২৫ ফেব্রুয়ারি : আগুনের পরশমনি ছোঁয়াবো প্রাণে

top7

একটা বছর পেরিয়ে গেল। সেই দুঃসহ দিনটি আবার ফিরে আসছে। একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর নৃশংসতা আর বর্বরতার জঘন্যতম রূপ দেখেছিলাম আমরা। আর সেই অপরাধ হয়েছিল বিদ্রোহের নামে! এর নাম বিদ্রোহ! আমরা জেনে এসেছি, বিদ্রোহীরা শ্রদ্ধার মানুষ হন, অমিত সাহস নিয়ে তারা প্রচলিত ব্যবস্থা পাল্টে দিতে লড়াই করেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ান। পাহাড়সম উচ্চতার এই মানুষগুলোকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। মাস্টারদা সূর্যসেন, ক্ষুদিরাম থেকে বরকত, জাব্বার, রফিক, নূর হোসেনরা তেমনি সব মানুষ।

কিন্তু অসহায় নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে হত্যা, সেই মরদেহ গুম করতে নালায় ফেলে দেওয়া, গণকবরে স্তুপ করে মাটি চাপা দেওয়া, নারী-শিশুদের জিম্মি করে রাখা, তাদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ, লুটতরাজ- এসব মানবেতর আচরণকে কোনোভাবেই বিদ্রোহ বলা যাবে না। তাই গতবছর ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদস্যদের উম্মত্ততাকে বিদ্রোহ বলতে রাজি নই। হিংসায় মত্ত এই উন্মাদরা মানুষেরও অধম। এরা হত্যাকারী, খুনি। বলতে পারি, এরা সব নর্দমার নোংরা কীট।

কায়সারের মুখটা চোখে ভাসছে। ফৌজদারহাটে একবছরের জুনিয়র ছিল ও। একই হাউজে ছিলাম। কক্সবাজার থেকে এসেছিল ছেলেটা। দারুণ স্পোর্টসম্যান। সহজ, সরল মুখের ফর্সা মতো। ইনশাদ ভাইও ছিলেন ফর্সা মানুষ। ছিপছিপে শরীরের। মাজহার, হায়দার, তানভির, হুমায়ুন, শাহনেওয়াজ, মাহবুব, ইকবাল, লুৎফর আরো কতো কতো জন। কখনো দেখিনি ওদের। একইরকম টগবগে সব মানুষ ছিল নিশ্চয়ই তারাও। ইউনিফর্ম পড়ে নিরস্ত্র অবস্থায় তারা বসেছিলেন বিডিআরের দরবারে।

শাকিল আহমেদ, জাকির হোসেন, গুলজারউদ্দিনসহ সেদিনের দরবারে ছিলেন শতাধিক বিডিআর (সেনা) কর্মকর্তা। তারা একটুও টের পাননি ভেতরে ভেতরে কি ষড়যন্ত্র চলছে। যে সৈনিকদের তারা নেতা, যাদের ভালোমন্দ তারা দেখেন, যাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকেন- সেই অনুসরণকারীরা একেকজন আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘাতকে পরিণত হবে! বিষ্মিত হওয়ার আগেই তারা নিজের সহযোদ্ধা সৈনিকের গুলিতে বিদ্ধ হবেন! প্রিয় মানুষদের চেহারাগুলো মনে করার মূহুর্তেই মৃত্যু এসে তাদের গ্রাস করবে!

চলুন আমরা একজন কায়সার, একজন জাকির হোসেন, একজন তানভির, একজন মাহবুব কিম্বা গুলজার হয়ে যাই। আমরা বসে থাকি সুসজ্জিত দরবার হলে। আর কিছুক্ষণ পরই আমাদের দেহগুলো এক একটা নিথর পাথরে পরিণত হবে। আমাদের দেহগুলো নালায় নালায় গড়িয়ে গড়িয়ে এ পথ ও পথ হয়ে বুড়িগঙ্গা দিকে ছুটবে। অথবা সহকর্মীদের সঙ্গে ঠাসাঠাসি করে আমরা ঠাই করে নেব গণকবরে। কিম্বা বাতাসে মিলিয়ে যাবে দেহ, প্রিয় স্ত্রী, সন্তান, স্বজনরা খুঁজে খুঁজে হয়রান হতেই থাকবে বছরের পর বছর। হয়তো অপেক্ষায় থাকবে আমরা ফিরবো বলে। কি বোকা ওরা! কোথায় পাবে আমাদের? একাত্তরেও তো এমনি অনেক মায়ের ছেলে, স্বামীর স্ত্রী, বোনের ভাই কখনো ফেরেনি। সেই যে ‘৭১-এ আজাদকে হানাদার পাকবাহিনী ধরে নিয়ে গেল, ও তো আজো ফিরলো না। দেহটাও মেলেনি। ছেলে ফিরবে বলে অপেক্ষায় অপেক্ষায় ক্লান্ত হয়ে আজাদের মা নিজেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

যাদের হারিয়েছি আর কোনোদিন ফিরে পাবো না জানি। তাদের সঙ্গে সুখ আর দুঃখের সব স্মৃতিগুলো সারাজীবন আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে। আমরা আমাদের বন্ধুদের, ভাইদের স্মরণ করতে, শ্রদ্ধা জানাতে ২৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিলখানায় বিডিআর ফটকে জড়ো হবো এবারো। আমরা ভাই হত্যার বিচার চাইবো, বিচার চাইবো বাবার হত্যাকারীর, স্বামীকে ফেরত পাবো না জানি, কিন্তু এই স্বাধীন, গণতান্ত্রিক দেশে আমরা খুনিদের বিচার তো চাইতে পারবো। বিডিআর ফটকে নিরবে দাঁড়িয়ে আমরা হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবো। মোমের আলো জ্বেলে আমরা মনের আলোয় নিজেদের এবং এদেশকে আলোকিত করবো।

গত বছরের ৩রা মার্চের মতোই আমরা প্রত্যেকে একটি করে মোমবাতি একটি করে ফুল নিয়ে বিডিআর ফটকে উপস্থিত হবো। কাজের দিন বলে সন্ধ্যা ৭টায় আমরা জড়ো হবো রাইফেলস স্কয়ারের চত্তরে। সেখান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমরা গিয়ে দাঁড়াবো বিডিআর ফটকে। চলে আসুন সবাই।

৪৯ টি মন্তব্য : “২৫ ফেব্রুয়ারি : আগুনের পরশমনি ছোঁয়াবো প্রাণে”

  1. রকিব (০১-০৭)

    শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ছাড়া শহীদদের জন্য এখন পর্যন্ত আর কিছুই দিতে পারিনি। জানি না আদৌ কোন বিচার হবে কী না!
    ভাইয়া, ফেসবুকে সিসিবির গ্রুপ থেকে একটা ইভেন্ট পেজ বানিয়ে দেবো কী??


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. রেজওয়ান (৯৯-০৫)

    আমার ইউনিট পিলখানা চলে গেছে.....আমারও যাবার কথা ছিল ১২ তারিখ...৪ মাসের জন্য....আমি শুধু ভাবছিলাম ওখানে ২৫ শে ফেব্রুয়ারী কিভাবে থাকব......আমি রংপুর থেকে গেছি.....হয়ত এপ্রিলে আমাকেও পিলখানায় যেতে হবে.....আমি জানি না কিভাবে থাকব সেখানে.........................

    জবাব দিন
  3. রাব্বী (৯২-৯৮)

    সময় এগিয়ে যায়, শুধু শূন্যস্থানগুলো আর কোনদিন পূরন হয়না। সন্তান, স্বামী, পিতা বা ভাই হারানো একেকটা পরিবার শুধু জানে তারা কি সংকটময় সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে গত একবছর। জীবনের তাগিদে সবকিছু আপাতঃ স্বাভাবিক হয়, কিন্তু নিকটতম প্রিয়জনের নিষ্ঠুরতম অকাল প্রয়াণ সবকিছু এলোমেলো করে দেয় বারবার। এই শূন্যতা এবং সংকট অপূরনীয়। সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী।


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    আবার তাদেরকে মনে করার সময় চলে এসেছে,
    কিছুদিন মেতে থাকবে সবাই থাকবে তারপর ভুলে যাবে আবার ,
    মনে পড়বে পরবর্তী কোন এক বর্ষপুর্তিতে...
    আর মনে রেখেই বা কতটুকু কি করছি আমি/আমরা...

    থাকব আশা করি, আগুনের পরশমনি ছোঁয়াবো প্রানে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  5. মো. তারিক মাহমুদ (২০০১-০৭)

    একটা গান খুব মনে পড়ছে ... ... ...
    ______________________________
    মুক্তির মন্দির সোপানতলে
    কত প্রাণ হল বলিদান,
    লেখা আছে অশ্রুজলে ।।

    কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা,
    বন্দীশালার ওই শিকল ভাঙ্গা
    তাঁরা কি ফিরিবে আজ সু-প্রভাতে,
    যত তরুণ অরুণ গেছে অস্তাচলে।।

    যাঁরা স্বর্গগত তাঁরা এখনও জানেন
    স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভুমি
    এসো স্বদেশ ব্রতের মহা দীক্ষা লভি
    সেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণ চুমি।

    যাঁরা জীর্ণ জাতির বুকে জাগালো আশা,
    মৌন মলিন মুখে জোগালো ভাষা
    আজি রক্ত কমলে গাঁথা মাল্যখানি
    বিজয় লক্ষ্মী দেব তাঁদেরই গলে।

    _______________________________

    আমরা আসব বন্ধু , স্মরিতে তোমাদের ... ...

    জবাব দিন
  6. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    কোন জাতির ইতিহাসে আমরা কখনো দেখিনি নিরস্ত্র সহযোদ্ধা, সহকর্মিদেরকে নির্বিচারে মেরে ফেলা হচ্ছে, তাদের মরদেহ নিয়ে উল্লাসে মাতছে বর্বর সব পশুরা আর তাদের সহযোদ্ধা/ সহকর্মিরা অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থেকে শুধু অপেক্ষায় করেছে, সব বর্বরদেরকে পালিয়ে যেতে দেখেছে। এমন ঘটনা সাধারন বুদ্ধির মানুষ যখন চিন্তাও করতে পারে না তখন আমরা তা করে দেখিয়েছি সারা বিশ্বকে। এমন সহকর্মির অংশ হিসাবে আমি নিজেকে জানাই ধিক্কার। আর ক্ষমা চাই সেইসব সহযোদ্ধা/ সহকর্মিদের কাছে যারা আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে বসে ছিল মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। আমাদের ক্ষমা করবেন সবাই। আপনাদেরকে জানাই :salute: ।

    উপস্থিত থাকার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।

    জবাব দিন
  7. আমি হতভাগা এক বিডিআর পরিবারের সদস্য, আমার ভাইয়া ৩১ বছর ধরে এই বাহিনীতে চাকুরী করছেন। ঘটনার সারা দিন তিনি কিছুই জানতেন না। বিকালে তিনি জানালেন এখানে অনেক খুন খারাবী হয়েছে। আমরা টিভিতে সব দেখছিলাম। তিনি কোন গুলি ছোড়েননি এবং বিদ্রোহ না করার জন্য বিদ্রোহীদের হাতে প্রচন্ড মারও খেয়েছিলেন। ফোন করে আমাকে সব বলেছেন। কিছুদিন পর তার পেনশনে আসার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। তিনি এখন অন্ধকার কারাগারে অবস্থান করছেন বলা যায় বিনা বিচারে। আমি জানি তিনি নির্দোষ। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। এমনি কতজন যে নিরীহ ব্যক্তি আছেন তার ঠিক নেই।

    বলা বাহুল্য, ২৫ তারিখের পর মিডিয়া থেকে শুরু করে সকলেই বিডিআরের নির্মমতায় সেনাবাহিনীর প্রতি মায়া দেখাচ্ছে। অথচ আমার নিরপরাধ ভাই কি কারণে জেলে আটক আছেন তা কি বলতে পারবেন? আপনারা সব সময় আপনাদের পক্ষে লিখছেন, ভাল কথা। বাইরে থেকে আমরা দেখতে পাই বিডিআর একটা পরিস্থিতির স্বীকার। সকল বিডিআর বিদ্রোহ করেনি এমনকি তারা অনেক আর্মি অফিসারকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে।

    বিচারের নামে যে প্রহসন চলছে তা আর কি বলব! বস্তুত সরকার এই দুই বাহিনীকে মুখোমুখী দাড় করিয়েছে। আল্লাহর বিচারে এরা কেউই রেহাই পাবে না। আর্মি অফিসাররা কি নির্মম হতে পারে তা বিদ্রোহ পরবর্তী পিলখানায় অবস্থিত বিডিআরদের নিকট থেকে জানতে পেরেছি। মনে রাখবেন আপনারা দুই বাহিনীই আমাদের দেশের সন্তান এবং মানুষ। কেউ আইনের উর্ধে নন। প্রকৃত অপরাধীদের বাদ দিয়ে নিরীহ লোকদের বিচার করলে আল্লাহ আপনাদের ক্ষমা করবে না। শেষ বিচারের দিন আল্লাহর কাছে সবাইকে যেতে হবে এবং বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় বিচারক।

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      ভাই একেআরএম, বোঝা যাচ্ছে আপনি প্রকৃত নাম প্রকাশ করেননি। তাতে কিছু আসে যায় না। ধন্যবাদ আপনাকে নিজের কথা তুলে ধরার জন্য। আপনার ভাই সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা কিন্তু অবিশ্বাস্য। প্রথমত সারাদিন পিলখানায় থেকে তিনি অনেক সেনা কর্মকর্তাকে মেরে ফেলার খবর পেলেন বিকালে!! এত্তো গুলির শব্দেও তিনি কিছুই টের পেলেন না! তিনি কি দরবারেও ছিলেন না? না দিলে কেন, সে প্রশ্ন নিশ্চয়ই তোলা যায়।

      আমি কিছু প্রশ্ন তুলেছি মাত্র। হয়তো আপনার ভাই সত্যিই কিছু জানতেন না। হয়তো তিনি এসব জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। যেহেতু বেসামরিক আদালতে হত্যা-খুনের বিচার হবে, সেখানে নিশ্চয়ই তিনি তার বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। আশা করি তিনি নিজের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি-প্রমাণ সঠিকভাবেই তুলে ধরতে পারবেন। আমরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই, হত্যাকারীর শাস্তি হোক, সেটা চাই। কোনো নিরীহ মানুষ সাজা পেলে সেটাও চরম অন্যায় হবে। আমরা কোনোভাবেই সেটা সমর্থন করবো না। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। আর সেটা বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।

      আপনি সেনা কর্মকর্তাদের নির্মমতার কথা বলেছেন। হয়তো আপনার কথা ঠিক। কিন্তু আপনি একবারও বলেননি, ২৫ ফেব্রুয়ারি নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যে চরম অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল সেটা কতোটা নির্মম আর অন্যায় ছিল। গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিডিআর সদস্যদের একের পর এক রহস্যজনক মৃত্যু মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়। বিনাবিচারে কারো মৃত্যু আমরা সমর্থন করি না।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
      • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০), সামিয়া ও অন্যান্যদের উদ্দেশ্যে বলছি-
        সেনাবাহিনীর প্রতি আমার অশেষ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমার বড় ভাই সেনাবাহিনী থেকে রিটায়ার্ড করেছেন। তার সাথে আমি বগুড়ার মাঝিরা ক্যান্টনমেন্ট-এ অনেক দিন থেকে পড়াশোনা করেছি। ক্যান্ট পাবলিক স্কুলে। সে যাই হোক, তাদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই।

        আমার ভাই, বিকালে জেনেছেন এবং তিনি দরবার হল থেকে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দুরে দায়িত্ব পালন করছিলেন, (যতদুর জানি দরবারে আগত অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করার দায়িত্বে) সেক্ষেত্রে তিনি কোনক্রমেই সব জানতে পারেন নি এবং পরে অনেকটা জেনেছেন। শেষ রাতে ৪টা দিকে আমাকে ফোন করে কাঁদছিলেন এবং বলেছিলেন এই পৈচাশিকতা ক্ষমার অযোগ্য, বিডিআর জওয়ানরা এতো নির্মম হতে পারে তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এবং বার বার বলছিলেন এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া দরকার। ঘটনার সাথে তার দুরতম সম্পর্কও ছিল না বলে তিনি বার বার বলেছেন। আমি জানি আপনারা তা বিশ্বাস করতে চাইবেন না। এই নির্মমতার পরে আত্নপক্ষ সমর্থন করা আমার পক্ষে সম্ভবও নয়। কিন্তু মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমার ভাই সম্পূর্ণ নিরপরাধ। দোষ করলে তিনি একটিবার অন্তত আমাকে বলতেন। পেনশনে আসার আগ মূহুর্তে কোন বিডিআর সৈনিক তার চাকুরী জীবনের সব অর্জন শেষ করেত পারেন না একথা তিনি বলেছিলেন এবং আরও বলেছিলেন, বিদ্রোহ করার শাস্তি আমি জানি, তীরে এসে তরী ডোবানোর মতো বোকামী আমি করবো না।

        দেশপ্রেমিক এই সেনা অফিসারদের হত্যা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়, সেটা আমার ভাই করলেও মেনে নিতাম না, সে সৎ সাহস আমার আছে এবং আমি এখনও এতোটা অমানুষ হয়ে যাই নি। হায়দার হোসেনের সেই ভিডিও গানটি দেখলে এখনো আমার অশ্রুপাত হয়। নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না।

        আপনারা দোয়া করবেন ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনা আর না ঘটে, শহীদের আত্না যেন চিরশান্তিতে থাকে এবং নিরপরাধরা যেন ন্যায় বিচার পায়। আমি এদেশের সন্তান, সাংবিধানিকভাবে ন্যায় বিচার পাওয়া আমার ও আমার পরিবারের অধিকার। আর্মি-বিডিআর এদেশের মানুষ, তারা প্রতিপক্ষ নয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।
        আমার মন্তব্যে কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমাপ্রার্থী।

        জবাব দিন
      • শ্রদ্ধেয় সানাউল্লাহ ভাই,
        আপনার কথারি সূত্র ধরেই....
        আপনি বলেছেন- "আপনি সেনা কর্মকর্তাদের নির্মমতার কথা বলেছেন। হয়তো আপনার কথা ঠিক।"--হয়ত বলেছেন।
        আবার আপনি বললেন: "গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিডিআর সদস্যদের একের পর এক রহস্যজনক মৃত্যু মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়। বিনাবিচারে কারো মৃত্যু আমরা সমর্থন করি না।"
        তারমানে আমরা এখনও নিশ্চিত নই পুরো বিদ্রোহের ব্যাপারে। একমাত্র বিচারেই সব কিছুর পরিস্কার হবে হয়ত। আমাকেও হয়ত বলতে হলো কারন সবকিছুর পরও জাতীয় নিরাপত্তার বিষটেই মুখ্য। আর তাই সবসময় সুবিচারের অর্থ এক নয়। অর্থ এক হওয়াও আমাদের কাম্য নয়।

        জবাব দিন
  8. আশ্চর্যজনক ভাবে মিডিয়া বিডিআরদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে না। অথচ সংখ্যায় তারাই বেশী। দোষীদের সাজা হোক এটা আমরাও চাই, কিন্তু গরীবের প্রতি এই অন্যায় আচরণ আল্লাহ সহ্য করবেন না।

    জবাব দিন
  9. আমার আগের একটি লেখা পড়ুনঃ
    এই বিচার কাজ কতদিনে শেষ হবে, সত্যিকার ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে কিনা ইত্যকার নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট বের হওয়ার আগেই তদন্তের সমন্বয়কারী বাণিজ্যমন্ত্রী যেভাবে ঢালাও মন্তব্য করেছেন তাতে আমাদের মনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার পাওয়ায় সন্দেহ সংশয় থাকাই স্বাভাবিক। তদন্তের ফলাফল কি হয়েছে, জনগণ পুরোপুরি জানে না, আবার প্রকৃত অপরাধী কারা তাও জন সমক্ষে আসেনি। অন্যদিকে নিরপরাধ জওয়ানরা দিনের পর দিন কারাগারে আটক থাকছেন। কবে নাগাদ পিলখানার অভিযুক্তদের বিচার শুরু হচ্ছে আর এই বিচার কার্য কতদিন পর্যন্ত চলবে তাও জানা যাচ্ছে না।

    বিগত প্রায় ১ বছর ধরে কারান্তরালে আটক রয়েছেন হাজার হাজার বিডিআর জওয়ান। কেউ কেউ মারাও গেছেন, ৫৯ জনের অস্বাভাবিক এই মৃত্যুনিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। বিডিআরের পক্ষ থেকে একটা সাদামাটা প্রেস নোট দিয়েই বিডিআর ডিজি তার দায়িত্ব শেষ করছেন। অথচ মৃত্যুবরণকারী জওয়ানদের পরিবার হতে নির্যাতনের বিস্তর অভিযোগ বার বার করা হয়েছে। কিন্তু তার কোন সদুত্তর এই ডিজি দেননি বা দেয়ার প্রয়োজনবোধ করেননি। তারই অধীনে বিচার কতটুকু নিরপেক্ষ আর গ্রহণযোগ্য হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেই ভারতে গিয়ে বিএসএফকে ধন্যবাদ দিয়ে আসেন। আবার মিডিয়ার সামনে উন্নাসিক ভাবে বলেন, বিডিআর নামটি নিতে ঘৃণা হয়, এদের পোষাকে রক্তের দাগ লেগে আছে। আবার অন্যদিকে বিগত ইদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ঈদকার্ডে নিজেকে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ-এর পরিচালক হিসেবে লিখেন। এটা নিয়ে সব সম্ভবের দেশে ক্ষমতাসীন দলের কেউ কেউ একটু উচ্চ বাচ্য করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যথাসময়ে পরিস্থিতি নিজ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন, তার নিজস্ব কায়দায় নিশ্চুপ নিবরে। অর্থাৎ কোড অব কন্ডাক্ট ভঙ্গ করেও, মিলিটারী রুল ভেঙ্গে অপরাধী হন না বিডিআর ডিজি। পার পেয়ে যান অদৃশ্য শক্তির ইশারায়। সৎ ও দক্ষ কয়েকজন অফিসার সেনাবাহিনীর চাকুরী হারান কোন কারণ দর্শানো ছাড়াই। এহেন একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির অধীনে ন্যায় বিচার যে পাওয়া যাবে তার গ্যারান্টি আমরা দিতে পারি না। যিনি একটি বাহিনীর প্রধান হয়ে সেই বাহিনীর পোষাক পড়েন না, গোটা বাহিনীকে যিনি ভিলেন আখ্যায়িত করেন তিনি বিচারের নামে যে প্রহসন করবেন না তা কিভাবে বিশ্বাস করবো?

    আমাদের মনে রাখতে হবে, অভিযুক্ত বেশীরভাগ বিডিআর জওয়ানই একটা পরিস্থিতির স্বীকার। তারা চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করেন, যদিও তা গ্রহণ যোগ্য নয়। তারপরও সময় ক্ষেপন ও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ইত্যাদি কারণে কিছু কিছু সদস্য বেপরোয়া হয়ে উঠে। যাদের বিচার অবশ্যই করা উচিত। নেপথ্যে যারা ছিল তাদের বিচার হয়তো এই সরকার করতে পারবে না। আমরা বিশ্বাস করি কাদের প্ররোচনায় এবং সহযোগিতায় এটা করা হয়েছিল সরকার তা নির্দিষ্ট করেই জানে। তারপরও তারা সেটার উদঘাটন করছে না। বিচার করছে সাধারণ সিপাহীদের-দীর্ঘদিন পরিবার পরিজনহীন যারা কারান্তরালে অবস্থান করছে তাদের।

    এই বিচার করার আগে আমাদের কয়েকটি বিষয়ের প্রতি নজর রাখতে হবে। গণহারে জেল জরিমানা ও শাস্তি স্বরূপ চাকুরীচ্যুতি, পেনশন না দেয়া ইত্যাদি করা হলে সমাজে একটি অস্থির অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। বিডিআর আইনে যাই থাকুক, বিচারকের প্রজ্ঞা আর মানবিকতা যদি না থাকে তবে পেনশন বিহীন চাকুরীচ্যুতি ঘটলে বিশাল সংখ্যক জওয়ান হতাশায় ডুবে সমাজ বিরোধী কাজে অংশ নিতে পারে। বিষয়টি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয় আশংকাজনক পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সকলকে অপরাধ অনুযায়ী গণহারে খালি হাতে বিদায় না করে যাদের চাকুরী ১০ বছরের বেশী হয়েছে তাদের বিধি অনুযায়ী পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে বাহিনী হতে ফেরত পাঠানো যেতে পারে। এবং এটা করলে বিরাট সংখ্যক পরিবার উপকৃত হবে। দেশও আশংকা মুক্ত হতে পারবে। আমরা দাবি করবো বর্তমান ডিজির নেতৃত্বে যে বিচার কার্য চলছে তা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে করতে হবে। কোন ব্যক্তিকেই আক্রোশমুলক শাস্তি দেয়া হবে না এই গ্যারান্টি থাকতে হবে।

    জবাব দিন
      • সামিয়া (৯৯-০৫)

        প্রিয় একেআরএম সাহেব,
        জানিনা এই মন্তব্যটি আপনার চোখে পড়বে কিনা, তাও লিখছি। আপনার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি সহমত প্রকাশ করেও কিছু কিছু মত তুলে ধরছি।
        আপনি লিখেছেন, ২৫ তারিখের পর থেকে সবাই সেনাবাহিনীর প্রতি মায়া দেখাচ্ছে, কথাটা কিন্তু ঠিক না। অনেকে বেশ খুশিই হয়েছে, কেউ কেউ খুশি হয়ে এও বলেছে যে, ফাকিং আর্মি অফিসারেরা কিছুটা হলেও তাদের কৃতকর্মের রিওয়ার্ড পেয়েছে।
        আমার জানামতে, সেদিন দরবার হলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই ডাল ভাত অপারেশনে দূর্নীতির অভিযোগ আনা যায় না, কারণ কিছুদিন আগেই একটা বিশাল রদবদলের মাধ্যেমে তারা এখানে পোস্টেড হয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তাদেরকেও গণহত্যার শিকার হতে হয়েছে।
        পয়েন্টটা লক্ষ্য করুন, আপনার ভাই যেমন গণহত্যায় অংশগ্রহণ না করেও জেলে আছেন, সেই মানুষগুলোও তেমনি সারা দেশের সামনে দূর্নীতি না করেও দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হল।

        আপনি বলেছেন,

        আর্মি অফিসাররা কি নির্মম হতে পারে তা বিদ্রোহ পরবর্তী পিলখানায় অবস্থিত বিডিআরদের নিকট থেকে জানতে পেরেছি

        জওয়ানরা (যদিও আমি বিশ্বাস করিনা মূল হত্যাকান্ড জওয়ানরা করেছে) কি নির্মম হতে পারে তা সারা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। আর এতখানি নির্মমতার পর, তাদেরকে মানবিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে? ভাল ব্যবহার করে খারাপ মানুষ ভালো করা যায়, কিন্তু অপরাধী তার অপরাধ স্বীকার করেনা।

        বিচারের নামে যে প্রহসন চলছে

        আপনার সাথে শতভাগ সহমত। অপর পক্ষও কি চায় না, সঠিক বিচারটা সে পাক? যেসমস্ত পরিবারকে কোন জওয়ান সাহায্য করেছেন, সেসমস্ত পরিবার কিন্তু তাঁদের কথা ভোলেননি। তাঁদের সাক্ষ্যতেই এই জওয়ানেরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।

        নেপথ্যে যারা ছিল তাদের বিচার হয়তো এই সরকার করতে পারবে না। আমরা বিশ্বাস করি কাদের প্ররোচনায় এবং সহযোগিতায় এটা করা হয়েছিল সরকার তা নির্দিষ্ট করেই জানে

        আপনার সাথে হাজারভাগ সহমত। আমি অবশ্য সরকার, বা কোন নির্দিষ্ট পক্ষকে দোষারোপ করতে চাইনা। এখানে এই সরকার কেন, অন্য সরকার থাকলেও হয়তো একই ঘটনা ঘটতো। তবে নেপথ্যের নায়কদের বের করা গেলে আমাদের দেশটা অন্তত বেঁচে যেত। কেন ঘটল এত বড় ঘটনাটা, তাও যদি অন্তত আমরা বের করতে পারতাম।

        জবাব দিন
        • সানাউল্লাহ (৭৪ – ৮০), সামিয়া ও অন্যান্যদের উদ্দেশ্যে বলছি-
          সেনাবাহিনীর প্রতি আমার অশেষ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমার বড় ভাই সেনাবাহিনী থেকে রিটায়ার্ড করেছেন। তার সাথে আমি বগুড়ার মাঝিরা ক্যান্টনমেন্ট-এ অনেক দিন থেকে পড়াশোনা করেছি। ক্যান্ট পাবলিক স্কুলে। সে যাই হোক, তাদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই।

          আমার ভাই, বিকালে জেনেছেন এবং তিনি দরবার হল থেকে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দুরে দায়িত্ব পালন করছিলেন, (যতদুর জানি দরবারে আগত অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করার দায়িত্বে) সেক্ষেত্রে তিনি কোনক্রমেই সব জানতে পারেন নি এবং পরে অনেকটা জেনেছেন। শেষ রাতে ৪টা দিকে আমাকে ফোন করে কাঁদছিলেন এবং বলেছিলেন এই পৈচাশিকতা ক্ষমার অযোগ্য, বিডিআর জওয়ানরা এতো নির্মম হতে পারে তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এবং বার বার বলছিলেন এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া দরকার। ঘটনার সাথে তার দুরতম সম্পর্কও ছিল না বলে তিনি বার বার বলেছেন। আমি জানি আপনারা তা বিশ্বাস করতে চাইবেন না। এই নির্মমতার পরে আত্নপক্ষ সমর্থন করা আমার পক্ষে সম্ভবও নয়। কিন্তু মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমার ভাই সম্পূর্ণ নিরপরাধ। দোষ করলে তিনি একটিবার অন্তত আমাকে বলতেন। পেনশনে আসার আগ মূহুর্তে কোন বিডিআর সৈনিক তার চাকুরী জীবনের সব অর্জন শেষ করেত পারেন না একথা তিনি বলেছিলেন এবং আরও বলেছিলেন, বিদ্রোহ করার শাস্তি আমি জানি, তীরে এসে তরী ডোবানোর মতো বোকামী আমি করবো না।

          দেশপ্রেমিক এই সেনা অফিসারদের হত্যা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়, সেটা আমার ভাই করলেও মেনে নিতাম না, সে সৎ সাহস আমার আছে এবং আমি এখনও এতোটা অমানুষ হয়ে যাই নি। হায়দার হোসেনের সেই ভিডিও গানটি দেখলে এখনো আমার অশ্রুপাত হয়। নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না।

          আপনারা দোয়া করবেন ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনা আর না ঘটে, শহীদের আত্না যেন চিরশান্তিতে থাকে এবং নিরপরাধরা যেন ন্যায় বিচার পায়। আমি এদেশের সন্তান, সাংবিধানিকভাবে ন্যায় বিচার পাওয়া আমার ও আমার পরিবারের অধিকার। আর্মি-বিডিআর এদেশের মানুষ, তারা প্রতিপক্ষ নয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।
          আমার মন্তব্যে কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমাপ্রার্থী।

          জবাব দিন
  10. বিডিআরের সেই দিনগুলো কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। হতভাগ্য অনেক পরিবারের সাথে যোগাযোগ ছিল সেইদিনগুলোতে এবং তার পরের কয়েকটা মাস। সবই প্রতিবেদন আর সাংবাদিকতার স্বার্থে। কিন্তু কই এরপর তো আর খোঁজ নেইনি আমি! নিজের উপর মাঝে মাঝে তাই ঘিন্না হয়। আমরা কখনই একাত্তুরের মুক্তিযোদ্ধাদের মতো নি:স্বার্থ হতে পারবো না। সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই.......

    জবাব দিন
    • প্রেরণা (অতিথি)

      akrm সাহেব, আমি প্রায়ই আমার হাসব্যান্ডের সাথে থাকার সময়গুলোর কথা এখানে বলে থাকি। আপনি হয়তো জানেন না আমার সন্তানগুলো সহকারে আমি পিলখানার কোয়াটার গার্ডে ছিলাম। বাসা থেকে নিয়ে যাবার সময় জওয়ানরা আমাকে গলায় গুলি করে যা পাশ দিয়ে চলে যায়। আমাকে আর বাচ্চাদেরকে অনেক মারধর করে। আমি দুই দিন ধরে পানি চেয়েছি খাবার জন্য। বিভিন্নজন আমাকে প্রতিবারই থুথু দিয়ে পানি দেয়। কোন কোন ভাবীদেরকে বুট পালিশ করতে দেয়া হয়। আমি অস্ত্র হাতে সবাইকে দেখেছি। যদি এমনও হয়ে থাকে যে কেউ কেউ ভয়ে অস্ত্র নিয়েছে আসলে সে ছিল নির্দোষ। তখন আমি বলব যে, কয়েকজন মিলেও কি কোনো ভাল কিছু আমাদের দিয়েছে? আপনার আত্নীয় যদি নির্দোষ হয়ে থাকে তাহলে কখনোই সে টরচার্ড হবে না। প্রত্যেক দোষীদেরকে আটকানো হচ্ছে। প্রত্যেকে আইডেন্টটিফাইড হয়েছে। আপনার লোক যদি নিরাপরাধ হয়ে থাকে প্রমাণ করতে বলেন, প্রমাণিত হলে অযথা অত্যাচারের জন্য অবশ্যই অত্যাচারিকে শাস্তি পেতে হবে। তবে সেখানকার সকলেই খুনি। আপনি যাই বলেন না কেন। কি খারাপ যে তারা সবাই ছিল তা এক্সপ্লেন করার মত সাধ্য কারো নাই।

      জবাব দিন
  11. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    প্রিয় এ কে আর এম সাহেব,
    সামিয়া এবং প্রেরনা ভাবীর কমেন্ট ২টা মন দিয়ে পড়বেন।আর আর্মি অফিসারদের অত্যাচারের কথা বললেন?হা হা হা হা......।।
    আপনার ভাই আটকা আছে তাতেই দেখেন আপনার কত কষ্ট লাগছে।লাগাটাই স্বাভাবিক।আর জ়াদের ৫৭ জন ভাইকে নিরস্ত্র মেরে ফেলেছে,ভাবিদের ঐ ভাবে নির্জ়াতন করেছে,তাদের কে কি করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?উত্ত্রের অপেক্ষায় রইলাম


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন
  12. http://prothom-aloblog.com/users/base/asmarshad/119

    লজ্জিত, বিমর্ষ, অপমানের ক্ষোভে রাঙানো পঁচিশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি? আজি রক্ত কমলে গাঁথা মাল্যখানি দেব তাঁদেরই গলে। বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।

    জবাব দিন
  13. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    অক্ষমতার জ্বালা বুকে পুষে নিয়ে কাপুরুষের মত আজো বেঁচে আছি...
    ঘৃণা হয় নিজের উপরে...

    জানিনা কোনদিন ক্ষমা পাবো কিনা...। অপেক্ষা করছি, কবে আমার পালা আসবে...

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রেজওয়ান (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।