ভোরঃ আমাদের, আমার, তোমাদের একান্ত-

বিষাদের চেহারায় কতগুলো দাগ পড়ে গেছে।

আঁকাবাঁকা, খরখরে দাগগুলো বিষাদের চেহারায় মরা সাপের মত লেগে থাকে। আমার আর বিষণ্ণ লাগে না। আমি অনেক দিন বিষণ্ণ হই না। কতদিন! আরেক জন্মে আমি শেষ বিষণ্ণ হয়েছিলাম কি? নাকি গতকালই, অথচ আমার স্মৃতি সেটাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে রাখে। আমাকে বাঁচাতে নিজের কাছ থেকেই…

বিষাদ গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির মত অপরাধী। দুঃখবোধের সাথে তার বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার আজকেই শেষ দিন। তারা খুব হরিহর আত্মা ছিলো। আত্ম-যোগাযোগ। মিলে যাওয়া সুরে সুর। তানে তান। টুং বাজলেই টাং বেজে ওঠা। এ’সকল পার্থিব যোগাযোগ আর সেগুলোর পরিমাপক বাদেই বিষাদ ও দুঃখবোধের নিবিড়তা আলাদাভাবে গড়ে উঠেছিলো। আজকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমি দুঃখবোধের সুতো পাকানো মুখটা খুলে রাখছি বিছানার পাশে, মেঝেতে টবের ধারে। ওপাশের জানালা বেয়ে বয়ে চলছে বিষাদের কান্নার স্রোত। কাঁদছে সে, আকুল, নির্ঝর, নিঃশব্দ। তার কান্নার দৃশ্য আমাকে হালকা করছে। দুঃখবোধের শরীর নুয়ে পড়ছে ক্রমশ… মিশে যাচ্ছে আমার ঝুলিয়ে রাখা হাতের নখে। আর সেখানে রোদ্দুর চাষ। সহসাই ঝলক আলো, হঠাৎ নিথর জানালা।

আজকে বিষাদের ছুটি। আজকে থেকে বিষাদের ছুটি। আজ আমি খুশি।

***

১,৯৯৬ বার দেখা হয়েছে

৩৩ টি মন্তব্য : “ভোরঃ আমাদের, আমার, তোমাদের একান্ত-”

    • আন্দালিব (৯৬-০২)

      এইটা তো খুশির লেখাই! 😮

      বিষাদকে ছুটি দিলাম আপু। তাই এই লেখা।

      আমি যখন কবিতা লেখা শুরু করেছিলাম ব্লগে। তখন একটা মেয়ে আমাকে বলেছিলো খালি দুঃখের কবিতা লিখি, এগুলো বাদ দিয়ে একটা সুখের কবিতা লিখতে। এতদিনে সেই মেয়েটির কথা রাখতে পারলাম। 🙂

      জবাব দিন
  1. তানভীর (৯৪-০০)
    আজকে বিষাদের ছুটি। আজকে থেকে বিষাদের ছুটি। আজ আমি খুশি।

    এই কথাটাতেও কেন যেন বিষন্নতা যায়নি, মনে হয় তুমি এখনও বিষন্ন।

    তোমার লেখা আমার বরাবরই ভালো লাগে। :thumbup:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।