ডায়ালগ অব পিসিসি

সিসিবিতে এসে প্রথমেই খুব লজ্জায় পড়ি। প্রত্যেক কলেজের এত এত সদস্য-সদস্যা আর পিসিসির মাত্র কয়েকজন।তাও যারা আছে তাদের বেশির ভাগই মনে হয় কমেন্ট করতেই বেশি পছন্দ করে আমি যতদূর দেখলাম।পাবনা বিভাগে গিয়ে দেখি মাত্র অর্ধশত সংগ্রহ। খুবই হতাশ হতে হল আমাকে।

অন্যান্য কলেজের কাছে পিসিসি দেখলাম পাত্তাই পাচ্ছে না এ ক্ষেত্রে।আরে আমরা পিসিসি-কে বলছে আমরা পারিনা (আমরা পারিনা এমন কোন কাজ কি আছে নাকি!!)
অনেকগুলো ব্লগ পড়লাম কয়েকদিন ধরে।সবার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহন,মতামত ভালই লাগে পড়তে। সবার কলেজ জীবনের অনেক মধুর-বোকামীর-লজ্জার কথা উঠে এসেছে তাদের লেখার মাধ্যমে। এসব বিষয়ের মাঝে আমার যে জিনিষটা সবচেয়ে পছন্দ হয়ে তা হল কলেজের বিভিন্ন ডায়ালগ।
প্রত্যেক কলেজেরই দেখলাম ডায়ালগ নিয়ে লেখা আছে। আশা নিয়ে পিসিসিরটা খুজলাম-পেলাম না।তাই ভাবলাম দেখি কিছু মনে করে লিখতে পারি কিনা।

(পুর্বকথনঃএই কাহিনীগুলোর সাথে সম্পর্কিত সকল কথা বাস্তবিক।কাহিনী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বাদে অন্যান্য কারো সাথে মিলে গেলে আমি দায়ী নই)

১.
বৃহস্পতিবার,সকালে প্যারেড শেষ।হঠাত দেখি স্টাফ চিল্লাইতেছে-“আজ সবাই আফটার লাঞ্চের পরে হেয়ার কাট কেটে নেবেন”।

২.
তখন আমরা ক্লাস টেনে।লাইটস আউট এর পর চুপচাপ শুয়ে আছি। জেপি রাউন্ড দিচ্ছে-কারো কথা বলা যাবে না। যখন মনে হল জেপি চলে গেছে, আমার এক রুমমেট চুপিচুপি কথা বলা শুরু করল। হঠাত ধমক শুনলাম জানালার পাশে, “হু ইজ টক?” আমার রুমমেটের তড়িত উত্তর, “ভাইয়া,আই ইজ টক।”
যতদূর জানি ভাইয়া এখন ঢাকা ভার্সিটিতে ইংলিশে পড়ে।

৩.
ইলেভেনের এক্সকারশনে আমাদেরকে ব্রেক দেয়া হল মিলিটারি মিউজিয়ামে। সেখানে সবকিছু ঘুরে দেখানো হল আমাদের।বিদায়ের সময় আমাদের কলেজের পক্ষ থেকে একটা ক্রেস্ট দেয়া হল সেখানকার কমান্ডারের হাতে। ক্রেস্ট দেবার সময় আমাদের ফর্ম মাস্টার অত্যন্ত গর্বের সাথে বলে উঠলেন, “স্যার,দিস ইস এ্যা রেস্পেক্ট অফ টোকেন।”

৪.
আমরা তখন ক্লাস নাইনে উঠেছি মাত্র। সিনিওর সিনিওর ভাব ধরার কারনে প্রায়ই পাঙ্গা খেতে হয়। তো একদিন জেপি ডেকে পাঙ্গাচ্ছে আর ঝাড়তেছে। এক পর্যায়ে জেপি, “ডোন্ট লিমিট দ্য ক্রস”।

৫। ক্লাস টেনের কথা মনে হয়। ভুগোল ক্লাসে ম্যাডাম এসে বললেন যে আজ আমার কাজ আছে তোমাদের ক্লাস হবেনা। আমরা চিল্লাচিল্লি শুরু করলাম। ম্যাডাম চলে গেলে আমাদের চিল্লানোর মাত্রা আরো বেড়ে যায়। প্রিন্সিপাল যে আসতেছিল তা আর কেউ খেয়াল করেনি। তো প্রিন্সিপাল এসে সবাইকে দাড় করালো।জিজ্ঞেস করল কার ক্লাস। ফর্ম লীডার বলল যে ম্যাডামের ক্লাস ছিল। কিন্তু উনি কাজ থাকায় আজ ক্লাস নেবেন না বলে চলে যাওয়াতে …..।“চলে যাওয়াতে কী? কি হয়ছে তাতে? ম্যাডামের কি শাড়ি ঠিক ছিল না নাকি যে এত জোরে চিতকার করতে হবে। ”
প্রিন্সিপালকে দেখে ম্যাডাম ততক্ষণে ফর্মের পিছনে এসে দাঁড়িয়ে গেছে।

৫,২৬৯ বার দেখা হয়েছে

৯৪ টি মন্তব্য : “ডায়ালগ অব পিসিসি”

    • আমীন (০১-০৭)

      প্রিন্সিপালের নাম বলা যাবে না। 🙁
      আমি পোস্ট করছিলাম ৮ টা,মনে হয় সেন্সর বোর্ড আমার বাকি তিনটা পাস করায় নি.... 😕
      ডায়ালগ পোস্ট প্রিয় আমারো,কিন্তু ঐ যে-কাউকে আঘাত করা হয়ে যায় তাই অনেকে মানতে পারে না =((

      জবাব দিন
  1. আছিব (২০০০-২০০৬)

    আমীন ভাইয়া,ডায়লগ কম দিয়া আমাদের অভাববোধ বনাম রসবোধের ডুয়েলে অভাব্বোধরে আগায় দেয়ার জন্য এক্ষনি ৫ টা গড়াগড়ি দে x-(
    অ্যানিওয়ে,সবগুলাই ভালো এবং দুই-একটা মিলেও গেছে 🙂
    মাথায় আরো কয়েকটা বাল্ব জ্বলে উঠল তর এই ৫ টা শুনে,ধন্যবাদ 😀

    জবাব দিন
  2. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    বদর হাউসের ডর্ম ৪ এর দরজায় ২০০১ সালে চক দিয়ে লেখা ছিলঃএখানে চটি নিয়ে প্রবেশ নিষেধ

    অফ টপিক-ঠিক তার আগের সপ্তাহে কতিপয় ক্যাডেট হাউস ইন্সপেকশনে আর এম গুপ্তা রচিত বড় বড় মানুষের ছোট ছোট বই(চটি) নিয়ে ধরা পড়েছিল।

    জবাব দিন
  3. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ডায়লগ ভাল ছিল, তবে একটু কম হয়ে গিয়েছে। আরো বেশি করে দাও...


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  4. জাকারিয়া (১৯৯৯-২০০৫)

    ইভিনিং প্রেপ এর সময় অনেক ক্যাডেট ই একাডেমিক বিল্ডিং এর ছাদ এ উঠে আড্ডা দিত। একদিন ছাদ থেকে নামার সময় স্যার দেখে ফেললেন আর বললেনঃ "কি? চাঁদে গিয়ে ছাদ দেখা হচ্ছিল নাকি ?" :)) :))

    জবাব দিন
  5. আহমদ (৮৮-৯৪)

    লেখাগুলো ভাল লেগেছে।

    তবে একজন ম্যাডাম সম্পর্কে প্রিন্সিপালের কথা বলার ধরন দেখে হাসি পেলো না, বরং অবাক হচ্ছি এই প্রিন্সিপালের কান্ড দেখে। এই প্রিন্সিপাল সাহেব জিনিই হন না কেন, তার সম্পর্কে নেগেটিভ ধারনা জন্মালো।


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  6. রাহাত (২০০০-২০০৬)

    সেন্সরের ব্যাপারে কিছু বলার নাই, আমরা বাঙালী তো, সংবিধান সংশোধনের ধারা এইখানেও বজায় না রাখলে চলে ক্যামনে?
    তোর লেখা জোস লাগছে, আরো লিখ, ডোন্ট লিমিট দা ক্রস, এইটা আগো এক জেপিও কইসিলো, কওয়া যাইবো না, আসল ফলিন খাওনের চান্স আছে. 🙁

    জবাব দিন
  7. রাব্বি (১৯৯৮-২০০৪)

    এইটা আমি BMA তে joining এর দিনের কাহিনি।
    গেট দিয়া ঢুকবার পর জিগায়সে কোন কলেজ? আমি চামে চুমে দেখি পরিচিত কেউ নাই, তাই কইলাম সাভার মডেল কলেজ, স্যার। তো আমারে অন্য সিভিল (non cadet, সিভিল ভাইরা মাইন্ড খাইয়েন্না) দের লগে গোল্লাছুট টাইপ খেলাধুলায় লাগাইয়া দিলো। আমার বাকি কিছু ফ্রেন্ড দেখলাম লাগাতার :frontroll: এর উপ্রে আছে। আমি তো মহাখুশি মনে গোল্লাছুট খেলতেছি।
    তো অনেক্ষন গোল্লাছুট খেলার পর এক কলেজ ভাই আইসা কয়,
    bloody rabbi why u civil ?
    এইটা কইয়া যেই পাংগাটা দিছিলো :(( :(( :((

    জবাব দিন
  8. ফখরুল (১৯৯৭-২০০৩)

    রানা ভাই আছেন কেমুন? কই পোস্টিং? কালচারাল প্রিফেক্ট হিসেবে আপনার একটা দায়িত্ব আছে না। আরও পিসিসির পোলাপানরে আহ্বান জানান মানে আপনার ব্যাচের।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আরিফ আমীন (০১-০৭)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।