মশা কামড়াচ্ছে। পিন্ পিন্ করে কয়েকটা মশা ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার রুমটাতে। আমি হাত বাড়িয়ে চটাশ চটাশ করে মারার চেষ্টা করেছি কয়েকবার, মরেনি। আমার লক্ষ্যভেদ করার প্রয়াস খুবই হাস্যকরভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সম্ভবত হস্ত-চক্ষুর সমন্বয় করার ব্যাপারটিতে আমি খুবই খারাপ। একটু পরে চটাশ চটাশের কারণে লাল হয়ে যাওয়া হাত টেবিলে মেলে রেখে আমি মশা-মারার হাল ছেড়ে দেই, এবং এই সুযোগে দুয়েকটা মশা আমার হাত-পায়ে দ্রুততার সাথে কামড় দিয়ে দেয়।
সবেগে নাড়া খেয়ে তারা হুল ফুটানোর পরবর্তী রক্তপানের ক্রিয়াটি করতে পারে না। আমি সূঁচবেঁধা ব্যথাটুকু ছড়িয়ে যেতে দেখে নিরুপায়ের সান্ত্বনা হিসেবে এটা চিন্তা করি যে, যাক্, রক্ত তো খেতে পারেনি! তবে ধীরে ধীরে হাতের এবং পায়ের মশা-কামড়ানো জায়গাগুলোতে একটা অস্বস্তিকর চুলকানি এবং তৎপরবর্তী অদম্য ইচ্ছাটি সয়ংক্রিয়ভাবে আমাকে অস্থির করে তোলে। এরকম অবস্থায় দপ্তরের পোশাকী ভদ্রতাকে পাশ কাটিয়ে আমি নখের মাহাত্ম্য প্রমাণ করার জন্যে খশখশ করে হাত-পায়ের হুল-বাসস্থান চুলকাতে থাকি। রক্ত বাঁচানোর তৃপ্তির তখন লেশমাত্র বাকি নাই।
২.
অনেক নীচে লোকটিকে শার্ট-প্যান্ট জাবড়ে জাবড়ে চুলকাতে দেখে আমার খুবই ভালো লাগে। রক্ত খেতে না পারায় খুব খারাপ লাগছিল। সবেমাত্র নল ঢুকিয়েছি, একটা চোঁ চোঁ টান দেবার আগেই ব্যাটা এমন ঝাঁকুনি দিল, যে ছিটকে পড়ে গেলাম। হুলটা চামড়ার ভেতরে ঢোকানো ছিল। ঝাঁকিতে ব্যথা পেয়েছি, এখন টন্টন্ করছে! একটু উড়ে ওপর থেকে দেখলাম যে লোকটা খুব দ্রুততায় নড়াচড়া শুরু করেছে। মনে বেশ তৃপ্তি ছড়িয়ে পড়ল, রক্তপান না করতে পারার অশান্তি আর ক্ষুধাটাও এখন আর গায়ে লাগছে না!
তবে ক্রমশ ক্ষুধাটা বাড়ছে। খুব ইচ্ছা করছে লোকটার কলারের কাছে বের হয়ে থাকা চামড়ায় গিয়ে বসি। মনকে বুঝালাম দিলাম, ব্যাটা তো ব্যস্ত আছে চুলকানোতে, এইফাঁকে গিয়ে চট করে দু’টান…
পরিশিষ্টঃ
ঘাড়ের কাছে আবারও পরিচিত তীক্ষ্ণহুল টের পেলে আমি ডান হাত সপাটে চালিয়ে দেই। চটাশ!
ভাগশেষঃ
হাতের সাথে ভেজা ভেজা চটকানো মশা-মৃতদেহ উঠে আসে।
***
২০.১.৯
গোল্ড... :awesome: :awesome: :awesome:
ভাই...পুরা সা-ঝুপ
আমাদের কলেজে একদিন প্রেপ টাইমে একজন্রে মশায় খুব জালাইতেসিল, ভাই তারপর মশাটারে ধইরা (অর্ধমৃত) একটা একটা কইরা পাঙ্খা আর ঠ্যাং ছিরতেসিল আর একলা একলাই কইতেসিল ''আর খাবি? ক শালা আর খাবি?'' :)) :)) :))
হা হা হা! মজা পেলাম তোমার বলা ঘটনা-টা শুনে। মশার উপরে আমারও রাগ লাগছিল লেখার সময়ে, পরে হঠাৎ মনে হলো, প্রাণিজগতে একটু পেছনের 'পর্বে' আছে বলেই সারাজীবন এরা চটাশ চটাশ খেয়ে যাবে! বড়োই দুস্কের কথা! 🙁
হা হা রেজয়ান, রবিন ভি এর কথা মিনে পইড়া গেল। আন্দালিব ভাই, শিরোনাম বুঝিনাই- কিন্তু গল্প ভাল্লাগছে। 🙁
সিলভার 😀 , পড়ে ২য় হইছি। সোন্দর লেগেছে।
থ্যাঙ্কু শার্লী! এই চটাশ চটাশ মারামারির মধ্যে সৌন্দর্য কেমনে পাইলা! 😕
ও যে আরও কত কিছহু তে সৌন্দর্য পায়... 😛 😛 😛
ইন্টারে বায়োলজি ছিলনা দেইখা এইগুলা মাথার উপর দিয়া গেসে...
লেখা-প্লট বরাবরের মত পাংখা... :thumbup:
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
সাকেব ভাই, ভার্টিব্রাটা=মেরুদণ্ড। ভার্টিব্রেট= মেরুদণ্ডী প্রাণী। এদের মধ্যে একটা শ্রেণী হলো ম্যাম্যাল বা স্তন্যপায়ী। আমি মশা আর মানুষের পর্ব-পর্যায়ের দূরত্বটা বোঝাতে ব্যবহার করেছি।
পর্ব= phylum। শ্রেণীবিদ্যার একটা ভাগ।
বোঝা যাচ্ছে, ইন্টারে আপনার বায়োলজি ছিল। :grr:
মশাদের কথোপকথন নিয়ে জাফর ইকবালের একটা গল্প পড়সিলাম ছোটবেলায়, মনে পড়তেসে। বরাবরের মতো সুন্দর লেখা, ৫-এ ৫। 😉
অইটা মনে হয় হুমা আঙ্কেলের............... 😉 😉 😉
হুমা, জাই- কোনভাইয়ের লেখাই অনেকদিন পড়া হয় না। এখন তাদের লেখাগুলা কেমন জানি লো-ফ্রিকোয়েন্সি'র মনে হয়! 😕 😕
কঠিন সহমত ।
বায়োলজি ছিল, কিন্তু এতদিনের অপাঠে, ভুলে গেছিলাম মশা'র 'পর্ব' কোনটা! 😕 😕 :(( :((
অনেক বছর পড়া হয় নাই, শেষে গুগল-মামুর কাছে সমাধান জেনে নিলাম!
জাফর ইকবালের গল্পটা পড়া হয়নি। 🙂
চটাশ! 😉 চটাশ! 😉
বস্, আপ্নে তো চোখ টিপ দিতে গিয়ে চটাশ চটাশ কর্তেছেন! 😮 😮
কত রকম আইডিয়া রে!!!!!!
তোর মাথা তো আইডিয়ার ফ্যাক্টরি।
আমি মাঝে মাঝে আপনমনেই ভাবি, মশা মাছি এদের তো চিন্তা করার ক্ষমতা নাই। নিছক ইন্সটিংক্ট দিয়াই এরা চলে। কোন মেস্তরি এইরকম কতগুলা জিনিস বানাইল রে!!!!
মশা মাছি তো তবু প্রাণী। আমার জড়বস্তু নিয়েও প্রচুর চরিত্র বানানোর বদঅভ্যাস আছে। সেইসব পাগলামি এখানে করি না লোকজন মাইর দিবে এই ভয়ে। 😕 😕
ভাই কেউ মাইর দেবে না। আপনি লেখা ছাড়া শুরু করেন। আপনার গল্পের চরিত্রগুলো আমার খুবই পছন্দ।
অক্কে! B-)
আন্দালিব, কত রঙ্গ ...
নিজেকে নিজে কামড়াইলি
নিজেকে নিজে মারলি
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
হে হে হে! তাইফুর ভাই, আপনিই আসল ঘটনা ধরতে পারলেন! :clap: :clap:
নাহ, আন্দালিবটা যে কী না! মাত্রতো দুইটা টান। সুরুৎ করে কোন ফাকে টেনে নিতো বেচারা লুই, সেটা টেরই পাইতোনা কেউ। কিন্তু চরম নির্দয় লেখক সেটা মানলেতো 😀
মাত্র দুইটা টানের জন্য বেচারা অকালে চটকে গেলো 😉
চারিদিকে এরকম কত দুই টানওয়ালারা যে শুষে নিচ্ছে!
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
একমত:thumbup:
খাউজাইতে খাউজাইতে অবস্থা খারাপ, আর আপ্নে বলতেছেন মাত্র দু'টান!!! x-(
জেসিসির হইল কি? জুনা লেখে সিগারেটের আত্নকথন, আন্দালিব লেখে মশার আত্নকথন 😕 ক্যাম্নে কি :-/
:))
এইটা পড়তে যেয়ে ভালো মজা পাইছি :clap: :clap: ।
কুমিল্লায় যখন ছিলাম তখন ছুটিতে ঢাকায় আসলে দুই জায়গার মশার তুলনা করতে পারতাম। কুমিল্লারগুলো খানিক বুদ্ধিমান হলেও ঢাকারগুলো বেশ হাবা - খপ করে ধরে ফেলা যায় সহজে 😛 । আমি অবশ্য ঠাশ ঠাশ তালি বাজানোর চাইতে খপ করে মশা ধরে ফেলতেই পছন্দ করি 😀 ।
আচ্ছা, ভার্টিব্রাটা'টা কিভাবে, কার আগে আর কার পরে আছে একটু বলবা? ম্যামালস এর লোকেশন কই? এইখানে দৌড়ে তালে তালে করতে করতে সব খায়া ফালাইছি 😀 😀 😛 ।
Life is Mad.
কুমিল্লা রকস :thumbup: :thumbup: :thumbup:
কুমিল্লা রকস :thumbup: :thumbup: :thumbup:
কুমিল্লা রকস! :thumbup: :thumbup:
সায়েদ ভাই, ভার্টিব্রাটা=মেরুদণ্ড। ভার্টিব্রেট= মেরুদণ্ডী প্রাণী। এদের মধ্যে একটা শ্রেণী হলো ম্যাম্যাল বা স্তন্যপায়ী। আমি মশা আর মানুষের পর্ব-পর্যায়ের দূরত্বটা বোঝাতে ব্যবহার করেছি।
জুবায়ের, বন্য, কুমিল্লা রকস্ করতেই ব্যস্ত। আপ্নের প্রশ্নটার জবাব দিল না! 😛 😛
পোষ্টের নাম দেইখা ভাবছিলাম কি না কি কঠিন বিষয় হইব আইসা দেখি আমগো মশারে নিয়া লেখা। সব বুঝতে পারছি খালি কিসব ভার্টিবার্তা আরো কিসব ঐগুলা বুঝিনাই। বায়োলজি ছিল না।
আন্দা গ্রেট আইডিয়া।
দোস্ত, সায়েদ ভাইকে করা মন্তব্যটা দেখ।
ভাই আমি মানবিক বিভাগের ছাত্র।
আমরা কি অমানবিক? 😉
ভাল ছিল 🙂
এই লেখার যে দিকটা সবচেয়ে ভালো লাগলো তা হলো ঈশপীয় নীতিকথা-
লোভে পাপ পাপে মৃত্যু---------- 😀 😀 😀 😀 😀 😀
কি রে! ঈশপ! আমি কী লিখলাম পাঁচ মিনিটে, এখানে ঈশপের কথা বলে ফেলছি নাকি! খেয়াল করি নাই। :awesome: :awesome: :tuski:
নিজেকে বস বানানোর চেষ্টা করায় আন্দালিব ভাইর ব্যাঞ্চাই... :grr:
না না, সিরিয়াসলি! আমি এটা সত্যিই পাঁচ-ছয় মিনিটে লিখছি। অফিসে বসে বিরক্ত লাগতেছিল। ক্লাশ নেয়া শেষ, কিন্তু এক কলিগের সাথে ফিরতে হবে, সে আবার ক্যাডেটের বড় ভাই (সো, "না" বলার কোন অপশন নাই!)। অপেক্ষা করতে করতে ওয়ার্ডের একটা ফাইল খুলে ধুপ ধাপ লিখে ফেলছি। হে হে হে! :grr:
আমি তো ভাবতেইইইইই আছি। কোনডা নিয়া মন্তব্য দিমু? লেখার শিরোনাম, নাকি বডি অথবা লেজ? ভাবতেইইইইই আছিইইইইই..................
🙁 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁 🙁
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
🙁 🙁 🙁 🙁 🙁
কিছু একটা বললেই হবে লাবলু ভাই।
বাসায় কয়েল শেষ হয়ে গেছে... 🙁
মশার কামড় খাচ্ছি...আর কয়েলের ধোঁয়াকে ক্যামোফ্লেজ বানিয়ে সিগারেট খেতে না পেরে হা-হুতাশ করছি... :bash:
আন্দালিব তো অনেকটাই সাইজ হয়ে গেছ... :thumbup:
খালি শিরোনামটা যদি.. 😉
তাইলেই নিজেরে আর মূর্খ লাগবে না... B-) 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
বস, এভাবে বইলেন না, আমি আবার পুরান মোড-এ ফিরে যাব কিন্তু! 😉 😉
জুনায়েদ ভাই জুনিয়র হিয়া সিনিয়রকে থ্রেট দিছে। কিছু একটা করেন। আন্দালিব ভাই আসার আগে আমি পালাই।
হে হে হে! কী শার্লী, থ্রেট দিলে চোখ টিপ দিতে হয় নাকি? 😉 তাহলে তোমাকেও একটা নগদে থ্রেট দিয়া ফেলি, হা হা হা! 😉 😉
আন্দালিব, তোমার লেখাগুলো এখন খুব সহজেই বুঝা যায়। তুমি সহজ করে লিখ নাকি আমি বস হয়ে গেলাম? :-B :-B
লেখাটা ভালো লেগেছে, আইডিয়াটাও। :thumbup: :thumbup:
আপনারা বস্ ছিলেন আছেন ও থাকবেন! আমি তুচ্ছ সাধারণ মানুষ! 😀
তাইফুর ভাই কি জানি বলে এদের? অমায়িক চো...।। 😉
তুইও তো কম না মাইরি ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
দাদা, খাসা বলেচেন... 😉
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ওরে তোরা এভাবে বলিসনেরে, দুপুরের আহারের পর বিকেলের নাস্তাটা করে চলে আসিস, পুরো একটা বিস্কিটের আধেকটা খাওয়াবোনে 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
চোখে যে জল এনে দিলেন দাদা... :((
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:clap:
আমার ভাল লাগলো তোমার সাধারন প্লটে অসাধারন কারুকার্য।
শুভেচ্ছা নাও।
আর শেষমেশ যুদ্ধজয়ের জন্য সাধুবাদ নিও। 😀
সৈয়দ সাফী