স্মৃতির ঝাঁপি : মুক্তিযুদ্ধোত্তর অস্থিরতা

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তিন.

স্রোতে স্মৃতির ভেলা ভাসিয়েছি। লগি-বৈঠা কিছু নেই। তাই বাতাস আর স্রোতের টানে কোথা থেকে কোথায় যে যাই, নিজেও জানি না। সময়টা মনে রেখে ঘটনাগুলোকে শুধু সুতোয় গাঁথছি যেন! লিখতে বসেছিলাম ঢাকায় আমার-আমাদের পরিবারের বাড়িগুলোকে নিয়ে। এখন তার সঙ্গে চলে আসছে সমসাময়িক রাজনীতি, ব্যক্তিগত স্মৃতি, ঘটনাক্রম, আশেপাশের মানুষ কত্তো কি! এটা কি আত্মজীবনী? তা তো নয়। কারণ এতে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা নেই, দিন-ক্ষণের সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নেই। স্মৃতি যতোটুকু যোগান দিচ্ছে ততোটুকুই শুধু সম্বল আমার।

আমার জন্ম হয়েছিল ১৯৬১ কি ‘৬২ সালে আজিমপুর ম্যাটারনিটি সেন্টারে। শুক্রবার। মায়ের কাছে কতোবার যে শুনেছি। জন্মদিনটা ঠিক আছে। সম্ভবত বাবা স্কুলে ভর্তির সময় এক বছর কমিয়ে দেখিয়েছিলেন। তাই অফিসিয়াল জন্মসাল ১৯৬২। আমিও ওটাকে মেনে নিয়েছি। মানুষ মেদ ঝড়ায়, আমি না হয় বয়স ছেটে ফেলছি! তখন আমরা আজিমপুরে থাকতাম। কবরস্থানের উল্টোদিকে। সম্ভবত ১৫ বছর আগে আমি আজিমপুর ম্যাটারনিটি সেন্টারটি দেখতে গিয়েছিলাম। আমার জন্মস্থান। কি রকম একটা শিরশিরে অনুভূতি!

মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা ফিরে এলাম ঢাকায়, সেই ৪৯ নম্বর ভবনে। মুক্তিযুদ্ধের কারণে সেবছর স্কুল-কলেজে সবাইকে অটোপ্রমোশন দেওয়া হলো। ‘৭২ সালে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ছি। প্রতিবেশিরা সব দারুণ। বন্ধুরাও। বন্ধুদের চিনতে শুরু করেছি তখন মাত্র, স্কুলের-কলোনীর। খায়রুল কবীর, জাকি আজম, জাহির (টুনু), পিচ্চি বাবু, এখলাস, ফয়েজ, রতন, শরীফ (বাটালি লিটন), দোজা, মিঠু, মিজান, তালহা, আজাদ, আসাদ ………. স্কুলের বন্ধুরা। বাইরে আশেপাশের ভবনগুলোর সমবয়সীরা তো আছেই।

মতিঝিল কলোনীর তখন একটা ভালো বৈশিষ্ট্য ছিল। প্রতিটি ভবন তিনতলা, সামনে খোলা জায়গা। কয়েকটা ভবন পরপর বড় ফুটবল খেলার মাঠ। রোদে-বৃষ্টিতে ফুটবল খেলা, ডাংগুলি, মার্বেল, সিগেরেটের প্যাকেট দিয়ে ছিকচাড়াই তো! এসব খেলায় বন্ধুত্ব, মারামারি সবই জীবনের অংশ হয়ে আছে। এখন অবশ্য ওই পরিবেশ আর নেই। আমরা থাকতে থাকতেই স্থান সংকুলানের জন্য ভবনগুলো চারতলা করা হয়েছিল। পরে ফাঁকা জায়গাগুলোতে আরো নতুন নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। জনসংখ্যা কতো সমস্যাই না জন্ম দেয়!

কমলাপুর রেল স্টেশনটা পাশেই হওয়ায়, আমাদের আরেকটা মজা ছিল, শান্টিং ট্রেনে বিনে পয়সায় ভ্রমণ। বগিগুলোকে ধুয়ে রেলের ইঞ্জিন একটা একটা করে জোড়া লাগাতো আর প্লাটফরমে নিয়ে আসতো। শান্টিং ট্রেনে চেপে আমরা বন্ধুরা বাসাবো, খিলগাঁও চলে যেতাম। কি দারুণ সময় ছিল সেটা। কমলাপুর স্টেশনটা আমাদের ঘরবাড়ির মতো হয়ে গিয়েছিল। এমনকি ক্যাডেট কলেজের ছুটিতেও সেখানে কতো সময় কাটিয়েছি!

সম্ভবত ‘৭২ সালেই একবার ঈদগা মাঠে ফুটবল খেলা হচ্ছে। আমি সিরিয়াস দর্শক। খেলা শেষে যারা জিতলো তারা উল্লাস করতে করতে পাড়ায় ফিরে যাচ্ছে। ওদের পেছন পেছন ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো আমিও ছুটছি। এভাবে কখন যে কলোনী, কমলাপুর স্টেশন পার হয়ে অজানা জায়গায় চলে এসেছি, সেটা টের পাই সন্ধ্যা নামার পর। ফেরার পথ তো চিনিনা। ভয় পেতে শুরু করলাম। এক সময় শুরু করলাম কান্না। সেটা দেখে এক যুবক এগিয়ে এলো, সে জানতে চাইলো কোথায় থাকি। বললাম। হাত ধরে আমাকে সে কলোনী পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেল। আহ্ বাঁচলাম। পরে আরো বড়ো হয়ে ঘুরে এসে জেনেছিলাম, আমার হারিয়ে যাওয়া জায়গাটা আসলে গোপীবাগের পেছনে মানিকনগর এলাকা।

মুক্তিযুদ্ধের পর সব কিছু যেন বদলে গেল। দেশে-সমাজে। ওই বয়সে দেশ-সমাজের কিছু বোঝা আমার কাজ নয়। কিন্তু কলোনীর পরিবেশ পাল্টে যাওয়া দেখি। কিছু যুবক, মুক্তিযোদ্ধা নাকি ষোড়শ বাহিনী (যুদ্ধ শেষে মুক্তিযোদ্ধা নামধারী!) দিনে-রাতে মটর-সাইকেল নিয়ে কলোনীর রাস্তাগুলো দাপিয়ে বেড়ায়। মুকুট নামটা কলোনীতে বেশ পরিচিতি পেয়েছিল। মাস্তান। দলবল নিয়ে সারাদিন কলোনীতে দাপট দেখাতো। একটা ঢাউস মটর সাইকেল ছিল ওর। সেটার আবার সাইলেন্সার ছিল না। ফলে মুকুট যে আসছে সেটা মাইলখানেক দূর থেকেই জানা যেত। এর আগে কখনো যুবক-তরুণরা বাবা-চাচাদের বয়সী কারো চোখে চোখ রাখার সাহস পেত না। মুক্তিযুদ্ধ তাদের কি সাহস দিয়েছিল জানি না, কিন্তু কলোনীর মোড়ে মোড়ে আড্ডা দেওয়া, বাবা-চাচা-শিক্ষকদের সামনে সিগেরেট ফোঁকা তো সামান্য ঘটনা। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরাটা তাদের জন্য বীরত্ব ফলানোর বিষয় হয়ে উঠলো। খুন, ছিনতাই, লুটপাট- এক অরাজক অবস্থা যেন! অবশ্য এসব চলতো কলোনীর বাইরে। আমরা অভিভাবক আর বড় ভাইদের কাছে শুনতাম।

এসবের প্রভাব এসে পরে স্কুলেও। মাস্তানরা স্কুলে ঢুকে পড়তো যখন-তখন। কিছু শিক্ষক ছিলেন, যারা সাহস করে ওদের সামনে দাঁড়াতেন। প্রধান শিক্ষক হিসাবে ফয়জুর রহমান স্যারের জন্য ছিল এক কঠিন পরীক্ষা। তিনি সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাকে সে সময় তাড়ানোর কম চেষ্টা হয়নি! কিন্তু তিনি লেগে ছিলেন। উনার আদর্শের সঙ্গে আমার মিল ছিল না কোনোকালেই। কিন্তু স্কুলটাকে তিনি দাঁড় করিয়েছিলেন। এজন্য তাকে অনেক রাজনীতিও করতে হয়েছে। সেসব অবশ্য আমি তেমন দেখিনি। তার আগেই ১৯৭৪ সালের আগস্টে ফৌজদারহাটে চলে গিয়েছিলাম।

আরেকজন ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক আবদুর রহমান ভুঁইয়া স্যার। দুর্দান্ত ক্যালিওগ্রাফি জানতেন। আইডিয়াল স্কুলের সাইনবোর্ডটা ছিল স্যারের হাতে লেখা। ভুঁইয়া স্যার আমাদের গৃহশিক্ষক ছিলেন। আমাদের বাসায় থাকতেন এবং পড়াতেন। গাধা পিটিয়ে মানুষ করার ব্রত আর কি! আমাকে আর ছোট ভাই ফয়েজকে (বর্তমানে স্থপতি) ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্বের সবটা আমরা দু’ভাই তাকেই দিই। ভুঁইয়া স্যারকে দূর থেকে দেখলেও কলোনীর সবচেয়ে বড় মাস্তান লুকোনোর জায়গা খুঁজতো। স্যারের বাঁজখাই গলায় ডাক শুনলে আমাদের তো হিসু চলে আসার অবস্থা! কি অসাধারণ, নীতিবান, সাহসী শিক্ষক পেয়েছিলাম আমরা।

ভুঁইয়া স্যারের প্রিয় শাস্তি ছিল মুরগী বানানো। হাঁটুর নিচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে কান ধরে পুরো বাসা চক্কর দেওয়াতেন আমাদের। পড়ায় ফাঁকি দিলে রক্ষা ছিল না! স্যারের কোনো মেয়ে ছিল না। তাই আমাদেরও একমাত্র বোন চন্দনা তার সবটা আদর কেড়ে নিয়েছিল।

মনে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়ি বাবা একদিন আমাকে নিয়ে স্যারকে দেখতে গেলেন। স্যারের কাছে বাবা অভিযোগ করলেন, “লাবলু সিগেরেট খায়। আমাদের কথা তো শুনে না। আপনি বলেন। ওকে না করেন।” স্যার নিজেও প্রচুর সিগেরেট টানতেন। একটার পিঠে আরেকটা। আমাকে নিয়ে তিনি বসলেন। বললেন, “দেখ, সিগেরেট ভালো না। আমিও এইটা ছাড়তে পারি নাই। তবু তোরে পরামর্শ দিই, পারলে ছেড়ে দে। জানি ছাড়তে কষ্ট হবে। প্রথম প্রথম সিগেরেটের বদলে চুইংগাম বা জর্দা এইরকম কিছু চেষ্টা করতে পারিস।”

শেষ বয়সে স্যার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। স্ট্রোক। অর্ধেক অবশ। দেখতে গেছি, স্ত্রীকে নিয়ে। বাসার ভেতরে লাঠি নিয়ে চলাচল করেন। ছেলেরা তখন তাকে কঠোর শাসনে রাখে। সিগেরেটের জন্য স্যারের কি আকুতি। শেষ পর্যন্ত আমার কাছে চাইলেন। ভীষণ ভালোবাসতেন আমাদের। বাবার সঙ্গে কি এক অভিমানে ‘৭৯ সালের পর স্যার আমাদের বাসা ছেড়ে যান। ফলে আমাদের চার ভাইয়ের সবচেয়ে ছোট দুটো আর তাকে পায়নি। সে জন্য আজো আমাদের পস্তাতে হচ্ছে।

বলছিলাম, মুক্তিযুদ্ধোত্তর সময় নিয়ে। কথায় কথায় কোথায় চলে যাচ্ছি! ফিরে যাই, ‘৭২-এর শেষের দিকে। একদিন স্কুলে দলবল নিয়ে ঢুকে পড়লো এক কথিত মুক্তিযোদ্ধা সাদেক। তাকে সবাই “টেনা সাদেক” নামে চিনতাম। থাকতো বাসাবোতে। মাস্তানি করতো কলোনীতে। টেনা সাদেক সদলবলে ঢুকলো মেয়েদের অংশে। আমাদের এক বন্ধুর বড়বোনকে সে পছন্দ করে। তাই স্কুল থেকে তুলে নিতে এসেছে! খবর পেয়ে শিক্ষক-ছাত্ররা এসে ঘিরে ফেললো ওদের। ভুঁইয়া স্যার, ফখরুজ্জামান স্যারসহ সাহসী কয়েকজন শিক্ষক ওদের কয়েকজনকে ধরেও ফেললেন। ওরা অনেক হম্বতম্বি করলো। গুলি-টুলিও ফুটলো কিছু। কারো গায়ে লাগেনি অবশ্য। প্রতিরোধের মুখে টেনা সাদেক ফিরে যায়।

পরদিন স্কুল থেকে আমরা শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা মিছিল করে তখনকার গণভবনে (সম্ভবত) গেলাম। “টেনা সাদেকের ফাঁসি চাই” শ্লোগান দিতে দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে গেলাম বিচার দিতে। মনে পড়ে সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। গণভবনটা তখন ছিল মিন্টো রোডে এখনকার সুগন্ধ্যার বিপরীতে। বঙ্গবন্ধু দেখা দিয়েছিলেন আমাদের। আশ্বাস দিয়েছিলেন বিচারের। আমরা মিছিল নিয়ে স্কুলে ফিরে এসেছিলাম। টেনা সাদেককে ধরা হয়েছিল মনে পড়ে। তখন থেকে আস্তে আস্তে কলোনী থেকে স্কুলটিকে বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করলেন ফয়জুর রহমান স্যার। চারিদিকে দেয়াল তোলা, বড় বড় ফটক দেওয়া ইত্যাদি।

আওয়ামী লীগ সরকার তখন দেশ সামাল দিতে পারছে না। লুটপাট, রাহাজানি, গুপ্ত হত্যা নিয়মিত চলছে। খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। ১১-১২ বছরের বালক রাজনীতির কি বুঝে! কিন্তু তার উত্তাপ গায়ে যা লাগে সেটা টের পায়। একদিন শুনলাম মাস্তান মুকুটকে কে বা কারা মেরে ফেলেছে।

[ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্ব দিয়েছিলাম গত ২৭ জুন। আশা ছিল জুনের শেষেই তৃতীয় পর্বটা দিতে পারবো। কিন্তু বেশ দেরি হয়ে গেল। একটা প্রধান কারণ বাড়ি বদল। আর নিজেদের বাসা-বাড়িকে উপলক্ষ করেই আমি স্মৃতির ঢাকনাটা খুলেছিলাম। অবশেষে আমরা নিজেদের একটা স্থায়ী ঠিকানা পেয়েছি। এ নিয়ে আজ আর নয়। পরে ধারাবাহিকভাবে যখন আসে তখন সে গল্প বলবো। আশা করছি আগামীতে আর দেরি হবে না।]

৫৪ টি মন্তব্য : “স্মৃতির ঝাঁপি : মুক্তিযুদ্ধোত্তর অস্থিরতা”

  1. দিহান আহসান

    ভাইয়া বরাবরের মত চমৎকার লাগলো। :clap:

    অফটপিকঃ স্যরি ভাইয়া, দেরী'র আরেকটা কারণ অবশ্য আমি। 🙁 বোনের অন্যায় আবদার রাখতে গিয়েই ... বড় ভাই হওয়াতো মহা ঝামেলা। 😀

    জবাব দিন
  2. সামি হক (৯০-৯৬)

    এর আগের পর্বেই আপনার কাছে আবদার করেছিলাম ৭২-৭৯ সময়ের একটা চিত্র তুলে ধরার জন্য, আজ তার প্রথম কিস্তি এসেছে দেখে বড় ভালো লাগলো। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য।

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    সানা ভাই,
    ৩য় কিস্তিটাই আগে পড়ে ফেললাম।
    লেখাটা পড়ে ভালো লাগছে,
    মন খারাপও হচ্ছে।
    আপনার এই পর্বটা নতুন প্রজন্মের জন্য
    খুব ভালো হবে।
    চালিয়ে যান বস।

    জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    এক নিঃশ্বাষে পড়ে ফেললাম, খুব ভাল লাগল পড়তে, আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম (বস, কাইন্ডলি, প্লীজ, যদি দয়া করে মানে একটু তাড়াতড়ি পরের পর্বটা দিতেন 🙂 )


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  5. রাশেদ (৯৯-০৫)

    ইমো দিয়ে কমেন্টের কাজ চালাতে ভালই লাগে 😀
    সিরিজটা চালিয়ে গেলে দারুণ একটা কাজ হবে লাবলু ভাই :thumbup: আশা করি চালিয়ে যাবেন অবশ্য সিরিজ লেখকদের উপর ভরসা করা কঠিন কাজ :-B


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
  6. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    ছেলেবেলার শিক্ষকদের এতো সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন, মনে হলো এরা কেন আমার শিক্ষক হলো না। দারুণ কিছু শিক্ষক প্রাইমারী স্কুলে থাকতে আমরাও পেয়েছি কিন্তু ওই যে সামাজিক অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন সেটা আমাদের সময় হয়তো একটু কমে এসেছিলো।

    শান্টিং ট্রেনটা কি শাটল ট্রেনেরই অন্য নাম?

    কিশোরের চোখে একাত্তুরের পরবর্তী সময়টা দেখে কেমন অস্থির লাগছিলো।

    পরের পর্বের অপেক্ষায়।


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      আমাদের সময়ের শিক্ষকদের ওভাবেই পেয়েছি কামরুল। অসাধারণ সব মানুষ।

      না, শাটল ট্রেন তো এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে শাটল করে। শান্টিং ট্রেন হলো, ট্রেনের বগিগুলোকে জোড়া লাগানোর কাজ। বগিগুলো বিভিন্ন লাইনে থাকে, একটা ইঞ্জিন সেগুলো একে একে এনে জোড়া দেয়। তারপর ট্রেনটা কোনো পথে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  7. জাফর (৯৫-০১)

    সানাউল্লাহ ভাই , আপনার লেখা পড়ে আমার মনে হয়েছে আমিও আপনার সাথে ৬২ থেকে ৭১ ঘুরে এলাম। অসাধারন । :boss: :boss: :thumbup:

    মানুষ মেদ ঝড়ায়, আমি না হয় বয়স ছেটে ফেলছি!

    বয়স ছেটে আপনি আমাদের মাঝে চিরদিন থাকেন। 🙂 🙂

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      গুছিয়ে নিই আগে রবিন। ইনটেরিওর হয় নাই, চেয়ার-টেবিল কিচ্ছু নাই!! বসতে হইলে ওইসব তোমাদেরই নিয়া আসতে হইবো!! ট্যাকা-পয়সা সব শ্যাষ। মানে তোমার ভাবীর আর কি! আমার তো কোনো কনট্রিবিউশন নাই। আমি খালি কামাই আর খরচ করি। ;;) ;;) ;;)


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  8. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    সানা ভাই,

    আপনার কিশোর-চোখে দেখা অস্থির সময়টার বর্ণনা ভালো লাগছে। বাকিগুলোর জন্য চেয়ে আছি।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  9. তানভীর (৯৪-০০)

    লাবলু ভাইয়ের আরেকটা অসাধারণ স্মৃতির ঝাঁপি।
    গতিময় একটা লেখা।
    আমাদের জীবনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শিক্ষকদের খুব বড় রকমের একটা প্রভাব থাকে।
    পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

    জবাব দিন
  10. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)

    জোস লেখা :thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup: :thumbup:


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      ভালো প্রশ্ন করেছো সুন্দর হাঁসের ছানা!! শুক্রবার কি তুমি খাওয়া-দাওয়া, বেড়ানো, প্রেম করা, ব্লগানো এমনকি হা..মু... সব বন্ধ রাখো? তাহলে একটা ফরমান জারি করে দাও, এখন থেকে শুক্রবার সবকিছু বন্‌!! ;;;

      আর ছুটির দিন নিয়ে : শুক্রবার ছুটির দিন হয়েছে এরশাদ আমলে। আগে শুক্রবার সরকারি অফিস-আদালত অর্ধদিবস ছিল। তখন ছুটি ছিল রোববার।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      ধন্যবাদ ফয়েজ। ফয়েজরা রক করেনা এমন দাবি কেউ করছে?

      তোমার মেয়ে আর বউ কেমন আছে? মেয়েকে নিয়ে লিখ না একটা পোস্ট। সুন্দর কিউট ছবিসহ।

      আমাদের পরিবারে মেয়ে কম তো, তাই তাদের চাহিদা আর আদরও বেশি। আমরা চার ভাই, এক বোন। আমার বোনের তিন ছেলে, আমার এক ছেলে, সেজো ভাইয়ের এক ছেলে, মেজো ভাই ফয়েজের এক মেয়ে আর এক ছেলে এবং সবচেয়ে ছোট ভাইটার এক মেয়ে (বয়স দেড় বছর)। অনুপাত ৬ : ২!! সবচেয়ে ছোটটাই এখন আমাদের সবার সব আদর খাচ্ছে..... 😀


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
  11. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    সানাউল্লাহ ভাই,
    বর্ণনা পড়তে পড়তে আমিও যেন সেই সময়টাতে চলে গিয়েছিলাম...
    যুদ্ধপরবর্তী সময়ের বর্ণনাটি খুব ভালো মনে হচ্ছিলো যেন নিজ চোখে দেখতে পারছি...
    অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের...

    জবাব দিন
  12. আদনান (১৯৯৪-২০০০)

    লাবলু ভাই খুবই অনন্য হয়েছে এ পর্বটা । আইডিয়াল স্কুলে পড়ার সুবাদে অনেক কিছুর সাথেই নিজেকে মেলাতে পারছি । ভাইয়া আপনার কাছে একটা অনুরোধ থামবেন না । আপনার কাছে আমারা ৯০ এর আন্দোলনের কথাও শুনতে চাই ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।