সাপ্তাহিক ১৭

শেষ পর্যন্ত শেষ হচ্ছে চট্টগ্রাম অধ্যায়( অন্তত এবারের মত)। আগামীকাল চূড়ান্ত পরীক্ষা, বৃহঃস্পতিবার আশা করি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করবো। সেদিক থেকে বলা যায় এটাই হালিশহর (চট্টগ্রাম) থেকে লেখা শেষ সাপ্তাহিক।

তিনদিনের কক্সবাজার সফর শেষে ফিরেছি গতকাল।পানিতে দাপাদাপি, বীচ মার্কেট, বার্মিজ মার্কেট ঘোরাঘুরি, হালকা কেনাকাটা, আড্ডাবাজি এ সব মিলিয়ে দূর্দান্ত সময় কাটিয়েছি।

ক্সবাজারে যাবার অফিসিয়াল কারন ছিল আবহাওয়া কেন্দ্র এবং নতুন রাডার স্টেশন ভ্রমন। ভ্রমন এবং জ্ঞান অর্জন(?) দুটোই ভাল হয়েছে।
DSC01800 DSC01801

পানির সাথে আমার খুব একটা ভাল সম্পর্ক নেই। সাতার শিখেছি বাধ্য হয়ে, আর্মিতে যোগ দেবার আগে ১ মাসের নোটিশে, তাও সুইমিংপুলে। সে কারনে নদী বা পুকুর আমার কাছে সব সময়ই অস্বস্থিকর। ( প্রতি ছয় মাসেই আমাকে একবার করে এ পরিস্তিতির মুখোমুখি হতে হয়)। তবে সমুদ্রে গেলে আমি মোটামোটি মাস্তান বনে যাই। সমুদ্র আমাকে শুধু ভিতরের দিকে টানতে থাকে, একবার নামলে আর সময়ের হিসাব থাকে না। তার উপর এবার সারাদিনে সূর্য্যের দেখা না পাওয়ায় আরো শান্তিতে থাকা গিয়েছে। এবার একটা নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে, বৃষ্টির মাঝে সাগরে থাকা, যদিও বৃষ্টির পরিমান ছিল খুব কম, তারপরো বেশ ভালো লেগেছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামীবার বৃষ্টির মৌসুমে কক্সবাজারে যেতে হবে।

surf
বার নতুন আরো দেখলাম সার্ফারদের। অনেককেই দেখলাম সার্ফিং বোর্ড নিয়ে পানিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যদিও প্রায় সবাই ছিল নভিস।ইচ্ছে ছিল একটা সার্ফিং বোর্ড ভাব নিয়ে কিছু ছবি তুলবো, কিন্তু তাদের কাউকেই রাজি করাতে পারলাম না, একেকজন বোর্ড গুলো নিয়ে যে ভাবটা দেখায়। এছাড়াও স্পিডবোট, ওয়াটার স্কুটার এগুলোও উপভোগ করেছে, আর নির্মল(?) বিনোদনের ব্যবস্থা তো ছিলই। দেশ আসলেই অনেক এগিয়ে গিয়েছে।

রাতে যেতাম কলাতলি বীচের বীচ ক্যাফেগুলোতে। হালকা খাওয়া-দাওয়া, সে সাথে পায়ের নীচে সমুদ্র, ফাটাফাটি অবস্থা। পত্রিকায় দেখেছিলাম এগুলো নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে, অবৈধভাবে জায়গা দখল করে নাকি করা হয়েছে এগুলো। অবশ্য সবগুলোর পাশেই এই জমির প্রকৃত মালিক টাইপ সাইনবোর্ড ঝুলছে। তবে জায়গাটা ভালই… থাকলে মন্দ হয় না।
angledrop

ক্সবাজারে থাকার সুবাধে এবারের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লীগের খেলা দেখা হলো। প্রথম দিনে বার্সার খেলা হতাশ করলেও পরেরদিন আর্সেনালের খেলা দেখে পুষিয়ে গিয়েছে। গ্রুপ পর্বেই বার্সা, লিভারপুল, বায়ার্ন ধরা খেয়ে যায় যায় অবস্থা। এসি মিলান আর রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে একদলের বাদ পড়ার ভাল সম্ভাবনা আছে। বাদ না পড়লেও এরা গ্রুপ রানার্সঅয়াপ হয়ে হিসাব নিকাশে গোলমাল লাগিয়ে দিতে পারে।

বে সবচেয়ে উপভোগ করেছে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের শেষ ম্যাচ। বাংলাদেশের ইনিংসের পুরোটাই দেখেছি। শুরুর দিকের ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হলেও নাইমের ব্যাটিং সব ভুলিয়ে দিয়েছে। এত চাপের মুখে এতো ভালো ইনিংস খেলতে শেষ কবে আমাদের কোন ব্যাটসম্যানকে দেখেছিলাম মনে পড়ছে না। আরো ভালো লেগেছে এই ভেবে যে অনেকেই দলে নাইমের স্থান নিয়ে কথা বলছিল, বিশেষ করে ওর জায়গায় কাপালিকে নেওয়ার ব্যাপারে… আশা করি অদূর ভবিষ্যতে দলে নাইম অথবা রিয়াদের জায়গা নিয়ে সমস্যা হবে না। জুনায়েদ অবশ্য খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। আশা করি ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল করে নাফিসের দলে ঢোকার পথ ও বন্ধ করে দেবে। কিন্তু আশরাফুলকে আর কতদিন যে বয়ে বেড়ানো লাগবে আল্লাহই জানে। সময় হয়েছে ওকে চিরতরে বিদায় দেবার। ঐ দিনেই ছিল ভারত অস্ট্রেলিয়ার খেলা। এটা অবশ্য দেখা হয়নি, রাতে রুমে এসে দেখি টেন্ডুলকারের রান ১৭০। ডাবল সেঞ্চুরি করতে কি করতে হবে হিসাব নিকাশ শুরু করতে গিয়েই মনে হয় কুফাটা লাগিয়ে দিলাম। ২০ বছর ধরে খেলে যাবার পরেও যে এখনো কিভাবে যে ধরনের ইনিংস খেলে যাচ্ছে, বিষ্ময়কর।

মাথায় এখন শুধু ছুটির চিন্তা ভাবনা চলছে, যদিও তার কিছুই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। স্বপ্ন দেখছি পরবর্তী সাপ্তাহিক ছুটিতে বসেই লেখতে পারব। সকলের দোয়া প্রার্থী 😀

১,১২৮ বার দেখা হয়েছে

২১ টি মন্তব্য : “সাপ্তাহিক ১৭”

  1. রকিব (০১-০৭)

    সাপ্তাহিক ভালো হইছে, ছবিগুলা আরো ভালো। তবে সবচেয়ে ভালো হইতো আপনার ঐ রাখালবালক হ্যাটটা মাথায় দেয়া ছবিটা দিলে। 😛


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    শুভ কামনা।
    ঠিক করছি খেলা নিয়া তোর সাথে খোনো আলোচনাতেই আর যাবো না। কারণ আমার ছিন্তা আর তোর চিন্তার মাঝে নট গেট আছে।
    তবে একটা মজার গল্প বলি, বাংলাদেশ জিম্বাবের সাথে জিতার পর আমি ফেসবুকে চাচি (চামু চিবাবা)কে খুঁজে বার করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্_ট পাঠিয়েছি। সাথে মেসেজ দিয়েছি, থ্যাঞ্ক ইউ ফর ইউর ম্যাজিক ত্রি বোওলস।

    জবাব দিন
    • আহসান আকাশ (৯৬-০২)

      :)) :)) :)) চাচি কোন রিপ্লাই দেয় নাই?

      খেলাধূলা নিয়া আমার চিন্তা সাধারনত পুরাটাই আবেগের উপর ভিত্তি করে, যুক্তি বা মাথা খাটিয়ে নয়, এ কারনেই মনে হয় তোর সাথে মেলে না।


      আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
      আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

      জবাব দিন
  3. রেজওয়ান (৯৯-০৫)

    তাজ্জব বইনা গেলাম...... 😮 😮 😮 😮
    সন্ধ্যায় ফাহিম রে কইলাম আপনারে কইতে যে আমি কইছি সাপ্তাহিক দেয়ার জন্য....... 😀 😀 😀 😀
    রাতে অফিস থেকে আইসা পিসি'র সামনে বসতে না বসতেই :awesome: :awesome: :awesome:
    জব্বর হইছে :thumbup:
    তয় বার্মিজ মার্কেট আর " ;;; " ছবি না থাকায় মাইনাছ :thumbdown:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আহসান আকাশ (৯৬ - ০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।