ক্যাডেট……আমাদের একমাত্র পরিচয়…

অসুস্থ্যতার কারনে গত কয়েকদিন ধরে অফিস করছিনা। ঘুম থেকে উঠে তাই প্রথম যে কাজটিই যেটা করি তা হলো কম্পিউটার অন করে ক্যাডেট কলেজ ব্লগে ঢোকা। কাল রাতে লেখা “শান্তিতে থাকুক ওরা…মঞ্জুর কিংবা পলেন…” লেখাটির পাশে অনেকগুলো মন্তব্য জমা পড়েছে দেখতে পেয়ে মন্তব্যগুলো পড়ার লোভ সামলাতে পারিনি। মন্তব্যগুলো থেকেই আমার এই লেখাটির অবতারণা।

তোমাদের সবার অনুভুতিগুলো পড়ে আমার সেই একই কথা মনে পড়ছে…সামিয়া ঠিকই বলেছ, “আমরা সবাই, এবং আমাদের ঘটনাগুলো একই ছকে বাধা…”
প্রিন্স, মাসরুফ, কামরুল তপু কিংবা সায়েদ এর এখনো চোখ ভিজে ওঠে এই লেখা পড়ে…অথচ ওরা কেউ ই হয়ত মঞ্জুর বা পলেন কে কখনো দেখেনি…কিন্তু তারপরেও কেন?

উত্তর একটাই…আমরা সবাই একটা পরিবারের সদস্য…যেখানে আমরা পারিবারিক মূল্যবোধের শিক্ষা পেয়েছি…একে অন্যকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার শিক্ষা পেয়েছি…
প্রতিটি ক্যাডেট একটি কোমলমতি শিশু হিসেবে কলেজে ঢোকে… জীবনের সবচেয়ে মুল্যবান স্বর্ণালী ৬ টি বছ্রর একসাথে কাটায়। জীবনের কোন পঙ্কিলতা স্পর্শ করার আগেই একে অপরের হাত ধরে বলতে শিখে, “ভয় কি আমরা আছি তো…।।”

ক্যাডেট কলেজ ছাড়া স্বার্থহীন বন্ধুত্ব আর ভ্রাতৃত্ববোধের এমন নজীর আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই… বুকে হাত দিয়ে পরম আত্মবিশ্বাসের সাথে এটাও বলতে পারি, আর কারো পক্ষে এই নজীর স্থাপন করা সম্ভবও না।

বাইরে থেকে কঠিন মনে হলেও, ভিতরে অত্যন্ত নরম…এই হলো ক্যাডেট এর আসল রুপ… নইলে এখন ও কেন তোমরা কাঁদবে? এখনো কেন একে অপরের কষ্টে কষ্ট পাবে?
জানি, এই প্রশ্নের উত্তর আমরা ক্যাডেটরা ছাড়া অন্য কেউ দিতে পারবেনা…দেয়া সম্ভব ও না……

এসো আমরা ক্যাডেট পরিবারের সব ভাই বোনেরা একত্রে হাতে হাত ধরে জীবন সাগর পাড়ি দেই…যত ঝড় ই আসুক, কেউ কারো হাত ছাড়বোনা … জীবনের চরমতম প্রয়োজনে আস্থার ছায়া হয়ে হাসিমুখে বলবো, “ আমরা সবাই তোমার জন্য।“

আমরা ছাড়া আমাদের জন্য আর কে আছে?

৭৩৪ বার দেখা হয়েছে

৫ টি মন্তব্য : “ক্যাডেট……আমাদের একমাত্র পরিচয়…”

  1. ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

    ১০০ ভাগ সহমত দোস্ত...।
    স্বার্থের বিষ বৃক্ষ দিনে দিনে বেড়ে ওঠে।
    ফেলে আসা ঐ সময়ে আমরা সকলেই প্রকৃতির কাছে ছিলাম।
    অনেক কোমল ছিলাম।
    আর সে কারনেই কষ্টে বেড়ে ওঠা সময়ে একে অন্যের মাঝে গড়ে উঠেছো বিনি সুতোয় বাঁধা অচ্ছেদ্য মমতার বন্ধন।

    সবাই ভাল থাকুক।


    সৈয়দ সাফী

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।