ওরে! ‘পিচ্চি কবিতা’দের সবাই একটু আদর করে দাও!

[শুরুতেই বলে নিই, আমি কোনদিনও একদিনে দুটি পোস্ট দিতে পারি না, একটু কুণ্ঠা কাজ করে খুব বেশি প্রগলভ হয়ে গেলাম কী না ভেবে। তবে আজকে বেশ খুশি খুশি লাগছে। সে কারণে সবার সাথে বকবকাইতে ইচ্ছা হইতেছে। কিন্তু একটু আগে যে কবিতাটি দিয়েছি সেটা বেশ বিষণ্ণ এবং কথা বলার জন্যে তেমন মজার নয়। তাই এখানে বেশ ক’টি ছোটখাট কবিতা দিলাম। এগুলোকে আদৌ কবিতা বলা যায় কী না জানি না। আধুনিক বা উত্তরাধুনিক কবিতার ঢঙের সাথে এদের তেমন মিল নেই। আকারে ছোট, আড়াল নেই কথার মাঝে। এসব কারণে এরা বেশ অবহেলিত হয়। তবে সিসিবি খুব অন্তরঙ্গ জায়গা, জানি এখানে সাদর হাসি-সমেত স্বাগতম পাওয়া যাবে, তাই এই পিচ্চিগুলোর সলজ্জ আগমন!]

    কাগজে মোড়ানো অতীত

কাগজের এক মোড়কে জড়িয়ে নিলাম তখন-
খামসমূহ, হলমার্ক-আর্চির
উপহার-বার্তাদের।
আপন আত্মারা এককালে
কত ভালবেসে
আদর, মমতা, স্নেহ আর প্রেমে ডুবিয়ে
লিখেছিল অক্ষর ঐ
কাগজগুলোয়-
তাদের পাঠানো এত এত ভালবাসা,
আজ কাগজে মুড়িয়ে নিলাম-
চিলেকোঠার এক কাঠের বাক্সে রেখে দিলাম।
***

    লাল পিঁপড়া

আমার চোখের নীচে আজ একটা পিঁপড়া
গুটিগুটি হেঁটে যেতে যেতে আচমকা
কুট করে কামড়ে দিয়েছে।
লাল পিঁপড়ার লাল রং ছড়িয়ে পড়েছে
চামড়া জুড়ে- ধমনী বেয়ে বার্তা চলেছে
হৃদয়-ফুসফুস-প্লীহা
আহা! কত দূর্দান্ত পিঁপড়ার আদর!
***

    মাননীয় স্যার

মাননীয় স্যার, শিক্ষক, আশা করি ভাল আছেন, বেশ।
আমি অমুক, ব্যাচ তমুক, রোল সেমুক, নিতান্তই তুচ্ছ
অগ্রাহ্য-করার-মত বিস্তারিত পরিচয় ( যা দিয়ে আপনি
আমায় চিনবেন না স্বভাবতই )। আমাকে একটা সমাধান
আশা করি আপনি দিবেন, তাই সমস্যাটা নিয়ে এসেছি।
সাথে সংযুক্ত কাগজে যার বর্ণনা করেছি পুঙ্খানুপুঙ্খ।
বিনীত নিবেদন, সমাধান জানাবেন, পাওয়ামাত্রই,
নিবেদন ইতি, আপনার একান্ত অনুগত, অমুক অপাঙক্তেয়।
***

    এপাশ-ওপাশ

দরজার এপাশে দাঁড়িয়ে
দেখি না কিছুই
দরজার ওপাশে যা-
জীবন প্রাত্যহিক
হয়ত জমে আছে
এপাশে হাতল ধরে আছি-
ওপাশ থেকে কেউ খুলে দিলে
ভার নেমে যায়।
***

    ভাঙন-মূলক

অবিশ্রাম ঢেউয়ে ভাঙে
ধানের ক্ষেত,
হালট,
নারিকেল গাছ,
কুয়া,
বাঁশঝাড়,
বনেদী টিনের ঘর।
পৌরাণিক জমিন জুড়ে
থইথই কাদা-পানি
যেন ঘটোৎকচ উদ্বাহু প্রলয় ডেকেছে কুরুক্ষেত্রে!
***

    শিশিরের ট্রেন

বিকেলবেলাঃ ঠিক পাঁচটা বাজার একটু আগে
শিশিরের ট্রেন থামে;
স্টেশন গার্ড সবুজ পতাকা মৃদু দুলিয়ে দিলে-
ঘাসেরাও শিশিরের ওয়েটিং রুম হয়ে যায়।
***

    মুখবন্ধে সুরাইয়া

প্রচ্ছদের শক্ত মলাট থেকে দু’পাতা উল্টে
সাদা জমিনে কয়েকটা লাইন;
বেশি নয়- কতগুলো মুঠোভরা শব্দে লেখক
পরিচয় ঘটালেন সুরাইয়ার সাথে- আমাদের,
শব্দগুলো জমে জমে সুরাইয়াকে গড়ে তোলে
আর সেখানে কলমের নিব সুরাইয়ার শরীরে ঘষা খেয়ে যায়।
***

    চিত্রকল্‌পো

সবুজ কাঠের নিচে প’ড়ে আছো তুমি
পাশে কয়েকটা জোনাক কিংবা শামুক
স্থবির হয়ে তোমাকে দেখেঃ
এই চিত্রকল্প মাথায় এলে-
আমি পোশাক খুলে তোমার পাশে শুয়ে পড়ি।

তোমাকে আর আমাকে কেউ দেখতে পাবে না আর।
***

    সুপারভাইজার

“সুপ্রিয় যাত্রীবৃন্দ, আপনাদের শুভেচ্ছা!
এখানে সোহাগ ভলভো সার্ভিসে আমাদের পথচলায়
আমি মোকাদ্দেস আলি, আপনাদের সাথেই আছি
এখানে আপনাদের দেয়া হবে একটি হেডফোন
সাথে কুকি-বিস্কুট এবং পানীয়
সেগুলো পেয়ে আপনারা বিগলিত হবেন
এবং ভাববেন, এযাত্রায় খুব দাঁও মেরে দিলুম!”
***
[বি.দ্র. তাইফুর ভাইয়ের অবশ্য সহায়িকা আশা করছি! আমি ‘উচ্চ নম্বরের সিঁড়ি’ লেখার ভারটা তাঁকেই দিতে চাই। সবাই কী বলেন?]

৪,১২৩ বার দেখা হয়েছে

৪৬ টি মন্তব্য : “ওরে! ‘পিচ্চি কবিতা’দের সবাই একটু আদর করে দাও!”

  1. রেজওয়ান (৯৯-০৫)
    রকিব (২০০১-২০০৭) বলেছেনঃ
    ফেব্রুয়ারী ৭, ২০০৯ @ ১১:২৭ অপরাহ্ন

    আবার ১ম

    জিহাদ (৯৯-০৫) বলেছেনঃ
    ফেব্রুয়ারী ৭, ২০০৯ @ ১১:২৭ অপরাহ্ন

    first

    এখন তো দেখি সেকেন্ড এর হিসাব মিলাইতে হবে :grr:
    ভাই কবিতা গুলারে একটা কইরা ললিপপ খাওয়াইয়া দিলাম 😀

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রেজওয়ান (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।