কোন এক মিলনের বড় হবার স্বপ্ন ছিল

এক

আজকের দিনটা তার কাছে বিশেষ কিছু। এই দিনের মাহাত্ম্য আরো বেড়ে যাওয়ার কথা আর ঘন্টা দুই পরে।
কিঞ্চিত উত্তেজনা বোধ করছে নিজের অজান্তেই- তার কপাল বেয়ে নেমে যাওয়া ঘামের নোনতা স্বাদ ঠোঁটে লাগতেই সে চাপটা অনুভব করে। চাপ কমাতেই সে সিগারেট ধরায়। আনাড়ি হাতে ঠিকমত ধরাতে বেগ পেতে হয়। সিগারেট সে খায় খুব বেশিদিন না, যতটা না খাওয়ার জন্য তারচেয়ে বেশি নিজের পরিপক্কতার সার্টিফিকেটের জন্য। নিজেকে বড় বড় লাগে প্রতি টানে। এ মূহুর্তে সে বেশ তৃপ্তির সাথে টেনে যাচ্ছে। অর্ধেকের পর তাকে ফেলে দিতে হলো, কেননা পুরো সিগারেট একা শেষ করার বিদ্যে এখনো রপ্ত করে উঠতে পারেনি। অর্ধ পোড়া সিগারেট টা ফেলে দিয়ে সে বীরের মত রওয়ানা দেয় স্কুলের দিকে। আর দশ মিনিট পরেই তো স্বপ্ন পূরণের মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত। দৃষ্টিসীমানায় তার স্কুলের সামনে জমে থাকা ভিড় ধরা দেয়। উৎসুক লোকগুলোর দিকে তাচ্ছিল্য ভরা দৃষ্টি হেনে ঢুকে যায় স্কুলের ভেতর।

হেড স্যারের রুমের আশেপাশে বেশ জমাট একটা ভিড়। স্যারেরা জটলা পাকিয়েছেন। সম্ভাব্য কয়জন জিপিএ ফাইভ পেতে পারে তার জল্পনা কল্পনা চলছে। বিভিন্ন নাম হাওয়ায় ভাসছে। তার নাম সেখানে নেই । ভালো ছাত্র বলে তার পরিচয় কখনো ছিলো না তা নয় কিন্তু তার মাঝেকার কিছু প্রতিভা (!) দিয়ে সে শিক্ষকদের বদনজরে পড়েছিল অনেক আগেই। এপাশে অবশ্য আরেকটা জটলা। সেটা তথাকথিত ভালো ছাত্রদের । সেখানেও চলছে একই রকম জল্পনা কল্পনা। তার নামটা সেকানে খুব জোরে সোরে উচ্চারিত হচ্ছে — মনে মনে হাসে সে , একধরণের করুণা অনুভব করে তার আশেপাশের গ্রন্থকীটদের জন্য। জানালার ফাঁক দিয়ে চিন্তা ক্লিষ্ট অভিভাবকদের করুণ মুখ গুলো দেখে যেন সে। কেমন যেন চাপা কষ্ট বয়ে যায় তার মনে। আহা তার বাবা মা বেঁচে থাকলে তারাও বোধ করি এমনিভাবে অপেক্ষা করতেন তাদের ছেলের বিজয় গাঁথা শুনতে!!! একটা ছোট দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে যায় তার ছোট নাকটা দিয়ে।

হেড স্যার বলতে শুরু করেছেন। ” সাত জন কৃতী ছাত্র জিপিএ ফাইভ পেয়েছে” – হঠাৎ করে ঘুরে তাকাল কথাটা শুনে। একে একে বলে গেলেন সাতটি নাম কিন্তু তার কোনটাই মিলনের আসল নাম না। দমে যায় সে। রেজাল্ট দেখতে এগিয়ে যায় হেড স্যারের হাত ঘুরে অফিসে ফটোকপি হয়ে আসা কাগজটার দিকে। তার নামের পাশের অঙ্কটা খুঁজে। কিন্তু ……. কীভাবে সম্ভব? অসম্ভব ভাবনা গুলো দুলতে থাকে তার মাথায় তবে কী? এক স্যার রুক্ষ্মভাবে বলে উঠলেন, ” তোমার নাম নেই এটা নিয়ে হৈচৈ এর কী আছে? ফেলতো করতেই পারো। তোমার মতো দুষ্টু ছেলে ফেল করবে না তো কে ……… পরের কথা গুলো আসছে না তার কানে। তার চোখ খুঁজে যাচ্ছে অপার অর্থহীন প্রতীক্ষা নিয়ে। সে জানে তার নামটা সেখানে নেই…… সে ভাবতে পারছে না কিছু,……বাড়ি ফেরার পথটুকু তার বড় দীর্ঘ মনে হয়। কোন কথাই যেন সে শুনতে পাচ্ছে না । এক ধরনের বধিরতায় ডুবে গেছে সে। তার চারপাশে টলয়মান পৃথিবী…… চিরচেনা পথগুলো তার কাছে অচেনা মনে হচ্ছে । তার মায়ের করুণ মুখখানা যেন তার চোখের সামনে ভাসছে। তিনি যেন বলছেন, এটা কী করলি বাবা,………….. আর চলতে পারছে না। চাচার বাড়ির গেট টা যেন দেখছে সে। দ্রুত সে চলে যেতে চায় তার রুমের দিকে যেন সে পালাতে চায় মানুষের থেকে……

দুই

তীব্র জোছনায় আকাশ ভেসে যাচ্ছে রূপালি বৃষ্টি হয়ে। জোছনাবিলাসী মিলনের যে মন ভরে থাকার কথা নিবিড় শুভ্র অলস আনন্দ তার জায়গায় তা ছেয়ে গেছে তীব্র বিষণ্ণতায়। শুধু বিষণ্ণতা শব্দটি দিয়েও তার মনে অনুভূতিকে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অদ্ভুত এক ধরণের কষ্ট যার সাথে সে কখনও পরিচিত নয়। তার মা কে হারানোর পর এটাই তার ক্ষুদ্র জীবনের তীব্রতম বেদনা। পরীক্ষায় অনভিপ্রেত ফেলের নিশ্চয়তা জুটেছে আজ। মার্কসীট চলে এসেছে । এক বিষয়ে ফেল—— সারাজীবনে যা হয়নি তা আজ তার জন্য বাস্তব। একবার সে একটু গাইগুই করার চেষ্টা করেছিলো এ রেজাল্টকে চ্যালেঞ্জ জানানোর …..বিনিময়ে চাচার হাতে কানমলা জুটেছে। আর চাচার কঠাগুলো ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে তার কানে বেজে চলেছে প্রতিনিয়ত, ” হতচ্ছাড়া, তোকে কিছু বলি না বলে মাথায় উঠেছস। উচ্ছন্নে গেছস তুই। বিড়ি খাস তাস পেটাস, ভাবসছ কিছু জানি না। আমি আগেই জানতাম তুই পড়স না আড্ডা পায়া বইসস………..” তার চাচাত ভাইদের দিকে তাকিয়ে ” খবরদার তোরা ওর সাথে কথা বলবি না। ওর সাথে থাকলে খারাপ হয়ে যাবি।” ” চ্যালেঞ্জ করবেন উনি!!! আর কত খসাবি আমারে। তাও যদি মানুষ হইতি তাও বুঝতাম……” । আরো অনেক অনেক কথা , সব যে সত্য তাও না —- কিন্তু জগত বড় কঠিন – সে পরাজিতদের প্রতি বড় নিষ্ঠুর। নিজেকে পরাজিত মনে হয় তার নিজের কাছে। গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলে জোছনা বৃষ্টিতে ভিজে। তার মমতাময়ী মাকে যে জোছনা ধারায় অস্পষ্ট ভাবে দেখতে পায়। তিনি কাঁদছেন আর বলছেন “বাবা আমার মুখ উজ্ঝ্বল করতে পারলি না পারলি না, আমাকে ছোট করলি কেন? তুই কেন ভুলে গেলি তুই কোন মায়ের সন্তান।” উহু। তার সহ্য হচ্ছে না। ” মাগো বিশ্বাস করো, আমি সিগারেট খাই তাস খেলি খারাপ ছেলেদের সাথে মিশি এটা আমার দোষ না ওরা বলতে বলতে আমাকে এমন করেছে। আর সত্যি মা, আমি কখনো ফেল করতে পারি না। দেখো একদিন সবার ভুল ভাঙবেই। মাগো মাগো মাগো……… আর কিছুই বলতে পারে না সে। সে জানে না সে কোথায় যাচ্ছে , শুধু সে জানে সে ফিরবে না। ফিরবে না আর কোনদিন সবার মাঝে। সেই তীব্র জোছনার মায়াবী রাতে তার কষ্টকে নিঃশোষিত করে সে নিঃশেষ হয়ে যাবে মহাকালের বুকে…… জানি না। গৃহত্যাগী উদাসী জোছনা সেদিন এই অভিমানী ছেলেটির জন্য কেঁদেছিলো কিনা তবে পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগে ছেলেটি যেন চাঁদের মাঝে ঝরে পরা জোছনায় তার মমতাময়ীর কান্না দেখতে পেয়েছিলো……

তিন

দুপুর বেলায় তীব্র ক্লান্তিকে সাথী করে মনির মিয়া গিয়েছিল পাশের ডোবা তে হাত মুখ ধুতে। হঠাৎ করে তার হাতে কী যেন ঠেকল। ভূত নাকি?? এই ঝাঁ ঝাঁ দুপুরেই তো অশরীরীরা জেগে উঠে। একটু একটু করে একটা মানব দেহ যেন উঠে আসছে। ভয়ে তার বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করেই মানুষটিকে চিনতে পারে। মানুষটি কিংবা মানুষের দেহটি তার কাছে দৃশ্যমান হতে থাকে খুব ধীরে। তিনদিন আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া মিলনের দেহ……. আতঙ্কে চিৎকার করে উঠে। তার মুখ দিয়ে চিৎকার বেরুতে চায় না তিনি ছুটতে থাকেন…….তারপর, …….তারপর মানুষ জড়ো হয়। মিলনের দেহ নিয়ে পোস্ট মর্টেম করা হয়। আর মিলনের চাচা রহমত মিয়ার উপর দিয়ে আরেক দফা ঝক্কি দিয়ে যায় হতভাগাটির লাশ। ব্যাটা মরেও আমকে শান্তি দিলো না…….. গজগজ করতে থাকেন……..লাশ নিয়ে দৌড় পাকড়ের ঠেলায় আপন ভাইয়ের ছেলের মৃত্যু তাকে শোক গ্রস্থ করার চাইতে বিরক্ত করল খুব বেশি …… কিংবা কে জানে হয়তো তার মনের মাঝে জমে থাকা অপরাধবোধটুকু তাকে মিলনের দিকে শেষবার তাকিয়ে কাঁদার সাহসটুকুকে ছিনিয়ে নিয়েছিল….।

চার

সে ঘটনার অনেকদিন গত হয়েছে। মিলন নামটি তার সমবয়সী বন্ধুদের হৃদয় ছাড়া সবখান থেকেই প্রায় মুছে গিয়েছিলো যেন। রহমত মিয়াও যেন ভুলে থাকতে চেয়েছিলেন। কষ্ট টা যে তার মাঝে ছিল না তা না। কিন্তু মানুষের কাছ থেকে তার মা বাবা মরা ভাস্তের বদনাম শুনতে শুনতে তিনি যেন হাপিয়ে উঠেছিলেন। তার মৃত্যুর কষ্টে তিনি বাকরুদ্ধ হয়েছিলেন কিন্তু সেটার প্রভাব হারিয়ে গিয়েছিলো যেনো। তারপরেও মিলন আসে তার মনে , আসে মিলনের মা বাবা তারা তার দিকে ধিক্কারের দৃষ্টি হানে। মাঝে মাঝে তিনি এভাবে ভাবেন। আবার মাঝে মাঝে এমন ভাবনাকে তিনি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। দুর্বল মূহুর্তকে প্রশ্রয় দেয়া চলবে না। এমনি একদিন বিকেলে তার বাড়ি পানে মিলনের কিছু বন্ধুদের ছুটে আসতে দেখে টার মাঝে মিশ্র ধরনের প্রতিক্রিয়া। ছোকরা গুলোকে ঘাড় ধাক্কা দেবেন কিনা ভাবার আগেই, ছেলেগুলো একটি খবরের কাগজ ধরিয়ে দেয়। সে খবর একজন পড়তে থাকে আর তিনি শুনতে থাকেন তন্ময় হয়ে,

” সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাপক সংশোধনী হয়েছে। সহস্রাধিক ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের পর পরিবর্তিত হয়েছে। এর মাঝে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর গল্প পিয়ারপুর হাই স্কুলের মিলন নামের একটি ছেলের। ঐ স্কুলের ছেলে মিলন পরীক্ষায় ফেল করার দুঃখে আত্মহত্যা করে। পরবর্তীতে ঐ কলেজের কিছু ছেলের রেজাল্ট পরিবর্তিত হওয়ার পর তারা তাদের উদযাপনের মিষ্টির টাকা থেকে বাঁচিয়ে চাঁদা তুলে মিলনের ফলাফল পুনঃ নিরীক্ষণের আবেদন জানায়। টাদের পুনঃ নিরীক্ষণের পর মিলন জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট স্কুল সূত্রে জানা যায়………”
খবর পাঠকারী ছেলেটাকে থামিয়ে দেয় সবাই। চাপা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে সবাই দেখতে পায় রহমত মিয়ার চোয়াল একদিকে ঝুলে পড়েছে……..

[ গতকালই প্রথম আলোতে এমন একটা খবর দেখে শিউরে উঠলাম। না, কারো মৃত্যু সংবাদ নয়। পাবলিক পরীক্ষায় পরীক্ষক নিরীক্ষকদের চুড়ান্ত গাফলতির গল্প। আশা করতে ভালো লাগে যেন গল্পের মিলনের মত কোন অভিমানী কিশোর হারিয়ে না যায় চিরদিনের জন্য। আর , আর একটা কথা থেকে যায়, মিলনের চাচা অপরাধবোধে ভেঙে পরলেও শিক্ষাবোর্ড আর রেজাল্ট সংলগ্ন লোকদের কোন অপরাধবোধ হয় না, যদিও তাদের গাফলতিতে অনেক কিশোরের শিক্ষাজীবনের মূল্যবান এক বছর হারিয়ে গেলো।]

১,৮৮৮ বার দেখা হয়েছে

২৪ টি মন্তব্য : “কোন এক মিলনের বড় হবার স্বপ্ন ছিল”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    পইড়া ৩য় হইছি-নাহ ২য়,কারণ আমিন ভাই দুধভাত।

    একেকটা খাতার উপর যে একেকজন পরীক্ষার্থীর জীবন নির্ভর করে এই সত্যটা আমাদের শিক্ষকরা কবে বুঝবেন?আমিন ভাইদের ব্যাচে জেসিসির সমাজ খাতা দেখেছিল জনৈক শিক্ষকের স্ত্রী!আমাদের ব্যাচে ইসলাম শিক্ষায় লেটার পায় ২০ জনেরও কম-হায়রে কপাল!

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      ব্যাটা লেটার!! আমার ছোয় ভাই ইসলামিয়াতে এইবার এ মাইনাস পাইছে। ঐ খাতা যে কে কি খায়া দেখছে সেটাই বুইঝা পাইলাম না। আর এখন এ প্লাসেই ভর্তি হওয়া কঠিন তা একটা দুটা এমন ফস্কায়লে তো কথাই নাই।
      শুনলাম স্যারেরা নাকি গোল্লা পূরণে ভুল করছে। ৮৮ পাওয়া একজনরে ৪৪ দিছে আবার ৮৭ রে ৫৭ পূরণ করছে !!!!!
      হায়রে কোন দেশে যে আছি????

      জবাব দিন
  2. তানভীর (৯৪-০০)

    এটা আসলেই বিশাল সমস্যা। '৯৪ সালে এস.এস.সি. পরীক্ষায় সময় আমাদের কলেজ থেকে মাত্র একজন স্ট্যান্ড করেছিলেন- শাহেদ ভাই, তাও ১৮তম। অথচ উনার হওয়ার কথা ছিল প্রথম। এইচ.এস.সি.তে অবশ্য সারা বাংলাদেশে প্রথম হয়ে তিনি নিজের যোগ্যতা ঠিকই প্রমাণ করেছিলেন।
    আমাদের এসএসসির সময় কেমিস্ট্রিতেও একই সমস্যা হয়েছিল। পরীক্ষা দেয়ার পর-পরই আমি জানতাম সাবজেকটিভের ৪০-এ ৩৯ পাব, খুব টাইট মার্কিং করলে পাব ৩৮। সেখানে ৩১ পেয়ে কোনরকমে মান রক্ষা হয়েছে। এখানে আমাদের সমস্যা তো খুব ছোট- তাতেই কত খারাপ লাগে, আর যাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া নিয়েই সমস্যা দেখা দেয় তাদের কষ্ট যে অনেকগুণ বেশি সেটা সহজেই অনুমেয়।

    শুধু শিক্ষকদেরই না, আমাদের নিজেদের ছোটখাট গাফিলতিও অন্যদের জীবনে বড়সড় সমস্যা নিয়ে আসতে পারে। আমরা যেন অন্যদের উপকার করতে না পারলেও অন্ততঃ ক্ষতি যাতে না করতে পারি সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার।

    গল্পটা অনেক ভালো লাগল আমিন। :thumbup:

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      ধন্যবাদ ভাইয়া। খবরটা দেখার পর থেকেই মাথায় পোসড়াচ্ছিলো। এ যুগে এই ভুলগুলো আড়ো বড় হয়ে দাঁড়ায় কারণ এখন রেজাল্টে চলে কোয়ান্টাম জাম্প। একটা বিষয়ে লেটার মিস হয়ে গেলে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া কঠিন হয়ে যায়। আর ফেল করলে ......... কী বলবো? অন্তত ১৭ জন পাওয়া গেছে যারা জিপিএ ফাইভ পেয়েছিলো কিন্তু ফেল ধরানো হয়েছিলো। এই ছেলেগুলো কোথাও ভর্তি হতে পারেনি। আগামীবার পারবে এমন নিশ্চয়তাও নেই......... এদের জীবনের একটি বছরের মূল্য কিভাবে শোধ হবে?? আমার মতে রেজাল্ট দ্রুত প্রকাশের তাড়াহুড়া থেকে এবয়াপারটা ঘটে। প্রশাসনের অল্পদিনে রেজাল্ট প্রকাশ করে "কেমন দেখালাম" এই জাতীয় মনোভাবের বলিই এরা হচ্ছে। পরীক্ষক নিরীক্ষদের কাছে বোঝার মট বান্ডিল ভরা খাতা আসে। ফল, তারা নিজেরা সব পরীক্ষা না করে বিভিন্ণ জনের হাতে ধরায়........। সমস্যা অনেক গভীরে......।

      জবাব দিন
  3. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    আমাদের ব্যাচের এস.এস.সিতে ইসলাম শিক্ষার নাম্বারিং মনে পড়তেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সমস্যা সমাধানের পথ খুব বন্ধুর হয়ে যাবে। এত সমস্যা সমাধান করা যাবে কিভাবে?

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      সমস্যার এপার ওপার চিন্তা করেও কোন সুরাহা করতে পারলাম। এর কাছে আমরা অসহায়। যারা পরীক্ষক নিরীক্ষক তাদের নিষ্ঠার অভাবের কথা বলা যায়, কিন্তু তাদের উপর যে চাপ পরে সেটা কে অস্বীকার করারও কোন উপায় নেই।
      তারপরেও মনে হয়, এই জায়গায় বসে থাকা মানুষগুলোর নিজেদেরকে ডাক্তারের মত জায়গায় ভাবা উচিত । ডাক্তারের এক হড়কানিটে যেমন আক্ষরিক অর্থে লাইফ শেষ হয় এদের হড়কানিতে ভার্চুয়ালি শেষ হয়।

      জবাব দিন
  4. এহ হে, তাইলে ফার্স্ট হইছিলাম সামুতে। এইখানে দেখি কমেন্ট করিই নাই। ভাল লাগছে আমিন ভাই। আপনাদের হাউসের খালেদ ভাইও তো খাতা চ্যালেঞ্জ কইরা পরে এ+ পাইছিলেন। উনার আনন্দটা অন্য সবার চেয়ে বেশি ছিল বলে মনে হয়।

    শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়া কিছু বলার নাই।
    অদ্ভুত উটের পিঠে চলছে স্বদেশ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আহসান আকাশ (৯৬ - ০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।