শান্তির মা বাড়ি ফিরে গেলেন

শান্তির মা এই বাড়ি ছেড়ে গেছেন। দু’দুটো বছর আদরে-শাসনে বাড়ির সবাইকে আগলে রেখেছিলেন তিনি। পানি-বিদ্যুৎ যেমন, না থাকলে চলে না; শান্তির মা ছিলেন তেমনি- এই বাড়ির হৃদপিন্ড। গোটা পরিবারকে সচল রেখেছিলেন তিনি।

বাড়িতে তখন একজন কাজের লোকের ভীষণ প্রয়োজন। সকালের নাস্তা ঠিকমতো হয় না, রান্নার লোক নেই। ব্যবহার করা পেটিকোট, শাড়ি, ব্লাউজ থেকে শুরু করে বিছানার চাদর, আন্ডারওয়্যারের স্তুপ জমেছে দিনের পর দিনে। ধোবে কে? ঘরের মেঝে আর দেয়াল-ছাদের কোনায় কোনায় ঝুল-ময়লা জমেছে- ঝাড় দেয়ার লোক চাই।

খোঁজ খোঁজ চারিদিকে। শাহানার মাকে ডেকে আনে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। কিন্তু বড় ভাইয়ের স্ত্রীর পছন্দ নয় তাকে। রহিমের বউ নিজে এসে হাজির হলো। বড় ভাইয়ের মনে হলো চলবে, ভেটো দিল ছোট বউ। এভাবেই লোকের পর লোক আসছিল, কিন্তু টিকছিল না কেউ। সবার মন জয় করা তো সহজ কাজ নয়। আবার লোক না হলেও চলে না। বাসার নিয়ম-শৃঙ্খলা একরকম ভেঙ্গে পরে। সবাই সবাইকে দোষে। ছেলেদের বউরা পরস্পরের সঙ্গে চুলোচুলিতে নামার প্রস্তুতি নেয়। ছেলেরা লাঠি ঝোগাড় করে ভাইয়ের মাথা ফাটাবে বলে।

এমন এক সময় বাসার কলবেলটা ঝন ঝনাৎ করে আওয়াজ তোলে। দরজার ওপর হুমড়ি খেয়ে পরে আন্ডা-বাচ্চা থেকে সবাই। দরজা খুলে তো অবাক! আরে শান্তির মা যে? সবাই সরে গিয়ে জায়গা করে দেয়। ঘরে ঢুকে শান্তির মা। দৌঁড়ে গিয়ে সোফার উপর থেকে নোংরা খাবারের প্লেটটা সরিয়ে নেয় ছোট বউ। বলে, ‘বস, বস শান্তির মা।’ বড় বউ ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা পানি নিয়ে আসে, জানতে চায়, `কি মনে করে শান্তির মা?’

হাত নেড়ে সবাইকে চুপ থাকতে বলে শান্তির মা। একটু দম নেয়। বলে, ‘খাড়ান এট্টু পানিটা খাইয়া লই। সবই কইতাছি।’

পানিটা একটানে শেষ করে শান্তির মা বলে, ‘আমাগো বস্তির ঘর থিকা আপনাগো ঝগড়াঝাটি শুনতাছি কয়দিন ধইরা। আইজকা দেখলাম আপনাগো বাড়িত লাঠিসোটা ঢুকতাছে। পাড়ার মস্তানগুলাও তৈরি হইতাছে। লড়াই হইবো।’

‘কেন? পিডাপিডি করবেন কেন আপনেরা? শাহানার মা আর রহিমের বউ কইলো আপনাগো বাড়িত কামের মানুষ নাই। একজনরে এক বউ ডাইক্যা আনলে আরেক বউ না কইরা দেন। বহুত ব্চ্ছর ধইরা আপনাগো পাশের বস্তিতে থাকি। মনে করলাম আমার চোখের সামনে আপনারা ফাটাফাটি কইরা মরবেন, আর আমি চাইয়া চাইয়া দেখমু এইডা কেমনে অয়? হের লাইগ্যা আমি আইছি। আইজ থাইক্যা এই বাড়িতে আমি কাম করমু।’

শান্তির মায়ের শেষ কথা শুনে সবাই নড়েচড়ে বসে। বড় বউ বলে, ‘না এইটা ঠিক না। কেউ একজন এসে বললো আজ থেকে আমি এই বাসায় কাজ করবো, আর তাতেই হয়ে গেল? কেন তুমি আমাদের বাসায় কাজ করবে?’

কিন্তু ছোট বউয়ের পছন্দ হলো না বড় বউয়ের কথা। সে বললো, ‘শান্তির মা, তুমি আজ থেকে এই বাড়িতে কাজ করবে। দেখি কে কি বলে।’

বড় বউয়ের স্বামী এবার ছোট বউয়ের পক্ষ নিল। ছোট বউয়ের স্বামী একটা আধোয়া কুঁচকানো শার্ট গায়ে দিয়ে গজগজ করতে করতে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। আর বাচ্চারা হইচই করবে কি, এই নাটকে রীতিমতো হতবাক! ওদের আর দোষ কি? কয়দিন ধরে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া নাই। ওদের মায়েরা-বাবারা পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত! এইরকম সময় খাবারের কথা বলা যায়?

তো শান্তির মা বহাল হয়ে গেল বাসার কাজে। সবাই যে সেটা খুশি মনে মেনে নিয়েছে এমন নয়। বড় বউ তো কয়েকবার হুমকি দিয়েছে, পাড়ার মস্তানদের ডেকে এনে শান্তির মাকে ঘরছাড়া করবে। কিন্তু ছোট বউ বলে রেখেছে, শান্তির মাকে তাড়ালে সেও দেখে নেবে কতো ধানে কতো চাল! উল্টো বড় বউকে বাড়িছাড়া করার হুমকি দিয়েছে সে।

শান্তির মাও কম যায় না। বস্তিতে তাকেও রাজনীতি করে থাকতে হয়। নইলে আজ তাকে একজন উচ্ছেদ করে তো কাল আরেকজন। দুই বউকে যার যার ঘরে আটকে রেখে নিশ্চিন্তে কাজ করে যায় শান্তির মা। একচুলায় রান্না করে বড় বউ আর ছোট বউয়ের ঘরে খাবার পাঠায়। দুই বউ পরস্পরের গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে সেই খাবার খায়!

খবর নিয়ে জানা গেল, যেসব বাসায় এরকম লাগালাগি আছে সেখানেই নিজ দায়িত্বে কাজ নেয় শান্তির মা। এটা তার বাতিকে পরিণত হয়েছে। পরের ভালো করার চেষ্টা আর কি! শেষ পর্যন্ত শান্তি কতোটা আসে সেটা বলা মুশকিল।

পরের বাসার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে শান্তির মা। ঘরের কাজ শেষ করে পাড়ার উকিল-মোক্তার, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক-পুলিশের কাছে দৌঁড়ায় সে। নানা শলা-পরামর্শ করে কি করে দুই বউয়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করা যায়। নানাজনে নানা বুদ্ধি দেয়। কেউ বলে মামলা কইরা দাও। অন্যরা বলে চুক্তি করাও। একজন বলে, ‘আরে এক বউরে বাপের বাড়ি পাঠাইয়া দিলেই তো সমস্যা শেষ। তুমি এইডা নিয়া বেশি ভাইব্যোনা তো।’ আরেকজন বলে, ‘দুইজনরেই বাড়ি থাইক্যা বাইর কইরা দাও। তাইলেই শান্তি আইবো।’

নানা জনের নানা কথা শুনে অকুলে পড়ে যায় শান্তির মা! তাহলে কি তাকে সারাজীবন এই বাড়িতেই থাকতে হবে? দুই বউয়ের গালিগালাজ শুনতে শুনতে কানের পোকা পর্যন্ত বের হয়ে যায়! এইটা কোনো জীবন হলো?

এভাবে একবছর চলে যায়। আন্ডা-বাচ্চাগুলোর দিন ভালোই কাটছে। সময়মতো খাবার পায়। শুকনো কাপড় পড়ে। নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে। দুই বউয়ের স্বামীরাও এই সময়ে বেশ আরামে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। শান্তির মাকে কোনোকিছু বলতে হয়না। চাওয়ার আগেই চা-কফি হাজির। পাট ভাঙ্গা কাপড়-চোপড় পড়ে। সময়মতো অফিসে-ব্যবসায় যায়।

একদিন শান্তির মা বাসার সবাইকে ড্রইংরুমে ডাকে। জরুরি সভা বলে কথা। শান্তির মার জরুরি তলবে দুই বউ ভ্রু কুচকায়। আবার কি ফন্দি এটেছে শান্তির মা কে জানে?

শান্তির মা বলে, ‘সবাই শুনেন। এক বচ্ছর হইয়া গেছে আমি এই বাড়িত আইছি। আমি আর বেশিদিন এইহানে থাকতে পারমু না। ঠিক আর এক বচ্ছর, মাইনে আগামী পুষ (পৌষ) মাসে আমি যামুগা। আমি এই বয়সে কই নিজের পোলাপাইন, নাতি-নাতকুরের লগে সময় কাটামু, তা না আপনেগো কাম করতে করতে জান শ্যাষ। অনেক হইছে, নিজেগো ঘর এইবার নিজেরা ঠিক করেন।’

বড় স্বামী যেন আঁতকে ওঠেন শান্তির মার ঘোষণায়। একরকম চেঁচিয়ে ওঠেন। ‘এটা কি বলো শান্তির মা? তুমি কেন যাবা? তুমারে কে কি বলছে আমারে বলো। আমি এইডার শেষ দেইখ্যা ছাড়বো।’

‘ নারে ভাই, আমারে কেউ কিছু কয় নাই। আমার তো বয়স হইছে। এতো কাম কি আমি করতে পারি?’

ছোট স্বামী তো শান্তির মার কথা শুনতে নারাজ। সে বলে, ‘তুমি যাই কও শান্তির মা, এই বাড়ি ছাইড়া কুথাও যাইতে পারবা না তুমি। বিয়ার পর গত দশ বছরে খালি অশান্তি! সুখ কুনুদিন পাই নাই। কিন্তু এই একবছর বাড়িতে অনশন নাই, ধর্মঘট নাই, কান্নাকাটি-ঝগড়াঝাটি নাই। সময়মতো সব পাই। পোলাপাইন খুশিতে আছে। আর কি চাই।’

বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে পরে ছোট স্বামী। বলে, ‘অন্যের বাড়িতে কাম নিবা? বেশি টাকা বেতন দিব? কও কত টাকা বেতন চাও, তুমারে কুথাও যাইতে দিমু না।’

শান্তির মায়ের কথায় বড় বউ খুশি হলেও নিজের স্বামী আর দেবরের আবদারে রীতিমতো বিরক্ত। ‘ক্যান তুমাদের সমস্যা কি? শান্তির মা এখন ভালয় ভালয় যাইতে চাইতাছে- তাতে তুমাদের আপত্তির কি আছে? শুন শান্তির মা, ভালো কথা কইছো, এইবার জলদি ভাগো, এক্ষুনি। যথেষ্ট হইছে। আর না গেলে কেমনে তুমারে ভাগাইতে হইবো সেইডা আমি জানি।’

একেবারে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠলো ছোট বউ। ‘ক্যান, ক্যান যাইবো শান্তির মা? ও বুঝছি উনি তাইলে তলে তলে শান্তির মারে ভাগানোর চেষ্টা করতাছেন। কও শান্তির মা, তুমারে কি বড় বউ কিছু কইছে?’

শান্তির মা এবার ধমক দিয়েই ওঠে। বলে, ‘শুনেন আমার জইন্য কারো দরদও দেখানো লাগবো না; আবার ভয়ও দেখানো যাইবো না। যখন যাওয়ার আমি ঠিকই চইলা যামু। কেউ ঠেকাইতেও পারবো না।’

রীতিমতো ভাষণ দেওয়ার ভঙ্গীতে বলে চলে শান্তির মা। ‘আমি কইছি পুষ মাসে যামু। হের একদিন আগে বা পরে যামু না। কিন্তু আমি যাওয়ার আগে একটা বিষয় আপনাগো ঠিক করতে হইবো- সংসারটা এরপর চালাবো কেডা?’

ব্যাপারটা কি? শান্তির মা দেখি এখন এই সংসারের নিজস্ব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা শুরু করছে। বউরা, তাদের স্বামীরা এমনকি আন্ডা-বাচ্চাগুলো মুখ তখন কথার অভাবে শুকিয়ে যায়!

বড় বউ বলে, ‘আমাদের সংসার আমরা চালামু। সেটা নিয়ে তুমার সাথে কথা বলবো ক্যান?’

ছোট বউ আর কোনো বিষয়ে বড় বউয়ের সঙ্গে একমত না হলেও এবার বলে ওঠে, ‘ঠিকই তো। শান্তির মা এইডা তুমার বাড়াবাড়ি।’

নির্বিকার শান্তির মা। দুই বউয়ের কথায় গুরুত্ব দেয় না। ‘দেহেন, আপনেগোর এইসব ভুজুং ভাজুং বহুত দেখছি। আপনেগোর সংসার নিয়ে কথা কইতে তো আমি চাই নাই। আপনেরাই এমুন অবস্থা করছেন, লুক হাসাইছেন, পাড়া শুদ্ধা লুক জানে আপনেগোর কীর্তিকলাপ। সারাক্ষণ ঝগড়াঝাটি, পিডাপিডি। এইভাবে চলতে পারে?’

একটু দম নেয় শান্তির মা। বলে, ‘আমি তো কইছিই আমি আর একবছর থাকমু। এর মধ্যে আপনারা ঠিক কইরা নেন কেমনে ঠিকমতো সংসার চলবো। বাচ্চারা ঠিকমতো খাওন পাইবো। রান্না করবো কেডা? বাচ্চাগুলারে গোছল করাইবো কে? ঘুর মুছবো কোনজন? কাপড়-চুপড়ইবা ধুইবো কেডা?’

‘আপনারা নিজেরা এইডা ঠিক করতে না পারলে, আমি নিয়ম বানাইয়া দিমু। মানেন না মানেন আপনেগো ব্যাপার। কিন্তু পাশে বস্তিতে বইয়া-শুইয়া আমি আপনেগো চিল্লাচিল্লি শুনতে পারুম না।’

বাড়ির সবার মাথায় এবার ঠিকঠাক ঢুকে যে, শান্তির মাকে আর রাখা যাবে না। তার কথায় আর হেরফের হবে না। এখন তাহলে বড় চিন্তা, শান্তির মা চলে গেলে সংসারটা কিভাবে চলবে? এতোদিনে তো বাসায় একটা শৃঙ্খলা চলে এসেছে। সময়মতো সবকিছু চলছে, ঘড়ি ধরেই চলছে।

শান্তির মায়ের ঘোষণার পর বাসার সবকিছু আগের মতো চলতে থাকলেও কোথাও যেন একটা ছন্দপতন বোঝা যায়। সময় যায়, সবাই খালি দিনক্ষণ গোনে। বড় বউ তার ঘরের দেয়ালে কয়লা দিয়ে দাগ কাটে আর প্রতিদিন সকালে চিৎকার করে জানান দেয়, ‘আর ৩৫৫ দিন’, ‘আর ৩০০ দিন’। বাচ্চাগুলো এই চিৎকার শুনে আর প্রতিদিন আরো চুপসে যায়, নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, শান্তির দিনগুলো কতো দ্রুত শেষ হয়ে আসছে!

দুই বউয়ের তো মুখ দেখাদেখি নেই। স্বামীরাও সকালে কাজে যায়, রাতে ফেরে। ভাবে যে কদিন শান্তির মা আছে, সুখটা উপভোগ করে নিই। সেই তো আবার অতীতে প্রত্যাবর্তন!

মাঝে-মধ্যে শান্তির মা জানান দেয়, ‘আপনেরা অহনো ঠিক করতে পারেন নাই, সংসার কেমনে চলবো। আপনেরা ঠিক করতে না পারলে আগন (অগ্রহায়ণ) মাসে কিন্তু আমি জানাইয়া দিমু কেমনে কি হইবো।’

বড় বউ বলে, ‘তুমার যাওয়া তুমি যাও। আমাগো সংসার কেমনে চলবো সেইটা আমরা ঠিক করমু। তুমার অত ভাবাভাবির কিছু নাই।’

এক পর্যায়ে ছোট বউ বলে, ‘এক কাজ করলেই তো হয়, আমরা নতুন লুক রাখমু। শান্তির মা যেই কাজ করে সেইটা আরেকজন করবো। এই তো?’

ছোট বউয়ের কথা শুনেই কিনা জানিনা, পরদিন থেকে বাসার সামনে রাজ্যের বস্তির নারীরা এসে লাইন দেয়। সবাই কাজ চায়। যদিও এরা সবাই এই বাসার বিস্তারিত জানে, তবু কেন এখানে কাজ করতে এতো আগ্রহ?

পাড়ার সাংবাদিকরা খোঁজখবর নিয়ে জানে, এমনকি এই বাসায় কাজ করার বিনিময়ে বেতনও চায় না কেউ কেউ। কারণ, দুই বউয়ের ঝগড়াঝাটিতে কেউই বাসার চাল-ডাল, নুন-চিনি, কাপড়-চোপড়, টাকা-পয়সাও গুছিয়ে রাখে না। এসব নিয়মিত হাতাতে পারলেই বেতনের চেয়ে বেশি আয়! দুই বউয়ের ভাই-দেবর-ননদরা আসে, এটা সেটা তুলে নিয়ে যায়। কদিন আগে এক ভিক্ষুক এসেছিল। শোনা যায়, এরপর থেকে বাসার টিভিটা গায়েব হয়ে গেছে। তো এমন বাড়িতে কাজ করবে না কি জজ-দারোগার বাড়িতে কাজ নেবে ঠিকে ঝিরা!

এভাবে চলতে থাকে, কিন্তু সমস্যা কোনো সমাধানের দিকে যায় না। দুই বউ একমত হয় না, আর বাসার ভবিষ্যতও ঝুলে থাকে। পাড়া-প্রতিবেশিরা খোঁজ-খবর নেয়, নানা প্রস্তাব দিয়ে সমঝোতার দূত পাঠায়। কিন্তু কিসের কি!

কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় দুই বউয়ের একজনও। শান্তির মার চলে যাওয়ার সময় এগিয়ে আসতে থাকে। বাসার আন্ডা-বাচ্চারাও দিন গোনা শুরু করে দেয়। আর ৩৩ দিন, ৩২ দিন…….

অবশেষে সম্ভাব্য বিদায়ের এক মাস বাকি থাকতে বাসার সবাইকে আবার জরুরি বৈঠকে ডাকে শান্তির মা। ড্রইং রুমে গোল হয়ে বসে সবাই। আশেপাশের বাসা-বাড়ি থেকেও পর্যবেক্ষকরা জানালা দিয়ে উঁকিঝুঁকি মারে। গলির রাস্তা জনসভার রূপ নেয়। যান নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগকে খবর পাঠায় পাড়ার আরেক বাসিন্দা পুলিশের ওসির বউ।

অপেক্ষার প্রহর শেষে ড্রইং রুমে রীতিমতো মার্চ করে ঢুকে দুই বউ। এসেই হাঁক দেয়, ‘কই শান্তির মা কই? আমাগোরে বসায়া রাখছে, আর হেরই খবর নাই।’ শান্তির মাও কিছুটা রহস্য পছন্দ করেন। ঘড়িটা যখন দুপুর বারোটার সময় জানান দেয়, তখনি আসেন শান্তির মা।

একসঙ্গে অনেকগুলো কণ্ঠ হৈচৈ করে ওঠলে বা হাত তুলে সবাইকে চুপ করার সংকেত দেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে সব চুপ। কবরের নিস্তব্ধতা নেমে আসে ঘরে। বাড়ির বাইরে অপেক্ষমানরা ঠোটে আঙ্গুল দিয়ে সসসসসস….. শব্দ তোলে। ঘরে-বাইরে তখন সবাই চুপ। কোথাও কোনো কোলের শিশুও কাঁদছে না। গলির বিদ্যুতের লাইনে সার বেধে বসে থাকা কাকগুলোও বিষ্ময়ে শব্দ হারায়।

শান্তির মা বলেন, ‘আপনেরা আমার কথা রাখেন নাই। আমি বলছিলাম পুষ মাসে জামুগা। হের আগেই আপনেরা নিজেগো রাস্তা ঠিক করেন। কিন্তু হেইডা অহনও ঠিক অয় নাই।’

‘আমি তো আর বেশি দিন নাই। আপনেরা যহন নিজেরা নিজেগো রাস্তা ঠিক করতে পারলেন না, তাইলে আমি আমার কথা কই। আমি কয়েকটা পরস্তাব পাইছি, অ্যাকে অ্যাকে কই। আপনেরা যে কুনু একটা বাইচ্ছ্যা লইতে পারেন।’

‘এক লম্বর, কেউ কেউ কয়, দুই বউর কাউরে এই বাড়িত আর দরকার নাই। দুইজনই নিজেগো বাপের বাড়ি যাইতে পারেন। তাইলে বাড়িত শান্তি আইবো।

দুই নম্বর, দুই বউ ঠ্যাংঙ্গের উপর ঠ্যাংগ তুইল্যা বাসাত বইয়া থাকতে পারেন। কেউ হেরারে নিয়া কুনু কথা কইবো না। আরেকজন শান্তির মা আইস্যা এ বাসায় কাম নিব। হের কথামতো চলবো সংসার।

পাড়া পরতেবেশিরা ভুট দিয়া ঠিক করবো কেডা এই বাসা চালাইবো। এইডা অহলো তিন নম্বর পরস্তাব।’ শান্তির মা বলে চলেন।

‘আর চাইর নম্বর পরস্তাবটা অইলো আমার। পুষ মাসের ২৩ তারিখে পাড়ায় একটা বড় খানা অইবো। হেই খানা রানবো দুই বউ। ঘরের মানুষ, পাড়া-পরতিবেশি হেই খানা খাইয়া কইবো কেডা ভালো রান্ধে। হেরাই ঠিক করবো কেডা চালাইবো সংসার।’

বড় খানার প্রস্তাব শুনে শান্তির মার পক্ষে শ্লোগান ওঠে গলিতে। করতালির পর করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো পাড়া। সেই সশব্দ হুল্লরে বিদ্যুতের তারে বসে থাকা কাকগুলো কা কা চিৎকার তুলে এলোমেলোভাবে আকাশে উড়ে যায়। উৎসাহী তরুন-যুবকরা দ্রুত কাগজ জোগাড় করে পোস্টার লিখতে বসে যায়।

পাড়া-প্রতিবেশি আনন্দে মেতে ওঠে। দিনের পর দিন বড় খানার মেন্যু নিয়ে পাড়ায় চলে উৎসাহী জল্পনা। কাচ্চি আর মোরগ পোলাও কোনটার কেমন স্বাদ তা নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলে চলে বিশেষজ্ঞ আলোচনা। আবুলের বউ শেষ কবে ইলিশ পোলাও খেয়েছিল সে গল্প শুনতে রীতিমতো ভিড় জমে যায়।

শান্তির মার প্রস্তাব শোনার পর থেকে দুই বউয়ের চোখে-মুখে অমাবশ্যা নেমে আসে। একইরকম উৎকণ্ঠা দেখা যায় তাদের দুই স্বামী ও সন্তানদের চেহারায়। কারণ কি? কারণ আর কিছু না, বড় বউ চুলায় চাল বসালে ভাত খুঁজে পাওয়া যায় না! ভাত আর মারের মধ্যে এমন বন্ধুত্ব কেউ কখনো দেখেনি। আর ছোট বউ ডিম সিদ্ধ করলে সেটা দিয়ে ক্রিকেট খেলা চললেও দাঁত অক্ষত থাকে না। এই দুই বউ এরা রাঁধবে বড় খানা! আর তাদের জন্য কিনা শান্তির মা ছুড়ে দিয়েছে রান্নার প্রতিযোগিতা?

অবশেষে সেই দিনটি চলে আসে, পৌষ মাসের ২৩ তারিখ। রান্না ঘরে বসে দুই বউ হাত-পা ছড়িয়ে বসে মরন কান্না জুড়েছে। কিছুটা মায়াই জন্মে যায় শান্তির মার। বাড়ির বাইরে তখন থালা-বাটি নিয়ে রাজ্যের নারী-পুরুষ, শিশুরা খাবারের জন্য বসে গেছে। কেউ কেউ বাতাসে নাক টেনে ঘ্রাণে বোঝার চেষ্টা করছে রান্নাটা হচ্ছে কি!

শান্তির মা ব্যস্ত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত চুলায় চড়ে রান্না। হাড়ির পর হাড়ি শেষ হতে থাকে মুহূর্তেই। দুই বউও ক্ষিদের জ্বালায় খাবার নিয়ে বসে।

বড় খানা ভালয় ভালয় শেষ হয়। শান্ত হয় পাড়া-প্রতিবেশি। পেট পুড়ে খাওয়া-দাওয়া হয়েছে তাই শান্তি বাড়ির ভেতরেও। পান চিবাতে চিবাতে বড় ভাইয়ের একসময় মনে হয়, আরে শান্তির মা কোথায়! এ ঘর, সে ঘর খুঁজেও পায়না। ছোট ভাইকে সে খবর জানায় বড়। পুরো বাড়ি তল্লাশি শেষে তারা নিশ্চিন্ত হয়, শান্তির মা এই বাড়িতে নেই। তাহলে কোথায় গেল এই বুড়ো মানুষটা? আর তাদের বাড়ির ব্যাপারটাও তো সমাধান হলোনা!

খোঁজ খোঁজ, পুরো পাড়া জুড়েই তল্লাশি চলে। এমন সময় ‘পাইছি, পাইছি’ বলে চিৎকার করতে করতে দৌঁড়ে আসে রহিমের মা। কোথায় পেলে? ‘আরে শান্তির মা তো তার ঘরেই ঘুমাইতাছে।’ পাড়া শুদ্ধ মানুষ ভেঙ্গে পড়ে শান্তির মার বস্তির ঘরে। সবাই দেখে দুই কানে তুলা দিয়ে গভীর শান্তিতে ঘুমোচ্ছেন পরোপকারী এই বৃদ্ধা।

[গল্পটা লিখতে লিখতে দেরি হয়ে গেল। ফৌজদারহাটে থাকতে শেষ গল্প লিখেছিলাম। মাঝে-মধ্যে নানা রাজনৈতিক প্লট মাথায় চাপে। এক সময় হারিয়ে যায়। এই প্লটটাও অনেকদিন ধরে মাথায় ঘুরছিল। ১৪ ডিসেম্বর লেখাটা শুরু করেছিলাম। আজ কিছুক্ষণ আগে শেষ করলাম। আরো ঘষামাজা করতে হবে। ভাষায় বেশ সমস্যা আছে। ঠিক করে কোথাও ছাপতে দেবো ভাবছি। সিসিবির ব্লগারদের প্রতিক্রিয়াটা পেলে বোঝা যাবে আসলে এটা আদৌ গল্প হলো কিনা। সবার সৎ মন্তব্য চাইছি।]

৪,৪৩৩ বার দেখা হয়েছে

৫৮ টি মন্তব্য : “শান্তির মা বাড়ি ফিরে গেলেন”

    • দু’দুটো বছর আদরে-শাসনে বাড়ির সবাইকে আগলে রেখেছিলেন তিনি। পানি-বিদ্যুৎ যেমন, না থাকলে চলে না; শান্তির মা ছিলেন তেমনি- এই বাড়ির হৃদপিন্ড। গোটা পরিবারকে সচল রেখেছিলেন তিনি।

      তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু ২ বছর ছিলো। 😉
      এইটুকু hints দিলাম। এবার বাকিটা পর, আর গত ২ বছরের ঘটনার সাথে মিলা। তাইলেই বুঝবি আর মজাও পাবি। 😀

      জবাব দিন
        • স্ক্রিপ্টের জন্য যা ডিটেইলস দরকার তার চেয়ে বেশিই আছে।
          চিত্রনাট্য, সংলাপ লেখার উপর বাকি সাফল্য নির্ভর করছে।

          তবে আমাদের এখানে এই ধরনের প্লটে রুপকধর্মী টিভি নাটক করে মানুষকে আসল মেসেজ দেয়া যাবে না বলে আমার ধারনা। খুব সম্ভাবনা আছে গল্পের ভিতরের মেসেজ না পেয়ে উপরের বিনোদনটাকেই শুধু গ্রহন করার। মঞ্চে হলে খুব সহজেই করা যাবে বলে আমার ধারনা, (কারন মঞ্চের দর্শক অনেক বেশি ম্যাচিউরড।) 😀 😀 😀

          জবাব দিন
  1. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    সানাউল্লাহ ভাই, শেষে এসে তাড়াহূড়া করেছেন বলে মনে হল...কেন জানি মনে হচ্ছে আপনার আরও অনেক কিছু বলার ছিল... :-B
    (নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত... O:-) )


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  2. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের চমৎকার স্যাটায়ার ধর্মী রূপকায়ন :clap: :clap:
    গল্পটা ভালো লাগছে লাবলু ভাই।

    প্রায় সবকয়টি ঘটনা অনুঘটনা কাভার করাতে কিছুটা দীর্ঘ হয়েছে বটে , তবে ছাপার অক্ষরে পড়তে ততোটা দীর্ঘ মনে হবেনা বলেই বিশ্বাস করি। কয়েকটা রূপক বেশ ক্ষুরধার লেগেছে বস্ :boss: :thumbup:

    বস্তিতে তাকেও রাজনীতি করে থাকতে হয়। নইলে আজ তাকে একজন উচ্ছেদ করে তো কাল আরেকজন
    পরের বাসার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে শান্তির মা। ঘরের কাজ শেষ করে পাড়ার উকিল-মোক্তার, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক-পুলিশের কাছে দৌঁড়ায় সে। নানা শলা-পরামর্শ করে কি করে দুই বউয়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করা যায়। নানাজনে নানা বুদ্ধি দেয়। কেউ বলে মামলা কইরা দাও। অন্যরা বলে চুক্তি করাও। একজন বলে, ‘আরে এক বউরে বাপের বাড়ি পাঠাইয়া দিলেই তো সমস্যা শেষ। তুমি এইডা নিয়া বেশি ভাইব্যোনা তো।’ আরেকজন বলে, ‘দুইজনরেই বাড়ি থাইক্যা বাইর কইরা দাও। তাইলেই শান্তি আইবো।’

    সেইরকম :thumbup:

    তবে গল্পের শেষটাতো বেশ রহস্যময় লাগলো আমার কাছে ;;) ;;)

    কিছুটা অফ টপিক, এবারের না হয়ে গতবারের ঘরোয়া কাজের সহায়ক শান্তির মা হলে ব্যাপারটা বেশ মজাদার হতো 😀


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  3. সাইফ (৯৪-০০)

    লা ব লু ভাই,অসাধারন একটা পলিটিক্যাল স্যাটায়ার...............।তবে বস আমাগোরে আপনি বস্তিবাসি বানিয়ে দিলেন............এইডা ঠিক না............হা হা হা হা।
    রেজোয়ান,আবির তোরা হালা ক্যাডেট না শিবির!এত সুন্দর একটা স্যাটায়ার বস লিখল এত্ত ক ষ্ট কইরা আর তোরা হালায় বুঝলি না।
    লা ব্লু ভাই,যুদ্ধ অপরাধিগো লগে মাস্ফু সহ বেক্কের নাম ঢূকাইয়া দেন,
    মাস্ফু,তর নাম কইলাম কারন তুই না বুইঝ্যাই হুদাই কমেন্টস দিছস...টাণকী বাজি ছাড়,দেখবি মাথা কাজ করব............।হা হা হা
    লা ব লু ভাই............লা ব লু ভাই.....................। :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute: :salute:

    জবাব দিন
  4. রহমান (৯২-৯৮)

    সিসিবির ব্লগারদের প্রতিক্রিয়াটা পেলে বোঝা যাবে আসলে এটা আদৌ গল্প হলো কিনা। সবার সৎ মন্তব্য চাইছি।

    লাবলু ভাই,
    চমৎকার একটা রূপকধর্মী লেখা :thumbup: । আমার কাছে দারুন লেগেছে। প্রথম দিকে একটু লেংদী মনে হচ্ছিল, কিন্তু পড়তে পড়তে সয়ে গিয়েছে। কিন্তু আবার শেষের দিকে তাড়াহুড়ো করেছেন বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে। এই লেখাটার পেছনে আরেকটু সময় দিলে ফিনিশিংটা মনে হয় আরো সুন্দর ভাবে করতে পারবেন বলে আমার ধারণা। (সৎ মন্তব্য চাইলেন বলে আমার ব্যক্তগত মত দিলাম, যদিও আমি জানি আপনার লেখায় মন্তব্য করার বিন্দুমাত্র যোগ্যতা আমার নেই )

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      গল্পের শেষটা নিয়ে আপত্তি অনেকের। কিন্তু সমাপ্তিটা তো ভবিষ্যতের হাতে। সেটা তো অনিশ্চিতই। গল্পকার ভবিষ্যত নিয়েও লেখেন। কিন্তু এটাতো সেইরকম গল্প নয়। শান্তির মা তার কাজটা শেষ করেছে। এরপর শান্তি থাকবে কিনা কে জানে?


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  5. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    বস চোখ মুখ বুইজা, কোনো কমেন্ট না পইড়া কমেন্ট করছি। কারন গল্প শেষ করে যেটা লিখতে চাই প্রায়ই কমেন্ট পড়তে পড়তে সেটাই ভুলে যাই।

    ডিটেইলিং বেশি মনে হয়েছে। একটু কমাতে পারলে আরো আটসাট হত। আর ফিনিশিংটা মানে শান্তির মার অপশন গুলো থেকে শেষ পর্যন্ত আর একবার দেখবেন? আর একটু স্পষ্ট কি করা যায়?


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  6. ভাইয়া
    শেষের দুই প্যারা দুর্বল লেগেছে বাকি অংশের তুলনায়।
    আর স্যাটায়ার ভাবটা রেখেই পুরো গল্পটা আরো কাঁটছাট করলে আরো অনেক জমজমাট হবে। ফয়েজ ভাই যেমন বলেছে, কিছু ডিটেইলস অনেক বেশি হয়ে গেছে, ফলে রুপকটা বেশি স্পষ্ট হয়ে গেছে। 😀 😀 😀

    জবাব দিন
  7. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    শুরু করার পর আমি কয়েক প্যারা পর্যন্ত কিছু বুঝি নাই। ভাবছিলাম, এইসব কি অবাস্তব কথাবার্তা কইতাঝে সানাউল্লাহ ভাই। রূপকের ইঙ্গিতটা বোঝার পর খুব ভালো লেগেছে। খুব ভালো স্যাটায়ার। আরও গল্প চাই।
    কয়েকজন বেশী স্পষ্ট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন। আমারও অনেকটা সেরকম মনে হল। প্রথমে বেশ কিছুটুকে কোন ইঙ্গিত নেই। কিন্তু তারপর বেশী স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়া হইছে। যেমন রেডিও-টিভিতে আলোচনা অনুষ্ঠান বা পোস্টারিং এর বিষয়টা। অবশ্য আপনেই ভাল বুঝবেন এসব রাখা ঠিক হবে কি হবে না।

    জবাব দিন
  8. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    সানা ভাই, এবিসি'র আনুষ্ঠানিক সম্প্রচারের জন্য অভিনন্দন...!!! :clap: :salute:
    ইয়ে, পার্টি দিচ্ছেন কবে??? 😀


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রায়হান আবীর

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।