একটা হওয়া না হওয়া নিয়ে খানিক বাচালতা কিংবা আজীবন ভেবে আমি যা ভেবে পেয়েছি

sleepingmuse
অ.তুমি শুরু করলেই হয়?
এভাবে হবে না কিছুই – যেমন টের পাই
আমার ভেতরে শব্দগুলো হতাশ হয়ে তাকায়
মাথা নেড়ে তারা খুব ম্রিয়মাণ হয়
ধুস্‌শালা! নষ্টমানুষ একটা!
স্ফটিক-বিম্বে বন্দী করছে আমাদের।

আ.কী নিরালম্ব আমাদের ঘুম!
ওভাবেও হবে না- তারা বলে, যখনই আমি সুঁই সুতো দিয়ে বাঁধতে গ্যাছি
“শুয়োরের ছাও, ফটকামি বোঝাও?”
এইভাবে গালি খেয়ে আমি চমকায় গ্যাছি
হাত থেকে সুঁই সুতা পিনপতনের দ্রুততায় হারাইলো
শুয়োরের ছাও হয়্যা আমি পুইড়া গ্যালাম

ই.এই অপার, জীবন হায়?
কোনভাবে হবে- তাও জানি না
যেভাবে শব্দ খেলি
যেভাবে তাদের সাথে শুই
গরম হই, “ওহ! শব্দসুন্দরী আসছে তারা ক্রমাগত একে একে”
ঠাণ্ডা হই, “যাহ্‌, কোথায় গমন গজহীন ভোর, কালকের পরে আর আসেনি তারা”
হাইস্যা ফেলি হা হা হা!
দমকে দমকে আমার শরীর নেতায় পড়ে।

ঈ.যাত্রার শেষ কোথায়, হে পালিত পিতা!
সেভাবে হবে- বলে নিমগ্ন কবি
পাশে কাগজ কলম হাতে বসে দুর্দান্ত গতিতে
স্তবক স্তবক নেমে আসে থরথরে
পংক্তি পংক্তি জারি হয় গোলগাল সরব
এক একটা সর্গ রচিত হয় সানন্দেই

…আমি বুঝি আমার হাত নয়, লিখছে অপর মানব কোন ছায়াহীন কায়াহীন
আদ্যোপান্ত গাঢ় রোদ মেখে
শালা… আমার আর হইলোই না!
====

[অনেকদিন হয় আমি কবিতা লিখি না। এমন না যে আমি আলসেমি করছি, বা লেখার ইচ্ছা নেই। আমার কবিতা লিখতে গেলেই কষ্ট লাগে। এমনি দিনলিপি, গল্প, ব্লগর ব্লগর-এ যে কষ্টটা অনুপস্থিত সেটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এই লেখাটা কবিতা না মনে হয়। আমি যা ভাবি, চিন্তা করি এবং তারপরে যেই চিন্তাকীটগুলো আমার মাথায় বসবাস করে সেইসবের জ্বালাতনের নির্যাস এটা। সকলের প্রতি এই অযাচিত পাঠের ভার চাপাইতে পেরে নিজেকে ভারমুক্ত লাগতেছে। সবাই ভাল আছেন? আছো? আছিস?]

১,৯৫৭ বার দেখা হয়েছে

৩৭ টি মন্তব্য : “একটা হওয়া না হওয়া নিয়ে খানিক বাচালতা কিংবা আজীবন ভেবে আমি যা ভেবে পেয়েছি”

  1. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)
    নতুন নির্মলেন্দু হওয়ার কোনই ইচ্ছা নাই। চেষ্টাও নাই। আমি আন্দালিবই হইতে পারলাম না ঠিকমত। ঐটা আগে হয়ে নেই।

    ভালো লাগলো।
    বরাবরের মতই কবিতাটাও খুব সুন্দর।

    জবাব দিন
  2. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
    এই লেখাটা কবিতা না মনে হয়।

    😮 😮

    আমি ত কবিতাই ভাবছিলাম। খানিকটা বুঝেও ফেলেছিলাম। মনে মনে একটা ভাবও নিছিলাম যে, আমার এন্ট্যেনা উঁচা হয়া যাইতাছে।

    -এখন কি তাইলে আমার পড়ুম 'না-কবিতা' হিসেবে?

    (ব্র্যাকেটে কয়া যাই, ভালো লেগেছে। কবিতা না গল্প সিউর না হয়ে মন্তব্য করার সাহস হল না)।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • আন্দালিব (৯৬-০২)

      মাহমুদ ভাই, আপনার ভাল লাগাটাই মুখ্য। এইটা কবিতা কী গল্প, সেটা অতটা জরুরি না। সাহস করে মন্তব্য করে ফেলেন লেখাটা নিয়ে। 😀 আমি আসলে অনেকটা কথিতভাব তুলে আনতে চাইছিলাম লেখার মাঝে। (অনেক বিজ্ঞব্যক্তিরা আবার এভাবে লিখলে তারে কবিতা বলে মানতে চান না। এজন্যে ঐকথাটা বলেছিলাম। 😛 )
      'না-কবিতা' টার্মটা পছন্দ হইছে। :clap:

      জবাব দিন
  3. মেহবুবা (৯৯-০৫)

    আমি কবিতা বুঝিনা 😀
    এইটা কি আমার দোষ? কিন্তু এইটা বুঝি......আর একবার পড়ে নেই।

    আমি বুঝি আমার হাত নয়, লিখছে অপর মানব কোন ছায়াহীন কায়াহীন

    তাইলে কে লিখলো? :grr:

    জবাব দিন
  4. আমার কবিতা লিখতে গেলেই কষ্ট লাগে

    কথাটা মনে হয় সত্য।
    কেননা এই কবিতা যে লিখে সে আমাদের পাঠকদের সাথে একই অনুভূতি ভাগাভাগি করবে না তা হতে পারবে না...
    ভাই, আপনার ভাষা খুব অন্যরকম। বুঝতে হলে হয়ত উচ্চ মার্গীয় কবিতা জ্ঞান প্রয়োজন...
    :hatsoff: :hatsoff:
    তবে এইটা নিশ্চিত হইছি... দারুণ লেখা হইছে...
    :boss: :boss:

    জবাব দিন
  5. সাজিদ (১৯৯৩-৯৯)

    ভাই, তোমার কবিতা পড়ে আমার অসম্ভব ভালো লাগলো। আমি এই ধরণের কবিতা খুব পছন্দ করি। অনেকবার চেষ্টা করেছি এই রকম একটা কবিতা প্রসব করতে। কিন্তু এখানে অনেকের এন্টেনা'র মতো আমার আবার সার্ভারটাই দুর্বল। একবার আধা কেজি গাঁজা নিয়ে বসেছিলাম, তাতেও কাজ হয় নাই। তোমার এই কবিতার সাথে রুদ্র'র কিছু কবিতার স্টাইলের সাথেও সামান্য মিল আছে(যদিও তোমার স্বকীয়তা প্রচুর) যেটা আমার কাছে খুব এ ভাল লেগেছে, কারন রুদ্র'র ওই কবিতা গুলো আমার খুব ভাল লাগে।


    অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
    জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
    কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।

    জবাব দিন
    • আন্দালিব (৯৬-০২)

      সাজিদ ভাই, আপনার সাথে কলেজের পরে দেখা হয় নাই। এই ব্লগের সুবাদে এখন কথা হয়ে ভাল লাগছে খুব। কেমন আছেন??

      রুদ্র'র কবিতা আমারও ভাল লাগে। তবে আমার পড়াশোনা অনেক কম। কয়েকটা বিখ্যাত কবিতা বাদে তেমন কিছুই পড়িনি। নিজের যা লেখালেখি, বা লেখা নিয়ে চিন্তা সেটা ঘরে বসে এই ব্লগের মধ্যেই যতটা। সেখানে আপনারা, পরিচিতের মত স্নেহ করেন বলেই যত পাগলামি করি। লেখাগুলোকে সামনে আনার সাহস করি। (এই কথাগুলোর মধ্যে কিন্তু আদৌ কোন বিনয় নাই। আমি সত্যিই মীন করে বলছি)

      অনেক অনেক ভাল লাগলো ভাই। নিয়মিত হয়েন ব্লগে। এটা এক মজার জায়গা। গ্যারান্টি দিচ্ছি! 🙂

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আন্দালিব (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।