প্রসংগ – শূন্যতার রং

বিএমএ তে ফার্ষ্ট টার্মার হিসেবে দিনাতিপাত করা খুবই কষ্টের একটা কাজ। একেকটা দিন যায়, আর যেন মনে হয় একদিন আয়ু বেড়েছে। ফার্ষ্ট টার্মাররা যেন মানুষ তো না-ই, এমনকি গরু ছাগলের চেয়েও অধম। সেকেন্ড টার্মার থেকে ফাইনাল টার্মার, কারো হয়তো মন ভালো লাগছেনা কিংবা কিছু করার নেই, ফার্ষ্ট টার্মারদের ফন-ইন করে কিছুক্ষণ রগড়া দিয়ে মন ভালো করে যান। কত জন যে কত ভাবে পাঙ্গা দিয়ে গেছেন তার হিসেব নেই। শুধু পাঙ্গা খেয়ে ই গেছি, জানতেও পারিনি কে আর কি কারণেই বা পাঙ্গা দিয়ে গেলেন। কারণ, ফার্ষ্ট টার্মে থাকতে সব সময় নীচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। সিনিয়র কারো মুখের দিকে তাকানো ছিল অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ।

আমি তখন ছিলাম জাহাঙ্গির কোম্পানীতে। হটাত করে একদিন কি যেন একটা অপরাধ করে ফেলেছিলাম আমরা, ঠিক মনে নেই। তবে গুরুত্ব অনুধাবন করে আমরা এইটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছিলাম যে, আমাদের আজ আর রক্ষা নেই। ঠিক এই মুহুর্তে আমাদের সামনে একজন সিনিয়রের উদয় হলো। তিনি আমাদের এমনভাবে বকাঝকা করতে থাকলেন যে আমাদের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে চলে গেল। এর মধ্যে আমাদের প্লাটুনের কর্পোরাল চলে এলেন। তিনি হঠাত আমাদের সামনে আসায় উক্ত সিনিয়র আমাদেরকে “ক্লোজ ইওর হোলস” বলে কমান্ড করলেন। আমরা গগন বিদারী চীতকার করে “সালাম স্যার” বলে দুই কানে আঙ্গুল দিয়ে কান বন্ধ (যাতে কিছু শোনা না যায়) এবং চোখ বন্ধ করে দিলাম। তখন সেই সিনিয়র আমাদের কর্পোরাল কে “সালাম স্যার” বলে উইশ করলেন। আমরা বুঝতে পারলাম যে এতক্ষণ যিনি আমাদের বকা দিচ্ছিলেন, তিনি সেকেন্ড টার্মার (কারণ, কর্পোরাল হলেন থার্ড টার্মার)। কর্পোরাল জানতে চাইলেন ঘটনা কি। সেকেন্ড টার্মার তখন হর হর করে আমাদের কৃতকর্মের কথা জানিয়ে দিলেন (কান বন্ধ করে থাকলেও সবই শোনা যেত)। কর্পোরাল তখন বললেন, ” ওকে, ডিল উইথ দেম এন্ড রজার দেম থরোলি সো দ্যট দে ফরগেট দেয়ার ফরটিন জেনারেশন’স নেইম।” কর্পোরাল তার রুমে চলে গেলেন আর সালাম স্যার বলে তিনি আবার ক্কর্পোরালকে উইশ করলেন। অতঃপর আমাদেরকে বললেন, “ওপেন ইট”। আমরা আবার গগন বিদারী চীতকার দিয়ে আমাদের আঙ্গুল সরিয়ে নিলাম এবং চোখ খুললাম।

এবার শুরু হলো সেই সিনিয়রের আরো জোরে চীতকার। আমরা তার চীতকারে কুঁকড়ে যেতে থাকলাম। অপেক্ষা করছি কখন কেয়ামত নাযিল হবে আমাদের উপর। জানিনা কতক্ষন এভাবে চলেছে। হঠাত শুনতে পেলাম আমাদেরকে উক্ত সিনিয়র বলছেন, “গো টু ইওর রুম। জাস্ট ভ্যানিশ।” আমরা যেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলামনা। আবার “ভ্যানিশ” শুনে যে যার যার রুমে ছুটে চললাম। সবার মনে একই প্রশ্ন, “কে এই ফেরেশতা? বিএমএ’র মত জায়গায় এভাবে ফার্স্ট টার্মারদের পাঙ্গা না দিয়ে ছেড়ে দেয় কেউ?” রুমে ছূট দেবার আগে চুরি করে আড়চোখে সিনিয়রের চেহারাটা একটু দেখে নিয়েছিলাম। মনের মাঝে সারাক্ষণই শুধু একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল, “এত বড় একটা অপরাধ করলাম, সিনিয়র একজন আমাদেরকে পাঙ্গানোর অনুমতি পর্যন্ত দিয়ে গেলেন, কিন্তু তারপরেও কেন আমাদের কোন পানিশমেন্ট না দিয়ে ছেড়ে দিলেন?”

সময়ের আবর্তে দিন চলে যায়। একটু সিনিয়র হই আর কিছু কিছু কড়াকড়ি শিথিল হয়। আগের মত সিনিয়র দেখলে আর নীচে তাকাতে হয়না। মাঝে মাঝেই এখন সেই দেবতার মত মানুষটির মুখ দেখতে পাই। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে মানুষটিকে গিয়ে জিজ্ঞেস করি কেন তিনি আমাদের সাথে এমন মায়াময় আচরণ করেছিলেন।

এতক্ষণ আমি দেবতার মত যে মানুষটির কথা বলছিলাম, তিনি আর কেউ নন, ফয়েজ ভাইয়ের বন্ধু আর আমাদের মামুন স্যার। পরবর্তীতে জানতে পেরেছিলাম যে কেন তিনি এমন আচরন করেছিলেন। আমাদের অপরাধটি তার দৃষ্টিগোচর হবার পরেই তিনি দ্রুত স্পটে হাজির হয়েছিলেন যাতে করে অন্য কেউ আমাদের টাচ করতে না পারে। অবুঝ ফার্ষ্ট টার্মার হিসেবে আমরা ভূল করতেই পারি, কিন্তু তাই বলে অমানবিক নির্যাতন না করে আমাদেরকে আমাদের ভূল শুধরে দেয়াই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। আর এত জোরে চীতকার চেচামেচি করে আমাদের বকা দেবার কারণ ছিল যাতে করে অন্যরা মনে করে যে তিনি প্রচন্ড রাগান্বিত আমাদের উপর এবং আমরা ভীষন পানিশমেন্ট খাচ্ছি।

এরকম একজন ফেরেশতাতুল্য মানূষের প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হওয়া ছাড়া আর কিইবা করার আছে? যে মানুষটা এমন করে ভাবতে পারে, জুনিয়রদেরকে নিজের ছোট ভাইয়ের মত হাজার ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে পরম মমতায় আগলে রাখতে পারে, সে যে কত বড় মহান আর কত উদার মনের মানুষ তা কি আর বলে দিতে হয়? বিএমএতে কত সিনিয়রের কত টাস্ক যে করে দিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। সবসময় চেষ্টা করতাম যদি কোনভাবে মামুন স্যারের কোন কাজে আসা যায়। কিন্তু এই ভালো মানুষটি কখনো কোন জুনিয়রের সাহায্য নিয়েছেন বলে আমার অন্তত মনে পড়ছেনা। অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের এই মানুষটি সব সময় যেন নিভৃতে একাকী থাকতেই ভালোবাসতেন।

হঠাত করেই একদিন শুনতে পেলাম দেবতার মত এই ভাল মানুষটি আমাদের মাঝে আর নেই। তার অসুস্থ্যতার কথা আমার জানা ছিলনা। আর তাই আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারিনি ব্যাপারটা। এত ভালো একটা মানুষ কি করে এত দ্রুত হারিয়ে যায়? কই কোনদিন তো কারো কাছে এই মানুষটি সম্পর্কে খারাপ কোন কথা শুনিনি। কত সিনিয়রকে কতভাবে গালি দিয়েছি, কতজনের মৃত্যু কামনা করেছি পাঙ্গা খেয়ে, কিন্তু একবারো তো মামুন স্যারের জন্য এমনটা কেউ বলেনি। তবে কেন এমন হলো? কার কাছে যেন সান্ত্বনার বাণী শুনেছিলাম, “ভালো মানুষগুলিকে নাকি আল্লাহ দ্রুত তার কাছে নিয়ে যান।” কিন্তু তাই বলে বিধাতা এমন স্বার্থপরের মত আচরন করবেন? সব ভালো মানূষগুলিকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে গেলে আমরা কি নিয়ে থাকবো?

খুব অভিমান হয়েছিল সেদিন স্যারের প্রতিও। কি করে পারলেন তিনি আমাদের ছেড়ে একা একা ওপারে চলে যেতে? একবারো কি ভাবলেন না তিনি চলে গেলে আমাদের মাথার উপরে কে ছায়া হয়ে থাকবে? কে আমাদের অশুভ শক্তির ছায়া থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে পরম মমতায় আগলে রাখবে? কে এমন উজ্জ্বল চরিত্র, মহানুভবতা আর উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে? ফয়েজ ভাই, আপনার বন্ধুটি কি অভিমানী ছিল? আমাদের উপর অভিমান করেই কি তিনি চলে গেছেন? আমরা কি স্যার এতটাই খারাপ ছিলাম যে আমাদের ছেড়ে আপনি চলেই গেলেন? আমাদের একবার অন্তত বলতেন, আমরা আর দূষ্টুমি করতাম না। আমরা আপনার প্রতিটি কথা মেনে চলতাম…।

মানুষের মৃত্যু হলে নাকি আকাশের তারা হয়ে যায়। স্যার, আপনিও কি এখন আকাশের তারা হয়ে আমাদের কে দেখছেন? আপনার ছোট ভাইগুলির অমঙ্গল হয় কিনা খেয়াল করছেন? আমি জানি, আপনি করছেন। কারণ, আপনি যে মামুন স্যার। আপনি যে আপনার ছোট ভাইগুলিকে আগলে রাখতে ভালোবাসেন…। আপনার কুসুম কোমল হৃদয়টি যে কখনো কলুষিত হয়নি। আপনার মত বড়ভাই কি আমরা আর কখনো পাবো?

স্যার, বেদনার রং নীল হয় জানি, কিন্তু শুন্যতার রং কি হয় তা আমার জানা নেই। ফয়েজ ভাইয়ের জানা আছে কিনা তাও জানিনা। আপনার বন্ধুটি আপনাকে কি পরিমাণে ভালোবাসে তা আজ বুঝতে পারলাম। আপনি কি বুঝতে পারছেন আমাদের এই ব্যাকুলতার কথা…আমাদের এই শুন্যতার কথা…আমদের এই অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা…?

ফয়েজ ভাই, শূন্যতার মনে হয় কোন রং হয়না। শূন্যতা যেমন দেখা যায়না, শুধু অনুভব করা যায়, ঠিক তেমনি এর রংটাও যেন অনূভব করে নিতে হয়। আপনার বন্ধু আর আমাদের বড় ভাইটি চলে গিয়ে যে শূন্যতার সৃষ্টি করে গেছেন তা আর পূরণ হবার নয়। তবে এই শুন্যতাটিই পূর্ণ করে রেখেছে আমাদের হৃদয়কে মামুন স্যারের স্মৃতি দিয়ে।

হে আল্লাহ তুমি আমাদের মামুন স্যারকে সযতনে রেখ, যেমনটি তিনি আমাদের আগলে রাখতেন পরম আদর আর মমতায়।

(লেখাটি লিখতে গিয়ে বার বার স্যারের মুখটা ভেসে উঠছিল। বার বার খেই হারিয়ে ফেলছিলাম। যা প্রকাশ করতে চেয়েছি তা মনে হয় পারিনি। নিজের কাছেই অসংলগ্ন লাগছে। পাঠকদের কাছে তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সবাই মামুন স্যারের জন্য দোয়া করবেন।)

১,৭২২ বার দেখা হয়েছে

১৮ টি মন্তব্য : “প্রসংগ – শূন্যতার রং”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আহসান ভাই,জলপাই রঙ্গের পোশাক পরা মানুষগুলো সবাই আবেগশূণ্য কর্কশ নিষ্ঠুর হত্যাযন্ত্রবিশেষ-এ অভিযোগগুলোর সাথে সম্ভবত আপনার পরিচয় আছে।একাত্তরে পাক আর্মির আচরণ আর চট্টগ্রামে আমাদের সেনাবাহিনীর কিছু কিছু কাজের পর এ মন্তব্যগুলো আমিও যে করিনি সেটা বললে মিথ্যা বলা হবে। সেনা বাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় চলে এসেছি এটাও ব্যক্তিগতভাবে সেনাবাহিনীর চেয়ে বাইরের জীবনকে আমার সুন্দরতর বলে মনে হয় এটাই নির্দেশ করে।কিন্তু সিসিবিতে তৌহিদ ভাই,সায়েদ ভাই কিংবা আপনার লেখা পড়ে আমি এই স্টেরিওটাইপ কমেন্টগুলো নিয়ে বার বার দ্বিধায় পড়েছি-আর সেগুলো প্রকাশও করেছি।

    আপনি কি জানেন আপনার এই লেখাটা পড়তে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে?বহুদিন এভাবে ঝর ঝর করে কাঁদিনি-দরজা আটকিয়ে দিয়েছি আর আম্মুকে বলেছি আজ রাতে খাবনা-ডিনার টেবিলে ভেজা চোখ নিয়ে যাবার মত আর কান্নার কারণ বলার মত মানসিক জোর আমার নেই-তাই।

    আজ একটা ছোট্ট প্রতিজ্ঞা করছি-এর পর থেকে আমি যদি শুনি যে ঢালাওভাবে জলপাইরঙ্গা মানুষদেরকে আবেগশূণ্য দানব বলা হচ্ছে-তাদেরকে আমি আপ্নাদের কথা শোনাব।

    আমার কথায় অজান্তে যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি তা একান্তই অনিচ্ছাকৃত।আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।যে কোন অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্যে আহসান ভাই দায়ী, কারণ ঝাপসা চোখে টাইপ করতে হচ্ছে তার দায় দায়িত্ত সম্পূর্ণ তাঁর।

    মামুন ভাই,আকাশে বসে আপনি নিশ্চয়ই এ লেখা পড়ছেন।ভাইয়া,এবার তো আর আমাদের উপর অভিমান করা চলেনা-ক্ষমা করে দিন প্লিজ!!!

    জবাব দিন
  2. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    আহসান ভাই, এতোটা আবেগস্পর্শী লেখা কিভাবে লেখেন সেটা আমার কাছে বিস্ময়।

    হে আল্লাহ তুমি আমাদের মামুন স্যারকে সযতনে রেখ, যেমনটি তিনি আমাদের আগলে রাখতেন পরম আদর আর মমতায়।

    নিশ্চয়ই আল্লাহ এই ছোটভাইদের আকুতি এবং দোয়া শুনছেন।


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  3. রবিন (৯৪-০০/ককক)

    আহসান ভাই,
    আপনি ভাই মানুষ ভালো না।জানেন,কত বছর পর চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পড়লো? ভোর রাতে রুম এ বসে বসে কাদছি, এর কোনো মানে হয়? আসলেই আল্লাহ ভালো মানুষ গুলোকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যান নিজের কাছে।

    নিশ্চয়ই আল্লাহ এই ছোটভাইদের আকুতি এবং দোয়া শুনছেন।
    জবাব দিন
    • আহ্সান (৮৮-৯৪)
      ভোর রাতে রুম এ বসে বসে কাদছি, এর কোনো মানে হয়?

      অবশ্যই মানে হয়...। মামুন স্যার আমাদের ক্যাডেট ভাই। ভাইয়ের জন্য ভাই তো অবশ্যই কাঁদবে...।
      ক্যাডেট হিসেবে এটাইতো আমাদের অর্জন। একুশ শতকে এসেও আমরা যান্ত্রিক হয়ে যাইনি। মানবিক অনুভূতিগূলো সযতনে লালিত বুকের মাঝে এখনো। আর তাইতো মামুন স্যারকে না দেখেও তুমি কিংবা মাসরুফ ভাই হারানোর বেদনায় কাঁদ।

      ক্যাডেট ছাড়া এত ভালোবাসা আরেক ক্যাডেটের জন্য আর কেইবা বাসবে?

      জবাব দিন
  4. আহসান ভাই,খেয়ে উঠে লেখাটা আবার পড়লাম এই ভেবে যে আবেগের তীব্রতা হয়তো কমে এসেছে গতরাতের পর।কিন্তু কোথায়-অবাধ্য চোখদুটো আবারো ভরে উঠল অশ্রুতে...
    মামুন ভাই,সেনাবাহিনীর এডভান্স টীম হিসেবে ওপার যায়গাটা ভালভাবে দেখে রাখার জন্যে খুব তো চলে গেলেন আমাদের যেন অসুবিধা না হয়-আমরা আসছি শিগগিরি,কিন্তু এত আগে না গেলে কি চলত না?

    জবাব দিন
  5. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    প্রসঙ্গ শব্দটা খেয়াল না করার কারণে এই লেখাটা পড়া হয়নি আমি ভেবেছিলাম এইটা বুঝি ফয়েজ ভাইর লেখা। আজ পড়লাম। না পড়লেই ভাল হত। আহসান ভাই কাঁদালেন।চোখে পানি নিয়ে কমেন্ট করছি।মুছতেও ইচ্ছা করছেনা। শেষ প্যারা আর পড়তে পারিনি।

    জবাব দিন
  6. আহ্সান (৮৮-৯৪)
    চোখে পানি নিয়ে কমেন্ট করছি।মুছতেও ইচ্ছা করছেনা। শেষ প্যারা আর পড়তে পারিনি।

    এত আবেগ ক্যাডেটদের মাঝে, ইচ্ছে করে সারা দুনিয়া কে দেখাই...। কেউ যখন বলে ক্যাডেট কলেজ কি দিয়েছে...তখন বলতে ইচ্ছে করে, "অনেক কিছু...। বাঙ্গালী সাংস্কৃতিক এবং পারিবারিক মূল্যবোধ...।" উন্নত জাতিগুলো যখন তাদের পারিবারিক মূল্যবোধ হারিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মা'কে ওল্ড হোমে পাঠায়, যার ছোঁয়া আমাদের এই বাংলাদেশেও লেগেছে, তখন আমরা ক্যাডেটরা আমাদের না দেখা না জানা একজনের জন্য কাঁদি...। কারণ, তার পরিচয় তিনি আমাদের একজন ক্যাডেট ভাই। এই মূল্যবোধের শিক্ষা হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও মনে হয়না পাওয়া যাবে।"

    জবাব দিন
  7. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
    মূল্যবোধের শিক্ষা হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও মনে হয়না পাওয়া যাবে।

    আহসান ভাই,

    আপনার এই লেখা আর এর সাথের কমেন্টগুলো পড়ে ইচ্ছা করছে চারদিকে ছড়িয়ে দিই পরিচিত অপরিচিত সবার মাঝে (ইনশাআল্লাহ, করবও তাই)। সবাই দেখুক আমরা কি আর আমাদের ভেতরটা কেমন।

    ক'দিন আগেও খুব কাছের কেউ কেউ আমাকে নিয়ে একটু উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যে ক্যাডেট কলেজ আমাকে হোম সিক করেছে। কথার এক পর্যায়ে আবার এটাও শুনতে হয়েছে যে পরিবার পরিজন থেকে দূরে থেকে আমার অনুভূতি অনেকটাই ভোঁতা হয়ে গেছে। হয়তো তাই - কিন্তু মেলাতে পারিনি। এই সুযোগে আমি জানাতে চাই আসলে আমি কি, একই সাথে অনুরণিত হওয়া আমরা কি, আর কিভাবেই বা আমাদের হৃদয় কাজ করে।

    এই চমৎকার লেখাটার বিপরীতে কয়েকবার কী-বোর্ড ধরে আজ একটু সফল হলাম আর কি 😛 ।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  8. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    সায়েদ,
    বলার কিছু নাই।
    “যারে দেখতে না’রি, তার চলন বাকা”
    ক্যাডেট কলেজ যার কাছে ভালো লাগবেনা, তার কাছে একই ইস্যুতে তোমাকে পজিটিভ এবং নেগেটিভ উভয় আঙ্গিকে দোষ ধরাটা কোন ব্যাপারই না…।

    জবাব দিন
  9. তৌফিক (৯৬-০২)

    আহসান ভাই, কি লেখব বুঝতেছি না। একবার ভাবলাম নিজের ট্রেডমার্ক আহা! মাইরা চইলা যাই, পরে ভাবলাম না থাক।

    আপনে তো বড়, দুনিয়া আমার থাইকা বেশি দেখছেন। আপনেরে একটা প্রশ্ন করি, দুনিয়া ছাইড়া কি ভালো মানুষগুলাই আগে আগে যায়?

    জবাব দিন
  10. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    তৌফিক,
    কি বলবো বুঝতে পারছিনা...।
    হয়তোবা যায়...হয়তোবা যায়না...। কিংবা আমরা আমাদের মনকে সান্ত্বনা দেবার জন্য বলি...। ব্যাপার যাইহোক না কেন, "ভালো মানুষেরা আগে চলে যায়" কথাটিকেই কেন যেন মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে...।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আহ্সান (৮৮-৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।