স্মৃতির ঝাঁপি : পঁচাত্তরের নৈরাজ্য এবং বঙ্গবন্ধু

প্রথম পর্ব ।। দ্বিতীয় পর্ব ।। তৃতীয় পর্ব ।। চতৃর্থ পর্ব

ফৌজদারহাটে গিয়ে আমি সারা দেশ-বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হলাম। বাসা থেকে আসা চিঠি আর মাসে একবার প্যারেন্টস ডে’র সুযোগে বাবা-মা-ভাই-বোন-স্বজনদের কারো কারো সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ ছাড়া বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের আর কোনো পথ নেই। এইসব যোগাযোগ নিয়ে যে ওই সময় খুব আগ্রহী ছিলাম এমনও নয়। আর ক্লাস সেভেনের ক্যাডেটের জন্য সংবাদপত্র পড়া তো ছিল হারাম! রিডিং রুমের ধারে-কাছেও যাওয়া যেত না। সিনিয়র সবাই পড়ার পর আমাদের জন্য সময়ও আর থাকতো না!

ছুটিতে বাসায় এলে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে সময় কেটে যেতো। খেলা আর আড্ডা। আর যেহেতু দুই-তিন মাস পরপর বাসায় আসতাম, তাই সব আদর যেন আমার জন্য উঠানো থাকতো। ফলে বাসার সমস্যা, অভাব-কষ্ট এগুলোও কিছুই টের পেতাম না। দুর্ভিক্ষের বছর ফৌজদারহাটে ঢুকেছি। কিন্তু কলেজে তো এর কোনো ছায়া পর্যন্ত নেই।

বরং পুরো সপ্তাহের মেনুতে নানা বৈচিত্র্য। আমাদের সময়ে মধ্যবিত্ত পরিবারে খাদ্যে বৈচিত্র্য থাকতো কম। বাসায় সকালে রুটি খেতাম। দুপুরে ভাত, মাছ, মাংস, তরি-তরকারি, রাতেও প্রায় তাই। আর ক্যাডেট কলেজে সকালে কোনোদিন আটার রুটি ছিল না। পাউরুটি, মাখন, জ্যাম-জেলি, ডিম কোনোদিন পোচ, কোনোদিন ওমলেট। পরটা, পরিজ (কলেজেই প্রথম খেয়েছি) দিতো কোনো কোনোদিন। সঙ্গে সব্জি, মাংস। দুপুরে ভাতের সঙ্গে কোনোদিন মাছ, কোনোদিন গরু, খাসি বা মুরগির মাংস, সব্জি, ভর্তা, ডাল। রাতে সপ্তাহে একদিন স্পেশাল ডিনার, একদিন ইংলিশ ডিনার, চাপাতি (আমার ছিল অসহ্য), ভাত সঙ্গে দুপুরের মতোই মাছ, মাংস ইত্যাদি। রাতে ডেজার্ট থাকতো সব সময়। কাস্টার্ড, পুডিং, জর্দা, ফ্রুট সালাদ ইত্যাদি থাকতো। সকালে-বিকালে নিয়ম করে দুধ, চা, কেক, বিস্কিট। নাহ্ খাবারের কথা লিখতে থাকলে স্মৃতি আমাকে মূল লাইন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে!

ক্লাস সেভেন থেকে এইটে উঠলাম। এই সময় মানে ‘৭৫ সালের শুরুতে বঙ্গবন্ধু তার ভাষায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে সব রাজনৈতিক দলের তৎপরতা বন্ধ করে দিয়ে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করলেন। গঠিত হলো বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ- বাকশাল। চারটা পত্রিকা ছাড়া বাকি সব বন্ধ করে দেওয়া হলো। অবশ্য পরে জেনেছি বন্ধ পত্রিকাগুলোর প্রায় সব সাংবাদিককে তাদের পছন্দ মতো জায়গায় চাকরি দেওয়া হয়েছিল। সেসব রাজনীতির উত্তাপ আমার গায়ে লাগে না। রাজনীতি তখন বুঝিই না। ছুটিতে এলে কলোনীর দেয়ালে জাসদ, পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির নামে প্রতিবাদী চিকা দেখি। বাসায়ও এ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা বা কথা তেমন শুনিনি। সরকার নিয়ে ক্ষোভ ছিল। অভাব-অনটন নিয়ে অভিযোগ ছিল।

‘৭৫ সালের শুরুতেই সর্বহারা পার্টির নেতা সিরাজ শিকদার ধরা পড়লেন। জনযুদ্ধের ডাক দিয়ে তিনি তার দল নিয়ে সরকারের সঙ্গে ১৯৭৩ সাল থেকেই অঘোষিত যুদ্ধ করে আসছিলেন। ব্যাংক লুট, থানায় হামলা, অস্ত্র লুট, পুলিশ বা গ্রামের জোতদার হত্যায় তাদের সশস্ত্র তৎপরতা সরকারকে বেশ বিপাকেই ফেলেছিল। গ্রেপ্তার হওয়া সিরাজ শিকদারকে দোসরা জানুয়ারি পুলিশ গুলি করে মেরে বললো, পালাতে গিয়ে গুলি খেয়ে তিনি মারা গেছেন। বঙ্গবন্ধুও জাতীয় সংসদে গিয়ে এ নিয়ে সদম্ভ উচ্চারণ করেছিলেন। আজো তার এই উক্তি নিয়ে বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর কঠোর সমালোচনা করে।

সিরাজ শিকদারের দল ও তার প্রতি আমার মোহ তৈরি হয়েছিল আরো পরে। কলেজ থেকে বেরুনোর পর ‘৮০-৮১ সালে।

সময়টা ঠিক মনে নেই। ‘৭৫-এর জুলাই বা আগস্টে আমাদের জুনিয়র ২২তম ব্যাচ কলেজে ঢুকলো। সদ্য সিনিয়র হওয়া ক্লাস এইট মানেটা কি সেটা তখন মাত্র উপভোগ করছি। ১৫ আগস্ট আমরা অন্য আর দশটা দিনের মতোই ক্লাস করছিলাম। ক্লাসে এসে প্রথম কোন শিক্ষক এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার কথা জানিয়েছিলেন সেটা মনে নেই। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নাকি ওয়াহাবুজ্জামান অথবা জাকেরউল্লাহ স্যার (ভাই, ফৌজদারহাটের প্রথম ব্যাচের ছাত্র)? শুনে বিষ্মিত হয়েছিলাম মনে পড়ে। মন খারাপ হয়েছিল। দেশে তখন ক্যু-পাল্টা-ক্যু, হত্যা, ক্ষমতার পালাবদলের নামে যে চরম অস্থিরতা চলছিল তার কোনো প্রভাবই ক্যাডেট কলেজে পরেনি।

একটা রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়, মুক্তিসংগ্রামে বিজয় ছিনিয়ে আনে- কিন্তু মাত্র দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এতোটা অজনপ্রিয় হয় কি করে? বঙ্গবন্ধুর আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তায় ঘুণ ধরলো কখন? আমার কাছে আজো এটা একটা বড় বিষ্ময়। সরকার পরিচালনায় আওয়ামী লীগের অদক্ষতা, সদ্য স্বাধীন দেশ নিয়ে মানুষের আকাঙ্খা পুরণে ভীষণরকম ব্যর্থতা, দুর্নীতি, মিডিয়ার বিরোধীতার চেয়েও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন কি এখানে মূল ভূমিকা রেখেছে? তাই বা বলি কি করে? সপরিবারে বঙ্গবন্ধু, তার স্বজনদের নৃশংস হত্যাকান্ড, কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যার কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল দেশে? মানুষজন স্বতস্ফূর্তভাবে রাজপথে কেন নামেনি? পুরো দেশ বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে যায়নি। আবার পক্ষেও দাঁড়ায়নি।

স্কুলে পড়া “দ্য প্যাট্রিয়ট” কবিতাটি মনে পড়ে। যতোবার আগস্ট মাস আসে যতোবার বঙ্গবন্ধুর কথা মনে হয়, ততোবারই এই কবিতাটা, কবিতার কথাগুলো আমার মস্তিস্কে হানা দেয়। নেতা ফুলের বৃস্টিতে ভিজে রাজপথ অতিক্রম করে শহরে ঢুকছেন। তারপর বেরিয়ে গেলেন ধিক্কার নিয়ে! কেন?

The Patriot
Author: Robert Browning

I
It was roses, roses, all the way,
With myrtle mixed in my path like mad:
The house-roofs seemed to heave and sway,
The church-spires flamed, such flags they had,
A year ago on this very day.

II
The air broke into a mist with bells,
The old walls rocked with the crowd and cries.
Had I said, “Good folk, mere noise repels–
But give me your sun from yonder skies!”
They had answered, “And afterward, what else?”

III
Alack, it was I who leaped at the sun
To give it my loving friends to keep!
Nought man could do, have I left undone:
And you see my harvest, what I reap
This very day, now a year is run.

IV
There’s nobody on the house-tops now–
Just a palsied few at the windows set;
For the best of the sight is, all allow,
At the Shambles’ Gate–or, better yet,
By the very scaffold’s foot, I trow.

V
I go in the rain, and, more than needs,
A rope cuts both my wrists behind;
And I think, by the feel, my forehead bleeds,
For they fling, whoever has a mind,
Stones at me for my year’s misdeeds.

VI
Thus I entered, and thus I go!
In triumphs, people have dropped down dead.
“Paid by the world, what dost thou owe Me?”–
God might question; now instead,’
Tis God shall repay: I am safer so.

আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নিশ্চয়ই আরো একটু ছুটি ছিল। কিন্তু সেকথা কিছু মনে নেই। ডিসেম্বরে কলেজ ছুটিতে বাসায় এলাম। বাসায় এসে শুনলাম-জানলাম অনেক কিছু। দেশে তখন ভীষণ অস্থিরতা চলছে। আর সেটা মূলতঃ সেনানিবাসগুলো ঘিরেই। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের নামে সেনাসদস্যরা সর্বত্র কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হয়। কতোজন সেনা কর্মকর্তা সে সময় নিহত হয়েছিলেন তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান আজো মেলেনি।

কুমিল্লা সেনানিবাসে ছিলেন আমার মামা মেজর এ কে এম হাসানুজ্জামান। ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা। সিপাহী বিপ্লবের ঝড় সেনাসদস্য ও কর্মকর্তাদের বেসামরিক স্বজনদের মধ্যেও আতংক তৈরি করেছিল। বাসায় এসে শুনলাম, মামার কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। আব্বা তাই কুমিল্লা সেনানিবাসে গিয়েছিলেন একমাত্র শ্যালকের খোঁজ নিতে। গিয়ে দেখেন মামা ভালই আছেন। বরং জওয়ানরা মামাকে আগলে রেখেছে। তারা আব্বাকে বলেছে, “দুলাভাই আপনারা স্যারের জন্য চিন্তা করবেন না। স্যারকে কেউ মারতে চাইলে আগে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে যেতে হবে।”

আমার মা আর মামা- তারা এক ভাই এক বোন। ভাইয়ের চিন্তায় মা সে সময় প্রায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন। তবে মামার একটা গুণ দেখেছি। তিনি যখন যেখানে গেছেন, অধস্তন কর্মকর্তা থেকে একেবারে সিপাই পর্যন্ত সবাই তার গুণগ্রাহী হয়ে গেছে। বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি প্রথমে বিমানবাহিনী, পরে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে বউ-বাচ্চাদের নিয়ে আটকা পড়েছিলেন। ‘৭৩ সালে দেশে ফিরে আসেন।

ঢাকা শহর তখন গুমোট এক থমথমে নগরী। রাতে কার্ফ্যূ থাকে। রাজনীতি একরকম বন্ধ। রাস্তা-ঘাটে প্রায়ই সেনা গাড়ির টহল দেখা যায়। গুজবের পর গুজবে ভাসতো দেশ। প্রায় প্রতিদিনই সেনা অভ্যূত্থানের গুজব শোনা যেত। মানুষজন তখন রেডিও শুনতো। বাংলাদেশ বেতার হয়ে গেলো রেডিও বাংলাদেশ। মানুষ এর খবর বিশ্বাস তখনো করতো না। কিন্তু শুনতো। কারণ তারা জানতে চাইতো আজ ক্ষমতায় আছে কে? সংবাদপত্রে কড়া সেন্সরশিপ চলছে। ফলে সত্যটা জানা যেতোনা। বিবিসি শুনতো মানুষ খুব।

বাকশাল দিয়ে সমাজতন্ত্র কতোটা হতো সে নিয়ে আজো আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু এখন বুঝি একদলীয় শাসনব্যবস্থাটা বেশি দিন টিকিয়ে রাখা বঙ্গবন্ধুর জন্য কঠিন হতো। কারণ এটা যে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দিচ্ছিল, সেটা মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হতো না। দমন-পীড়ন ছাড়া একদলীয় ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা যায় না। আর সেটা শুধুই ক্ষোভ বাড়ায়, অপেক্ষায় থাকে বড় কোনো একটা বিস্ফোরণের জন্য।

পরে আমরা দেখেছি, এদেশে প্রবল শক্তি-ক্ষমতা নিয়ে কোনো সেনা শাসনও মানুষ বেশিদিন মেনে নেয়নি। স্বৈরতন্ত্র, একনায়কতন্ত্রের সঙ্গে বাঙালির যে বিরোধ পাকিস্তান আমলে জন্ম নিয়েছিল সেটাই সম্ভবত আমাদের দেশের-জনগণের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

[আমি দুঃখিত, পঞ্চম পর্বটা দিতে দেরি হলো। আসলে সময় যতো এগোচ্ছে, ততোই আমরা জটিল ঘটনাপ্রবাহে ঢুকে যাচ্ছি। আর এখানে ইতিহাসের বিকৃতির সুযোগ নেই। তাই বারবার তথ্যগুলো যাচাই করে দেখতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, এর পরের পর্বগুলোও খুব তাড়াতাড়ি নামানো কঠিন হবে। তাই সবাইকে ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ জানাচ্ছি।]

৬৭ টি মন্তব্য : “স্মৃতির ঝাঁপি : পঁচাত্তরের নৈরাজ্য এবং বঙ্গবন্ধু”

  1. ধরা খাইলাম নাকি? ভালো লাগলো লাবলু ভাই। ভাইয়া আমার একটা কৌতুহল, আমরা মাঝে মাঝেই ভাবে সিনিয়র ব্যাচের ক্যাডেটরা কেমন ছিলো, তাদের দুষ্টামি গুলো কেমন হতো, স্যার - ক্যাডেট সম্পর্ক, কলেজের সার্বিক অবস্থা ইত্যাদি এমনি নানান বিষয়ে আমরা অতীত ব্যাচ গুলোর সাথে তুলনা করি। তখনকার সময়ের ক্যাডেটদের এই সব বিষয়গুলো নিয়ে একটা পর্ব লিখলে কেমন হয়?

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      সামীউর, আমার শুরুর দিকের লেখাগুলোতে তখনকার কলেজের অবস্থা সম্পর্কে কিছু পাবে। সব ধরণের বাদরামিই করতাম। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক তোমাদের মতোই। কোনো কোনো শিক্ষক বন্ধুর মতো ছিলেন, কেউ কেউ ছিলেন বাঘ! ভাং মারা, পিটি-প্যারেডে ফাঁকি মারা, বন্ধু-সিনিয়র-জুনিয়রদের পেছনে লাগা, ডাব-নারকেল, খেজুরের রস চুরি, সিগেরেট ফোঁকা, মাস্তানি করা............ সবই চলতো।
      :grr: :grr: :grr:


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  2. সামিয়া (৯৯-০৫)

    কি আশ্চর্য, লাবলু ভাই, বঙ্গবন্ধুর কথা ভাবলে আমার ঠিক এই কবিতাটাই মনে পড়ে, মনে হয় কবি উনাকে নিয়েই লিখেছিলেন।
    খুব মনোযোগ দিয়ে পড়লাম এই পর্বটা, আরেকটু বড় করতে পারতেন না?

    জবাব দিন
  3. রাশেদ (৯৯-০৫)

    কি অদ্ভূত বাস্তবতা, একটা মানুষের ডাকে সারাদেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ল কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তার নৃংশস হত্যাকান্ডের কেও প্রতিবাদ করল না তেমন করে। শেখ মুজিবের জীবনের বড় একটা প্যারাডক্স মনে হয় এইটা।

    সানা ভাই যত সময় লাগে লাগুক কিন্তু চলুক, যেন না থেমে যায় অন্য সিরিজ লেখকদের মত। পাঠক হিসেবে আমার এইটা অনুরোধ।


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
      • রাশেদ (৯৯-০৫)

        সত্যিই ইন্টারেস্টিং। এই জিনিস গুলো নিয়ে খুব বড় স্কেলে কি কোন কাজ হয়েছে? এই হত্যাকান্ড সাথে ধারাবাহিক ভাবে হওয়া হত্যাকান্ড গুলো, পরবর্তী ক্ষমতার পট-পরিবর্তনের ধারা, আমাদের সাংষ্কৃতিক পরিবর্তনের ধারা, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এইসব নিয়ে কয়েক ভাগ করে কিছু গবেষণা মূলক কাজ করা দরকার। অন্তত আমাদের দেশে ইতিহাস বিকৃ্তির যে অপধারা শুরু হয়েছে এবং আমাদের সমবয়সী যারা এর শিকার হচ্ছে তাদের জন্য সাথে উত্তর প্রজন্মের জন্য এগুলো খুব দরকার।


        মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

        জবাব দিন
  4. দিহান আহসান

    ভাইজান দেরী নিয়ে চিন্তা কইরেননা। সময় নিয়ে ভেবে আস্তে ধীরে লিখেন।
    অনেক কিছু জানতে পারছি, :hatsoff:

    শুধু ই-বুক না, পুরোটা শেষ হলে দুর্দান্ত একটা ছাপার বইও হতে পারে সিসিবি প্রকাশনা থেকে।

    :thumbup:

    জবাব দিন
  5. জাহিদ (১৯৮৯-৯৫)

    সানাউল্লাহ ভাই,

    আপনার শৈশব কেটেছে ইতিহাসের মধ্য দিয়ে। ঐ সময়ের একজনের কাছ থেকে সবকিছু জানাটা অন্যরকম। সবচেয়ে ভাল লেগেছে যে আপনার মধ্যে পক্ষপাত কম কাজ করে, অন্ততঃ বর্ণনাগুলোতে।

    অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বগুলোর জন্য, যত দেরীতেই হোক।

    জবাব দিন
  6. তানভীর (৯৪-০০)

    পাঁচতারা দাগিয়েও এই সিরিজের প্রতি আমার মুগ্ধতা বোঝানো যাবে না। :boss:

    ভাইয়া, আপনি সময় নিয়ে হলেও এই সিরিজটা চালিয়ে যান। খুব আগ্রহ আর মনযোগ দিয়ে এই সিরিজটা পড়ি। আমাদের বয়সীদের জন্য সত্যকে জানার এটা একটা চমৎকার সুযোগ।

    রবার্ট ব্রাউনিংয়ের এই কবিতাটা যেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই লেখা।

    জবাব দিন
  7. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে এক কিশোরের সরল চোখ দিয়ে সব দেখে যাচ্ছি। হয়ে উঠছি আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে টাল মাতাল সময়ের সাক্ষী। আমার সবসময়ই মনে হয় আপনাদের জেনারেশন এতো ঘটনাবহুল সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, কাছ থেকে এতো উথথান পতন দেখেছে - তবে কেন নব্বইয়ের দশকে সব কিছুর পরে বাংলাদেশে যখন অবশেষে গণতন্ত্র আসলো, তখন কেন একজন বঙ্গবন্ধু বা তাজুউদ্দিনের দেখা মিললো না?
    উত্তরটা হয়তো জানি। নিজের মতো করে। এ স্থবির তোষামোদী গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা কেন এখনও ভিন্ন নামে অভিহিত করছে না?


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      নূর আফজা, উত্তর তো তুমি নিজেই জানো। নেতা কোথায়, আদর্শ কোথায়? বঙ্গবন্ধু বা তাজউদ্দিনরা তো ইতিহাসে বেশি আসে না। ম্যান্ডেলাকে আমি এই সময়ের সেরা নেতা দেখি।

      নব্বই পরবর্তী সময়কে আমি বলি গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র!!


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  8. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    পড়ছি।

    আজ একটা কথা বলি, আমি বোধহয় আমার বিষয় নিতে ভুল করেছি, কিংবা হয়ত করিনি, বাবাকে আরও বেশি দুঃখ দিতে চাইনি বলে, অথবা ইচ্ছে করেনি, মোট কথা হয়ে উঠেনি আরকি। তবে আবার যদি নতুন করে সাবজেক্ট নিতে পারতাম, তবে আমি ৭১-৮১ সময়টা নিয়ে গবেষনা করতাম।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  9. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    এ দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জাজনক অধ্যায়টা দেখেছেন আপনি আপনার কৈশোরে। আর এই পর্বটাও লিখলেন সেই আগস্টে !

    আমার নিজের মাঝে মাঝে মনে হয় জাতি হিসেবে আমরা যেন ৭৫'র আগস্টের পর থেকে আসলে পিছিয়ে পরতে শুরু করেছিলাম। স্বাধীনতার এতো বছর পরও আমরা যেখানে থাকার কথা সেখানে না থেকে আজ তার থেকে অনেক পিছিয়ে আছি, এর কারন আসলে ৭৫-৯১ সময়কাল।

    যে যাই বলুক, আমার কষ্ট লাগে, যতোবার আমি বংগবন্ধু হত্যকান্ডের ইতিহাস পড়ি আমার খুবই কষ্ট লাগে! আমার মনে হয় আর যাই হোক এটা তার প্রাপ্য ছিলো না। আমরা অন্যায় করেছি।

    লেখা নিয়ে কিছু বলার নাই, লাবলু ভাই। আমার আগেই সবাই বলে দিছে।


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
      • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

        হতে পারে ফয়েজ ভাই।

        আমি আমার অবজারভেশন থেকে যতটুকু বুঝেছি সেটার উপর ভিত্তি করে বললাম। এটা ভুল হতে পারে।

        বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় ছিলো এই সময়টা (৭৫-৯১)। জনগনের সাথে বিশ্বাসঘাতকরা রাষ্ট্র শাসন করেছেন। পরিকল্পিত ভাবে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করা হয়েছে, রাজনীতিবিদদের মধ্যে 'লোভ' ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, বিচার চাওয়ার এবং পাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, সেকুলার একটা জনগোষ্টীর ধর্মীয় অনুভুতি ব্যবহার করা হয়েছে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে, নৈতিক স্খলন হয়েছে মানুষের।

        অথচ এই সময়টা ছিলো স্বাধীনতাউত্তর একটা দেশের উত্থানের, আমরা পারিনি। সেই বিচার থেকে বলেছি।


        ---------------------------------------------------------------------------
        বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
        ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

        জবাব দিন
        • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

          ফয়েজ ও কামরুল : ভালো বিষয় এনেছো। এ নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক চলতে পারে। সবাই যার যার মত দিতে পারে। আমিও একটু ফ্রি হলে এ নিয়ে আমার মতামত দেবো।


          "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

          জবাব দিন
          • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

            আমার ধারনা হচ্ছে

            ১। বঙ্গবন্ধুর সঠিক লোক এবং পদ্ধতি চিনতে ভুল করা

            ২। আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল (এটা এখনো চলছে দূর্বার বেগে)

            ৩। পাকিস্থান ফেরত সেনাবাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আত্তিকরন

            🙂


            পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

            জবাব দিন
            • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

              ফয়েজ ভাই
              আরেকটু বিস্তারিত আশা করছিলাম।
              আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো স্বাধীনতার ৩৮ বছর পরও আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছতে পারি নাই , এর কারন, মোটাদাগে, আমার মতে ৭৫ থেকে ৯১ শাসনকাল। (এর আগে বা পরেও যে দেশ অনেক এগিয়ে ছিলো বা এগিয়েছে এমন নয়, কিন্তু এ সময়টায় এ দেশটার যাবতীয় মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে )

              আপনি বলতে চাইছে ৭৫'র আগেই এ দেশের নীতি নির্ধারনে কিছু ভুল হয়েছে।(আপনার ধারনাগুলি দেখে এটাই বুঝলাম আমি)।


              ---------------------------------------------------------------------------
              বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
              ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

              জবাব দিন
              • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

                হ্যা কামরুল আমার তাই ধারনা। তুমি '৭৫, '৮১ এগুলোকে কারন বলছো, আমি ভাবছি '৭৫ কেন হল, '৮১ কেন হল? এগুলো কিভাবে এড়ানো যেত।

                আওয়ামী লীগের ভিতরে দুটো দল ছিল, একদিকে ছিলেন তাজউদ্দীনের মত নেতারা, আরেক দিকে ছিলেন মোস্তাক, তাহের উদ্দিনের মত নেতারা। বাকশাল ছিল একটা চাপানো ব্যবস্থা, এটা কখনোই ভালো ফল আনতে পারতো না। আর সেনাবাহিনীতে যত ক্যু হয়েছে এর অধিকাংশের মুলেও ছিল গ্রুপিং, মুক্তিযোদ্ধা এবং এবং পাকিস্থান ফেরতদের গ্রুপিং।

                পাকিস্থান ফেরত সেনাবাহিনীর লোকদের সেনাবাহিনীতে নেয়াটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। বিস্তারিত বলতে গেলে অনেক কিছু চলে আসবে। মুড পাচ্ছি না 🙁


                পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

                জবাব দিন
                • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

                  আচ্ছা, আমরা সামনা সামনি একদিন কথা বলবো।
                  যখন আপনার মুড আসবে। 😀


                  ---------------------------------------------------------------------------
                  বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
                  ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

                  জবাব দিন
                  • কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

                    মুক্তিযোদ্ধা এবং এবং পাকিস্থান ফেরতদের গ্রুপিংতো ছিলোই, আমার কেন যেন মনে হয় মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদেরও নিজেদের ভেতর ভালো লেভেলের গ্রুপিং ছিলো। বিচারে দোষী এবং বিচারক, সামরিক আদালত বিধাতাদের দুই গ্রুপই মুক্তিযোদ্ধা দেখে এরকমই মনে হলো।

                    ফয়েজ ভাই মুড ঠিক করেন 😀 সামনা সামনি আসছি কিনা খুব শিগগির 🙂 আপনার একটা ৫১২ এমবি পেন ড্রাইভ আছে আমার কাছে :grr: :grr:


                    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

                    জবাব দিন
                    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)
                      আমার কেন যেন মনে হয় মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদেরও নিজেদের ভেতর ভালো লেভেলের গ্রুপিং ছিলো।

                      আমি যতটুকু বুঝেছি এদের মধ্যে ঠিক সেই অর্থে গ্রুপিং ছিল, বরং ছিল আদর্শিক একটা দ্বন্দ। "ইগো" প্রবলেম বলতে পার। তারা জীবন দিয়ে দিতে বরং স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন তবু নিজের মত থেকে একচুল সরতেন না, যদিও সেটা ভুলও হোক না কেন।


                      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

                    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

                      ফয়েজ, কামরুল ও কাইয়ুম : আসলে সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের মধ্যে সব সময়ই ভীষণ রকম দলাদলি ছিল। নানা উপদল ছিল। মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় কেউ কেউ প্রচন্ড উচ্চাভিলাষী হয়ে পড়েন। কারো কারো মধ্যে আদর্শও ছিল। তাহের, মঞ্জুর এদের দলে। আবার নাসিমেরটা বলা যায়, ইগোর সমস্যা। '৯৬-এ খালেদা যেভাবে সেনাবাহিনীকে সাজিয়ে গিয়েছিলেন তাতে নাসিম বরং একা হয়ে পড়েন। তারপরও তিনি ঝুঁকি নেন। নিজেদের দলাদলিতে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান ফেরতদের ব্যবহার করতেন। মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের দলাদলির তুলনায় পাকিস্তান ফেরতরা অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত ছিলেন। এক এরশাদেরটা বাদে বাংলাদেশে সফল-ব্যর্থ যতো ক্যু হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তারাই তাতে জড়িত ছিলেন। ফলে প্রচুর কর্মকর্তা চাকরি হারান এবং সেনাবাহিনীতে ক্রমেই মুক্তিযোদ্ধারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হন।


                      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

                    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

                      ভাইয়া, শুনেছিলাম মুক্তিযোদ্ধাদের একটা সিনিয়রিটি দেয়া হয়েছিল। যেটা পাকিস্থানী ফেরতাদের কস্টের কারন হয়েছিল। আর মুক্তিযোদ্ধারা ভালো পোস্টে থাকতেন যা হতাশার সৃস্টি করেছিল ফেরতাদের মধ্যে।

                      শুনেছি সেনাবাহিনীর ভিতরে দূর্নিতীবাজদের একটা লিস্ট করা হয়েছিল জিয়ার নির্দেশে, তাতে এক নম্বরে ছিল এরশাদের নাম। জিয়া নাম না দেখেই তা দিয়ে দেন এরশাদের (সেনাপ্রধান) হাতে। এরশাদ এর শোধ নেন ব্রিগেডিয়ার মহসীন কে ফাসি দিয়ে, জিয়া মারা যাবার পরে।

                      তবে কর্নেল মতি কেন জিয়াকে মারলেন আর জেনারেল মঞ্জুর কেন মতিকে শেল্টার দিলেন এটা বুঝতে পারিনি।


                      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

                    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

                      হ্যা ফয়েজ, মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের এক বছরের সিনিওরিটি পাকিস্তান প্রত্যাগতদের দীর্ঘস্থায়ী মনোবেদনার কারণ হয়েছিল।

                      জিয়ার তালিকার কথা জানিনা। তবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের ওপর আস্থা বা বিশ্বাস রাখতে পারেননি। এরশাদ ছিলেন সেনাবাহিনীতে নানাভাবে বিতর্কিত এক কর্মকর্তা। নারী ছাড়াও নানা দুর্বলতা ছিল তার। জিয়া হয়তো মনে করেছিলেন, এইরকম একজন দুর্বল সেনাপ্রধান বরং তার মুঠোয় থাকবেন।

                      চট্টগ্রাম অভ্যূত্থানের পরিকল্পনা যতদূর জানি এরকম ছিল, জিয়াকে সেনানিবাসে তুলে নিয়ে একরকম জিম্মি করে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তারা তাদের দাবি আদায় করবেন। জেনারেল মঞ্জুর মধ্য পর্যায়ের এই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতায় নিজে সক্রিয় না থাকলেও বাধা দেননি। কারণ জিয়া তাকে ঢাকা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন নিজের ক্ষমতাকে আরো নিরঙ্কুশ করতে। মঞ্জুর এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন, জিয়ার রাষ্ট্র শাসন নীতি নিয়েও তার ভিন্নমত ও অসন্তোষ ছিল। কিন্তু যখন মতিসহ অন্যরা জিয়াকে মেরে ফেললেন, মঞ্জুর নিজের দায়িত্ব এড়ালেন না। হাত মুছে ফেললেন না। এই অভ্যূত্থান সফল হবে না জেনেও অভ্যূত্থানকারীদের আশ্রয় দেন এবং পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেন।


                      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

  10. রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

    অসাধারণ একটা সিরিজ সানা ভাই। এই পর্বটার আরও কিছু উপ-পর্ব চাই; আমার ধারণা এটা একটা গণদাবী 🙂 🙂
    ৭৫ এর এই পুরো সময়টাই অনেকটা ধোঁয়াটে। এর ওপর অনেক বেশী আলোকপাত হওয়া দরকার। বিশেষ করে ১৫ আগস্টের কিছু আগ থেকে শুরু করে সে বছরের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল যা পরবর্তীতে সারা দেশের ভবিষ্যত গতিপথ এক রকম নির্দিষ্ট করে দেয়। এই সময়টার পাত্র-পাত্রী কুশীলব, নায়ক-খলনায়ক, পরিচালক - সবাইকে নিয়েই মনে হয় আরও গভীর মূল্যায়ন জরুরী। কার আসলে ঠিক কি ভূমিকা ছিল, কি কি প্রচারণা তখন (এবং এখন) প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, কেন সে সব হয়েছিল আর কি বোঝানো হয়েছে জাতিকে পরবর্তীতে - এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর জানা দরকার। না হলে জানবো কি করে অশুভ শক্তিরা এখন কে ঠিক কোন লেবাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে! আর আমরাই সম্ভবত এই দেশের শেষ প্রজন্ম যাদের পক্ষে বাস্তবে এর উত্তর খুঁজে পাওয়া সম্ভব (কঠিন হলেও); কারণ, এর পর অনেক বেশী দেরী হয়ে যেতে পারে।

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      ধন্যবাদ রায়হান। তবে এটা ওই সময়ের একজন বালক-কিশোরের চোখে যতটুকু দেখা সেই সময়ের ততটুকু ইতিহাস। তারপরও কিছুটা দেয়ার চেষ্টা করছি। কোনো সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ে জানতে চাইলে জানিও। চেষ্টা করবো উত্তর দিতে। তবে আশির দশকে যেহেতু নিজে অনেক কিছুতে জড়িত ছিলাম সেই সময়টা মনে হয় আরো ভালো করে লিখতে-বলতে পারবো। ভালো থেকো।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  11. সাইফ (৯৪-০০)

    সানা ভাই, প্রথমেই ক্ষমা চেয় নিচ্ছি আপনার আগের পোস্টটাতে বিতর্ক আনার জন্য। এইভাবে আপনার মত যদি সবাই এগিয়ে আসেন তাইলে সঠিক ইতিহাস উঠে আসবে।

    সপরিবারে বঙ্গবন্ধু, তার স্বজনদের নৃশংস হত্যাকান্ড, কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যার কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল দেশে? মানুষজন স্বতস্ফূর্তভাবে রাজপথে কেন নামেনি? পুরো দেশ বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে যায়নি। আবার পক্ষেও দাঁড়ায়নি।

    কিন্তু কেন?আশা করি পঞ্চম পর্বে থাকবে। আর সেই সাথে আপনার আগের পোস্টতাতে দেয়া মন্তব্যকে হুবহু কপি করে দিয়ে দিলাম। আশা করি এই ব্যাপারে কিছুটা আলোকপাত করবেন।
    সানা ভাই,অনেকদিন পর আসলে সিসিবি তে কিছু লিখছি, অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করলেও লিখতে পারি না, বাস্তবতার প্রেক্ষিতে সঙ্গত কিন্তু সচেতন বিবেকের দায়বদ্ধতার কাছে অসংগত কারণে ব্লগ এ লিখা বন্ধ করে দিয়েছি। আপনার পোস্ট দেখে তাই কিছু একটা মন্তব্য দিতে ইচ্ছে করছে। অথচ কত অভাগা আমরা চাইলেও আমি এই পোস্টে কোন মন্তব্য করতে পারছি না, আপনাদের মত বিতর্ক করতে পারছি না। শেখ মুজিব সম্পর্কে একটা বিতর্ক আসে সবার মনে সেটা হল তিনি নেতা হিসেবে অবিসংবাদিত,কিন্তু শাসক হিসেবে ব্যর্থ। আমাদের জন্ম ৮১ সালে। আমি যেটুকুন পড়েছি, জেনেছি এবং আমার বিবেক বুদ্ধি যেইটুকুন বুঝতে সক্ষম সেই সীমাবদ্ধতাকে স্বীকার করে বলছি--------
    নেতার কাজ হচ্ছে জাতিকে দিক নির্দেশনা দেয়া,তিনি যদি রাষ্ট্র প্রধানও হন তার আসল পরিচয় তিনি একজন নেতা, রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্যান্য অংগসমূহ যদি নেতার নির্দেশ মত কাজ না করে তখন নেতৃত্বের মহিমায় কেবল রাষ্ট্র চলে না।শেখ মুজিব কে যারা দূর্বল শাসক বলেন তাদের জন্য বলছি সেই সাথে আপনার কাছেও জানতে চাইছি শুধু মাত্র আমার ব্যক্তিগত জানার খাতিরে অন্য কোন কারনে নয় কিংবা তর্ক করার জন্য নয়----
    একটা যুদ্ধত্তোর দেশে সমস্ত লোকজন, নেতারা মুক্তিযোদ্ধারা যে যার মত আখের গোছানো শুরু করেছে,যাকেই বিশ্বাস করে তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন,সে সেখানে ইচ্ছেমত চুরি করছে,আখের গোছাচ্ছে,অথচ এই লোকগুলাই দেশকে ভালোবেসে যুদ্ধ করেছে,তাদের অধিকাংশই আজকে বিএনপি আওয়ামীলিগ এর শীর্ষস্থানিয় নেতা,তারা যখন শেখ মুজিবের দূর্বল শাসন নিয়ে মন্তব্য করেন আমার প্রশ্ন ---তারা আজকে দেশেক কোন শাসন এ শাসন করেন? শেখ মুজিবের ছেলেদের বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা নিয়ে তাকে সামগ্রিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় এবং তার পরিণতির বৈধতার যুক্তি দাড় করানো হয়,তাহলে আজকের এই অবস্থায় এসে বর্তমান নেতা নেত্রি কারো কি বেচে থাকার কথা?জগন্নাথ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রিন্সিপাল সায়েদুর রহমান এর কোন একটা বইতে পড়েছিলাম,এক মিটিং এ শেখ মুজিব বলেছিলনে,তোমারআই ত মিয়া আমারে প্রধান বানাইছ,আমি কারে বিশ্বাস করুম,আমারে ভালো ২০ জন লোক দাও আমি দেশ চালামু।যারেই দেই সেই ত বিশ্বাস ভংগ করে,আমি কারে বিশ্বাস করুম।যেই নেতারা আজকে দেশ স্বাধিন করেছে বলে গর্ব করে ,স্বাধিনতা তাদের একক অর্জন বলে দুই দলে বিভক্ত হয়ে হত্যালীলায় মেতে ওঠে তিনারা কেমন শাসক?তাদের সন্তান সন্ততিরা কেমন ?ত্আদের কি বেচে থাকা উচিত?
    আরেকটা ব্যাপার,যে শেখ মুজিব যুদ্ধ অপরাধিদের ক্ষমা করে তার এই পরিণতির শিকার হয়েছেন,এইটা আমি আং শিক ভাবে মেনে নেই।কিন্তু তার লীডারশিপ ট্রেইটস চিন্তা করলে আবার এইটার ব্যাখ্যা এইভাবেও দেয়া যায়,তিনি অনেক উদার চরিত্রের লোক ছিলেন।স্বাধিনতার পর পর তাই তিনি সাধারণ ক্ষমা দিয়েছিলেন এই ভেবে যে এই দেশ সবার,এই স্বাধিনতা সবার,একবার যখন স্বাধিনতা এসেছে এইটা ত আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না,এই দেশের সবাই আমার ভাই,আমাদের সন্তান,আমি কাকে আলাদা করব।
    ক্যাডেট ভাইদেরকে বলছি,ভাই আমি দুই দল বুঝি না,তিন দল বুঝি না,বুঝে আমার কোন কাজ নেই,সবার যার মত করে নিজস্ব মতামত থাকবে যুক্তি থাকবে ,তাই দয়া করে কেউ এমন ধারণা পোষন করবেন না যে আমি কোনাভবে কারো পক্ষে কথা বলছি।আমি দল বুঝি না কিন্তু আমি বক্তিগতভাবে যেই মানুষ্টাকে শ্রদ্ধা করি সেই সচেতন বিবেচনা থেকে আমি এই কথাগুলো বললাম।
    তবে আমি এইটূকুন বুঝি,যেই দেশে যেই জাতির রাষ্ট্রযন্ত্রের শীর্ষস্থানিয় নেতাদের হত্যা করা হয় এবং সংবিধানে সেইটা আইন পাস করে বৈধতা দেয়া হয়,মানে যেই দেশে রাষ্ট্রপ্রধান রা নিজেরাই ন্যায়বিচারের বাইরে, এবং নিরাপদ নয় সেইখানে আপনি আমি কতটুকু কি?৭৫ এর পর থেকে আজ অব্ধি যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার কোনটির বিচার কি হয়েছে?কেন হবে আজো টিভী চ্যানলে আমাদের ই ভোটে নির্বাচিত রা বলেন,আমি হইলাম হালদা নদির কাতল রুই,শেখ মুজিব হত্যা আর চার নেতা হ্যতা অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল…
    পাহড়ে বুদ্ধিজিবিদের তথাকথিত সেনা শাসন প্রত্যাহার হচ্ছে,আমরা দেখব তাদের তথাকথিত স্থানিয় শাসন কি দেয় রক্ত না শান্তি?ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে ক্ষুদ্র এই দেশের বিরাট পাহড়ি এলাকা রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তার জন্য যে কত গুরুত্ত্বপূর্ন তা বোঝার জন্য ভূগোল কিংবা পলিটিক্যাল সাইন্স এ পি এইচ ডি লাগে না, নিরাপত্তা বিশ্লেষ্ অক অ হওয়া লাগে না,ইতিহাস আর ভূগোল সম্পর্কে সাধারন জ্ঞান থাকলেই যথেষ্ট।

    জবাব দিন
  12. রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

    @ সাইফ,
    তোমার বক্তব্যের বেশীর ভাগের সাথেই একমত পোষণ করি; মূল সুরের সাথে তো করিই। তবে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে একটু তথ্যগত ভুল মনে হয় রয়ে গেছে, যেটা শুধরে নেয়া দরকার। তুমি লিখেছো:

    আরেকটা ব্যাপার,যে শেখ মুজিব যুদ্ধ অপরাধিদের ক্ষমা করে তার এই পরিণতির শিকার হয়েছেন,এইটা আমি আং শিক ভাবে মেনে নেই।

    প্রেক্ষাপট: ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে দালাল আইন করে ট্রাইবুনালের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচারকার্য শুরু হয়। প্রাথমিক অবস্থায় অভিযুক্ত ছিল ৩৬ হাজারেরও বেশী লোক। এদের বেশীর ভাগের বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিলো না; আর বেশীর ভাগেরই অপরাধের মাত্রা তেমন গুরুতর ছিলো না। এ কারণে মূল অপরাধীদের পেছনে যেন মনোনিবেশ করা যায় সে জন্য ১৯৭২ সালের ৩০ নভেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই ক্ষমা শুধু তাদের জন্যই প্রযোজ্য ছিল যারা হত্যা ধর্ষণ অগ্নি-সংযোগ বা এ জাতীয় গুরুতর অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল না। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও প্রায় ১১ হাজার ভয়ংকর অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং বিচার কার্য বহাল ছিল। সেই বিচারে চিকন আলী নামের এক কুখ্যাত রাজাকারের বিরুদ্ধে ফাঁসীর আদেশও হয়েছিল।

    এর পর যা হয়েছে তা এক কলন্কের ইতিহাস। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সে বছরই ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন এবং এর আওতায় চলমান সমস্ত বিচারকার্যকে বাতিল করা হয়। বিচারকার্য বাতিল করে সকল ভয়ংকর যুদ্ধাপরাধীকে চূড়ান্তভাবে ক্ষমা প্রদানের এই কুকর্মটি করেছিলেন বিচারপতি আবু সায়েম এবং জেনারেল জিয়াউর রহমান। এটাই হল প্রকৃত ইতিহাস, যে যাই প্রচার করার চেষ্টা করুক না কেন। মোট কথা, বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমায় মূল যুদ্ধ অপরাধীরা পড়েনি কখনো।

    সবার সুবিধার্থে সাধারণ ক্ষমার মূল সার্কুলারটির পুরোটি উদ্ধৃত করছি এখানে। মন দিয়ে এর দুই নম্বর অনুচ্ছেদটি পড়ার অনুরোধ করছি (খুঁজে পাবার সুবিধার্থে সে অংশটা ইটালিকে করা হল)।

    General Amnesty

    Government have further considered the question of granting clemency to person who have been convicted for or accused of offences under the Bangladesh Collaborators (Special Tribunal) Order, 1972, (P.O No.8 of 1972) and now pleased to declare as follows:

    1. Except in this cases of person and offences mentioned in para 2.

    RELEASE ORDERED

    A) The sentences of persons who have been convicted for any offences under the aforesaid order are hereby remitted in exercise of the power under section 40.1 of the Code of Criminal Procedure, 1898, and such persons shall be released from jail forthwith, unless they are wanted in connection with any offences triable and punishable under any law other than the aforesaid order.

    B) All cases pending against any person before any Special Magistrate or Special Tribunal under the aforesaid order shall be withdrawn with the permission of such Magistrate or Tribunal and such person shall be release from the custody, unless he is wanted in connection with any offence triable and punishable under any law other than the aforesaid order.

    WARRANTS LIFTED

    C) All proceedings, investigations or enquiries against any person accused of an offence triable and punishable under the aforesaid order shall stand dropped and all warrants of arrest issued or proclamation for appearance published and order of attachment made in respect of any person or as the case may be property under the aforesaid order shall stand recalled, revoked and rescinded and any such person, if already in custody shall be released from such custody forthwith, unless he is wanted in connection with any offence triable and punishable under any law other than the aforesaid order.

    ABSENTIA TRIAL

    Provided that in the case of a person who has been convicted in absentia or in respect of whom a proclamation has been made or a warrant of arrest is pending, this order shall become effective only upon his surrendering before the appropriate court and making a prayer for clemency and a declaration of allegiance to the People’s Republic of Bangladesh.

    PERSONS NOT COVERED

    2. The clemency granted under Para 1 shall not extend to person, who under the aforesaid order are convicted for or charged with or alleged to have committed any offence under section 302 (murder), section 304( culpable homicide not amounting to murder), section 376 (rape), section 435 (mischief by fire or explosive), section 436 (mischief by fire of explosive substance with intent to destroy house) and section 438 (mischief by fire of explosive substance to any vessel) of the Penal Code.

    জবাব দিন
    • রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

      আরও কিছু তথ্য:

      ১)
      বঙ্গবন্ধুর প্রশাসন মূল যুদ্ধাপরাধীদের "সাধারণ ক্ষমা" তো করেইনি, বরং, আরও ভালোভাবে যাতে তাদের বিচার করা যায় সে জন্য International Crimes (Tribunals) Act প্রণয়ন করে ১৯৭৩ সালে। এই আইনটি প্রণয়নের সময় দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং সহায়তাও নেয়া হয়েছিল যাদের মধ্যে নুরেমবার্গ-টোকিও ট্রায়ালের বিশেষজ্ঞদেরও কয়েকজন ছিলেন। সম্প্রতি এই আইনটিই সংশোধন করা হয়েছে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে যাতে এর আওতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সুষ্ঠভাবে করা যায়। অসংশোধিত মূল আইন পাওয়া যাবে এই লিন্কে। সংশোধিত আইনটির পুরো কপি অনলাইনে পেলে লিন্ক তুলে দেবো এখানে। এই সংশোধন প্রক্রিয়ার সাথে মুক্তাঙ্গনের একাধিক সদস্য সরাসরি সংশ্লিষ্ট ছিল।

      ২)
      মূল যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা এবং তাদের পূনর্বাসিত করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর, জিয়া-সায়েম এর তত্ত্বাবধানে। দালাল আইন (এবং এতদসংক্রান্ত সকল বিচারকার্য) বাতিলকারী অধ্যাদেশটি এই লিন্কে পাওয়া যাবে। আইনটি প্রণয়নের তারিখের দিকে সবার মনযোগ আকর্ষণ করবো।

      আশা করি এই বিষয়ে কারও মনে কোন দ্বিধা-দ্বন্দের অবকাশ আর নেই।
      ধন্যবাদ।

      জবাব দিন
      • কামরুল হাসান (৯৪-০০)

        রায়হান ভাই

        অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য।
        যেহেতু আমরা সেই সময়ের পরবর্তী প্রজন্ম তাই আমাদের এই ব্যপারগুলি জানতে হয় সেই সময়কার মানুষদের লেখা বই-পত্র, ইতিহাস ঘেটে আর তাদের কাছ থেকে শুনে। দুঃখের বিষয় সেই ইতিহাসও এখন অবিকৃত নেই। আমাদের জানার মধ্যেও তাই নানা গলদ থেকে যাচ্ছে।

        কিছুদিন আগেই ডাঃ এস. এ. মালেকের 'যে কারনে বংগবন্ধুকে জীবন দিতে হল' নামে একটা লেখা পড়ছিলাম। পড়তে পড়তে মনে হল, আসলে একেবারেই রাজনৈতিক কারনে হত্যা করা হয়েছে তাকে। হত্যার পরবর্তী দেড় দশক এ দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে যে পরিবর্তনের ধারা প্রবর্তন করা হয়েছে সেটা বিশ্লষন করলেই তাকে হত্যার প্রকৃত কারণ কিছুটা আঁচ করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধবংস করে বারবার পাকিস্তানী ভাবধারায় এ দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করা হয়েছে এ সময়।

        আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, বংগবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন দেশের অবস্থা কেমন ছিলো?

        যতোটুকু জেনেছি, যে বাকশাল পদ্ধতির জন্যে তাকে দোষারোপ করা হয় তা কিন্তু তখনো চালু হয়নি। জেলা গভর্নররা তখনো দায়িত্ব গ্রহন করেন নি, বাধ্যতামূলক গ্রামসমবায় চালু হয়নি, জেলা প্রশাসন বিল কার্যকর হয়নি, বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানো হয়নি, স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল রাজনৈতিক দলের একত্রীকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।
        তখন আসলে একটা উত্তরনকাল চলছিলো।

        আফসোস, আমরা তাকে আরেকটু সময়/সুযোগ দিলাম না।


        ---------------------------------------------------------------------------
        বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
        ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

        জবাব দিন
      • সাইফ (৯৪-০০)

        রায়হান ভাই,অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার এই ত থ্যবহুল এবং দলিল সম্বলিত লেখার জন্য।
        আপনি যেই ত থ্যসমুহ দিলেন তার অনেকগুলোই ভাসা ভাসা জান্তাম,আজকে একেবারে পরিস্কার হয়ে গেল।তবে ঐক্যের রাজনিতি কিভাবে চালু হয়েছিল বহুদলিয় গন্তন্ত্রের নামে রাজাকারদের আর খুনিদের পুনর্বাসন করে সে ব্যাপ্রে আমি জানলেও অনেক সিমাবদ্ধতার কারনে বলতে পারছি না,এই ব্যাপারে আপনারা আশা করি আলোকপাত করবেন।

        জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।