দিনাজপুর – দিনাজপুর রাজবাড়ি

রাজবাড়ি

প্রায় ৪০০ বছরের অধিক সময় ধরে গড়ে তোলা দিনাজপুর রাজবাড়ি নির্মাণে রাজ-পরিবারের প্রায় সকল নৃপতিরই কোন না কোন অবদান রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা এখানে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তাই রাজবাড়িতে যেমন আছে ইউরোপীয় ধাচের গড়ে ওঠা হর্ম্যরাশি তেমনি দেখা যায় মুঘল ও হিন্দুয়ানী স্থাপত্যকলার সম্বন্নয়। ১৭৬৫ খ্রীঃ বৃটিশ অধিকৃত দিনাজপুর শহর আরো তিন দশক পর ১৭৮৬ খ্রীঃ বৃটিশ কালেক্টর এইচ জে হ্যাচের হাত ধরে আধুনিকরূপে বিস্তৃতি লাভের সুযোগ পায়। কিন্তু তারও পূর্বে রাজবাড়িই ছিল শহরের একমাত্র স্থাপত্য নিদর্শন ও নাগরিক এলাকা।

20150605_Aayina Mohal-16 20150605_Aayina Mohal-17 20150605_102445IMG_3481

বৃটিশ প্রশাসনিক প্রয়োজন আর জৌন ধর্মাবলম্বী মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে শহরে বাড়তে থাকে আধুনিক দালান-কোঠা। তথাপি শহরের বাড়িঘরগুলো ছিল অনুচ্চ, যা রাজবাড়ির দ্বিতল ভবনকে ছাড়িয়ে যায়নি বা যেতে দেওয়া হয়নি যেমন, প্রাচীন রোম নগরের বাড়িঘরগুলো ভাটিক্যান সিটির ধর্মশালার উপর মাথা না ওঠাবার রেওয়াজ মেনে চলত। ফলে দীর্ঘদিন যাবত রাজবাড়ি শহরের প্রতীক হিসাবে একক আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়।

রাজবাড়ির সামগ্রিক স্থাপত্য নকশা অনুযায়ী এর পরিধিকে দু’টি মূল অংশে বিভক্ত করা চলে। প্রথমটি যদি রাজবাড়ির অট্টালিকা বেষ্টিত মূল অংশ হয় তাহলে রাজবাড়ির প্রাচীর পেরিয়ে পরিখাসহ নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যবর্তী অংশটি এর দ্বিতীয় অংশ। প্রথম অংশটি প্রায় ১৬ একর ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত যেখানে রাজা-রাণী-কুমাররা থাকতেন আর দ্বিতীয় অংশটি প্রায় ১৬৬ একরের অধিক যেখানে রাজবাড়ির বিভিন্ন আমলা-কর্মচারী, সেবক-সেবিকা, সিপাই-শান্ত্রী, পাইক-পেয়াদা, কামার-কুমার, ডোম-মেথর, কচোয়ান-দারোয়ান, মালি-ভিস্তিওলা, মাহুত-গাড়োয়ান ইত্যাদি শ্রমিক-প্রজারা আলাদা-আলাদাভাবে থাকত।

দেউড়ী

রাজবাড়ির অট্টালিকা বেষ্টিত বিভিন্ন অংশে প্রবেশের জন্য বেশ কয়েকটি দেউড়ী ছিল। ধারনা করা হয় রাজবাড়ির বিভিন্ন অংশে অন্ততপক্ষে ৬টি দেউড়ী ছিল। দেউড়ী একটি ফার্সী শব্দ যার অর্থ বাড়ির প্রধান ফটক/দরজা। পাথর দ্বারা নির্মিত সুদৃঢ় ও প্রশস্ত এ সব দেউড়ীর মধ্যে সিংহদেউড়ী, ঠাকুরবাড়ির দেউড়ী, ধর্মদেউড়ী, বেলতলীর দেউড়ী, হাতিশালার দেউড়ী. হীরাবাগ দেউড়ী উল্লেখযোগ্য। প্রথম তিনটি দেউড়ী যদিও এখনো টিকে আছে কিন্তু অপরগুলোর কোন চিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই।

20150605_Main Gate-03 IMG_2902 IMG_2928

সদরমহল

রাজবাড়ির প্রবেশ মুখে সাজানো-গোছানো যে আঙ্গিনা থাকে তা সদর মহল। দিনাজপুর রাজবাড়ির সদর মহলটি উত্তরে রাণীমহল, পূর্বে পদ্ম দিঘী, পশ্চিমে আয়না মহল ও চাপাতলী পুকুর পর্যন্ত বিস্তৃত। পদ্ম পুকুরের পশ্চিম পাড় থেকে আয়না মহলের পূর্বদিক পর্যন্ত বিস্তৃত এ অংশটি রাজবাড়ির সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন স্থান। আয়না মহলের প্রবেশ পথ, বাগ-বাগিচা, গাছ-গাছালি, ফোয়ারা-মূর্তি, টেনিস কোর্ট ইত্যাদি দ্বারা এ মহল সুসজ্জিত। কালের করাল গ্রাসে এ সব আজ অতীত – হারিয়ে গেছে সবই। ৬০’দশক পর্যন্তও কোন রকমে টিকে ছিল, কিন্তু পাকিস্থান আমলে সরকারি আদেশে যখন এখানে এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয় তখন সমূলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় রাজবাড়ির এ অংশটি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, রাজবাড়ির সদর মহলটি কোনভাবেই  এখন আর চেনার উপায় নেই। অভিজ্ঞ মহলের ধারনা, সুপরিকল্পিতভাবে রাজবাড়ির এ অংশটি ঠান্ডা মাথায় ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

20150605_111356 20150605_111403

আয়না মহল

সদরমহল সংলগ্ন ছিল রাজবাড়ির প্রাচীনতম অংশ আয়না মহল ও রাণীমহল। প্রথমাংশের রাজবাড়ির অংশটি মূলতঃ এ দু’টি প্রধান ভাগেই বিন্যাস্ত। রাজা প্রাননাথ ও রাজা রামনাথের সময়ে নির্মিত উক্ত মহলদ্বয়ে আবার বিভিন্ন অংশ রয়েছে। দক্ষিণ ও পূর্বমূখী আয়না মহলটি দু’তলা বিশিষ্ট। আয়না মহলের দক্ষিণ বাহুতে দরবার কক্ষ/খাস কামরা। অত্যন্ত মূল্যবান সাদা মার্বেল পাথরে সুসজ্জিত জমকালো খাস কামরাটি। খাস কামরায় ওঠার জন্য বৃত্তাকার সিঁড়ি, সিঁড়ির নীচে চৌবাচ্চা আর তাতে রাজার পোষা কুমির।

অহংকার করার মত রাজ পরিবারের হাতির দাঁতের তৈরী সোনার কারুকাজ করা রাজকীয় একটি সিংহাসন ছিল। বর্তমানে এটি জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত। আয়না মহলের প্রথম তলার পূর্বপাশে রাজকীয় পাঠাগার ও কোষাগার। রাজবাড়িকে পাকিস্থান আমলে ব্যারাকে পরিনত করার সময় পাঠাগারের প্রায় ৬,০০০ পুস্তক শহরের খাজা নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল ও পাবলিক লাইব্রেরীকে প্রদান করা হয়। দ্বিতীয় তলায় দরবার, অতিথি ভবন, জলশাঘর, সভাকক্ষ, মিছিল ঘর ইত্যাদি ছিল। পলেস্তরা খসে, কড়ি-বর্গা ভেঙ্গে/চুরি হয়ে, মূল্যবান যাবতীয় জিনিসপত্র খুইয়ে, ইট ও ছাদ ধ্বসে পড়াসহ এ ইমারতের বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক।

20150605_Aayina Mohal-18IMG_2812

20150605_Aayina Mohal-19

স্থানীয়দের মাঝে জনশ্রূতি আছে যে, দরবার হলে যে সব টাইলস ছিল তা হাতির দাঁতের তৈরী। শুধু তাই নয়, একেকটা টাইলসে আবার সাতটা করে অবয়ব দেখা যেত। সে এক বিরাট বিস্ময়! মার্বেল পাথরগুলো আয়নার মত এতটাই স্বচ্ছ যে, দাঁড়িও কামানো যেত। রাজবাড়িতে পোষা সাপ ছিল। রাজারা চলে গেল, কিন্তু সাপতো আর কোথাও যেতে পারেনি। তারা এখনো রাজবাড়িতেই আছে। চল্লিশোর্ধ যারা পরিত্যাক্ত রাজবাড়িতে ডান্ডা-গুলি খেলতে যেতেন, তাদের একজন সাঝবেলায় বিশাল মোটা এক অজগর সাপ দেখেছেন। বাড়ি ফিরে বাবাকে বিষয়টি বলাতে বাবা বলেছেন ‘তুই ঠিকই দেখেছিস, রাজবাড়িতে সাপ আছে’ – এ শুনে তার সাত দিন কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এল। রাজবাড়ির অনেক মূল্যবান সম্পদ বাড়ির নীচে লুকানো অবস্থায় আছে। খোঁড়াখুঁড়ি করলে সে সব পাওয়া যাবে। একবার বিদেশীরা এসে সে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পরে তারা কেন যেন চলে যায়।

কুমার মহল

আয়না মহলের উত্তরে ছিল কুমার মহলের অবস্থান। এখানে কুমারদের বিভিন্ন ঘর এমনকি তাদের সংগীত শিক্ষা ও চর্চ্চার জন্য বিশেষভাবে সজ্জিত আলাদা কক্ষও ছিল। মারাত্মক ভগ্নাবস্থায় কোন রকমে এ মহলের শেষ দেওয়ালগুলো অসহায়ের মত শূণ্য দৃষ্টিতে বোবা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

হাতিশালা/গাড়ী বারান্দা

রাজারা নিশ্চয় চলাচলের জন্য হাতি/ঘোড়া/গাড়ী ব্যবহার করতেন। জানা যায় রাজারা বহু ঘোড়ায় টানা ফিটন ও ব্রূহাম গাড়ী ব্যবহার করতেন। রাজ পরিবারের দশম নৃপতি গিরিজানাথই প্রথম রাজা যিনি মোটরগাড়ী ব্যবহার করেছেন। সে সময় রোলসরয়েস ও অস্টিন ব্রান্ডের প্রায় ১০/১২টি গাড়ী রাজবাড়ির মোটর গ্যারাজে ছিল। গাড়ী রাখার গ্যারাজটি ছিল সদর মহল সংলগ্ন। রাজবাড়িতে একটি হাতিশালা ছিল।

রাণী মহল

রাজবাড়ির পিছনের অংশে অর্থাত আয়না ও কুমারমহল সংলগ্ন ছিল রাণীমহল। রানীমহলটি সুউচ্চ, সুদৃঢ় ও দূর্গাকারে মজবুত পুরু ইটের প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল। রাণীর দেউড়ি দিয়ে রাণীমহলে প্রবেশ করতে হত। রাজবাড়িতে নিশ্চয় অনেক ধন-রত্ন ছিল। রাজবাড়ির সে সব অমূল্য ধনরাশি এখানে রক্ষিত থাকত। জানা যায়, রাণী মহলের সংরক্ষিত সিন্দুকে রাণীদের ব্যবহারের জন্য মহা মূল্যবান সব গহনা ছিল। সত্য-মিথ্যা জানি না, তবে এ কথা লোকমুখে শোনা যায় যে, বৃটিশ অধিকারের পর সে সব গহণার মহা-মূল্যবান একটি গলার হার নাকি ততকালীন বৃটিশ কালেক্টর/গর্ভনরের বিবির গলায় শোভা পেতে দেখা গেছে।

IMG_2884 IMG_2894IMG_2898

রাণীরপুকুর

রাণীদের ব্যবহারের জন্য রাণীমহলের পূর্বদিকে মহলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে ছোট্ট একটি পুকুর ছিল – রাণীরপুকুর নামে যা অধিক পরিচিত। ধারনা করা সংগত যে, পুকুরটি বয়স মহলের সমসাময়িক। উত্তর-দক্ষিণে দীর্ঘ পুকুরটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে আনুমানিক ৪০ মিটার ও ৩০ মিটার। রাণীদের ব্যবহারের জন্য আগে পশ্চিম ও দক্ষিণপাড়ে একটি করে দু’টি শান বাঁধানো ঘাট ছিল। কথিত আছে যে, দক্ষিণেরটি রাজা ব্যবহার করতেন আর অপরটি ছিল রাণীদের ব্যবহারের জন্য। আজ যদিও দক্ষিণের ঘাটটি বিলীন হয়ে গেছে বটে তথাপি গঠন বিন্যাস পর্যালোচনা করে ধারনা করি পুকুরের প্রধান ঘাটটি ছিল পশ্চিম দিকেরটিই। বেশ বিস্তৃত এ ঘাটটি এক সময় যে জৌলুস ধারন করে ছিল তা এর গঠন-বিন্যাস দেখে সহজেই অনুমান করা যায়। ঘাটের দু’ধারে বসার জন্য জায়গা এবং কুলঙ্গি ছিল। কুলঙ্গিতে বাতি রাখার প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি গোসলের আনুসঙ্গিক দ্রব্যাদিও সম্ভবত এখানে রাখার ব্যবস্থা ছিল। ঘাটের সংকটময় অস্তিত্ব অনেক আগেই বিসর্জিত হয়েছে, এখন ভগ্নাবস্থায় খানিকটা দৃষ্টিগোচর হয় কেবল। পুকুরটি ব্যবহার উপযোগী এবং ভর-দুপুরে গেলে দেখা যায় এক দঙ্গল বালক মহা আনন্দে পুকুরের ঝাপাঝাপি করছে।

পুকুরের পাড়গুলো অনুচ্চ, প্রায় ভূমি সমান্তরাল। পাড় ঘেঁষে চারিদিকে সম্ভবত চুন-সুরকির সরু পায়ে চলা পথ ছিল। পশ্চিমপাশে এর অস্তিত্ব এখনো চোখে পড়ে। উত্তর-পশ্চিম কোণায় পায়ে চলা এ পথের উপর একটি বাংলার চারচালা আদলে পূর্বমূখী একটি তোরণ আছে। তোরণ ও দক্ষিণের পাঁচিলের মধ্যবর্তী অংশ অনুচ্চ আরেকটি পাঁচিল দ্বারা এককালে সংযুক্ত ছিল। সম্ভবত আবাসস্থল ও পুকুরকে আলাদা করতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হযেছিল। এ পাঁচিলের ওপারে রাণীমহলের মূল ভবনগুলো ছিল। ভিত্তিমূল বাদে এখন এর পুরো কাঠামোটি ধ্বসে পড়েছে।

20150605_Rani Pukur-01 20150605_Rani Pukur-04 IMG_2879

পুকুরের পশ্চিমপাশে দু’টি স্থাপনা রয়েছে। এগুলো সম্ভবত রাণীদের গোসলের পূর্বে নিজস্ব প্রস্তুতি, বিশ্রাম ও কাপড় পরিবর্তনে ব্যবহৃত হত। আয়তকার প্রাচীন স্থাপনাটির সদর দরজায় কারুকাজ করা পাথরের ব্যবহার দেখা যায়। দরজার উপর খোদাইকৃত মূর্তি এখনো স্পষ্টভাবে লক্ষ্যনীয়। স্থাপনার ছাদ ধ্বসে পড়ায় শুধুমাত্র কাঠামোটি কোন রকমে টিকে আছে। রাণীমহলের স্থাপনাগুলোর বেহাল দশা, ভূমির সাথে মিশে আছে এর দালানকোঠাগুলো। তবে একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলে স্থাপনাগুলোর ভিত্তিমূলের নকশাটি এখনো বোঝা যায়।

পুকুরের উত্তর পাড়ের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে কিছু স্থাপনার ভগ্নদশা দেখা যায়, সম্ভবত সেগুলো রাজবাড়ির সংরক্ষিত শৌচাগার ছিল। বর্তমানে এসব স্থাপনা একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রাচীরের কোন কোন অংশ আজ ভেঙ্গে গেলেও আদি রূপেই এটি এখনো কোন কোন জায়গায় প্রায় অক্ষত অবস্থায় আছে। রাণীমহলের পশ্চিম ও উত্তর প্রাচীরের ওপারে যথাক্রমে কালিয়াকান্তের মন্দির ও একটি রাজকীয় বাগান – হীরাবাগ অবস্থিত।

—————————————- চলবে

৭ জুন ২০১৬/খোলাহাটি

৬ টি মন্তব্য : “দিনাজপুর – দিনাজপুর রাজবাড়ি”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    :clap: :clap: :clap: .
    দিনাজপুর সম্পর্কিত লেখাগুলো একটার সাথে আরেকটি লিংক করে দিয়েন।
    যেমনঃ এই লেখার নিচে দিয়ে দিতে পারেন আগের লেখার শিরোনাম, সাথে লিংক। (সম্পাদিত)


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    উত্তরবঙ্গ দেখার সৌভাগ্য হয়নি এখনো। আপনার এই সিরিজের লেখা আর ছবিতে আপাতত দিনাজপুরকে ভালই দেখছি।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    অনেক যত্ন করে পরিশ্রম করে, ছবিসহ এ পোস্ট লেখার জন্য ধন্যবাদ।
    একবার বিদেশীরা এসে সে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পরে তারা কেন যেন চলে যায়। --
    সত্য-মিথ্যা জানি না, তবে এ কথা লোকমুখে শোনা যায় যে, বৃটিশ অধিকারের পর সে সব গহণার মহা-মূল্যবান একটি গলার হার নাকি ততকালীন বৃটিশ কালেক্টর/গর্ভনরের বিবির গলায় শোভা পেতে দেখা গেছে। --
    এসব রত্নের প্রতি বিদেশীদের বরাবরই লোভ ছিল। ইরাক দখলের পর ব্রিটিশরা ও দেশের মিউজিয়াম লুট করে ধন রত্ন আর প্রত্নতাত্বিক ঐশ্বর্য স্বদেশে নিয়ে গেছে।

    জবাব দিন
    • কাজী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন (১৯৮৫-১৯৯১)

      আপনি যথার্থই বলেছেন। লুটেরা বাহিনী দ্বারা আমাদের গৌরবময় অতীতের বিশাল সম্পদের ভান্ডার লুন্ঠিত হয়েছে বহুবার। সারা বিশ্ব জুড়ে এদের লাগামহীন দৌরাত্ব্য আজ অপ্রতিরোধ্য। নানা অযুহাতে, ছুতায় কার্যসিদ্ধি করার জন্য মরিয়া হয়ে আছে, যেমনটি ছিল পূর্বেও। দিনাজপুর রাজবাড়ির মূল্যবান সম্পদরাশি মূলতঃ ১৯৪৭-৫০ খ্রীঃ মধ্যেই সর্বাধিক পর্যায়ে লুন্ঠিত হয়েছে। এমনকি সে সময় ঐ সব সম্পদ পাচার করা নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার অবতারনা হয়েছিল - দিনাজপুরবাসী তার স্বাক্ষী। ভাবতে অবাক লাগে, রাজ-ভান্ডারের ধনরত্নের এক তালিকাও তৈরী করা হয়েছিল সে সময়, কিন্তু সেটি ছিল নিছক প্রহসন - আত্মস্ম্যাতের পূর্ব-প্রস্তুতি আর কি!!! যে রত্নাহারের বিষয়টি প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটির হদিস কেবল মাত্র রাজা ও রাণী ব্যতীত সকলের কাছে গোপনীয় ছিল। অর্থাৎ বিশেষায়িত মহা-মূল্যবান গহনার সাথে এটিও গোপন সিন্দুকে রক্ষিত ছিল, শুধু ঐ হারের মূল্যই ছিল তৎকালীন মূদ্রা মানে ৮০,০০০ টাকা। ‘সোনা’র তৈরী যাবতীয় বস্তু ‘পিতল’ হয়ে নিলামের মাধ্যমে কুক্ষিগত করা হয়েছে, এমনকি পাচারও হয়েছে সেভাবে.... আফসোস!!!

      আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে আবারো অনেক ধন্যবাদ। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করি।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আল-মামুন (১৯৮৫-১৯৯১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।