোস্টটি লিখেছি। আর আমার মেইলটা পেয়েছোতো? দুঃখিত অনেক দেরীতে উত্তর দিলাম, ছুটির ধাক্কায় মেইল চেক করাও বাদ দিয়েছিলাম।

      জবাব দিন
  4. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    ও হ্যা, ফ্যালাসির একটা বাংলা পেয়েছিলাম- হেত্বাভাস। বেশ কঠিন অবশ্য। প্রায় ব্যবহারের অযোগ্য। কুযুক্তিও খুব ভাল বাংলা। তবে দর্শনে বোধহয় হেত্বাভাস ব্যবহার হয়। আমিনুল ইসলাম তার "পাশ্চাত্য দর্শন" সিরিজের বইগুলোতে হেত্বাভাসই ব্যবহার করেছেন।

    জবাব দিন
  5. জাহিদ (১৯৮৯-৯৫)

    অর্ণব,

    স্রষ্টার স্রষ্টা নিয়ে আমার কিছু মন্তব্য ছিল।

    আমরা যা 'সৃষ্টি' করি তা কিন্তু আসলে তৈরি করি। আরো সাধারন অর্থে 'রুপান্তর' করি। কাঠকে রুপান্তরিত করে চেয়ার বানাই, হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন মিলিয়া পানি বানাই। কোন কিছুই আমরা শুন্য থেকে তৈরী করিনা। সুতরাং, 'সৃষ্টি'র সাধারণিকরণ একটু বিভ্রান্তিকর।

    তুমি জান, বিশ্ব-ভ্রম্মান্ডের শুরু আছে। সময়ের শুরুও তখন থেকেই। আমরা সময় মাত্রার বাইরের কোন কিছুই জানিনা, আর আদৌ জানতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে। সৃষ্টিকর্তা (আমার যুক্তিতে বলছি, তোমার সাথে মিলবে, আমি তা আশা করি না) যদি সৃষ্টির বাইরে থাকেন, তাহলে তোমার জানা নিয়ম দিয়ে, তার ব্যাখ্যা খোঁজা কতটা যৌক্তিক?

    তুমি খুব কষ্ট করে, অনেক সময় নিয়ে লেখো বোঝা যায়। কিন্তু তারপরেও তোমার লেখা আমাকে পড়া থেকে দূরে ঠেলে দেয়। বিষয়বস্তুর জন্য না, অনেকেই তোমাকে বলেছে ব্যাপারটা। তুমি দয়া করে ইংরেজী শব্দের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত কর। সাধারণ উদাহরণ দেই। paper এর উচ্চারণ যে পেইপার হবে, আমার মনে হয় এখন আমাদের অধিকাংশই তা জানেন। কিন্তু তুমি যদি বাংলায় তাকে 'পেপার' লেখ, মানুষ সহজে তাকে হজম করতে পারে! আর 'পেইপার' লিখেই বা তুমি কি তাকে যথার্থ উচ্চারণে লিখতে পারছ? তাদের P তো আসলে আমাদের প আর ফ এর মাঝামাঝি উচ্চারণ! ঐটা কিভাবে লিখবে?!?

    একটা ভাব সম্প্রসারনের প্রথম অংশটা মনে আছে, পরের অংশ যে কেউ দয়া করে বসিয়ে দিবেন,

    'নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল, ... ..."

    সুতরাং, আমার সমালোচনা ভাল অর্থে (পজেটিভলি) নিও।

    জবাব দিন
    • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)

      না না কি বলছেন এসব, ভাল অর্থ ছাড়া খারাপ অর্হে আমি কোন সমালোচনাকে কখনই নেই না। আমার কথার সাথে ঐক্যমত যারা প্রকাশ করে তাদেরতো আলাদা করে আমার কিছু বলার নাই, যারা দ্বিমত প্রকাশ করে বরং তাদের প্রতিই আমার একটা দায়িত্ব বর্তায় যে, এ ব্যাপারটা নিয়ে আমাকে আলোচনা করতে হবে। বস্তুত, আমি আবর্জনা বলে থাকলে যেই ব্যক্তি এটাকে সরাসরি দেখিয়ে দিবেন যে কেন এটা আবর্জনা তার প্রতিই আমি সবচেয়ে কৃতজ্ঞ থাকবো, কেননা আমি আবর্জনা বলতে চাই না। বস্তুত আপনার স্কেপটিসিজমকে সাধুবাদই জানাই, আমি চাই আমাদের সবাই ই গোড়া স্কেপটিক হয়ে উঠুক।

      প্রথমত, কালামের মহাবৈশ্বিক যুক্তিটার যেই সমস্যা যে এটা নিজের ক্ষেত্র পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না এবং এটা একটি যৌক্তিক ফ্যালাইসি এর উত্তর হিসেবে এই যুক্তি নিয়ে আসা হয় যে সৃষ্টিকর্তা মহাবিশ্বের বাইরে। এটা কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখবেন যে এক্যুইভোকেইশন হয়ে যাচ্ছে। মহাবিশ্বের রাইরে বলতে কোন শক্ত সমর্থ ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না, এটাকে কোন সংজ্ঞায় ফেলা যাচ্ছে না। একটি যুক্তি সুযুক্তি কিনা তা নির্নয় করা যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বা প্রিমিসে সেটা ব্যাবহার করে। যেমন- এখন যদি বলা হয় যে "giant pixie land বলে একটা জাগা আছে, তবে এটা মহাবিশ্বের বাইরে- আপনি কিন্তু এটাকে সঠিক যুক্তি বলব্রল না, আপনার প্রশ্ন হবে মহাবিশ্বের বাইরে বলতে কি বোঝানো হচ্ছে, তাই না? ধরুন, আমি বলছি একটি বর্গের ক্ষেত্রফল a^2 যেখানে একবাহুর দৈর্ঘ্য a. আপনি যদি বলেন আচ্ছা এটা যদি চার বাহু বিশিষ্ট বর্গ না হয়ে পাঁচ বাহু বিশিষ্ট বর্গ হয় তাহলে? একটি জিনিষ সুসংজ্ঞায়িত হলে সেই সংজ্ঞার সাথে যায় না এমন কিছু বলা সম্ভব না, মুলত এই কারণেই মহাবিশ্বের বাইরে এটাকে আমরা যুক্তি বলতে পারিনা, এটা এক্যুইভোকেইশ্ন হয়ে যায়। জানাবেন আপনার এটা গ্রহনযোগ্য মনে হচ্ছে কিনা।

      আর ইংরেজীর ব্যাপারটা আমি ভেবেছি, এবং এটাও বুঝেছি যে এটা খুবই বিরক্তিকর। তাই আমি চেষ্টা করছিলাম যে আমি ইংরেজী লিখলেও যেন আবংলাতে লিখি যেতে এই দোষ কেউ দিতে না পারে যে, আমি আমার ইংরেজি বিদ্যা জাহির করার মাধ্যমে অ্যাপিল টু অথারিটি সম্পন্ন করছি। এর মাঝে একজন বলেছেন যে এটা না করে ইংরেজীতেই ইংরেজী লিখলে বেশী ভালো হয়। এটা নিয়ে ভাবছি। আর ইংরেজীর ব্যাবহার সীনিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত বুঝতে পারছি। আমি মুলত ইংরেজী ব্যাবহার করি দুটি ক্ষেত্রে। প্রথমত যখন টার্ম সম্পর্কে কথা বলি। যেমন- সিলেক্সন প্রেসার। এটার বাঙ্গলা আমি যদি করি নির্বাচনী চাপ এটা কিন্তু আপনাদের গুগো

      জবাব দিন
      • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)

        গুগোল বা উইকিপিডিয়া করে পেতে কষ্ট হবে কেননা আপনাদের এটা পুনরায় ইংরেজী করতে হবে, নির্বাচনী চাপের ইংরেজী আপনারা করতে পারেন electorial pressure তাই না, এটা লিখলে কিন্তু আবার আপনি আমি যেই তথ্যের কথা বলতে চাচ্ছিলাম সেটা খুজে পাবেন না। তাই টার্ম আমি মনে করি ইংরেজীতেই লেখা উচিত। আরেক ক্ষেত্রে আমি ইংরেজী ব্যাবহার করি, যখন কোন শব্দের বাঙ্গলা খুজে না পাই। যেমন, demonstrably এটার বাঙ্গলা করতে পারিনি, essentially এটার বাঙ্গলা করেছিলাম প্রয়োজনীয়ভাবে যেটা কিনা হয়েছে একটি হাস্যকর বাংলা, তাই এটা আর ব্যাবহার করিনি, subsequently এটার বাঙ্গলা করেছি ফলাফলপ্রসুতভাবে যা আমি সবজাগাতেই ব্যাবহার করি, molecualr biology এর বাঙ্গলা করেছিলা আনবিক জীববিদ্যা যেটা কিনা হয়েছে একটি হাসিকর বাঙ্গলা কেননা আনবিকের ইংরেজী neuclear, molecule অর্থ অনু আমি জানি কিন্তু molecular এর কোন বাঙ্গলা পাইনি। এটা মেনে নিচ্ছি যে ইংরেজীর ব্যাবহার একটী বিরক্তিকর ঝামেলা। আমি বলবো আপনারা সহায়তা করুন দেখিয়ে দিয়ে যে এই শব্দের বাঙ্গলা প্রতিশব্দ হতে পারে এটা, যা করেছে মুহাম্মদ এবং নুপুর ভাই। ভন্যবাদ।

        জবাব দিন
      • জাহিদ (১৯৮৯-৯৫)

        অর্ণব

        আমার উপস্থাপনা আগে লোকজন 'কখন শেষ হবে' সেই আশায় থাকত। একগাদা সমীকরণ দিতাম স্লাইডে। পরে আমার এক সহকর্মী বলল, "দেখ বাপু, তুমি হেন করছ, তেন করছ তাতে আমার কি লাভ। তোমার presentation থেকে আমি কিছু না শিখলেতো আমি তা শুনব না। সুতরাং আমি বুঝি এমন করে তোমাকে বুঝাতে হবে। আমার কোন প্রয়োজন নাই তোমার কথা শুনার, বরং তোমার প্রয়োজন আছে আমাকে বুঝানো।" এরপর থেকে আমি টাইট হয়ে গেছি।

        কয়েকদিন আগে, একটা উপস্থাপনার পরে দেখি সবাই অনেক প্রশ্ন করছে! প্রফেসর বলল, 'ঘাবড়ায়োনা, লোকজন কিছু বুঝেছে বলেই তারা জানতে উতসাহী'। নিজের পরিবর্তনে খুশী হলাম!

        বাংলা শব্দ ব্যবহারে ডঃ দেবব্রত হচ্ছেন আমার আদর্শ। উনি যখন বাংলা বলেন, পারলে সবই বাংলায় বলেন। আর যখন ইংরেজী বলেন, মনে হয়, এই লোক কি আদৌ বাংলা পারেন?!?

        অন্য বিষয়টা একটু জটিল। দেখি তুমি কেমন বুঝাতে পার! 🙂

        আমরা সবাই জানি বিশ্ব-ব্রম্মান্ড একসময় একটা বিন্দুতে ছিল। তারপরে তা ছড়িয়ে পরছে। এবং সময় কিন্তু এই অংশের ভিতরের একটা কন্সেপ্ট। কথা হচ্ছে, মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারিত হয়ে নতুন জায়গা দখল করছে, সেটা আগে কি ছিল? আর সময় যদি বিশ্বের ভিতরের উপাদান হয়, তাহলে এর বাইরে কি সময় আছে? না থাকলে তা physical significance কি?

        আমার মাথায় প্যাঁচ লেগে যায়, দেখি তুমি বা আর জ্ঞানী লোকেরা কি বল/বলেন। প্লীজ সাধারণ ভাবে বলো, যতটুকু সম্ভব।

        জবাব দিন
        • জাহিদ (১৯৮৯-৯৫)

          আরেকটা কথা জানার ছিল। ধর, কেউ পৃথিবীর শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে এবং আরেক পা ফেললেই সে মহাবিশ্বের বাইরে চলে যাবে। এই মূহুর্তে সে যদি আরেক ধাপ আগায়, সে কি দেখতে পাবে? ঐটা কোন জায়গা?

          😕

          জবাব দিন
        • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)

          আসলে আমি অ্যাস্ট্রোপদার্থবিদ্যা জানি না, এটা সম্পর্কে আমার জ্ঞান কার্ল সেগানের সহজ ভাষায় লেখা দুই একটা আর্টিকেল ছাড়া কিছুই না। তারপরও চেষ্টা করছি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার, তবে বলে নিচ্ছি আমার উত্তর চুড়ান্ত না যেহেতু এটা সম্পর্কে আমি ভালো জানি না, মুহাম্মদ বা হোসেন বোধহয় ভালো বলতে পারবে এটা নিয়ে।

          আমি যতটুকু জানি যে, আইনস্টাইন প্রমান করেন স্পেইসের মত টাইমও একটা জ্যামিতিক প্রপার্টি যেটাকে তিনি বলেন চতুর্মাত্রিক স্পেইসটাইম। এডউইন হাবোল দেখান যে স্পেইসটাইম সম্প্রসারণশীল। বিগব্যাং ত্থিওরি বলে যে স্পেইসটাইম একটা সময়ে একটি সিঙ্গঅলারিটিতে ছিল যেখানে সিঙ্গঅলারিটি একটি অবস্থান যা একটি মাত্রাহীন (dimensionless) বিন্দু এবং যেখানকার জ্যামিতি এবং laws of physics সম্পর্কে এখনও আমরা জানি না।

          বিশ্ব-ব্রম্মান্ড একসময় একটা বিন্দুতে ছিল।

          মুলত এটি ছিল একটি dimensionless point যার জ্যামিতি ফিজিক্স সম্পর্কে আমরা জানি না, এটি হয়ে থাকে পদার্থের অত্যধিক concentration এর কারণে যেমন ব্ল্যাকহোলে।

          তারপরে তা ছড়িয়ে পরছে। এবং সময় কিন্তু এই অংশের ভিতরের একটা কন্সেপ্ট। কথা হচ্ছে, মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারিত হয়ে নতুন জায়গা দখল করছে, সেটা আগে কি ছিল?

          তারপর তা ছড়িয়ে পড়ছে যেই সাথে সময়ও ছড়িয়ে পড়ছে, স্থান এবং সময় বস্তুত একটি threadই যা দেখান আইন্সটাইন যে পদার্থ এবং শক্তির concentration এই spacetimeএর threadকে বক্রতা দেয়।

          মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারিত হয়ে নতুন জায়গা দখল করছে, সেটা আগে কি ছিল?

          নতুন জায়গা আপনি যখন বলছেন আপনি কিন্তু স্পেইসই বলছেন। বস্তুত এই স্পেইসই সম্প্রসারণশীল। নতুন spacetime মহাবিশ্ব দখল করছে না বলতে পারেন যে মহাবিশ্ব যেই spacetime দখল করে আছে সেটাই সম্প্রসারণশীল।

          সময় যদি বিশ্বের ভিতরের উপাদান হয়, তাহলে এর বাইরে কি সময় আছে?

          বিশ্বের বাইরে বলতে আসলে কিছু নেই, সময় শুরু হয় আজ থেকে ১৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে। এখন আপনি যদি জানতে চান ১৪ বিলিয়ন বছর আগে কি ছিল? উত্তর হবে singularity যা কিনা বস্তু এবং শক্তির অত্যধিক concentration প্রসুত অত্যধিক জ্যামিতিক বক্রতা (curvature) যেখানে spacetime কলাপ্স করে।

          কেউ পৃথিবীর শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে এবং আরেক পা ফেললেই সে মহাবিশ্বের বাইরে চলে যাবে। এই মূহুর্তে সে যদি আরেক ধাপ আগায়, সে কি দেখতে পাবে?

          আমি জানি না এই প্রশ্নের উত্তর কি হতে পারে, হোসেন বা মুহাম্মদ বোধহয় পারবে, ওদের অপেক্ষায় থকলাম। তবে এটা নিশ্চিত যে ব্যাপারটা হওয়ার কোন কারণ নেই যে মহাবিশ্বের শেষ প্রান্ত আর এক পা গেলেই মহাবিশ্ব শেষ, কেননা আর এক পা বাইরে গেলে আপনার পা ফেলার জন্য স্পেইস লাগবে। spacetime মহাবিশ্বএই সীমিত, আর সম্ভবত আপনি যেই সেন্সে মহাবিশ্বের প্রান্তের কথা বলছেন সেই প্রান্ত সম্প্রসারিত হবে আলোর গতিতে, তাই আমাদের ইউক্লিডিয় জ্যামিতি দিয়ে এটার হিসাব করা সম্ভব নয়।

          অ্যাস্ট্রোপদার্থবিদ্যা আমার বিষয় নয়, এটা সম্পর্কে আমি জানি না, যতটুকু জানি তা থেকে বললাম। আর পদার্থবিদ্যা বোধহয় অঙ্ক না করে বোঝানো সম্ভব নয়। আমি সেই অঙ্কগুলো জানি না।

          জবাব দিন
          • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

            জাহিদ ভাই,

            বেশ কয়েকটা বিষয় অর্ণব ভাইই বলে দিয়েছেন। আমিও খুব বেশী জানি না। তবে যতটুকু জানি তা থেকে বলছি:
            আমরা বলি মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। এখানে মহাবিশ্ব বলতে আমরা কি বুঝাই। বুঝাই স্থান। গ্যালাক্সিগুলো কিন্তু একে অপরের থেকে দূরে সরে যায় না। গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যবর্তী স্থান তথা স্পেস প্রসারিত হয় বলেই তারা দূরে সরে যাচ্ছে বলে মনে হয়। খুব স্থূলভাবে বললে বলতে হয়, "একটা বেলুন ফোলানোর আগে তার উপর অনেকগুলো বিন্দু বিন্দু দাগ দিন। এরপর ফোলানো শুরু করুন। যত ফোলাবেন বিন্দুগুলো তত দূরে সরে যেতে থাকবে। এই বিন্দুগুলোই হল গ্যালাক্সি। আর বেলুনটা স্থান-কাল বক্রতা।"

            তার মানে, মহাবিশ্ব প্রসারিত হয়ে যে স্থান-কাল দখল করছে তা কোত্থেকে এল- এই প্রশ্নতেই গলদ আছে। বিগ ব্যাং এর 10E-36 সেকেন্ড পরই inflation এর মাধ্যমে স্থান-কাল এক্সপোনেনশিয়ালি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটা ইনফ্লেশন তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। তবে সবই গাণিতিক। এগুলো পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করার যুগ এখনও আসেনি।

            মহাবিশ্বের বাইরে গেলে কি দেখব, এই প্রশ্নটা আরও স্পেসিফিক করলে ভাল হতো। আমরা দেখেছিই মহাবিশ্ব মানে স্থান-কাল। তারমানে প্রশ্নটি দাড়াচ্ছে, স্থান-কাল তথা চতুর্মাত্রা অতিক্রম করলে কি হবে। এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। তবে এর আগে আরেকটা প্রশ্নের উত্তর দেয়া জরুরী- মাত্রা অতিক্রম তথা অন্য মাত্রায় যাওয়া কি সম্ভব? গণিতের মাধ্যমে অসীম সংখ্যক মাত্রা নিয়েও কাজ করা যায়। কিন্তু মানুষ চতুর্মাত্রার বাইরে কোনকিছুতে গমন বা তার ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অনুভূতি লাভ করতে পারে না। ব্যাপারটা এমন: খাতায় আঁকা মানুষটি দ্বিমাত্রিক। এই দ্বিমাত্রিক মানব কি খাতা থেকে লাফ দিতে পারবে? লাফ দিতে হলে তার প্রয়োজন আরেকটি মাত্রা, তৃতীয় মাত্রা। সেটা তার নেই। আমাদের পঞ্চম বা অসীম সংখ্যাক মাত্রা নেই বলেই স্থান-কাল অতিক্রমের চিন্তাটা করা যাচ্ছে না। তবে স্থান-কালকে বাঁকিয়ে দেয়া অবশ্যই সম্ভব, বিশাল ভরের মাধ্যমে।

            দেখা যাচ্ছে, মানুষের জ্ঞান খুব সীমিত। অনেক কিছুই জানি না। অনেক কিছুই আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গণিতে "অসীম" নামে একটা টার্ম আছে। মহাবিশ্বকেও গাণিতিক দিক দিয়ে অসীম ধরা হয়। কিন্তু অসীমের অনেক কিছুই প্যারাডক্সের মত। হিলবার্টের প্যারাডক্স এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। তার মানে অসীম এর বেশ কিছু বিষয় আমাদের জানা নেই। এগুলো গ্যাপ। এই না-জানা অসীমত্বকে ঈশ্বর দিয়ে প্রতিস্থাপিত অবশ্যই করা যায়। কিন্তু সেটা বিজ্ঞানসম্মত হবে না। বিজ্ঞান বা যুক্তির যেখানে পরাজয় সেখানে কেউ বা ঈশ্বর আনেন, আর কেউবা আনেন অসংজ্ঞায়িত নামক টার্মটি। বলাই বাহুল্য বিজ্ঞান এগুলোকে "অসংজ্ঞায়িত" হিসেবেই দেখে। যা অসংজ্ঞায়িত তা সম্পর্কে আমরা কিছুই বলতে পারি না। এজন্যই বিজ্ঞান এটা সম্পর্কে কিছু বলে না। যার সংজ্ঞা সে দিতে পারেনি তা নিয়ে কিছু বলার অধিকার তার নেই। কিন্তু ধার্মিকরা এই অসংজ্ঞায়িত বিষয়গুলোর অতীন্দ্রীয় ব্যাখ্যা দাড় করিয়েছেন এবং তার উপর বিভিন্ন গুণ-বৈশিষ্ট্য আরোপ করেছেন। সেটা সম্পূর্ণই তাদের অতীন্দ্রীয় আবেগের বিষয়, এর পেছনে কোন যুক্তি বা গণিত নেই। গণিত, যুক্তি বা বিজ্ঞানের প্রথম কাজ সংজ্ঞা দেয়া। সংজ্ঞা দেয়ার পর সেটা থেকে যতকিছু ডিডিউস করা হবে তার সবই সে সংজ্ঞা থেকে আসতে হবে।

            আসলে আমার মনে হয়, বিজ্ঞানে ঈশ্বরের ধারণা একেবারেই অবান্তর। বিশ্বাসীরাও অনেকে এই কথাটা বলেন। অবান্তর কারণ, বিজ্ঞান যদি চোখ বন্ধ করে ধরেও নেয়, অসীম মানে ঈশ্বর; তাহলেও কিছু যায় আসে না। আসল বিষয়টা হল অসীম, এটাকে কি নামে ডাকব সেটা মুখ্য না। ঈশ্বর নামে ডাকলেও এর উপর বিভিন্ন ক্ষমতা বা গুণ আরোপ করার উপায় বিজ্ঞানে নেই। বিজ্ঞান আসলে ঈশ্বরকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে না। এজন্যই ধর্মবেত্তারা প্রথম থেকে বলে আসছেন, ধর্মে বিশ্বাস করতে হবে।

            জবাব দিন
            • জাহিদ (১৯৮৯-৯৫)

              অর্ণব এবং মুহাম্মদ,

              সময় এবং স্থানের সম্পর্কের ব্যাপারটা কিছু জানতাম। তোমাদের কথা শুনে মনে হলো এবং আমারও যা উপলব্ধি, যে, আমরা খুব কম জানি। মুহাম্মদের কথাটা পছন্দ হয়েছে,

              মানুষ চতুর্মাত্রার বাইরে কোনকিছুতে গমন বা তার ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অনুভূতি লাভ করতে পারে না।

              আরো পছন্দ হয়েছে,

              দেখা যাচ্ছে, মানুষের জ্ঞান খুব সীমিত। অনেক কিছুই জানি না। অনেক কিছুই আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

              তবে তোমার বেলুনের উদাহরণটাও আমাদের মাত্রায় সীমাবদ্ধ। সম্প্রসারিত বেলুন নতুন জায়গা নিবে, এবং বেলুনের উপরের বিন্দুগুলো দূরে সরতে থাকবে।

              অর্ণব আমাকে বলেছিল, আমি, শ্রষ্টা সৃষ্টির বাইরে বলে পার পাব না, বলতে হবে কোথায়। আমি চেষ্টা করলাম বুঝাতে, আমাদের চেনা জায়গাগুলোর বাইরের কিছুই আমরা জানি না, এমনকি চিন্তাও করতে পারি না। [রেফারেন্সঃ মুহাম্মদ!] ঈশ্বর ওই অসীম নাকি ঐ অসীমে বাস করেন, তা আমি জানি না। হয়তো কেউই জানেন না। তবে চিন্তার অবকাশ থাকে।

              যুক্তিগত ভাবে এই প্রক্রিয়া ভুল হলো কিনা তা আমি জানিনা। তবে এটা যে মূল আলোচনার ধারার অনেক দূরের বিষয় এইটা বুঝতে পারছি। তাই অফ যাচ্ছি।

              গাইতে ইচ্ছা করছে,
              "বাউলা কে বানাইলো হাছন রাজারে 'আউলা' কে বানাইলো রে"!

              জবাব দিন
  6. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    অসাধারণ একটা পোষ্ট। নিজেও অনেক কিছু জানলাম। এবং বুঝতে পারলাম আমার কিছুতেই নিজের মতামত দেওয়া উচিত না। কারণ আমি কিছুই বিস্তারিত জানিনা। নিজেও অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম আমরা যারা মতামত দেই তারা সাধারণতঃ আগে থেকে ভাবিনা কথার মধ্যেই মুখে আসে বলি কিন্তু এমন ভাবে বলি যেন আমি কত চিন্তা করেছি।
    তোমার লেখা খুব ভাল লেগেছে কিছু ছোটখাট ব্যাপার ছাড়া। একটা জিনিস এই লেখা আরো জেনারালাইজ করা যায় না? মানে বলতে চাচ্ছিলাম সবাই যেন নিতে পারে। কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আঘাত না করে। জাকির নায়েক এর ছবিটাকে এইরকম বানানো কিংবা আরো কিছু জায়গায় ব্যক্তিগত আক্রমণ ভাল লাগেনি, লেখাটার মান কমিয়ে দিয়েছে।
    লেখার সময় আমার মনে হয় কন্টেন্ট এর উপর গুরুত্ব কমে গিয়েছিল ঐ জায়গায় অন্য একটা বিশ্বাস বা প্রমাণ ( জাকির নায়েক কে ভুল প্রমাণ করা ) চলে এসেছিল কি? সেটার জন্য আলাদা পোস্ট হলে ভাল হত। (আমি ভুল/বেশি বুঝে ফেলতে পারি)

    জবাব দিন
    • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)

      হ্যা আপনার কথা গ্রহন করলাম, জাকির নায়িক কে নিয়ে আলাদা একটা পোস্ট লিখে ছবিটা সেখানে দিয়ে দিব। আপনার মেইল পেয়েছি, দুঃখপ্রকাশ করছি দেরীতে উত্তর দেওয়ার জন্য, বস্তুত ইস্টারের ছুটিতে আমআর কাছে অত গুরুত্বপুর্ণ কোন মেইল আসার সম্ভবনা ছিল না বিধায় মেইল চেক করিনি, মুহাম্মদও আমাকে মাইল করেছিল যেটার উত্তর দিতে দেরী হয়েছে, ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।

      জবাব দিন
  7. আলম (৯৭--০৩)

    এই পোলাটারে request করলাম যাতে ইংরেজি শব্দ ইংরেজিতেই লিখে, কিন্তু শুনলইনা! আজকে একটু উদাহরন দিয়ে দেখায়া দেইঃ

    ১) পসিবলি একপক্ষের যুক্তির বিরুদ্ধে রিফিউটাল হিসেবে অন্য পক্ষ অ্যাড হোমিনেম ব্যাবহার করে থাকে।
    ২) ক্রিমিনাল কনভিক্ট ট্যাক্স ডজার ক্রিয়েইশনিস্ট কেন্ট হোভিন্ড যে বর্তমানে দশ বছর জেল খাটছে...

    এগুলোতো বাংলাতেও (অনুবাদ) লিখা যায়, তাইনা? তাহলে পড়তে কতো মজা লাগতো!
    আর এসব ইংরেজি টার্ম বাংলায় টাইপ করতেওতো কষ্ট হবার কথা।

    যাহোক, "রচনার শিল্পগুন" না থাকলেও লেখাটা কিন্তু চমৎকার লাগলো। :thumbup: অনেক কিছু শিখলামও। মুহাম্মদের মতো করে বলিঃ

    মাঝেমধ্যে নিজেই ব্যবহার করে ফেলি ফ্যালাসি। কিন্তু সেটা অজ্ঞানে। এগুলো জানার ফলে এখন থেকে ফ্যালাসি এড়িয়ে যেতে পারব, আরও সূক্ষ্ণভাবে। একটা নতুন চোখের জন্ম হল যে সবসময় যুক্তিতে ফ্যালাসি ধরার চেষ্টা করে যাবে।

    এবারে আমার একটা প্রশ্নঃ
    জাকির নায়েকের ছবিকে বিকৃত করে "সুসংজ্ঞায়িত" করার যে চেষ্টাটা তুমি করলে, তা কি fallacy নয়? এরপর হারুন ইয়াহিয়ার ড্রেসআপের ব্যক্তিগত ত্রুটি নিয়ে যতোটা বাক্যব্যয় করলে, সেটা কিসের পরিচায়ক? আমরা মানি, যে, তাঁর টোটাল গেটআপটা ঠিক দেখাচ্ছে না, কিন্তু ওটার বিপরীতে তোমার মন্তব্যগুলো যে অনেক কর্কশ হয়ে গেলো ভাই!

    ভাল থেকো, ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
    • জুবায়ের অর্ণব (৯৮-০৪)

      হ্যা আপনার ইংরেজী বিষয়ক মতামতটা গ্রহন করেছি এবং ইতমধ্যেই এটা করা শুরু করেছি। আর না জাকির নায়েকের ওটা হেত্বাভাস হয়নি একারণে যে, একটা যুক্তি হেত্বাভাস হতে হলে তাকে আরেকটী যুক্তির জবাব হিসেবে ব্যাবহৃত হতে হয়, আমি জাকির নায়েকের কোন যুক্তির খন্ডনে ওটা করিনি, আমি বরং ওটা করেছি এটা বলার জন্য যে, zakir naik is devil himself. তবে, হারুণ ইয়াহিয়ার ব্যাপারে আমি কর্কষই হতে চেয়েছি, আমি মনে করি ও একটা হিপোক্রেট, সে পুরষ্কার ঘোষণা করেছে যে দেশে সে থাকে সে দেশের জিডিপির ৩৪ গুন অর্থ এটাই প্রমান করে তার সদিচ্ছা, genital display করেছে যেটা একটি ফৌজদারী অপরাধ, কোকেইন যা কিনা একটী class A ড্রাগ সহ ধরা পড়েছে, আমার কোন সমস্যাই থাকতো না সে কোকেইন কেন হেরোইন নিয়ে ধরা পড়লেও, কিন্তু নিজেকে একজন ধার্মিক ব্যাক্তি হিসেবে পরিচয় দেওয়ার সাথে কোকেইন সেবন সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত। আমি kent hovind কেও আক্রমন করেছি একই কারণে। নিজেকে একজন ধার্মিক পরিচয় দিয়ে ট্যাক্স ডজ দেওয়া, নিজেকে ভুয়া দেউলিয়া ঘোষণা করা সর্বোপরি ফৌজদারী চার্জে ১০ বছরের করাদন্ড প্রাপ্ত হওয়া একজনের ধার্মিকসুলভ নিতীগত মুল্যবোধের পরিচায়ক নয়। আশা করি আমার অবস্থান বুঝে থাকবেন।

      জবাব দিন
  8. মাসুম (৯২-৯৮)

    বেশ বড় পোস্ট। ধৈর্য্য নিয়ে পড়লাম। যা বুঝলামঃ
    কুযুক্তি / হেত্বাভাস / ফ্যালাসীর প্রকারভেদ
    ১। যু্ক্তিখন্ডনের পরিবর্তে বক্তাকে হেয় করা
    ২। নিজের জ্ঞানকে Standered ধরে অজ্ঞানতাকে অসম্ভব বলে যুক্তি দেয়া।
    ৩। যুক্তি খন্ডনের পরিবর্তে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেয়া।
    ৪। শ্রোতার অজ্ঞানতাকে আশ্রয় করে তার অজানা জিনিষ নিজের সুবিধামত উপস্থাপন করা।
    ৫। নিজের সাধারন জ্ঞানকে ধ্রুব ধরে গবষণালব্ধ বিশেষ জ্ঞানকে অস্বীকার করা।
    ৬। ভিন্ন বিষয়ের বিখ্যাত ব্যক্তির ব্যক্তিগত মতামতকে অনস্বীকার্য হিসাবে উপস্থাপন করা।
    ৭। তর্কের বিষয়বস্তু ভুলভাবে উপস্থাপন করে তাকে অসার প্রমান করা।
    ৮। বিষয়বস্তুর জটিলতাকে অতিসরলিকরনের মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যর অবমূল্যায়ন / অসম্ভবতা প্রদর্শন করা।
    ৯। নির্বিচার পক্ষপাত।
    ১০। অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা করে মুল বিষয়কে উপেক্ষা করা।
    ১১। অনেক মতবাদের যে কোন দুটি মতবাদের একটিকে অসার প্রমান করে অন্যটিকে সর্বশ্রেষ্ট ঘোষনা করা।
    ১২। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তে সুবিধাজনক অংশ পর্যন্ত ব্যখ্যা করে থেমে যাওয়া।
    ১৩। ব্যবহৃত টার্মের সার্বজনিন সংজ্ঞা উপেক্ষা করে ইচ্ছামত ব্যখ্যা প্রদান করা।
    ১৪। নিজস্ব যুক্তির স্বপক্ষে শ্রোতার অজ্ঞাত প্রশ্ন উথ্থাপন করে উত্তর হিসাবে অসার যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করা।
    ১৫। অস্পষ্ট প্রমানের মণগড়া ব্যাখ্যা করা।
    ১৬। ব্যক্তব্যের আংশিক উদৃতি করে বক্তাকে ভুল অবস্থানে নেয়া।
    ১৭। অবাস্তব পরিসংখ্যান।
    ১৮। অসম্ভব প্রমান দাবী করা।
    ১৯। অপ্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য দেখিয়ে ভিন্ন বিষয়কে সমধর্মী দাবী করা।
    ২০। অপ্রাসঙ্গিক ঘটনার সহাবস্থানকে সম্পর্কযুক্ত দাবী করা।

    কতটা ঠিক হলো?
    😕

    জবাব দিন
  9. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    অর্ণব : ভালো লাগলো পোস্ট। নানা কুযুক্তিগুলো আমরা নির্বিচারে ব্যবহার করি বা এর শিকার হই; কিন্তু এভাবে সজ্ঞায়িত করে করে জানাটা হয়ে উঠেনি। তোমার বদৌলতে সেটা জানা হলো। :hatsoff:

    আরো বিস্তারিত লিখো।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  10. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    অনেক আগের এই পোস্ট টা আমার দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিলো।( এটা স্বাভাবিক কারণ আমি ব্লগে মোটামুটি অনিয়মিত।)
    কয়েকদিন আগে হোসেনের সাথে আড্ডা দেয়ার সময় তোমার এই পোস্ট টা নিয়ে শুনেছিলাম। আজকে অনেক সময় নিয়ে পড়লাম।
    প্রিয়তে নিলাম। আর অবশ্যই এ ফ্যালাসি গুলো থেকে সজ্ঞানেই দূরে থাকার চেষ্টা থাকবে।
    তোমাকে :hatsoff:

    জবাব দিন
  11. Maruf2491

    arnob vai,
    ami anik!!!……ami ccb te chilam na…..bt apnar sate contact korar r kono way i chilo na…….please contact koren……ami nipu vai k diye apnar sate contact korar try korsi, yahoo te knock korsi fb te msg disi, youtube e commentz disi, bt apni kono reply i koren nai…….amar dos kothay vai??? apni jokhon amar kase help chaisilen tokhon ki bolsilen j airokom vabe amak criminal convection e fasaben???? r akhon contact kortesen na……..tk na dile phn kore bole den…….airokom behave apnar kas theke asa kori nai……..last 13 months apni pay koren nai……..vai apni jodi contact na koren ami ki yayah uncle k imfor korbo??? uni apnar sate or apnar ma r sate bose bapar ta solve korbe……..ami kano apnar jonno suffer korbo??? ata aktu chinta kore deikhen please……….apni please contact koren vai……..nahoy ami unader janai……tc vai.

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।