মজনু

আমরা যখন ক্লাস ১০এ তখন সব কলেজে নতুন টিচার নেয়া হয়..সেই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লায় আসলো দুই piece… ফিজিক্স এর একজন স্যার আর কেমিস্ট্রির একজন ম্যাডাম……..’চুল তার কবে কার অন্ধকার বিদিশার অমনিশা’র মত হাটু লম্বা চুল ছিল ম্যাডাম এর…যখন চুল ছেড়ে রাখত তখন পেছন থেকে আসলেই খুব সুন্দর লাগত।ক্যাডেটদের ব্যাচেলর জীবনের দুর্দশা কাটানোর জন্যই যেন উপকরণ হয়ে তার আগমণ….কিন্তু আমাদের জন্য ম্যাডাম মরীচিকা ছাড়া কিছুই ছিল না..পেছন থেকে তাকে অন্ধকার বিদিশা মনে হলেও সামনে থেকে দেখতে লাগত পুরা সেরররকম…মনে হত তার মুখে কেউ এক দলা কাদা copy paste করে দিয়েছে।তাও যেহেতু ম্যাডাম অবিবাহিত ছিল তাই তার চেহারাও পোলাপান দের দমাতে পারে নাই…….
আর স্যার!!!!এর কথা বলার মত ধৈর্য্য আমার নাই..বাচাল আর চরম বিরক্তিকর এর perfect উদাহরণ।চিকনা শুটকা মানুষটা কলেজে আসার পর থেকে এমনভাবে ম্যাডামের আচল ধরে বসে থাকত মনে হত তারা জামাই বউ।আর সারাদিন ইটিশ-পিটিশ তো লাগায় রাখতই…পোলাপান এর তো আর সহ্য হয় না…………………
এজন্য স্যারকে শায়েস্তা করার প্ল্যান শুরু হল।এর মধ্যে physics deptকে একদিন রাহাত খালি পেল।আর সাথে সাথে স্যারের টেবিল ঘাটল।আর ঘাটতে গিয়ে কেচো খুড়তে সাপ!!! ড্রয়ারের মধ্যে একটা কার্ড..আর ওটায় লেখা,
“ক”, তোমার জন্মদিনে আমার অনেক অনেক ভালবাসা,ইতি “স”(স্যারের নাম ‘ক’ এবং ম্যাডামের নাম ‘স’ ধরে নেয়া হল)
পোলাপান সব গরম হয়ে গেল……………………………..
‘যাও একটা ভার্জিন ম্যাডাম আসল সেটারে আবার মারার চেষ্টা!!!তাও আবার ‘ক’ এর মত স্যার!!!’–আমাদের ওয়াসিকের আর্তনাদ……..
এর পর থেকে যখন যেখানে যেভাবে স্যারকে পাওয়া যায় সেখানেই’আহ্ আহ্ সেলিনা’ শুরু করে পোলাপান।তাও তো শান্তি পায় না।যেদিনই ‘ক’ স্যার night DM হয় সেদিনই সবাই আমরা chance এ থাকি….
সবুরে মেওয়া ফলে-এ কথার যথার্থতা একদিন প্রমাণিত হল। স্যার বেকুব এর মত DM রুমের দরজা না লাগায় ঘুমায় পড়ল।আমাদের ওয়াসিক আর তারিক ক্ষুধার্ত বাঘের মত ঝাপায় পড়ল তার উপর।স্যার চশমা ছাড়া আন্ধা ছিল।আর সেই চশমার স্থান হল DM রুমের ইংলিশ কমোডের ভেতর..গরমের দিন ছিল বলে স্যার শার্টটা খুলে ঘামাইছিল…সেই শার্ট টিস্যু পেপারের মত বিছানো হল কমোডে।খুব সুন্দর একটা সেন্ডেল পড়ে আসছিল।সেন্ডেলটা দড়ি দিয়ে দোতলা থেকে ঝুলায় দেয়া হল..আর তার ঘড়িটা?? পোষ্টমর্টেম করে সেটার লাশ স্যারের সামনে টেবিলে রেখে আসা হল…(এক বার ক্লাশে এই ঘড়িটার গল্প বলেছিল আমাদের।তার কোন ফ্রেন্ড ইটালী থেকে এনে দিয়েছে)

পরের দিন সকালে পিটিতে দৌড়ানোর সময় দেখি হাউজ বেয়ারা গফুর ভাই স্যারকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে(কারণ চশমা নাই)..আর পড়নে তার ময়লা শার্ট(may be গফুর ভাইয়ের)……..

বেচারা আগে জানলে জীবনেও ম্যাডাম এর নাম নিত না।আর ঘেঁষাঘেঁষি তো দূরের কথা……….

১,৩৩১ বার দেখা হয়েছে

৯ টি মন্তব্য : “মজনু”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ভাবতেই ভাল লাগে আমাদের ব্লগ এডুও এই ধরনের কাজ করতো 😉


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কুচ্ছিত হাঁসের ছানা (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।