প্রাউড টু লিভ এ লাইফ

ইষ্টারের ছুটি। ছুটির সময় আমি সাধারণত কিছু করি না। এবার একটা কিছু করে ফেলছি। তা হল সিসিবি তে লেখা, এটাকে আমি করা বলছি এই কারণে যে, সিসিবি তে যোগদানের প্রথম দিন থেকেই আমি মোটামুটি চেয়েছি অপ্রয়োজনীয় এবং মূল্যহীন কোন পোস্ট না দিতে, আমি চেয়েছি যে আমার পোস্টগুলোর একটা বক্তব্য থাকতে হবে, সেগুলো এমন হবে না যে ভট্ ভট্ ভট্ ভট্ পড়ে গেলাম, শেষ করে মাথায় কিছুই থাকল না, অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করে ভগন্দর রোগের চিকিৎসার করা হয় শীর্ষক কলো, ছোট সাইনবোর্ড পড়ার মত।

তবে আমার প্রতিজ্ঞা আমি অ্যালিগেইডলি ভঙ্গ করেছি দুদিন আগে একটি জোকের পোস্ট দিয়ে। তবে এইখানে আমার একটা ডিফেন্স আছে আবার। আমি ধারণা করেছিলাম ঐ জোকগুলো হয়তো বাংলাদেশে পৌছায়নি, এই জোকগুলোর উৎকৃষ্ট তর্জমা করার মাধ্যমে আমাদের বাংলা জোকসপুলে কয়েকটি মূল্যবান অ্যালিল কনট্রিবিউট করার স্বপ্ন দেখছিলাম আমি। তবে আফটারঅল এটা যদি অপচয়ই হয়ে থাকে আমি এর জন্য দায়ী করবো আমার পূর্বে কারো লেখা আরেকটি জোকের পোস্টকে যা দুর্ভাগ্যবশত আমি পড়ে ফেলি এবং নিজেও একটা লেখার জন্য অনুপ্রাণিত হই।

আমি মূলত পূর্বের পোস্টগুলোর উপর চোখ বুলাচ্ছিলাম। ফয়েজ ভাই, রহমান ভাই, শওকত ভাই, নূপুর ভাই, আমিন ভাইদের পোস্ট ভাল লাগলো। তবে, পূর্বের পোস্টগুলোর উপর এভাবে নির্বিচারে চোখ চালিয়ে আমি ভাল করিনি। কেননা, ফলাফলপ্রসূতভাবে আমি এক কমপ্লিকেইটেড গ্যান্জামে পড়ে যাই। গ্যান্জাম বলতে আমি সিরিয়াসলি গ্যান্জাম বুঝাচ্ছি, রেসপাইরেটরি গ্যান্জাম, মনে হচ্ছিল হেক্সোকেনেইজ আমার গ্লুকোজ চেইনগুলোর সাথে আর ফসফেইট গ্রুপ অ্যাড করতে পারছে না। আমি খাবি খেতে থাকি। আমার মাথায় একটি ফ্রেইজ ডুকে যায় যা আমি মাথা থেকে তাড়াতে পারিনা। আমার মনে হতে থাকে আমার কলিজা ডোপামিনগুলো ভেঙ্গে না ফেলে কোন যাদুকরী উপায়ে সরাসরি মগজে ফেরত পাঠাচ্ছে, আমার অনিয়ন্ত্রিতভাবে মজা লাগতে থাকে।

আমি সত্যিকথা বলবো। অত্যাধিক অ্যাড্রেনালিন ফ্লো বা অন্য কোন কারণে ছুটির শুরুতেই আমি সিসিবির জন্য একসাথে চারটি পোস্ট লেখা শুরু করি। চারটি ই মোটামুটি সিরিয়াস- পপুলেইশন জেনেটিক্স, মলিকিউলার জেনেটিক্স, সুগার অ্যান্ড লিপিড কেমিস্ট্রির উপর। এর মাঝে হঠাৎ একদিন আমাকে ক্রিয়েইশনইজম এবং ইন্টেলেকচুয়্যল অসততা শীর্ষক একটা পোস্ট লেখা শুরু করতে হয়। বলাই বাহুল্য এটা একটা ঝামেলাই ছিল বৈকি। যাই হোক চালিয়ে যাচ্ছিলাম, এরই মাঝে হঠাৎ যদি আরও একটা গ্যান্জামে পড়ে যাই তাহলে সমস্যা না? এমনিতেই আমার সময় ৬ তারিখ পর্যন্ত, তারপর জুন পর্যন্ত আমার চেহারা দেখা যাবে না। মানে অবস্থা অনেকটা পান্ডা, চিতাবাঘ বা গালাপোগাস কচ্ছপের মত; জিনপুলে অ্যালিল নাই পাঁচটাও, আবার যা আছে তার সবগুলাই হোমোজাইগোস, ইনব্রিডিং কোএফিসিয়েন্ট ১ এর কাছাকাছি, বিলুপ্তি ভরটেক্সে ঢুকছি এই দুই সপ্তা পরে। যাই হোক দুটি অস্বস্তিকর ঝামেলাই আমি এক পোস্টে সারার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।

যা বলছিলাম, একটা ফ্রেইজ মাথায় ডুকে যায়। সেই পদ্মলোচনটির নাম হল “প্রাউড টু বি”। আমি অবাক হয়ে গেলাম দেখে যে আমার জীবনে প্রাউড ফিল করার মত কিছু নাই। ১৮/১৯ এ পাবিং, ক্লাবিং, নারী, বন্ধুবান্ধব ভাল লাগত, জীবনান্দের ভাষায়, নিজেদের জন পরিজন নিয়ে তারা কোন এক ফিচেল পাতালে হারিয়ে গেল। কবিতা ভাল লাগত, সেটাও পঁচে পঁচে শূকরের মাংস হয়ে যাওয়ার পথে। এখন আমি কবিতা পড়লে তার মিটার ঠিক থাকে তো রাইম ঠিক থাকে না, ব্ল্যাঙ্ক ভার্স হয়ে যায়। দুটাই থাকলে কবিতার আইডেন্টিটি থাকে না, একই রাইম স্কীমের দুই কবিতা মিশে জগাখিচুড়ী হয়ে যায়। ফলে কবিতা হয়ে যায় এমন-

ও ফর এ বিকারফুল অফ ওয়র্ম স্যাউথ ফুল অফ ডিউই ওয়াইন
টু লেট দ্যা পেইল ফরহেড বি কিস্ড বাই রুবি গ্রেইপ অফ প্রসপারাইন। ইত্যাদি, ইত্যাদি।

আমি নিশ্চিত ইংরেজী সাহিত্যের কেউ থেকে থাকলে তাকে আমি হাসিয়েছি।

এটা আমার সূচনার সমাপ্তি। আমার পোস্টটা বোধহয় আরও একটি পর্বে গড়ালো। মাই ডিফিকাল্ট অ্যান্ড ডিস্টার্বিং সেকেন্ড চাপ্টার। আমি ভেবে বের করলাম, “হোয়াট অ্যাবাউট বিয়িং প্রাউড টু লিভ এ লাইফ?” প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ।

২,১৬৭ বার দেখা হয়েছে

২৩ টি মন্তব্য : “প্রাউড টু লিভ এ লাইফ”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)
    রেসপাইরেটরি গ্যান্জাম, হেক্সোকেনেইজ, গ্লুকোজ চেইন, ফসফেইট গ্রুপ, ডোপামিন, অ্যাড্রেনালিন ফ্লো, পপুলেইশন জেনেটিক্স, মলিকিউলার জেনেটিক্স, সুগার অ্যান্ড লিপিড কেমিস্ট্রি, ক্রিয়েইশনইজম, গালাপোগাস কচ্ছপ, ইনব্রিডিং কোএফিসিয়েন্ট, রাইম স্কীম

    বাহ ছুডো ভাই... তুমি তো দেখি অনেক জ্ঞানী :-B


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. সাজিদ (২০০২-২০০৮)

    লেখা ব্যায়াপক ভাল হইসে জুবায়ের ভাই, :thumbup: :thumbup:

    হেক্সোকেনেইজ আমার গ্লুকোজ চেইনগুলোর সাথে আর ফসফেইট গ্রুপ অ্যাড করতে পারছে না।
    জিনপুলে অ্যালিল নাই পাঁচটাও, আবার যা আছে তার সবগুলাই হোমোজাইগোস, ইনব্রিডিং কোএফিসিয়েন্ট ১ এর কাছাকাছি, বিলুপ্তি ভরটেক্সে ঢুকছি এই দুই সপ্তা পরে।

    ব্যপার গুলি জদিও মাথার উপর দিয়াই গেসে, সাইন্স হইলেও আমি আবার ইডি পারটি ছিলাম।

    জবাব দিন
  3. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    একটা কথা আগে কখনও বলি নাই: সিসিবি-তে বর্তমানে আমার প্রিয় ব্লগার "জুবায়ের অর্ণব" ভাই। কেন আপনার ব্লগ এত ভাল লাগে?- উত্তর দেই:

    - প্রথম থেকেই মানুষ জ্ঞান অর্জনের পদ্ধতি আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে বিজ্ঞান। বর্তমানে এর চেয়ে ভাল আর কোন পদ্ধতি নেই যার মাধ্যমে বিশুদ্ধ জ্ঞানের সন্ধান পাওয়া যায়। আপনি এই বিষয়টা খুব ভাল জানেন। আপনি জানেন: আমাকে যদি কিছু জানতে হয় তবে এখন হাতে থাকা সর্বশ্রেষ্ঠ পদ্ধতির মাধ্যমেই জানতে হবে। আপনার লেখার প্রতিটি লাইনে এই উপলব্ধির সন্ধান পাওয়া যায়।
    - আপনার মধ্যে কোন কুসংস্কার নেই। নেই কোন গোঁড়ামি। গোঁড়ামি বলতে এখানে আমি যুক্তিবিরোধিতা বুঝিয়েছি। যারা যুক্তির ধার ধারেন না, যুক্তি ছাড়াই কোন কিছুকে আঁকড়ে ধরে থাকেন তাদেরকেই আমার গোঁড়া মনে হয় (এমনও অনেকে আছেন যারা প্রথমে একটা জিনিস বিশ্বাস করে নিয়েছেন এবং বাকি সবকিছুকে সেই বিশ্বাসের ছাঁচে ফেলে নষ্ট করতে চান)। আপনার মধ্যে এ ধরণের কিছু নেই। এখন পর্যন্ত আপনার লেখার প্রতিটি লাইনেই এই উদার মনের পরিচয় পেয়েছি।

    যাই আপনার পড়ের লেখা পড়ি গিয়ে...

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।