অত:পর ব্লগর ব্লগর

গল্পযন্ত্র এবং কল্পমঞ্চ

আমি প্রতিদিন গল্প লিখতে চাই গল্প যন্ত্র দ্বারা তাড়িত হয়ে। চোখের সামনে অবিরত চলমান গল্পযন্ত্র আপন গতিতে গল্প উৎপাদন করে যায়। আমার সমস্ত চিন্তা চেতনা এক করে সেই গল্প গুলোকে এক করার চেষ্টা চলে গল্প মঞ্চে। ও হ্যা, গল্প মঞ্চের পরিচয়টা একটু দেয়া যাক। আমি চোখ বন্ধ করলেই একটা ঘর দেখতে পাই। সাদাসিদে পলেস্তরা খসে পড়া দালানের ঘর। চারপাশে একধরণের ধূসর রহস্যাবৃত আবহ। এটাই আমার কল্প মঞ্চ বা গল্প ঘর। তবে গল্প ভেদে জরাজীর্ণ এই ঘর রূপভেদে বিভিন্ন হয়। প্রতিদিন এই ঘরের মুখোমুখি আমাকে হতে হয় ইচ্ছা বা অনিচ্ছায়। যাপিত জীবনের বয়ে চলা ঘটনাগুলো বায়োস্কোপের মত ছোট ছোট দৃশ্য কল্প তৈরি করে গল্প যন্ত্রকে প্রবাহমান করে। এই গল্পকে ধরবার মত আপাত কোন ব্যবস্থা আমার কাছে নেই। শুধু গল্পঘরে আটকে পড়া ঘটনাগুলো ক্ষুদ্র বা বৃহৎ পরিসরে আমার কাছে ধরা দেয়। আমার বোধ গুলো শানিত হয় না: তারও চেয়ে বড় সমস্যা আসলে অদেখা জীবনের গল্পগুলো আসলে মিথ্যা গল্প হয়। তবে স্মৃতির বুক থেকে তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনা গুলোও ধরা পরে আমার গল্পঘরে। গল্পঘরের বুড়ি জামিলের মায়ের কথাই যেমন বলা যায়। আমার কল্পমঞ্চে র এক কোণে একটা জীর্ণ কাথায় নিজেকে মুড়িয়ে খাবারের জন্য ছটফট করে। আর নিজের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে বলে উঠে , ” বাজান কি আমার মইরা বাসায় আইলি? আরেকজন হেই যে মরতে গেলো আর আইলো না। আমি অহন ক্যামনে থাকুম। বাবারে রাত করিস না রে।” তার সেই মৃদু গোঙানির মত কণ্ঠস্বর সময়ের সাথে সাথে জীর্ণ হয়। তারপরে একসময় তার অস্তিত্বের খোঁজ মেলে না আমার কল্পঘরে। তার পরিবর্তে জামিলকে দেখা যায় একটা আধভাঙা দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকতে। রুমের ধূসর আবহ আরো প্রগাঢ় হয়। সহসা রুমটিকে অশুভ মনে হয়। জামিল কী জীবনের খোঁজ করে? গল্প ঘরে সেই গল্প ধরা পরে না। জামিলের সাথে আরো তিন চারজনকে দেখা যায়। ধূসর আলোতে এদের জীবনের স্বপ্নগুলোকে বিস্মৃত মনে হয়। কিংবা এদের জীবনে স্বপ্ন দেখবার সাধ কখনও ছিলো না। প্রতিদিন বাবা যখন কাজের জন্য বের হত, তার বায়না ছিলো একটা ঢোলের জন্য। ঢোল কীভাবে বাজাতে হয় সেটা নিশ্চিতভাবেই তা জানত না। তারপরেও প্রতিদিন বাবার ফেরার প্রতীক্ষায় থেকে থেকে দিন পার করত। তার অতি প্রার্থিত ঢোলের আবদার দূরে থাকুক তার বাবা তাকে কখনও বিকালে বসিয়ে আয়েশ করে আলুপুরী চা খাওয়ার শখও পূরণ করতে পারে নি। দোকান থেকে চুরি করে আলুপুরী মিলত বটে, তবে বড়লোকের মত পা তুলে আয়েশ করে চা পুরী খাওয়া হলো কবে? হলো বটে, আসাদের সাথে দেখা হবার পরে। আসাদ আসলে কেমন লোক? এই প্রশ্নের জবাব দেয়া কঠিন। সে কী কোন শখের স্বপ্ন ব্যবসায়ী? স্বপ্নব্যবসায়ী শব্দটা তার সাথে যায় তবে সেটার প্রকার কোন রকম তা একটা বড় প্রশ্ন রয়েই যায়। সেটা বরং প্রশ্নই থাক, আপাতত গল্প ঘরে আমরা জামিল ও তার সহযোগীদের দেখতে পাই। তাদের পিছনেও নিশ্চয়ই কোন বিয়োগান্তক পরিণতি থাকতে পারে তবে সেই গল্পও গল্প ঘরে জমা হয়ে নেই।

মনের অচেতনেই গল্প ঘরের দুই অংশে দুটি আলাদা ঘটনার ফ্রেম চলতে থাকে। আলাদা ফ্রেমে আলাদা মানুষদের একই রকমের আত্মবিনাশের সাক্ষী হতে থাকি। একপাশে ক্যামেরার রিল দ্রুত ঘুরে যায়। তারপরে আমার চোখের সামনে বিস্ময় জমা থাকে। কারণ এই মুহূর্তে পর্দায় চলছে একই মানুষদের সাদাকালো ও রঙিন ছবি। সাদাকালোর মাঝে শান্তি না থাকলেও রঙিন ফ্রেমে অস্থির আনন্দ ধরা পড়ে। অথচ আমরা শৈশবের সাদাকালোতে বুদ থাকি। তখনই অনুভব করি গল্প ঘরে জমা হওয়া গল্পটাকে বলা যায় “যাদের কোন দিন আনন্দময় শৈশব ছিল না, এমন মানুষের গল্প”। গল্প হিসাবে নামটা খুব বেশি একঘেয়ে অপ্রতিভ মনে হয়। অথচ নিজের বোধ গুলো কোনভাবেই শব্দ দিয়ে বাঁধা হয়ে উঠে না ঐ অপ্রতিভ নামটি ছাড়া। গল্পঘরের দোকান বন্ধ হয় না কখনও। সে তার নিজের নিয়মে গল্প তৈরি করে যায়। তবে সময় আর অনুভূতির অসাড়তায় তা বেশিরভাগ সময়ই জীবন্ত হয়ে উঠে না। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরানো মিলনের কথাই যেমন ধরা যাক। কাটা মুরগির মত ছটফট করতে থাকা মিলন তেষ্টায় এক ফোঁটা পানির আকুতি করে শুধু। তার নিয়তিকে পরিহাস করে তাকে দেখতে আসা লোকজন ছোট তুলোর মাঝে পানি ভিজিয়ে তার জিহবায় লাগায়। বুক ফাঁটা তৃষ্ণায় ছটফট করা মিলনের কষ্ট বাড়ে। আশেপাশের মানুষদের নিষ্ঠুরতায় ক্ষিপ্ত হই। একদিন মিলনের তৃষ্ণা থেমে যায়। তার পাশে বসে থাকা নাম না জানা তার ছোট ভাই সম্পর্কীয় লোকটি এক গ্লাস পানি ঢেলে দেয় মানবিকতার তাড়নায়। তারপরে, তারপরে সেই পানি গলা দিয়ে নেমে পেট পর্যন্ত যাবার আগেই মিলনের তৃষ্ণা চিরতরে থেমে যায়। মানবিকতা আর অমানবিকতার দোলাচালে হতবাক হই। আর সেই সময়ে প্রথম দৃশ্যের বুড়িকে আবার দেখতে পাই। আগের মত ভদ্রভাষার প্রলাপ বকেন না তিনি। তার ভাষা বেশির ভাগই অবোধ্য আর অল্প বিস্তর যা বুঝা যায় তা অশ্রাব্য হয়ে থাকে।

চেনা আকাশের নিচে অচেনা শহরে পথচলা

পৃথিবীর সব জায়গা থেকে উপরের আকাশকে একই রকম দেখা যায়? খুব সম্ভবত না। প্রত্যেক আকাশেরই নিজস্ব রূপ প্রকৃতি ও আকর্ষণ থাকে। সেই রূপ ধরা পরে আকাশ ভাবুকের কাছে। সেই বিচারেই হয়তো ঢাকা শহরের আকাশকে খুব আপন মনে হয়। শেষ বিকেলের তীর্যক রোদের দীপ্তি মেলে ধরা হাসিখুশি আকাশই হোক, প্রখর রোদের যৌবনাবতী আকাশ হোক কিংবা বৃষ্টি শেষের মন খারাপ করা কটকটে নীলের আকাশই হোক সবাই তার নিজ রূপে আপন হয়ে ধরা দেয়। তবে আমার কাছে সবচেয়ে ভালোলাগা আকাশ হলো ধূসর আকাশ। মেঘলা দিনে নিজের মাঝেকার সব কিছুকে বৃষ্টি সমেত ভাসাবার আহবান জানিয়ে যখন আকাশ রূপান্বিত হয়, তখন নিচের শহরের বুকেও উদ্দিপ্ত আলোক রেখা দেখতে পাই। এই আলোক রেখার মাঝে এক ধরণের শুভ অনুভূতি কাজ করে। কালো আকাশের নিচে উজ্জ্বল শহরের বুকে দাঁড়িয়ে অনুভব করি নিজেকে। অনুভব করি নিজের অনুভূতির সবচেয়ে সূক্ষ্মবোধ গুলো হয়তো এই ক্ষণ দখল করে নিয়েছে। আমি বৃষ্টি পছন্দ করি তবে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসি বৃষ্টি নামবার পূর্বের এই মহাক্ষণকে। একই রকম অনুভূতি কাজ করে সন্ধ্যার আকাশের বেলায়ও। সন্ধ্যা সময়টা কি অসহনীয়? কখনও কখনও হয়তো তাই মনে হয়, কিন্তু সন্ধ্যার চিরাচরিত রূপের বাইরে এক ধরণের ভিন্ন রূপ আছে। আমার কাছে সন্ধ্যাকে বিষণ্ণ মনে হয় না, বরং তরল আঁধারে নিজের সামনে নিজেকে দাড় করিয়ে দেয় এই সন্ধ্যা। সন্ধ্যা আকাশের নিচে হেঁটে চলি নগর পরিভ্রমণে। চেনা আকাশের নিচে শিকারের খুঁজে ওৎ পেতে থাকা শেয়ালের দৃষ্টির মত নগরের অসংখ্য চোখ জেগে উঠে। সেই চোখ জানিয়ে দেয় শহরের গল্প। শহর ভালো নেই, শহরের মানুষ ভালো নেই। সন্ধ্যার মাঝেকার আনন্দের রূপ বিলীয়মান। চারদিকে হতাশা দীর্ঘশ্বাস আর অতঃপর অক্ষমের আর্তির সাথে সাথে ওপরওয়ালার কাছে নিজেকে সপে দিয়ে নিজের শান্তির খোঁজ করে। আমার শহরর ভালো নেই। আমার শৈশবের মৃত্যু ঘটেছে। আর শৈশবের ভালো লাগা মানুষ গুলো যেন থেকেও নেই। সবার জীবন থেকেই কিছু একটা যেন হারিয়ে গেছে। অবাক হয়ে ভাবি, জীবনের আনন্দরস কে নিঙরে অবশিষ্টকে মূল্যবান ভেবে আমরা বয়ে নিয়ে চলছি না তো জীবনের চলার পথে?

মুখোশ জীবন ও আমরা

মুখোশ জীবন নামে একটা নাটক দেখলাম টিভিতে। প্রচলিত ধারার কাছে বিক্রি না হয়ে যাওয়া এক শিল্পীর গল্প। মুখোশ আঁকতে গিয়ে তার শিল্পানুভূতি বাঁধাপ্রাপ্ত হয় এবং এক সময় আবিষ্কার করে তার শিল্পী সত্তা মরে যাচ্ছে। দেখে বেশ ভালো লাগলেও মনে হয়েছে নাটকে ভালো খারাপের আইডিয়া গুলো খুব বেশি সরলীকৃত। আর সাথে অনুসিদ্ধান্ত হিসাবে আবিষ্কার করি, ক্রমাগত ” জীবন মানে জী বাংলা” র জীবনে অভ্যস্ত হতে থাকাদের শিল্পপানুভূতিও বাঁধা পড়ে বিকল্প বিনোদনের খোরাক যোগানোর চেষ্টা করা হলে। সেই কথা বরং তোলা থাক, বলছিলাম মুখোশ জীবনের কথা। মুখোশ জিনিসটাকে যত বিকৃত জিনিস হিসাবেই দেখানো হোক না কেন আমার কাছে মনে হয় নিজের ভেতরে এত এত নোংরামি রেখে তাকে ভদ্রলোকের মুখোশে আড়াল করে রাখার প্রাণান্তকর চেষ্টা আসলে বিনোদনদায়ক। আর সবার মাঝে এই প্রবণতা কম বেশি থাকায় নোংরাকে আড়াল করা সুন্দর মুখের মুখোশটির চেয়ে তাকে আড়াল করা কুৎসিত আমার বেশি ভালো লাগে।

খরগোশ ভাবনা

আমার বাসায় খরগোশ আছে। বলা যতটা সহজ ব্যাপারটা হয়তো ততটা না। শখের বশে দুটো আনা হয়েছিল কিন্তু তাদের চরম প্রডাকটিভিটি সংখ্যাকে ক্রমাগত বাড়িয়ে চলে। এই ব্যাপারটায় আনন্দিত হবার বদলে চমকে উঠি। বোবা খরগোশের মাঝেও মুক্তি পাবার আকুলতা কাজ করে। স্বাধীন মুক্ত জীবন তারা চায়। অথচ এমন জীবন এদের যাদেরকেই দেয়া হয়েছে তারাই বিলীন হয়েছে কুকুর কিংবা বিড়ালের পেটে। আনফিট প্রজন্মকে আমাদের ঘরে বড় করে তুলছি আমরা। খরগোশের জন্য যেই ভাবনা ভাবি শৈশবহীন প্রজন্মের জন্যও কি একই ভাবনা বরাদ্দ নয়?

অত:পর ব্লগর ব্লগর

ভাবনা আসে ভাবনারা হারায়। অথচ তাকে আটকাতে পারি না কখনও। আলস্য নয় বরং নিজের মাঝেকার এক ধরণের বিচ্ছিন্ন বোধে আক্রান্ত হয়ে লিখতে শান্তি বোধ করি না। হঠাৎ করেই কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা হচ্ছিল কদিন ধরে। কিছুদূর এগুবার পরে আবার থেমে যায়। অত:পর কিছু একটা লিখতে পারলাম হয়তো। যারা কষ্ট করে এই লেখাটা পড়বেন তাদের জন্য আমার পছন্দের একটা গানের লিংক শেয়ার করলাম।

১,৬০৪ বার দেখা হয়েছে

২২ টি মন্তব্য : “অত:পর ব্লগর ব্লগর”

  1. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    গল্পযন্ত্র এবং কল্পমঞ্চ
    বেশ বড় প্যারা হবার কারনে পড়তে সমস্যা হচ্ছিল, ''মনের অচেতনেই গল্প ঘরের দুই অংশে দুটি আলাদা ঘটনার ফ্রেম চলতে থাকে।'' - এখান থেকে আরেকটা প্যারা দিয়ে দেখতে পারিস...

    চেনা আকাশের নিচে অচেনা শহরে পথচলা
    ঢাকার আকাশ কেন-কিছুই আমার ভাল লাগে না, লাগে নি...পালিয়ে বেঁচেছি...
    সবচেয়ে ভাল লাগে বৃষ্টির পরের আকাশ-স্নিগ্ধ, শান্ত!

    মুখোশ জীবন ও আমরা
    কেন জানি এটা পড়ে সবার আগে ফেসবুক নামক 'মুখোশের' কথা মনে আসল। ফেসবুকের সুন্দর প্রোফাইলের আড়ালে কত বিচিত্র মানুষ লুকিয়ে থাকে ইদানিং (কিছু সাম্প্রতিক ঘটনার পর!) খুব হাড়ে হাড়ে টের পাই...

    খরগোশ ভাবনা
    এটাকে ফার্মের মুরগি ভাবনা হিসেবেও চালানো যায়...টিভি, ইন্টারনেট এবং স্মার্ট ফোনের বদৌলতে ফার্মের মুরগি টাইপ যে প্রজন্ম আসছে তারা মানসিক, শারীরিক এবং
    সামাজিকভাবে কতটা অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন সে বিষয়ে সন্দেহ আছে!

    অত:পর ব্লগর ব্লগর
    অনেক দিন পর লেখা পড়লাম! বিচ্ছিন্ন বোধে আক্রান্ত হয়ে লিখতে শান্তি বোধ করি না এতে আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বি-অনেকটা দুষ্টচক্রের মতন অবস্থা! এসব বোধ ঝেড়ে নিয়মিত লিখতে থাক।

    বিঃদ্রঃ কিছু টাইপো আছে, ঠিক করে দিস।


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      জুনাদা অনেক দিন পরে দেখা। প্রথমে কইয়া লই আপনের প্রোফাইল পিকটা আমার ব্যাপক পছন্দ হইছে। আফটার অল তালগাছ হইলো আমাদের জাতীয় গাছ
      ======
      টাইপো গুলো ঠিক করলাম। আর আপনার কথামত প্যারা করে দিলাম। এখন পড়লে মে বি আরাম পাবেন।
      ======
      মুখোশ দেখে দেখে অস্থির আসলে আমি। ফেবুতে যারা কথায় কথায় রাজাকারদের গদাম মারে, তারাই আবার আত্মীয় অসুস্থ হলে ইবনে সিনা , ইসলামী ব্যাক হাসপাতালে যায়। ব্যাপক ধর্মীয়(!!) বোধ আমাদের। সো একাউন্ট হবে ইসলামী ব্যাংকে। আমরা অনেক প্রগতিশীলতার কথা বলবো মুখে, আর জব করবো শিবিরের ইউনিতে -- মুখোশে টায়ার্ড।
      =======
      গত আটমাসে দেশের অবস্থা দেখে একটা ট্রেন্ড বুঝলাম। দেশের ১৮-২৭ বছর বয়সী ৮০ ভাগ ছেলের কাছে লাইফ মানে সুন্দরী মেয়েকে বিছানায় নেয়া, ২৭-৪৫ বছর বয়সী বেশিরভাগের কাছে লাইফ মানে টাকা পয়সা আর ক্ষমতার পিছে ছোটা, আর ৪৫ এর উপরে লাইফ মানে হলো যাবতীয় আকামরে জাস্টিফাই করতে হজ করা আর দাড়ি রাইখা তসবিহ জপতে জপতে বেহেশতের টিকিট নিশ্চিত করা। মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘটনাটা এমন না, তবে যেমন অবস্থা তাতেও প্রগতির কোন চিহ্ন দেখি না। আমার কাছে মনে , ৯০ তে আমার দাদার জেনারেশনরে যেমন দেখছি তার তুলনায় আমাদের বাপদের এখনকার জেনারেশন বেশি গোড়া একই ভাবে ৯০তে আমাদের বাপদের জেনারেশন যেমন ছিল তার চেয়ে আমরা বেশি গোড়া।

      জবাব দিন
  2. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    আজকে ব্লগে এসে তোমাকে দেখে ভাল লাগল। পরিচিত মানুষ মানে কমফোর্ট জোন। যোগ-বিয়োগে মানুষের জীবনের প্রাপ্তিটা অনেক সময় হয়তো একই থেকে যায়। খুব সুন্দর শৈশব ছিল এমন মানুষদের পরবর্তীতে বেশ কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে দেখেছি আবার এর উল্টোটাও দেখেছি। এই জীবনে যতক্ষণ একটা ভ্রমণের মধ্যে থাকা যায় ততক্ষনই আনন্দ, আসল মজা। এখন এই ভ্রমণের শুরুটা হয়তো একেকজনের একেক পয়েন্ট থেকে শুরু হয়। কেউ শুরু করে অনেক পেছন থেকে, কেউ অনেক সামনে থেকে। আসল কথা হলো ভ্রমণটা চালিয়ে যাওয়া। যারা অনেক সামনে থেকে শুরু করে দেখবে তাদের সংখ্যাই বেশি আত্মহত্যাকারী হিসেবে। কারণ তারা সহজেই থেমে যায় - ঘাবড়ে যায়। জানি না যা লিখতে চাচ্ছি তা বুঝাতে পারছি কিনা।

    মনটা হচ্ছে রোলিং বলের মতো। যেদিকে ছেড়ে দিবে সেদিকে চলতে থাকবে। গল্পের পথে, তত্বের পথে, উদ্ভাবণের পথে - যেখানে ইচ্ছা।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      আপনার কথাটা বুঝতে পেরেছি। অনেকাংশে একমত। তবে আসলে আমি লেখায় শৈশব হীনতা যাদের ব্যাপারে বলেছি এমন লোক অনেককেই আমি চিনি। আমি কিন্তু এমন বলি নি যে তারা অসফল ইত্যাদি, আমি বলতে চেয়ে তারা তুলনায় আচরণে একটু রুড হয়ে যায়। জীবনের ঘাত প্রতিঘাতের সাথে এটিচিউড ও পরিবর্তিত হয়। সুন্দর শৈশব বলতে আসলে আমি শুধু আনন্দময় সময়ের কথাই বলিনি আসলে, প্রগতির কথাও বলেছি। জুনাদার কমেন্টের রিপ্লাইয়ে আমার কমেন্ট টা দেখলে আইডিয়া পেতে পারেন।

      আপনাকে দেখেও ভালো লাগলো।

      জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    :teacup:
    সেই প্রস্তর যুগে আমিন নামে এক ছেলে সিসিবি তে লিখ্তো।
    এই আমিন সেই আমিন কিনা ভাবতেছি।

    সৈয়দ শামসুল হকের ঠিক এরকম একটা গ্রাম আছে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  4. নাফিস (২০০৪-১০)

    প্রথমে আপনার লেখা টা একবার পড়লাম। এরপর আপনার শেয়ার করা অর্ণবের গানটা প্লে করে কানে হেডফোন লাগিয়ে আবার লেখাটা প্রথম থেকে পড়লাম। প্রথমবারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা একটা অনুভূতি হলো.. কেন জানি মনে হলো গানটার কথা ও টোন এর সাথে আপনার লেখার একটা প্রচ্ছন্ন মিল আছে.. আপনি পোস্টটা লেখার সময় বারবার গানটা শুনছিলেন? ভুল হতে পারে। তবুও কৌতুহলী। জানায়েন। 🙂 (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আমিন (১৯৯৬-২০০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।