মাতা-পিতার অধিকার

Ø যদি মাতা-পিতার প্রয়োজন হয় এবং সন্তান তাদের ভরণ-পোষণ দিতে সক্ষম হয়, তাহলে মাতা-পিতার ভরণ-পোষণ দেয়া সন্তানের উপর ওয়াজিব। এমন কি পিতা-মাতা কাফের হলেও তাদের ভরণ পোষণ দেয়া ওয়াজিব।

Ø প্রয়োজন হলে মাতা-পিতার খেদমত করা। খেদমত নিজে করতে পারলে করবে নতুবা খেদমতের জন্য লোকের ব্যবস্থা করা দায়িত্ব। উল্লেখ্য যে, খেদমতের ক্ষেত্রে পিতার তুলনায় মাতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

Ø পিতা-মাতা ডাকলে তাদের ডাকে সাড়া দেয়া এবং হাজির হওয়া। এমনকি পিতা-মাতা যদি কোন অসুবিধায় পড়ে বা অসুবিধার ভয়ে সহযোগিতার জন্য ডাকেন আর অন্য কেউ তাদের সহযোগিতা করার মত না থাকে, তাহলে ফরয নামাযে থাকলেও তা ছেড়ে দিয়ে তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া ওয়াজিব। তবে জরুরত ছাড়া যদি ডাকেন তাহলে ফরয নামায ছাড়া জায়েয হবে না। আর নফল বা সুন্নত নামাযে থাকা অবস্থায় বিনা জরুরতে পিতা-মাতা ডাকলে তখনকার ক্ষেত্রে- যদি সে নামাযে আছে একথা না জেনে ডেকে থাকেন তাহলে নামায ছেড়ে তাদের ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব। আর যদি নামাযে আছে একথা জেনেও বিনা জরুরতে ডাকেন, তাহলে সেরুপ ক্ষেত্রে নামায ছাড়বে না। দাদা-দাদী, নানা-নানীর ক্ষেত্রেও একইরূপ করতে হবে।

Ø মাতা-পিতার হুকুম মান্য করা ওয়াজিব, যদি কোন পাপের বিষয়ে হুকুম না হয়। কেননা, পাপের বিষয়ে হুকুম হলে তা মান্য করা নিষেধ। মোস্তাহাব পর্যায়ের ইলম হাসিল করার জন্য সফর করতে হলে তাদের অনুমতি প্রয়োজন। তবে ফরযে আইন ও ফরযে কেফায়া পরিমাণ ইলম হাসিল করার জন্য সফর করাটা তাদের অনুমতির উপর নির্ভরশীল নয়।

Ø পিতা-মাতার সঙ্গে সম্প্রীতি ও ভক্তির সাথে নম্রভাবে কথা বলা আদব। রূঢ়ভাবে ও ধমকের স্বরে ক্তহা বলা নিষেধ।

Ø কথায়, কাজে ও আচার-আচরণে পিতা-মাতার আদব-সম্মান রক্ষা করা। এ জন্যই তাঁদের নাম ধরে ডাকা নিষেধ, চলার সময় তাদের পশ্চাতে চলা উচিত, তাঁদের সামনে নিম্ন স্বরে কথা বলা উচিত, তাদের দিকে তেজ দৃষ্টিতে তাকানো অনুচিত। উল্লেখ্য যে, সম্মানের ক্ষেত্রে মাতার তুলনায় পিতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

Ø কোনভাবে তাঁদেরকে কষ্ট দেয়া হারাম। মাতা-পিতা অন্যায়ভাবে কষ্ট দিলেও তাঁদেরকে কষ্ট দেয়া যাবে না। এমনকি মৃত্যুর পরও তাদেরকে কষ্ট দেয়া নিষেধ, এ জন্যই তাদের মৃত্যুর পর চিৎকার করে কাঁদা নিষেধ। কারণ, এতে তাঁদের রূহের কষ্ট হয়।

Ø নিজের জন্য যখনই দুআ করা হবে, তখনই পিতা-মাতার মাগফিরাতের জন্য, তাঁদের প্রতি আল্লাহর রহমতের জন্য এবং তাঁদের মুশকিল আছান ও কষ্ট দূর হওয়ার জন্য দুআ করা কর্তব্য। তাঁদের মৃত্যুর পরও আজীবন তাঁদের জন্য এরূপ দুআ করতে হবে। পিতা-মাতার জন্য আল্লাহর কাছে রহমতের দুআ করতে হবে। তবে, পিতা-মাতা অমুসলমান হলে তাঁদের জীবদ্দশায় এ রহমতের দুআ এই নিয়তে জায়েয হবে যে, তাঁরা পার্থিব কষ্ট থেকে মুক্ত থাকুন এবং ঈমানের তওফীক লাভ করুন। মৃত্যুর পর তাঁদের জন্য রহমতের দুআ করা জায়েয নয়।

Ø পিতা-মাতার খাতিরে পিতা-মাতার বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনের সাথে এবং পিতা-মাতার ঘনিষ্ঠজনের সাথে ভাল ব্যবহার করা, সম্মানের ব্যবহার করা এবং সাধ্য অনুযায়ী তাদের উপকার ও সাহায্য করা কর্তব্য।

Ø পিতা-মাতার ঋন পরিশোধ করা এবং তাদের জায়েয ওছীয়ত পালন করাও তাঁদের অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।

Ø দুধমাতার সাথেও সদ্ব্যবহার করতে হবে। তাঁর আদব তাযীম রক্ষা এবং যথাসাধ্য তাঁর ভরণ-পোষণ করতে হবে। আর বিমাতা নিজের আপন মাতা না হলেও যেহেতু সে পিতার প্রিয়জনের মধ্যে একজন, তাই তাঁর সাথে সদ্ব্যবহার এবং যথাসাধ্য তাঁর জানে মালে খেদমত করতে হবে।

৭৫০ বার দেখা হয়েছে

২ টি মন্তব্য : “মাতা-পিতার অধিকার”

  1. তানভীর (২০০১-২০০৭)

    হিমেল ভাই, ব্লগে স্বাগতম।
    লেখা দেখে প্রথমে বুঝি নাই আপনি। যাই হোক, লেখা গুলো আরও গোছানো হলে মনেহয় ভাল লাগবে। আপনার কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আছে। সময় নিয়ে লিখবেন আশারাখি। ভাল থাকবেন।
    প্রথম লেখার জন্য শুভেচ্ছা।


    তানভীর আহমেদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : Mohammad Sanaul Huq

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।