বিরতির বিরতি

অনেক দিন ধরে সিসিবিতে কোন কিছু লেখা হয়না। কোন এক অদ্ভূৎ কারণে আপনা আপনিই নিজে থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি বা গুটিয়ে গেছি। সিলেট থেকে যশোরে গিয়েছি প্রায় দেড় মাস। অনেক কিছু স্মৃতি হয়ে আছে সেখানকার। প্রায় প্রতি দিনই এমন কিছু ঘটতো যা নিয়ে মজার মজার ব্লগ লেখা যায়। আমার সহকর্মীরাও (ওনারাও এক্স-ক্যাডেট) আমাকে বলতেন ওই ঘটনাগুলো নিয়ে যেন আমি সিসিবিতে লিখি। আমিও প্রচন্ড উৎসাহী হই। লেখার জন্য উপাত্ত ও সংগ্রহ করতে থাকি। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন কি হয়ে গেল…সব কিছু এলোমেলো…আমার আর লেখা হয়ে ওঠেনা…।

মাঝখানে আমার বিবর্ণ দুঃসময়গুলো আমাকে ভীষণভাবে কুঁকড়ে রেখেছিল। সিসিবিতে আসতাম…লেখা না পড়ে খোলা পেইজটির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম। মাঝে মাঝে দুই একটা লেখা পড়ার চেষ্টা করতাম। বিবর্ণ সেই সময়গুলোতে একটি মানুষ আমাকে নিয়মিত উজ্জীবিত করার চেষ্টায় থাকত। পিতৃস্নেহ বা বড়ভাইয়ের আদর কিংবা বন্ধুসূলভ ভালবাসা দিয়ে তিনি আমায় সুসময়ের আলোড়নে আলোড়িত করতে চেষ্টা করে যেতেন। অনেকবার চাওয়া সত্ত্বেও আমাদের সবার আদরের বোন সামিয়াকে ফোন করার মত মানসিক সাহস আমার হয়ে ওঠেনি। অতঃপর প্রায় ৩ সপ্তাহ পরে গত ১৩ মার্চ সেই মানুষটির দেয়া সাহসে ভর করেই ফোনে সামিয়ার খোজ নেবার দুঃসাহস করেছিলাম।

আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর মত সাহস আমার নেই সানাউল্লাহ ভাই। তবে আপনার এই মানবীয় গুণাবলীগুলোকে নিজের মাঝে ধারণ করার চেষ্টা করব। দোয়া করবেন এই ছোট ভাইটির জন্য।

সিসিবিতে কিভাবে ফিরে আসব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলামনা। সময় মানুষকে কত অসহায় করে তুলতে পারে তা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছি। যাইহোক, প্রথম আলো পত্রিকায় (১৮ মার্চ,২০০৯ তারিখের) একটি লেখার উপর হঠাৎ করেই চোখ আটকে গেল সেনানিবাস এবং আমরা ।সবার সাথে লেখাটি শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো।
আমার এই লেখাটি মূলত দীর্ঘ বিরতির পর সিসিবিতে ফিরে আসার একটা প্রয়াস মাত্র। অনেকটা যেন স্টার্ট করার জন্য স্টার্ট পয়েন্ট খুজে পাচ্ছিলামনা। আর সেকারণেই এরকম একটা অগোছালো লেখা দিয়ে দী্ঘ বিরতির বিরতি দিলাম। আশা করি সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

১৭ টি মন্তব্য : “বিরতির বিরতি”

  1. তৌফিক (৯৬-০২)

    ওয়েলকাম ব্যাক আহসান ভাই। :hug: আপনাকে কিন্তু আমরা ঠিকই মনে রেখেছি। আশা করি, আপনার না লেখা ব্লগগুলো এবার লিখবেন। 🙂

    কংগো অভিযান, মালয়েশিয়ার নির্বাসন আর ক্রিকেটারদের কমান্ডো ট্রেনিং। ;;)

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    ওয়েলকাম ব্যাক। আপনাকে অনেকদিন পরে দেখলাম। মাঝখানে আমিও ছিলাম না তো। ক্রস হয়ে গেছে। নিয়মিত থাকুন এই প্রত্যাশা রইল। আর আব্দার রইলো কিছু নতুন লেখার।

    জবাব দিন
  3. সামিয়া (৯৯-০৫)

    আহসান ভাই, একজন সামান্য সেনাসদস্যের মেয়ে হিসেবে প্রথম দিন থেকেই তো আমরা মেনে নিয়েছি যেকোন সময়ে যেকোন অবস্থায় আব্বু চলে যেতেই পারে। এদের কারো কাছে বিচার চাওয়াটা যে কত বড় কৌতুক, তা আমি বুঝতে পারি। আমাদের হয়ত অনেক বেশি কিছু ছিল না, পরিবারটাই আমাদের সব ছিল। সেটাই যখন শেষ হয়ে গেল, এখন আমাদের হারানোর আসলে কিছু নেই। আমার ব্যক্তিগত অনুভূতিটা এখন এইরকমই।
    আমরা যেটা হারিয়ে ফেলেছি, সেটা আমরা কখনো ফিরে পাবনা। কেবল এই ঘটনাটা দিয়ে যদি আমরা এক হই, তাহলেও হয়ত আমি একটা স্বান্তনা পাব, যাক, আব্বু এমনি এমনি যায়নি।
    এখন সময়টা ওদেরকে দেখিয়ে দেয়ার সময়, যে আপনারা এখনো ভেঙ্গে যাননি। আমার অনেক কিছু বলার ছিল, হয়ত গুছিয়ে বলা হবেনা, তবে আমাদের এক হওয়ার সময় তো এখনো চলে যায়নি।
    আপনারা যখন মাঝে মাঝে ফোন করতেন, আমি বলে বোঝাতে পারবনা এটা আমাকে কতটুকু শক্তি দিত। আর লাবলু ভাইয়ের কথা কিছু বলবনা, উনি আমাকে কখনই স্বান্তনা দেননি, সব সময় শুধু পাশে থেকেছেন। (লাবলু ভাইয়ের পড়া নিষেধ)

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কামরুলতপু (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।