আওয়ামী লীগ কি পারবে, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি?

আওয়ামী লীগ কি পারবে? সেনা কর্মকর্তা হত্যাযজ্ঞের যথার্থ তদন্ত ও বিচার হবে কি? যুদ্ধাপরাধের বিচার কি আদৌ হবে? দেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি?

এমন সব নানা প্রশ্ন মানুষের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব আমার কাছে নেই। আমি জানি না সংশ্লিষ্টরা খুব নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন কিনা। কিন্তু আওয়ামী লীগের অনেক সাংসদ-নেতাও আস্থার সঙ্গে জোরালোভাবে এসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারছেন না।

দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার অল্প সময়ের মধ্যে একের পর এক সংকটের মুখে পড়ছে তথাকথিত মহাজোট ও প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ সরকার। দিন বদলের শ্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারটি যেসব সংকটের মুখোমুখি পড়েছে তার বেশ কিছু নিজের তৈরি, আবার অন্য কিছু ঘাড়ের ওপর এসে পড়েছে।

নতুন মন্ত্রিসভার চমকে দেশের মানুষের বড় অংশ আশাবাদী হলেও আমি সন্দিহান ছিলাম। আমার সন্দেহের কারণ মন্ত্রিসভার বেশিরভাগের যোগ্যতা নিয়ে। এই সন্দেহ আরো জোরালো হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে ও ঘটনাপ্রবাহে। সততা একটা বড় গুণ। আমরা সৎ লোকদের সব জায়গায় নেতৃত্বে দেখতে চাই। কিন্তু একই সঙ্গে একজন সৎ মানুষকে যোগ্য-দক্ষ হতে হবে। সরকার ও সচিবালয় চালানোর মতো নেতৃত্ব গুন থাকতে হবে। যার ভীষণ অভাব এই মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যের মধ্যে বেশ ভালোভাবেই আছে।

আমার কাছে মনে হয়েছে, নতুন-সৎ-যোগ্যদের মন্ত্রী বানানোর চেয়ে শেখ হাসিনার কাছে গুরুত্ব পেয়েছে তার ওই ব্যক্তিদের আনুগত্য কতোটা। এই মানদণ্ডে মন্ত্রীদের বেশির ভাগই অনেক উচ্চ নম্বর পাবেন।

শুধু মন্ত্রী নয়, অন্য যেসব গুরুত্বপূর্ণ পদ আছে সেখানেও একই ব্যবস্থা করে রেখেছেন শেখ হাসিনা। উপদেষ্টা হিসাবে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেটাও এরই একটা নজির। আর বস্তুত এসব কিছু করা হয়েছে সবকিছু শেখ হাসিনার নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই। এর মাধ্যমে মূলতঃ তিনি সংসদীয় একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছেন।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআরের উশৃঙ্খল জওয়ানদের হত্যাযজ্ঞ এবং পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা এরই প্রতিফলন দেখেছি। সংকটটির রাজনৈতিক সমাধানে তার সিদ্ধান্তের প্রতি পুরো সমর্থন জানিয়েও নানক-মির্জা আজমকে দিয়ে বিডিআরের সঙ্গে মধ্যস্থতা, সাহারা খাতুনকে দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টার পক্ষে বলার মতো কোনো যুক্তি পাই না। অথচ আওয়ামী লীগে অনেক অভিজ্ঞ-প্রবীণ নেতারা ছিলেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে এবং তার পরিধিতে আছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। চাইলে দলের বাইরের মানুষের সমর্থন পাওয়া যেতো না সেটাও মনে করি না। কিন্তু সে চেষ্টা ছিল না, নিজেরাই সব সমস্যার সমাধান করবো এমন একটা মনোভাব কাজ করেছে।

আওয়ামী লীগের মধ্যে এমন দৃষ্টিভঙ্গী নতুন কিছু নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরেও যখন সবাইকে নিয়ে চলা, একটা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার সুযোগ ছিল- আওয়ামী লীগ কখনোই সেটা নেয়নি। এবারও সরকার গঠন ও পরিচালনায় এরকম একটা জাতীয় ঐকমত্য দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে খুব জরুরি ছিল। কিন্তু কথায় কথায় ঐক্যের কথা তোতাপাখির মতো বলে গেলেও বিরোধী দলকে সামান্য ছাড় দেয়া বা তাদের বিশেষ করে বিএনপিকে আস্থায় নেয়ার কোনো উদ্যোগ আজও দেখা গেল না। এই সুযোগে আওয়ামী লীগ জামায়াত ও উগ্র ইসলামী দলগুলোকে বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন করার একটা চেষ্টা করে দেখতে পারতো। ব্যর্থ হলে তার দায় বিএনপির হতো। কিন্তু সে দূরদর্শিতা আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দেখাতে পারলেন না।

বিডিআর সদস্যদের হত্যাযজ্ঞ নিয়ে নানা সংস্থা, কমিটির তদন্ত চলছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ মার্চ বেশ কিছুটা সময় ইতোমধ্যে গেছে। হয়তো অনেক ক্ষোভ-বিক্ষোভ কমে এসেছে। কিন্তু তদন্তের ফলাফল দেশবাসী এবং বিশেষ করে সেনাবাহিনীর কাছে বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য না হলে ঘটনা কোথায় দাঁড়াবে বলা মুশকিল। এটা নিশ্চিতভাবেই তা সেনাবাহিনীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতের জন্ম দেবে।

বিডিআরের অবসরপ্রাপ্ত একজন সদস্য যিনি আবার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এর পরপরই বাণিজ্যমন্ত্রী এ ঘটনায় জেএমবির সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গ যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তাতে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। যদিও এই ঘটনায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আমার মধ্যেও একটা সন্দেহ কাজ করে। কিন্তু তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর সব ফলাফল প্রকাশ পেলে এবং তাতে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ হাজির করা গেলে অবিশ্বাস্য হবে না। কিন্তু এখন এই রকম টুকরো টুকরো তথ্য দিয়ে তদন্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে কিনা সে সংশয় থেকেই যায়।

শুরুতেই মন্ত্রিসভা গঠন করতে গিয়ে দলকে বিভক্ত করে শেখ হাসিনা নিজের বিপদ কি ডেকে এনেছেন? এমন একটা প্রশ্ন বারবার আমার মধ্যে উঁকি দেয়। সারা দেশে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-শ্রমিক লীগের নামে দখল বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে সংকটে পড়েছে। এসবের মধ্যে দলের লোকজনের উস্কানি নেই তাই বা নিশ্চিত করে বলি কি করে?

২০০৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে বাহবা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরপর আওয়ামী লীগের গডফাদার জয়নাল হাজারি, শামীম ওসমান, হাসনাত আবদুল্লাহ, শেখ হেলালরা পলাতক জীবন ফেলে দেশে ফিরেছেন। আর দুদকের মামলায় সাজা পাওয়া আসামি শেখ হেলাল তো উপনির্বাচনে মনোনয়নও পেয়েছেন। বাকিরাও একে একে পুনর্বাসিত হবেন, এ নিয়ে আমার মনে কোনোই সন্দেহ নেই।

বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দ্রব্যমূল্যে নিম্নগতির একটা আপাতঃ সুবিধা আওয়ামী লীগ সরকার শুরুতেই পেয়েছে। কিন্তু রপ্তানি কমে যাওয়া, কল-কারখানা বন্ধ হয়ে মানুষ বেকার হওয়া, প্রবাসী আয়ে (রেমিটেন্স) ধ্বস নামার প্রবল আশংকা সামনে দেখা যাচ্ছে? সেটা কিভাবে সামাল দেবে সরকার?

সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ-মৃত্যু, বসুন্ধরা সিটিতে আগুন- মানুষের কাছে ঠিক কি বার্তা দিচ্ছে? বসুন্ধরা সিটির ঘটনাটা বিচ্ছিন্ন। মন্ত্রীরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছুটে যাচ্ছেন সবাই। তার সিদ্ধান্ত ছাড়া সম্ভবত গাছের পাতাও নড়ে না! সব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লাগে। বসুন্ধরা সিটির আগুন নেভানো, উদ্ধার কাজেও তার নির্দেশ লাগে!

প্রশাসনে কোনো কাজ হচ্ছে না। আগের সরকারগুলোর মতো দলীয়করণ চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অস্থির। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিচার বিভাগ পৃথক করা নিয়ে সরকারের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব প্রকাশ পেল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক ভালো কাজ উল্টে দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় সরকারে মন্ত্রী-সাংসদরা ভূমিকা রাখতে চাইছেন।

তালিকা এভাবে দীর্ঘ হতেই থাকবে, থাকছে। আমার কাছে জবাব নেই। আপনার কাছে আছে কি?

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমার প্রাথমিক দুটি প্রতিক্রিয়া কেউ পড়তে চাইলে এখানে যেতে পারেন।


উত্তপ্ত কড়াই থেকে জলন্ত চুলায় : এক


উত্তপ্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত চুলায় : দুই

৬,০৯০ বার দেখা হয়েছে

৬৬ টি মন্তব্য : “আওয়ামী লীগ কি পারবে, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি?”

  1. রাশেদ (৯৯-০৫)

    হুম...... অবস্থা আসলেই খুব খারাপ। আমার মনে হয় দলে অভিজ্ঞদের মন্ত্রিত্ব না দেওয়ার পরিণতি আখরে খুব একটা ভাল হবে না। মন্ত্রিদের মধ্যে সমন্বয়হীনতাও খুব প্রকট। বাণিজ্য মন্ত্রি যেদিন বললেন যে এই ঘটনায় জেএমবি এর হাত আছে সেইদিনই আবার সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আবার এই ব্যাপারে তদন্ত শেষ হবার আগে কোন মন্তব্য না করতে অনুরোধ করলেন। এইসব দেখে মনে হচ্ছে এইভাবে চললে আওয়ামে লীগ নিজেই নিজেকে অনেক বড় পরীক্ষার সম্মুখীন করবে।


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
  2. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    সামনের বর্ষার সময় একটা বন্যায় পড়লে জ্বলন্ত চুলা আণবিক চুল্লীর দিকে যেতে থাকবে। আর দৈব দুর্বিপাকের মতন আরো দুইয়েকটা মনুষ্য সৃষ্ট সংকট যদি যোগ হয় এর সাথে তাহলেতো আর কথাই নাই।


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  3. এহসান (৮৯-৯৫)

    কারনঃ

    সব কিছু করা হয়েছে সবকিছু শেখ হাসিনার নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই। এর মাধ্যমে মূলতঃ তিনি সংসদীয় একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছেন।

    ফলাফলঃ

    সব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লাগে। বসুন্ধরা সিটির আগুন নেভানো, উদ্ধার কাজেও তার নির্দেশ লাগে!

    দেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি?............... উত্তর আমিও জানি না ভাইয়া 🙁

    জবাব দিন
  4. সাইফ (৯৪-০০)

    লাবলু ভাই, তত্ত্বাব্ধায়ক সরকার সফল না ব্যর্থ সেই বিতর্কে যাব না,কিন্তু অই সময়ে দেশের সব প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডীয়াতে একটা কথাই জোরালো ভাবে উচ্চারিত হয়েছে,নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে দেশ এগিয়ে যাবে।আমিও শুনে ছি আর মনে মনে হেসেছি,তার অর্থ এই নয় যে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনা করুক তা আমি চাই নি।কায়মনোবাক্যে চেয়েছি।হেসেছি অন্য কারনে।কারন যেই দেশে রাজনীতিতে পচন ধরে সেইটা নিরাময়ের বাইরে চলে গেছে সেখানে জনগনের মধ্যমনি সেই নেতা নেত্রিরাই দেশকে আগুনের পরশমনিতে দেশকে ধন্য করে দিবে সেই ছেলেভুলানো গল্প শুনে।আমরা যারা ব্যক্তিগতভাবে জনমানুষের কাছে থেকে দেশের কাজ করারা চেষ্টা করেছি তারা বুঝেছি এই দেশে সমাজ ব্যবস্থায় কতটা পচন ধরেছে,এই দেশে নিচ তলায় অবস্থান কারি প্রতিবেশি উপর তলায় অবস্থান কারি প্রতিবেশির মসঅল্লা বাটার শব্দ সহ্য করতে পারে না,এইটা ছোট্ট একটা উদাহরন দিলাম।এক্টু চিন্তা করে দেখেবন সত্যিকার অর্থেই জাতি হিসেবে আমরা কতটা সভ্য আর ভাল,এই কথাটা এই জন্য বললাম যে,ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থের জন্য এই দেশের অধিকাংশ মানুষ নিজেকে সহজেই অনেক নিচে নামিয়ে দেয়।
    কোন না কোনভাবে আমরা রাজনৈতিক লেজুরবৃত্তির ছত্রছায়ায় নিজদেরকে আড়াল করি,নিরাপদ আশ্রয় খুজি,
    যে কারনে কথা গুলো বলছিলাম তা হলো ,সামাজিক আন্দোলন ছাড়া কোন দেশে সামাজিক বিপ্লব সূচিত হয় না,পরিবর্তন আসে না,ইতিহাস তাই বলে। আর সামাজিক আন্দোলন তখুনি সম্ভব যখন পেশাজীবিরা সততার সাথে জনগনের সাথে একাত্মভাবে এগিয়ে যাবে আর সংবাদ মাধ্যমগুলো তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে।সেই জায়গাটায় একটা বিশাল ফারাক।এই দেশের জনগন ত অশিক্ষিত,তাদের অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে রাজনিতিবিদ খেলে,পেশাজিবিরা খেলে,আর সেই খেলায় বাড়তি ফ্লেভার যোগ করে সংবাদ মাধ্যম আর তাদের দেশপ্রেমিক প্রতিনিধিরা,
    পুলিশ এর কাছ থেকেও যারা ঘুষ খেতে অভ্যস্ত,কাভারেজ দেয়ার সময় কোন ফাকে কোন কর্পোরেটের বিল বোর্ড অই চ্যানেলের ক্যামেরায় কিংবা পত্রিকার পাতায় আসবে তার জন্য আলাদা কামানোর ধান্ধা আমার মনে হয় একমাত্র এই দেশেই সম্ভব।
    সামাজিক আন্দোলন ছাড়া এই দেশে শুধু রাজনিতির দিনবদলের গল্প খাইয়ে আর কয়দিন দেশকে বদলাবে.........।।আপনার মত আমিও জানি না আসলেই কই এর ভবিষ্যত?

    জবাব দিন
  5. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    সৎ এবং অদক্ষ মন্ত্রী একটা সমস্যা, এটা পুরন করা যায় যদি সংসদীয় কমিটিতে দক্ষ লোক থাকে। সংসদে জবাব দিহিতা থাকলে অদক্ষরা দ্রুত দক্ষ হবেন আশাকরি। পরিক্ষীত কিন্তু বঞ্চিত বর্ষিয়ান নেতারা মনে হয় দলে কোনঠাসা হয়ে আছেন, এটা ক্ষোভের জন্ম দিয়ে ছারখার করে দিতে পারে দলকে, ভেংগে যেতে পারে আবার।

    অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বিপদের মাঝে পড়ে গেছেন, তবে এটার জন্য লীগ কান্নাকাটি কেন করছে বুঝছি না। বরং বিপদ মোকাবেলার জন্য তারা যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে দূর দর্শিতার অভাব দেখতে পাচ্ছি, এটা শঙ্কার। খুব হাস্যকর লেগেছে তাজের ফোনে প্রধান মন্ত্রী কে অবহিত করনের বিষয়টি। প্রধান মন্ত্রী অবহিত হয়ে যদি ভূল ডিসিশান দেন তবে তাতে কি লাভ? আর একটা বিল্ডিং এ আগুনেই যদি তার কাছে যেতে হয়, তাহলে তো বিরাট বিপদে আছে সরকার আর দেশের লোকজন।

    তবে আমি এখনো আশাবাদী, আর আমার বটম লাইন দূর্নীতি আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এর মাঝে দূর্নীতির বিচার মনে হয় হবে না। তাহলে বাকী থাকে একটা।

    দেখি আরও কিছু দিন।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      ফয়েজ : তোমার ভাই ধৈর্য্য আছে। আর বটম লাইন তো জানি।

      কিন্তু ঐ পর্যন্ত যাইতে পারবো তো? মন-মেজাজ রীতিমতো হট হয়ে আছে।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
    • রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

      @ সানা ভাই,
      আপনার নতুন সরকারের খন্ডকালীন মূল্যায়নটা অনেক চিন্তার খোরাক জোগায়। অনেক ধন্যবাদ। আপনার বিশ্লেষণ পড়ে বোঝা যাচ্ছে যে বিষয়গুলোর ওপর এখন থেকেই আসলে সজাগ মনযোগ রাখতে হবে আমাদেরকে। আবার যে কোন চূড়ান্ত রায় দিয়ে ফেলার আগে খেয়াল রাখতে হবে সময়কালকেও। সে সব যেন প্রি-ম্যাচিউর না হয়ে যায়। ইংরেজীতে একটা কথা আছে "morning shows the day"। কথাটার সাথে কেন জানি কখনোই একমত হতে পারিনি। "মর্নিং" কি আসলেই সারা দিনের আবহাওয়ার অগ্রীম এবং সঠিক ইঙ্গিত দেয়? আমার কিন্তু মনে হয়না। ইউরোপীয় কাউকে জিজ্ঞেস করলেও মনে হয় একই উত্তর পাওয়া যাবে।


      @ ফয়েজ,

      সৎ এবং অদক্ষ মন্ত্রী একটা সমস্যা, এটা পুরন করা যায় যদি সংসদীয় কমিটিতে দক্ষ লোক থাকে। সংসদে জবাব দিহিতা থাকলে অদক্ষরা দ্রুত দক্ষ হবেন আশাকরি।

      পুরোপুরি একমত।
      তবে দায়িত্ববোধও অনেক সময় মানুষকে দক্ষ করে তোলে, নিজের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে শেখায়। সেটাই এখন দেখবার পালা।
      সরকারের জবাবদিহিতা নিয়ে একটা সিরিজ শুরু করেছিলাম। "কেবিনেট" এবং "সংসদীয় কমিটির" জবাবদিহিতা নিয়ে এখানে এবং এখানে


      @ সাইফ,

      একটু মনে হয় পেসিমিস্ট হয়ে গেল, তার হয়তো অনেক যথার্থ কারনও আছে। কিন্তু এর আবার বিপদও আছে; কারণ এমন মানসিক অবস্থায় ইতিবাচক স্রোতগুলোও কিন্তু নজর এড়িয়ে যেতে পারে খুব সহজেই। scepticism নিঃসন্দেহে একটা ভাল গুণ, যেটা তোমার বক্তব্যে স্পষ্ট। আমাদের কেবল খেয়াল রাখতে হবে scepticism যেন cynicism না হয়ে যায়, যা খুব সহজেই কিন্তু ঘটতে পারে। তুমি নিশ্চয়ই একমত হবে আমার সাথে যে ১৯৯০ এর বাংলাদেশের সাথে ২০০৯ এর বাংলাদেশের অনেক পার্থক্য আছে। যেটুকু পার্থক্য বা পরিবর্তন, তা হয়তো কোন বিচারেই যথেষ্ট না। কিন্তু আমরা উল্টোদিকে হাঁটছি - সেটাও কি বলা যায়?
      সামাজিক আন্দোলনের যে কথাটা বললে তার সাথে আংশিক একমত। তুমি কি 'সিভিল সোসাইটি'কে বোঝাতে চাইছো? এর ধরণ কেমন হবে বা হওয়া উচিত বলে তুমি মনে কর?

      জবাব দিন
      • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

        @ রায়হান ভাই

        আপনার পোস্ট গুলো পড়ছি।

        ভাইয়া একটা অনুরোধ, আপনার এই সব চিন্তা মূলক পোস্ট কি সিসিবি তেও রাখা যায়? প্রানবন্ত আলোচনা করতে পারতাম আমরা।

        একটু ভেবে দেখবেন প্লিজ।


        পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

        জবাব দিন
  6. আহসান আকাশ (৯৬-০২)
    ঢাকা, মার্চ ১৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া বাগেরহাট-১ আসনে তার চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ হেলালউদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।

    দিন বদল?


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  7. শওকত (৭৯-৮৫)
    Take this sinking boat and point it home
    We’ve still got time

    এইটা একটা গানের লাইন। তবে এখানে ব্যবহার করতে ইচ্ছা হল।
    রাজনৈতিক সরকারের উপর ভরসা রাখতে চাই বার বার, বার বার ভরসা হারাই। মন চায় না আওয়ামী লীগ এবারের সুযোগটা হারাক।
    কিন্তু কিভাবে?

    জবাব দিন
  8. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    সানা ভাই,

    আপনার পোষ্টে যে প্রশ্নটা রেখেছেন, তা'র বিচার করতে গেলে আরো কিছু বিষয় আগে আমলে আনতে হবে। কারন, কোনকিছুর মূল্যায়নে- তা সে ব্যক্তিই হোক, আর প্রতিষ্ঠানই হোক- তা'র উদ্ভব-বিকাশ-কর্মপ্রনালী তা'র উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের নিরীখে বিচার করতে হয়। কারন, এগুলোই হলো সেই বিচারের মাপকাঠি। একটা মাপকাঠি ছাড়া মূল্যায়ন হবে কি করে?

    কাজে কাজেই আওয়ামীলীগ পারবে কি না তার আগে তাহলে এসে পড়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামীলীগের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যগুলো কি কি, আর এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগের ইতিহাসের নৈর্ব্যক্তিক পর্যালোচনা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধাটা হচ্ছে যে, এখনো প্রথমসারির অনেক কুশিলব বেঁচে আছেন যারা সঠিক তথ্য দিতে পারেন। আর সব থেকে বড় বাঁধা হচ্ছে, দলীয়-সংস্কৃতি এবং তার ধারক দল ও নপুংসক বুদ্ধিজীবি।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      মাহমুদ : তোমার সঙ্গে বড় দ্বিমত নেই। তবু তোমার মন্তব্য

      কোনকিছুর মূল্যায়নে- তা সে ব্যক্তিই হোক, আর প্রতিষ্ঠানই হোক- তার উদ্ভব-বিকাশ-কর্মপ্রনালী তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের নিরীখে বিচার করতে হয়। কারন, এগুলোই হলো সেই বিচারের মাপকাঠি। একটা মাপকাঠি ছাড়া মূল্যায়ন হবে কি করে?

      প্রসঙ্গে বলি, বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণে এর উদ্ভব, বিকাশ-কার্যপ্রণালীর আদ্যোপান্ত টানতে হবে? আমি হয়তো এক বাক্যে (মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরেও যখন সবাইকে নিয়ে চলা, একটা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার সুযোগ ছিল- আওয়ামী লীগ কখনোই সেটা নেয়নি) সেটা টেনেছি। তাহলে তো প্রতিটি লেখায় এসব বিস্তারিত লিখতে হবে!

      আমার মোদ্দা পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগ এবার যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছে। এ কারণে শয়তানের সঙ্গে আপসেও তাদের আপত্তি ছিল না বা করেনি। ১০ টাকা নয়, আমি নিশ্চিত মানুষকে ১৫ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন। জাহানারা ইমামের প্রবল আন্দোলনের চাপ সত্ত্বেও ১৯৯৬-২০০১ সালপর্বে যুদ্ধাপরাধী বিচারের প্রসঙ্গটি তারা মনেও রাখেনি। এবার তরুণ ভোট টানার জন্য একে তাদের কাছে সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র মনে হয়েছে।

      ওবামা কিন্তু দায়িত্ব নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিশ্রুতিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। সে তুলনায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা এ পর্যন্ত কি করেছেন? এই প্রশ্নটা ইদানিং আমার মধ্যে বেশ কাজ করছে।

      দ্বিতীয় প্যারা নিয়ে বড় কোনো ভিন্নমত নেই।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

        সানা ভাই,

        আমি আসলে আপনার কথারই পুনরাবৃত্তি করেছি, দ্বিমত নয়। পত্রিকা বা টিভি'র টকশো'তে খালি দেখি দেশে উন্নয়নের জোয়ারের আশু সম্ভাবনা প্রচার করে। আসলে ত আওয়ামীলীগের টার্গেট ছিল ক্ষমতায় যাওয়া, তা সে যেভাবেই হোক। তারা তা অর্জনও করেছে। কাজেই, এই অর্থে তারা তো সফলই। আর তারা যে গনতন্ত্র আনতে চেয়েছিল, সেটা ত তারা দেখিয়েই যাচ্ছে। এরকমই ত হবার কথা, তাই না? আমি বাজী ধরে বলতে পারি, আওয়ামীলীগের নির্বাচনী মেনিফেষ্টো কি ছিল, তা ১০ জনেও বলতে পারবেনা। এমন কেনো? কারন, আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যে আওয়ামীলীগ আসলেই গনতন্ত্র আসবে। (অন্যদলগুলোর ব্যাপারেও একই কথা)।

        কিন্তু গনতন্ত্রের কথাটা ভিন্ন। কারন, গনতন্ত্র ত কেউ এনে দিতে পারেনা, দেয়ও না। গনতন্ত্র ছিনিয়ে নিতে হয়, সব দেশেই তা'ই হয়েছে। শুধু আমাদের দেশেই বুদ্ধিজীবি আর মিডিয়া দেখি প্রচার করে যে অমুক নেতা, অমুক দল, অমুক দেশের সাহায্যে গনতন্ত্র নিয়ে আসবে। আমরাই নিজ নিজ দলের পক্ষে দাড়ায়ে যাই যখন সমালোচনা আসে, আমরাই চোখ বন্ধ করে যাবতীয় কুকর্মের সুযোগ করে দেই নিজ নিজ দল ও দলের নেতা-কর্মীদের। জয় বাংলা বলে নিজেদের স্বাধীনতার-স্বপক্ষে বলে জাহির করি, অথবা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বা নারায়ে-তাকবীর বলে খাঁটি মুসলমানিত্ব জাহির করি। বিষয়টাকে এখন এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছি যে, কেউ জয় বাংলা না বললে সে স্বাধীনতা-বিরোধী, আর কেউ বিএনপি-জামাত না সাপোর্ট করলে তার ঈমান প্রশ্নসাপেক্ষ।

        মোটাদাগে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ আর ইসলামী চেতনার পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে রাজনীতির বর্তমান ধারার বাইরে আসতে না পারলে আমরা এই দুষ্টচক্র থেকে দের হতে পারব বলে মনে করি না।


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
  9. আহসান আকাশ (৯৬-০২)
    জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মার্চ ১৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) - নিয়ম ভঙ্গ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হল নির্মাণের জন্য জমা পড়া একটি মাত্র দরপত্র গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রোববার দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির একজন সদস্য।

    দিন বদল...


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • আহসান আকাশ (৯৬-০২)
      নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির একাধিক সদস্য বলেছেন, যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে তাদের কাজটি পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন সাবেক নেতা ও প্রকৌশল কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা তদবির করছেন। এর জন্য তাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ৭০ লাখ টাকার সমঝোতা হয়েছে বলে ওই সূত্র দাবি করেন।(বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)


      আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
      আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

      জবাব দিন
  10. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    দু'দিন ধরে পোস্টটা আর মন্তব্যগুলি পড়ছি।
    আসলে নিজের মধ্যেই একটু হতাশা চলে এসেছে।

    জানি ভালো নেই, আমরা কেউই ভালো নেই। তবু ভালো থাকার ভান করে যাচ্ছি। এভাবে আর কতদিন লাবলু ভাই?

    আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      কিছুদিন আগে প্রায় মধ্যরাতে পুরনো বিমানবন্দর ঘেষে নতুন রাস্তাটা দিয়ে যেতে যেতে ভালো লাগা নিয়ে বলছিলাম, এরশাদের পর ঢাকা শহরে নতুন দু-তিনটি রাস্তা করলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সামরিক সমর্থন ছিল বলে সম্ভব হয়েছে। ঢাকা বা দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে মাঝের তিনটি গণতান্ত্রিক সরকার কিছুই করেনি। এমনকি বহুল আলোচিত ইস্টার্ন বাইপাস পর্যন্ত।

      আমার মন্তব্য শুনে ক্লাস এইট পড়ুয়া ছেলে প্রশ্ন করলো, তাহলে তুমি গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে বলো কেন?

      বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতাসহ গণতন্ত্রের পক্ষে নানা কথা বলেছিলাম ছেলেকে। কিন্তু উন্নয়ন আর গণতন্ত্রের মধ্যে আমাদের দেশে যে বিরোধ তৈরি হচ্ছে সেটা তো সত্যি। চট্টগ্রাম বন্দরকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে নিতে মেয়র মহিউদ্দিন মহা তৎপর হয়ে উঠেছেন।

      Rangs ভবন থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত রাস্তার কাজ কিন্তু বারবার পিছাচ্ছে। আগে মার্চে শেষ হবে বলা হলেও এখন বলা হচ্ছে ডিসেম্বর!!


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
      • আহসান আকাশ (৯৬-০২)
        কিন্তু উন্নয়ন আর গণতন্ত্রের মধ্যে আমাদের দেশে যে বিরোধ তৈরি হচ্ছে সেটা তো সত্যি।

        সহমত


        আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
        আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

        জবাব দিন
        • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

          মালয়েশিয়ায় একটা ওয়ার্কশপে গিয়েছিলাম কয়েকবছর আগে। সেখানে উপমহাদেশের প্রায় সব ক'টি দেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার সাংবাদিকরা ছিল।
          সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিঙ্গাপুরের সাংবাদিককে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, তোমরা এইরকম সীমিত গণতন্ত্র নিয়ে কিভাবে চলো? মানুষের মধ্যে ক্ষোভ নেই?

          জবাবে ও বলেছিল, "সিঙ্গাপুরে প্রায় সবার কাজ আছে। বাসস্থান, যানবাহন, উচ্চ বেতন, চিকিৎসা আছে। তাছাড়া নাগরিকদের সবার আয় দিন দিন বাড়ছে। এখানে কেউ গণতন্ত্র নিয়ে ভাবে না।"

          সিঙ্গাপুর ছোট দেশ, নগর রাষ্ট্র, জনসংখ্যা সীমিত- তারপরও সেখানে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী, ভাষার মানুষ আছে। মালয়েশিয়া তো আরো বৈচিত্র্যের দেশ। সীমিত গণতন্ত্রের কারণে সেখানে ইদানিং অসন্তোষ দানা বাঁধছে। দুর্নীতিও আছে ভালোভাবেই। কিন্তু উন্নয়ন থেমে থাকছে না।


          "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

          জবাব দিন
          • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
            এখানে কেউ গণতন্ত্র নিয়ে ভাবে না।

            সানা ভাই,

            ঐ সাংবাদিকের সমস্যা আছে।

            উন্নয়নের সাথে আসলে গনতন্ত্রের সমস্যা নাই, সমস্যা আছে একটা বিশেষ ধরনের উন্নয়ন চাপায়ে দেওয়ার সাথে। গনতন্ত্র আর উন্নয়নকে পরস্পর-বিরোধী ধরে নেওয়া যৌক্তিক এবং প্রায়োগিক উভয় দৃষ্টিকোন থেকেই বেঠিক।


            There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

            জবাব দিন
            • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

              মাহমুদ : এটা অবশ্যই ওই সাংবাদিকের দৃষ্টিভঙ্গী এবং সিঙ্গাপুরের বাস্তবতা।

              উন্নয়ন ও গণতন্ত্র নিয়ে এই বিতর্ক আমাদের মতো দেশগুলোতে চলতেই থাকবে। কারণ গণতন্ত্র নানা মত প্রকাশের সুযোগ করে দেয়, আর উন্নয়নের ধারণা ও প্রয়োগ নিয়ে আছে বহুমত। আমি যেটাকে উন্নয়ন বলবো, তুমি বলবে ওটা ঠিক না। তবে চূড়ান্তভাবে আমরা দেখবো মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে কিনা, আয় বাড়ছে কিনা, আয় বৈষম্য কমছে কিনা, দারিদ্র কমছে কিনা এবং সেটা কোন মাত্রায়...... ইত্যাদি, ইত্যাদি।

              কিন্তু আমরা তো শুধু বিতর্কেই আটকে থাকছি। কয়লা কিভাবে তুলবো- ওপেন পিট না মাইনিং সেটার সুরাহা দশকেও করতে পারছি না। বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট, বহুজাতিক কোম্পানিকে কতোটা সুযোগ দেবো, রাস্তা বাড়াবো না রেলপথ বাড়াবো, আবাদি জমির পরিমাণ কি হবে, অর্গানিক নাকি জিএম ফুড- লিখতে থাকলে বিতর্কের বিষয়ের তালিকা বাড়তেই থাকবে।

              গণতন্ত্র-উন্নয়ন তাত্ত্বিকভাবে পরস্পরের বিরোধী নয়। আবার গণতান্ত্রিক এবং অগণতান্ত্রিক দু'ধরণের শাসনেও ইতিবাচক ফল পাওয়ার নজির আছে।

              কিন্তু আমাদের বাস্তবতা শুধুই আমাদের। দু'বছরের অগণতান্ত্রিক শাসনকে কেউ ভালো, কেউ খারাপ বলবে। গত ডিসেম্বরের প্রথম আলোর জরিপে কিন্তু দ্রব্যমূল্য ছাড়া আর সব বিষয়ে জনমত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর পক্ষে গেছে। আবার এই জনতাই বিপুল উৎসাহে ভোট দিয়ে রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় এনেছে।

              কোনো সিদ্ধান্ত টানছি না। শুধুই বিষয়গুলো তুলে ধরছি। বিতর্ক চলুক না।


              "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

              জবাব দিন
              • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

                হুম বস। ঠিকই কইছেন যে বিতর্ক চলুক। বিতর্কের মধ্যে দিয়েই আসবে সমাধান। আমাদেরকে তো খুব একটা নিজেদের নিয়ে ভাবতেই দেওয়া হয়নি এবং হয়না। পলিসি লেভেলের উপর-তলার গডফাদারেরা ধরেই নেয় যে আমরা আমাদের কিসে ভালো কিসে মন্দ সে সম্পর্কে চিন্তা করার জ্ঞান+যোগ্যতা কোনটাই নেই। কাজেই, বিদেশ থেকে জ্ঞান ও জ্ঞানী (কন্সালট্যান্ট) ভাড়া করাটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একারনেই যখন দেখি দেশে উন্নয়ন পরিকল্পনায় এমন সব বিশেষজ্ঞ নীতি নির্ধারন করে যাদের কনটেক্সট-সম্পর্কে কোনো ধারনা নেই, তখন শুধুই আফসোস হয়। শুধু কনটেন্ট জানলেই চলে না, উন্নয়ন পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নে কনটেক্সের জ্ঞান বেশি জরুরী।

                ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমার ধারনা শেয়ার করার ইচ্ছে থাকল।


                There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

                জবাব দিন
  11. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    হুম। অনেক কিছুই বলতে ইচ্ছা হয় আবার কিছুই বলতে ইচ্ছা হয় না। দেশ নিয়ে আশাবাদী হওয়া অনেক আগেই ছাইড়া দিছি। যারা এ মিথ্যে মরীচিকায় এখনো আশা খুঁজে তাদের প্রতি সহানুভূতি কিংবা সমবেদনা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নাই। যে সব বুদ্ধিজীবিরা দিনবদলের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন তাদের দেখে আমি হেসেছি। আর এখনও যারা দিন বদলের আশায় বসে আছেন , কেউ এসে উদ্ধার করবে আমাদের তাদের দেখে রীতিমতো করুণা বোধ করি। ( আমার এই কমেন্টে কেউ মাইন্ড খাইলে সরি। )
    কিন্তু বাস্তব কথা হইল, বাচ্ছা না কাদলে মাও বাচ্চারে দুধ দেয় না। ক্ষমতাবানরা আগে পরিবার গুছাইব তারপর দল তারপর যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে মনযোগ আমরা নাদানরা তা পেতে পারি। আর ৩০ পাটরসেন্ট শিক্ষিতের দেস্বহে ব্লোগ পেপারে লেইখা আমরা যদি ভাবি দুনিয়া উদ্ধার করে ফেললাম তাহলে কিছুই হবে না। যা করতে হবে তা হলো আমাদের মাস পিপলের মাঝে আমাদের নিজেদের অধিকার আদায়ের বোধ মানবিকতা জীবন বোধ এই জিনিসগুলির স্ফুরণ ঘটাতে হবে। তা না হলে দেশের উন্নতি হবে না লাভবান হবে কতিপয় সুবিধাভোগী শ্রেণী।
    মন মেজাজ অসম্ভব গরম আমার গত একমাস ধইরা আমাদের আমজনতার অবস্থা দেইখা। আমার কমেন্টে যদি কারো প্রতি কোন বেয়াদবি করে থাকি তাহলে সরি।

    জবাব দিন
  12. রবিন (৯৪-০০/ককক)
    মন্ত্রীরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছুটে যাচ্ছেন সবাই। তার সিদ্ধান্ত ছাড়া সম্ভবত গাছের পাতাও নড়ে না! সব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লাগে। বসুন্ধরা সিটির আগুন নেভানো, উদ্ধার কাজেও তার নির্দেশ লাগে!

    ১০০% একমত

    জবাব দিন
      • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

        ভাইয়া এনটিভি তে একটা সাক্ষাৎকার প্রচার করেছিল প্রধানমন্ত্রীর সামরিক বিষয়ক উপদেষ্টার, সেখানে তিনি সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন এটা। আর খবরের ফুটেজে দেখানো হয়েছে তাজ ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সংগে।

        এনটিভি কিংবা চ্যানেল আই এর কাছে অবশ্যই আছে, রেকর্ড করাও থাকতে পারে কারও কারও কাছে।

        আমি শুধু হিন্টস দিতে পারলাম, এর বেশি কিছু করতে পারলাম না জন্য দুঃখিত। আমার নেটের স্পিড বাসায় খুব স্লো, অসুস্থতার জন্য অফিসে যাচ্ছি না গত দুইদিন,কবে যেতে পারব নিশ্চিত না তাই নেট সার্চ করে দিতে পারলাম না।


        পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

        জবাব দিন
      • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

        ইত্তেফাকের মূল প্রতিবেদন পড়ো। প্রথম প্যারাতেই আছে।

        ইত্তেফাক : বসুন্ধরা কমপ্লেক্সে আগুন

        যুগান্তরেরর মূল প্রতিবেদনের চার নম্বর প্যারা পড়ো।

        যুগান্তর : বসুন্ধরা সিটিতে ভয়াবহ আগুন

        তাছাড়া আরো একটা বিষয়। প্রধানমন্ত্রী তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারেক আহমেদ সিদ্দিকীকে আগুন নেভানোর কাজ সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ওই দিনের সব টিভি চ্যানেল, রেডিও স্টেশন এটা প্রচার করেছে।


        "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

        জবাব দিন
  13. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণমাধ্যম প্রধানদের একটা মতবিনিময় সভা ছিল। এই প্রথম আমি তাকে কোনো সভায় ভীষণ পরিণত আচরণ করতে দেখলাম। কথাবার্তায় খোলামেলা হলেও কোনোরকম খোঁচাখুচি করেননি। গণমাধ্যমকেও একটুও খোঁচাননি। বরং বারবার সহযোগিতা চেয়েছেন।

    গণমাধ্যম প্রধানরা নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। ছাত্রলীগের অসংযত আচরণ, টেন্ডারবাজির প্রশ্নও ওঠে। হাসিনা স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে এসব অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দেননি। বেশিরভাগ পরামর্শের সঙ্গে একমত হয়েছেন।

    জানিনা এই মনোভাব তার কতোদিন থাকবে!

    বিডিনিউজ অনেকটা বিস্তারিত কাভার করেছে। লিংক এখানে :

    সরকারি কর্মকর্তাদের বদলির কারণ ব্যর্থতা : প্রধানমন্ত্রী


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  14. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    বাকি আর রইলো কে? দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী আজ বাড়ি ফিরে গেলেন। শেখ হাসিনা কি এখন নির্ভার? আওয়ামীকরণের শেষ ধাপ পুরণ হতে আর বেশি বাকি নেই!! B-) B-) B-)


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রায়হান (৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।