আমাদের শ্রেষ্ঠত্ত্বের প্রকাশ!

আরো একটি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হল। সংবাদপত্রে, টিভি খবরে উৎফুল্ল শিক্ষার্থীদের হাসিমুখের ছবি চারিদিকে একটা খুশি খুশি ভাব। সেই সাথে ক্যাডেট কলেজসমূহের দূর্দান্ত ফলাফল, সেরা কলেজ নির্ধারনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী দেশ সেরা ১০ কলেজের ৯টি ক্যাডেট কলেজ। অসাধারন এই ফলাফলে ক্যাডেট হিসেবে আসলেই গর্বিত তবে সত্যি কথা বলতে নিজের কলেজকে এই তালিকায় না দেখে কিছুটা কষ্টও পেয়েছি।

ফলাফল ঘোষনার সাথে সাথে আবশ্যিকভাবে অন্য যে আলোচনাটা উঠে এসেছে সেটা হল ক্যাডেট-ননক্যাডেট শ্রেষ্ঠত্ত্বের বিতর্ক। সরকারি হিসাবের প্রেক্ষিতেই ক্যাডেট কলেজগুলোর শ্রেষ্ঠত্ত্ব প্রমানিত হওয়ায় আমরা ক্যাডেটরা দারুন খুশি, এতদিন পরে কর্তৃপক্ষ সঠিক একটা পদ্ধতি বের করলো সেরা কলেজের তালিকা তৈরীতে। আর অন্যান্য কলেজের বিশেষত ঢাকার নামকরা স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্যাডেট কলেজের শ্রেষ্ঠত্ত্ব অস্বীকার করে বহুল প্রচলিত কিছু বুলি আওড়াতে শুরু করেছে, ‘মাত্র ৫০ জন ছাত্র নিয়ে সেরা কলেজের তালিকার জন্য ক্যাডেট কলেজ বিবেচিত হওয়াই উচিৎ নয়’ তার একটি।

ফেসবুকে বিরক্তিকর যে উপাদানগুলো আছে তার মাঝে QUESTION অন্যতম। কিছু লোকজন বিরক্তিকর সব প্রশ্ন করে আর অনেকেই তাতে উত্তর দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, আবার অন্যকে সেই প্রশ্ন জিজ্ঞেষ করতেও কসুর করে না। ফলাফল ফেসবুকের হোমপেজ প্রশ্নবানে জর্জরিত। তবে ইদানিং কালে বেশ কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ ও আলোচিত ঘটনা সংক্রান্ত প্রশ্নে অপ্রচলিত অর্থে জনমত বুঝতে সুবিধা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আশেপাশের মানুষের বিভিন্ন ইস্যুতে সত্যিকারের মনোভাব জানতে পেরেছি। আজকেও ফেসবুকে অনেকগুলো প্রশ্নের ভিতরে একটায় চোখ আটকে গেল, 50 জন ষ্টুডেন্ট নিয়ে ক্যাডেট কলেজগুলো সেরা দশে তো দুরের কথা,রেংকিয়েই আসা উচিত মনে করেন কি?” প্রশ্নকারী ভিকারুন্নেসার একজন ছাত্রী। পুরোনো ক্যাচাল শুরু হয়ে গেছে দেখে একটু হাসিই পেল। তবে উত্তরগুলোর দিকে চোখ রেখে সে হাসি মুছে যেতে সময় লাগলো না, আমার বেশ কিছু ক্যাডেট ভাই পুরো যোশে ক্যাডেট কলেজের বিরুদ্ধে এই মিথ্যাচারের জবাব দেবার জন্য ঝাপিয়ে পড়েছে। প্রশ্নকারীকে সমুচিত জবাব দেবার জন্য তাদের কেউ কেউ বেছে নিয়েছে কিছু abusive vulgar(সঠিক বাংলা এ মুহুর্তে মনে পড়ছে না) শব্দ, আর সে একজন নারী হওয়াতে এর মাত্রা আরেকটু চড়ে গিয়েছে। যেসব ভাষা এখানে লেখা সম্ভব নয়। এখানে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন সেগুলো। দূর্দান্ত, ক্যাডেট কলেজ নিয়ে উলটাপালটা কথা বলার একদম সমুচিত শিক্ষা দেয়া হয়েছে!!!

এটাসহ এধরনের অনেক প্রশ্নের উত্তরেই আমার নিজস্ব মতামত আছে, কলেজে থাকা অবস্থা বা বের হওয়ার পরপরের সময় থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত প্রায় ৯ বছরে এটার বেশ পরিবর্তনও হয়েছে। হয়তো অনেকের সাথেই তা মিলবে না, তবে সে নিয়ে এখানে এই আলোচনা শুরু করছি না। ক্যাডেট ভাইদের প্রতি ছোট একটা অনুরোধ রাখার জন্য এই লেখা। ক্যাডেট কলেজ নিয়ে কোন মিথ্যাচারে বিরুদ্ধে অবশ্যই আমাদের সরব হতে হবে, তবে তা নিশ্চয়ই খাস বাংলা গালাগালির মাধ্যমে নয়, মেয়েদের উদ্দেশ্যে চরমতম অপমানজনক উক্তি করে নেয়। আর তা করে ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে সাধারনের মনে যে ভুল ধারনা রয়েছে তা কোনভাবেই দূর হচ্ছে না উল্টো সমাজের সামনে আমাদের এক কদর্য রুপ প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। আরেকটু সহনশীল হতে হবে, আর বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের এলিটিজম থেকে।

তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাড়াহুড়ো করে লেখাটা লিখলাম, নির্দিষ্টভাবে কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়, (প্রশ্নে উত্তর প্রদানকারী অনেকেই হয়ত আমাদের বন্ধু, সে কারনে বলছি)। শুধু বলতে চাই আমি দুঃখিত, লজ্জিত।

৯৫৩ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “আমাদের শ্রেষ্ঠত্ত্বের প্রকাশ!”

  1. রেজা শাওন (০১-০৭)

    ফলাফল প্রকাশের পর এই চিরন্তন বিতর্কের জন্য বলতে গেলে, অপেক্ষা করি। দেখতে ভাল লাগে।

    গালাগালির অংশটুকু বাদে, এই জিনিষটা দেখে খুব মজা পাইছি। এবং নিজ দায়িত্বে দুইটা অপশন অ্যাড করে দিয়েছি।

    "হুদাই বিতর্ক বাদ দিয়া, কাজ কাম করেন।"

    ক্যাডেট কলেজে চান্স না পাওয়ার দুঃখে আমি মাগুর মাছ খাই

    =)) =)) =))

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    মত ভিন্নমত শুনতে চাই। আমি একটু সময় নিয়ে ডিটেইল মন্তব্য করবো। ( না পোলাপান হাসিস না , সিরিয়াসলি করবো।)। আমার কথাগুলো একটু গুছায়া নেই। তবে এর সাথে একটু অফটপিক কিছু কথাও বলার দরকার আছে।

    জবাব দিন
  3. সামিয়া (৯৯-০৫)

    ভাইয়া, আপনার ব্লগটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক আর এই সময়ে ঠিক এটাই দরকার ছিল। আমিও প্রশ্নটা দেখে মজা পেয়ে উত্তরগুলা দেখার জন্য ঢুকসিলাম, কিন্তু উত্তরগুলা দেখে লজ্জা লাগলো, আমরা কি এতই খারাপ?

    শ্রেষ্ঠত্বের বিচার নিয়ে রক্ত গরম করার সময় পার করে এসেছি, তাই এখন এসব দেখলে মজা লাগে, কিন্তু মাঝে মাঝে নিজদের ব্যবহারে নিজেরাই লজ্জা পেয়ে যাই।

    জবাব দিন
  4. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    প্রথমত সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাজ করার প্রক্রিয়াকে আমার কাছে অসৎ এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত মনে হয়। ষহিক্ষাকে ডিসেন্ট্রালাইজ করার পরিবর্তে সেন্ট্রালাইজ করতে উৎসাহিত করতেই এই ব্যাপারটা ঘটছে। এই সেরা অসেরার মারপ্যাচে আসলে ফোকাসে আসছে কিছু হাতে গোনা সুবিধাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান মূলত ক্যাডেট কলেজ ঢাকা এবং অন্যান্য জেলা শহরের প্রতিষ্ঠিত কিছু কলেজে। এই কলেজ সেরা বলে এই কলেজে ভালো ছাত্রছাত্রী ভর্তি করাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে এর ফলে ভালো ছাত্রছাত্রী এখানে ভর্তি হচ্ছে এর ফলে পরেরবার আরো ভালো ফল হচ্ছে এবং ফল হিসাবে আবার প্রমোট হচ্ছে। এটা হলো চলমান দুষ্টচক্র। এর আল্টিমেট ফল হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান গুলো সবসময়েই ফোকাসের বাইরে যাচ্ছে এবং তা মেধাশূন্য হচ্ছে। মূলত শিক্ষার বিকেন্দ্রীকরণে ব্যর্থতা ঢাকতেই আমাদের শিক্ষা মন্ত্রনালয় সুকৌশলে আমাদের মাঝেকার এ অসুস্থ প্রতিযোগিতাকে প্রমোট করছে।

    দ্বিতীয়ত, তারপরেও যদি সেরা জাজের ব্যাপার হয়, ফেসবুকের সেই পোলে আমি বলবো না। ক্যাডেট কলেজ গুলোকে সেরাদের তালিকায় কম্পেয়ার করার জন্য আনা উচিত না। কারণ ক্যাডেট কলেজ শুধুমাত্র একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না। এর সাথে সাথে অনেক কিছু সেখানে প্রমোট করা হয় আর সবদিক থেকেই ক্যাডেটরা সুবিধাপ্রাপ্ত। প্রথমত জিপিএর ভিত্তিতে তাকে অন্যপ্রতিষ্ঠানের সাথে কম্পেয়ার করারই দরকার নাই দ্বিতীয়ত জিপিএ দিয়ে তারা উড়িয়ে ফেললেও ক্যাডেট কলেজের জন্য আমি সেটাকে সাফল্য বলবো না। বরং বাজেটের সাথে কনসিস্টেন্টলি খাপ মিলয়ে তারা আউটপুট দিতে পারলেই সেটা হতো মোর রিয়েলাইজেবল।

    আলোচনা এখানে শেষ করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের ছোট ভাইবোনদের কুতর্ক আর তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হয়তো অনেক বড়রাও লেগে যান। আমি যদি ক্যাডেট কলেজকে বাদও দেই, তাহলে এখন বলি, নটরডেম ভিএনসি সহ ঢাকার শীর্ষ স্থান দখলকারীগুলো কলেজগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব কি শুধু জিপিএ ফাইভ দ্বারা নির্ধারণ করা যায়? উত্তর হলো না। কারণ বড় কলেজগুলো এসএসসি জিপিএ ফাইভ তো বটেই তারপরেও অনেক যাচাই বাছাই করে নেয়। অথচ অনেক প্রতিষ্ঠান ছাত্র নেয় তলানিতে পরে থাকা কিছু ছেলেমেয়ে। এই দুইটি প্রতিষ্ঠান কি একসাথে এক পাল্লায় মাপার যোগ্য? এর সাথে আরেকটা কথা না বললেই না সেটা হলো, প্রাইভেট টিউশনির ব্যাপারটা। ক্যাডেটরা বছরে তিনমাস আর বড় বড় কলেজের ছাত্ররা মোটামুটি সারা বছর প্রইভেট পড়ে। এখন কলেজে পড়ানোর পর যদি আবার প্রাইভেট পড়ানো লাগে ভালো ফল করাতে তাতে কি প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মানের খুঁত প্রকাশ করে না? আমি হাইপোটিথিক্যাল কথা বললাম মনে হয় কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাজ করতে হলে আক্সরিক অর্থেই সব রকমের প্রাইভেট টিউশনি আইন করে নিষিদ্ধ করা দরকার । এর সাথে কিছু প্রতারণার ব্যাপার আছে বিভিন্ন কলেজের নামে ( এটা অবশ্য বড় বড় কলেজগুলোর নামে না, কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান যেগুলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলতে আমার আপত্তি আছে।)

    তাহলে দেখা যাচ্ছে আসলে সেরা জাজ করাটা একেবারেই একটা এবস্ট্রক্ট ব্যাপার। সেরা তখনই জাজ করা যেত যদি সব প্রতিষ্ঠানে গড়পরতা সেম ক্যালিভার (মানে সব ক্যালিভারের স্টুডেন্ট এর এভারেজের সমান উপস্থিতি) এবং সেম সুযোগ সুবিধা দিয়ে প্রাইভেট টিউশনি অফ করে তাদের মত চালানো যেত এবং ফল জাজ করা হতো। সেটা যেহেতু সম্ভব না আপাতত আমি এই সেরা অসেরার তর্ককে একটা তালগাছ বাদী অসুস্থ তর্ক ছাড়া আর কিছু মনে করছি না।

    জবাব দিন
    • আহসান আকাশ (৯৬-০২)

      তো সাথে পুরো লাইন বাই লাইন একমত।
      সেরা কলেজ বলতে বোঝানো উচিৎ যে কলেজ সবচেয়ে ছাল ভাবে শিক্ষা প্রদান করেছে, কিন্তু আদৌ কি স্কুল কলেজের ক্লাসে ছাত্ররা কিছু শিখছে, নাকি পুরোটাই শিখছে কোচিং আর প্রাইভেট থেকে? যতদিন কোচিং আর প্রাইভেট চলবে, ততদিন সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘোষনা করা অর্থহীন।

      ...জিপিএ দিয়ে তারা উড়িয়ে ফেললেও ক্যাডেট কলেজের জন্য আমি সেটাকে সাফল্য বলবো না। বরং বাজেটের সাথে কনসিস্টেন্টলি খাপ মিলয়ে তারা আউটপুট দিতে পারলেই সেটা হতো মোর রিয়েলাইজেবল।

      পুরো প্যারাটাই কোট করার মত।

      ফজরের আজান দিচ্ছে, এখন আর না পরে বিস্তারিত বলবো।


      আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
      আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

      জবাব দিন
  5. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    এবার প্রতিক্রিয়া যারা জানিয়েছেন তাদের মোটিভ আর আমাদের ক্যাডেটদের ব্যবহার সেইসাথে নিজেদের কুপমণ্ডুকতা নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমার বক্তব্যগুলো সবার সাথে না মিললে মত পাল্ট মত শুনতে আমি প্রস্তুত।

    প্রথমত আর্মি সিভিল চিরকালীন দ্বন্দ্বের মত ক্যাডেট নন ক্যাডেট একটা টানাপোড়েন থাকে আমাদের মাঝে। আমি মনে করি এটা মূলত ম্যাচিউরিটির অভাব। ম্যাচিউরড হলে নিঃসন্দেহে আমরা এটা কাটিয়ে উঠবো। এখন যে পোল নিয়ে এত কথা হচ্ছে সেই পোলের মোটিভ আসলে কী ছিলো? আমি যেই দৃষ্টিকোণ থেকে না বলেছি সেটা মোটেই ছিলো না। বরং সেটা ছিলো অল্প বয়সে হিরৈজম চাপা কিছু বালক বালিকার ঈর্ষাজাত থেকে উদ্ভুত। এর সাথে পিছনে জ্বালানি যোগায় ক্যাডেটদের নামে ছড়ানো কিছু প্রচলিত মিথ্যা কথা। আমি বিভিন্ন কলেজের বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের সাথে ইন্টারএক্ট করেছি। সেই সূত্রে ক্যাডেট সম্পর্কে বাইরের মানুষের ধারণা কতটা অবাস্তব তা দেখে শিউরে উঠি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো কিছু কিছু প্রাইভেট টিউটর এবং কোচিং সেন্টারগুলো সেই দজারণা গুলোকে খুব বিশ্বাস যোগ্য ভাবে প্রমোট করে সাথে নিজের অভিজ্ঞতার নামে মিথ্যাচার করে।

    এবার আসি বিপরীতে ক্যাডেটদের প্রতিক্রিয়ার দিকে। পোলে আমার কলেজের দুইজন ক্যাডেটের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলি এসব বলে তোমরা নিজেদের ছোট করছো সেই সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠানকেও। এই ব্লগের একজন সামুর একটা লিংক শেয়ার করেছে। সেই লিংক ধরে লেখা এবং সামুতে ক্যাডেট ব্লগারদের প্রতিক্রিয়াগুলোও খুবই নাক উঁচা ও এলিট ভাব এসেছে। কিছু কিছু জায়গায় এনডিসি ভিএনসির সাথে তুলনা করে উন্নাসিকতা প্রকাশ ও হয়েছে। ( মানছি এনডিসি ভিএনসির কেউ হয়তো উসকানি দিয়েছে।) ।

    যারা এই কুতর্কগুলো করছে তাদের মাঝে যারা এখনো ভার্সিটিতে ঢুকেনি তাদের আমি দোষ দেই না। হয়তো সময়ের সাথে এনডিসি ভিএনসি কিংবা বাইরের কোন কলেজের অসাধারণ কিছু মানুষের সাথে সঙ্গ পেলেই তাদের ধারণা পাল্টে যাবে। তবে সেই সাথে বাইরের কলেজের কাছে আমাদের সম্পর্কে ধারণা পাল্টাতে হলেও আমাদেরকে নাক উঁচা ভাব কমাতে হবে। তাদের সাথে সহজ সম্পর্ক ও ম্যাচিউরড আচরণ করতে হবে। যখন ভার্সিটি পাস করা ক্যাডেটদের মাঝে বালখিল্যতার তীব্র ভিপ্রকাশ দেখি তখন কিন্তু আমার নিজের কাছেই প্রশ্ন জাগে, ক্যাডেট কলেজ কি আমাদের মাঝে এলিটিজমকে প্রমোট করছে???

    একেবারেই অফটপিক, কিন্তু এই কথাটা আমি অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই বলছি, সেটা হলো আমরা ক্যাডেটরা খুবই স্বার্থপর। নিজেদের গায়ে একটু ছিটা লাগলেই কাগজ কলম তুলে যুদ্ধ শুরু করি। অথচ দেশ জাতির বড় ইস্যুতে আমরা কেমন করে যেনো করা দূরে থাক আলোচনাকেও এভোয়েড করে যাই। আমার এই আক্ষেপ মূলত সিসবিতে সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে আলোচনার অভাব দেখা থেকে উদ্ভুত। দেশের গত একমাসে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া এমনকি ছাগু ব্লগেও যখন বাতাস লাগে তখন সিসবিতে নীরব বাতাস দেখলে নিজেকেই ক্যামন যেনো অপরাধী মনে হয়। আর্মি সিভিল নিয়ে আমরা তর্ক করতে পারি ক্যাডেট নন ক্যাডেট নিয়েও কথার তুবড়ি ছুটাতে পারি, অথচ সাম্প্রতিক ও স্বদেশ নিয়ে আমরা বিস্ময়করভাবে নীরব থেকে যাই। ( আমার এই অভিযোগের তীর আমার দিকেও বর্তায়।)

    শেষবেলায় শুধু ছোট্ট একটা কথা বলে যাই। এটা কিছু মিন করে না তবুও বলি। ভিএনসি একজায়গায় আমাদের থেকে এগিয়ে আছে। পরিমল ইস্যুতে এক্স ভিএনসি মিডিয়া প্রতিকূলতা এবং পুলিশি চোখ রাঙানি উপেক্ষা করেও একটা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে গেছে দাবি আদায়ে। আর আমরা এক্স ক্যাডেটরা ক্যাডেট কলেজের অনেক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা শুধু ব্লগে পড়ে একটু দুঃখপ্রকাশ করেই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করে দিয়েছি।

    শুধু জিপিএ ফাইভ দিয়ে পড়ালেখায় সেরা হলেই হবে না বরং সমাজের সাথে কম্পিটিবল আলোকিত মানুষ হওয়াটাও জরুরী।

    পরিশেষে এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পাওয়া সকল ক্যাডেট ভাই ও বোনকে অভিনন্দন।

    জবাব দিন
  6. আহসান আকাশ (৯৬-০২)
    নিজেদের গায়ে একটু ছিটা লাগলেই কাগজ কলম তুলে যুদ্ধ শুরু করি। অথচ দেশ জাতির বড় ইস্যুতে আমরা কেমন করে যেনো করা দূরে থাক আলোচনাকেও এভোয়েড করে যাই।

    একমত এবং নিজেকেও এই সমালোচনার অন্তর্গত হিসেবে মেনে নিচ্ছি।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  7. রেজা শাওন (০১-০৭)

    ভাই আমার একটু দ্বিমত আছে। একেবারেই যে আলোচনাকে আমরা এভয়েড করি। ঠিক এমন না।

    প্রসঙ্গত সিসিবিতে আমজনতা খুব বেশি একটা আসে না। যাদের আলোচনা করার,তারা অন্যান্য ব্লগগুলোতে করেন।

    আর দ্বিতীয়ত একেবারেই যে আলোচনা হয় না এমনও না। রুমানা মনজুর ইস্যুতে এই ব্লগে প্রচুর লেখা লিখি হয়েছে। এই ইস্যুতে লাবলু ভাইের লেখাটা ওই সময়ের সেরা লেখাগুলোর একটা।

    ভিএনসি ইস্যুতেও বরিশালের সাকিব(০৮) এর একটা লেখা দেখলাম।

    তারপরও আমরা ব্যাপারগুলোতে হয়তো আসলেই পিছিয়ে আছি, নাকি নেহাৎ রাজনৈতিক বিষয় বলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি, এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত না।

    জবাব দিন
    • কামরুলতপু (৯৬-০২)

      আলোচনা আর সরাসরি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কোনভাবে সমান নয়।
      দেশের বেশির ভাগ শিক্ষিত মানুষ যখন কলমই বড় হাতিয়ার এই নীতিতে চলে যায় তখন আর কলম আসলেই বড় থাকে না পলায়নপর লোকদের অজুহাত হয়ে যায়। আমাদের দেশে এখন আর কোন বুদ্ধিজীবীর দরকার নেই। আমাদের এখন অনেক অনেক কর্মী দরকার।

      জবাব দিন
  8. নাজমুল (০২-০৮)

    অনেক কিছু বলার ছিল,
    শুধু বলে গেলাম খুবই সময় উপযোগী একটা লেখা।
    আমিন ভাইএর কমেন্টস গুলাও ভালো লেগেছে।

    আমরা ব্লগে, ফোরাম এ, ফেসবুক এ অনেক বড় বড় কথা বলি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করিনা, 🙁

    জবাব দিন
  9. রকিব (০১-০৭)

    আমিন ভাই এর সাথে সহমত। ভাইয়া, সম্ভব হলে আপনার মন্তব্য দুটো এক করে একটা ব্লগ পোষ্ট করেন প্লিজ। অনুরোধ রইলো।

    আমি কেবল দুটো কথাই বলতে পারিঃ
    প্রথমত, অশালীন কিছু না বলে বরং ক্যাডেটদের আরো ট্যাকনিকালী প্রতিবাদ করা উচিৎ। দ্বিতীয়ত, আমার পরিবারে আমি ছাড়া আর কেউ ক্যাডেট নাই (১৪ পুরুষের মধ্যে আর কী); তাই বলে তারা যে কেউ আমার থেকে অযোগ্য তেমনটা নয়। আমাদের অনেকের মাঝেই ক্যাডেট বলে নিজেকে যে এলিট শ্রেণীর বলে ভাবার প্রবণতা আছে তা ছেড়ে বেরিয়ে আসাটাই শ্রেয়।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রেজা শাওন (২০০১-২০০৭)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।