কাঠবিড়ালী , তুমি মর , তুমি কচু খাও………….

গত কয়েকদিন কাটলো আবেগ কষ্ট রাগ ভালোবাসা আর বিষণ্ণতা মিলিয়ে অদ্ভুত রকম। সেই মানবীয় কিংবা বানরীয় ( আমার বুদ্ধিবৃত্তি অনুভূতি তাদের সাথে মিল পাই বলে এই শব্দটা আমদানি করলাম ) অনুভূতির আচ্ছন্নতা মুক্তি পাবার চেষ্টা করতে চাইলাম। কিভাবে করা যায়? হঠাৎ করেই ছোটবেলার পুরনো মেথড প্রয়োগ করার চেষ্টা করলাম। ভাবলাম মজার মজার ছড়া পড়া যাক তাতে একটু দম বন্ধ ভাব কেটে যাবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ছড়াই যখন পড়বো জাতীয় কবিকে দিয়েই শুরু করা যাক না কেন ? শুরু হয়ে গেল। খাদু দাদু লিচু চোর ঝিঙেফুল মার্কা ছড়া বেশ মজা দিচ্ছিল ভালোই লাগছিলো। কিছু চিন্তা ছাড়া কিছু ভালো লাগা মূহুর্ত পাচ্ছিলাম। হঠাৎ, হ্যা হঠাৎই আবার সেই চিন্তা জেঁকে বসতে চাইল এক নির্দোষ ছড়া থেকে। ছড়াটি আমাদের ছোটবেলায় পড়া খুকী ও কাঠবিড়ালী। অনেকবার পড়েছি এই ছড়া জাতীয় কবিতাটি। সবসময়ই একে এক অবুঝ কিশোরীর সাথয়ে এক অবোধ কাঠবিড়ালীর নিরর্থক বচসা মনে হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই অন্য একটা সম্ভাবনার কথা আমার মাথাকে ধরিয়ে দিল। এ কবিতাটার মাঝেকার রূপকটা আমি ধরতে পারলাম কবিতা প্রথম পড়ার প্রায় পনের বছর পর এসে। পেয়ারা না পেয়ে যে অবুঝ মেয়েটির বোকামি নিয়ে হেসেছি এতকাল সেতো আসলে আমরা। আমরা যারা শোষিত। আর যাকে অবোধ কাঠবিড়ালী বলেছে সে- ই প্রকৃত বুঝনেওয়ালা আমাদের ভগবানদের প্রতীক। কাঠবিড়ালী যেভাবে খুকীকে বঞ্চিত করে সব পেয়ারা খেয়ে দাঁত দেখিয়ে ছুট দেয় তেমনি আমাদের ভাগ্যনিয়ন্তা ভগবানরাও আমাদের সব পেয়ারা খেয়ে আমাদেরকে ফেলে চলে যায় আর অলক্ষ্য আমাদের দণ্ডমুণ্ডের বিধান করে অগোচরে।
ধ্যেৎ, ভাল্লাগে না। এসব ত্যনা প্যাচাপ্যাচি করতে। আমাদের উপরকার কাঠবিড়ালীদের কাছে চিরকাল ঠকে যাই আমরা তাদের জন্য – যারা আমাদের ছেলেভুলানো ছড়া শুনিয়ে চিরকালই খুকী বানিয়ে রাখে। কিছুই বলতে পারি না , শুধু নিস্ফল আক্রোশে মাথা নাড়ি আর বলি ” কাঠবিড়ালী, তুমি মর, তুমি কচু খাও। “

২,৭৪৯ বার দেখা হয়েছে

৪৪ টি মন্তব্য : “কাঠবিড়ালী , তুমি মর , তুমি কচু খাও………….”

  1. তৌফিক (৯৬-০২)

    পইড়াই প্রথম হইলাম। 😀

    অনেকক্ষণ ট্রাই নিলাম একখানা মারাত্নক হাসির ব্লগ লেখার জন্য। কিন্তু আমার কিবোর্ড নীরব। তুমি দিলা দেইখা তোমারে অনেক ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
  2. সামীউর (৯৭-০৩)

    স্কুলের বইতে যখন কবিতাটা পড়ি তখন মনে হয়েছিলো নতুন কুঁড়িতে ঝুঁটি বাঁধা কোন পিচ্চির কন্ঠে উচ্চারিত হবার জন্যি মনে হয় এই কবিতাটার জন্ম। কিন্তু এই allegorical explanation টা যে এমন হবে কখনো মনে হয় নাই।
    আমিন ভাইকে ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
  3. আদনান (১৯৯৪-২০০০)

    আমিন কি বলব বুঝতেসিনা । এই ছড়া যে এমন অন্তর্নিহিত ভাব ধারন করে বসে আছে কে যানত । জাতিকে জানানোর জন্য ধন্যবাদ :-B ।

    সিরিয়াস কমেন্ট এর বেইল নাই (কপিরাইট তাইফুর ভাই)

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।